মামুনের কথাটা শুনে বিরক্তিতে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল ।
-যা ইচ্ছা কর । প্যানপ্যান করবি না ।
-ধরবো ?
মামুনের মুখ দেখে মনে হচ্ছে নিশির কলটা ধরার জন্য ওর মনটা আকুপাকু করছে । বললাম
-তোর ফোন তুই কি করবি না সেটা তোর ব্যাপার ।
মামুন ফোনটা ধরল ।
আমার মেজাজটা আরো একটু খারাপ হল । শালার মেয়ে মানুষ এমন এক জিনিস । সবাইকেই কাবু করে ফেলে ।
আমি মামুনের পাশ থেকে উঠে গিয়ে অন্য একটা সিটে বসলাম ।
মেজেটা আমার খারাপ হয়ে আছে । ঐ মেয়েটার জন্য । মেয়েগুলো নিজেদের কি ভাবে । যখন ইচ্ছা খারাপ ব্যবহার করবে !! মানুষ কে মানুষ বলে গন্য করবে না । যা ইচ্ছা তাই বলবে.!
মানলাম তোমার চেহারা সুন্দর তোমাকে আমার পছন্দ তাই বলেতো তুমি আমার সাথে যেন তেন বিহেইভ করতে পারো না । আমার আত্মসম্মান বলে কিছু একটা আছে । এবং সেটা তোমার থেকে আামার কাছে অনেক বড় ।
তাই যখন ক্লাস চলছিল তখনই নিশির কাছে একটা এসএমএস পাঠালাম । যখন কেউ আমার সাথে এই ভাবে রিএক্ট করে আমি মরে গেলেও আর কোনদিন তার দিকে ফিরে তাকাই না ।
তারপর বেশ কয়েকবার নিশি আামকে ফোনে চেষ্টা করেছে । আমি ধরি নি । ধরার প্রশ্নই আসে না । ঐ মেয়েকে আমি আমার মন থেকে ডিলিট করে দিয়েছি ।
সকাল বেলার ঘটনা । আমাদের ক্লাসের ইমন গাজীপুরে কি এক টুরের প্লান করেছে । ইমন এমন একটা ছেলে যার কাছ থেকে যত দুরে থাকা যায় তত ভাল । বিশেষ করে মেয়েদের ।
কিন্তু নিশি যেতে চাইল গাজীপুর । সে নাকী কোনদিন গাজীপুর যাই নি ।
আরে গাজীপুর যাবি আমাকে বল, আমি নিয়ে যাই । ইমনের সাথে যাওয়ার দরকার কি ?
এমনিটেই নিশি ক্লাসের সবার থেকে আমার সাথেই বেশি কথা বলে । যদিও সম্পর্কটা ওতটা ঘনিষ্ঠ হয় নি । আর হবেই না কিভাবে । এমবিএ ক্লাসে যোগ দিয়েছি মাত্র দুমাসের মত হল ।
আমি নিশি কে গিয়ে বললাম
-তোমার গাজীপুর যাওয়া ঠিক হবেনা ।
আমি ভেবেছিলাম নিশি আমার কথা মেনে নিবে । কিন্তু ও যা বলল তার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না ।
-দেখ অপু, আমি কোথায় যাবো বা না যাবো সেটা আমি তোমার কাছে কৈফৎ দিবো না । আর তোমাকে আমি এডভাইস দিতে বলি নি।
আমি কেবল থ হয়র গেলাম ।
আমি ভেবেছিলাম আমরা বন্ধু । ওকে ভাল পরামর্শ দেওয়া আমার দায়িত্ব । কিন্তু আমি কেবল বাক্য হারা হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে ।
আরম কোন কথা বললাম না । চুপচাপ চলে এলাম । তারপর ওকে ঐ মেসেজটা পাঠালাম ।
-দোস্ত চল একটু নামতে হবে ?
মামুনের কথা শেষ মনে হয় । আমার সামনে এসে বলল কথাটা ।
-কোথায় নামবো?
-এইতো ২৭ নাম্বারে । একটা কাজ আছে ।
-কি কাজ?
-আরে এতো কথা বলিশ কেন ? চল না ।
বাস ততক্ষনে ২৭ নম্বরে চলে এসেছে । রিক্সা নিয়ে নন্দনের সামনে চলে এলাম । মামুন বলল
-তুই নন্দনের সামনে একটু দাড়া আমি এখনই আসছি ।
-তুই কোথায় যাচ্ছিস ? আমার কিন্তু ভাল লাগছে না ।
-একটু দোস্ত একটু । আমি এখনই আসছি ।
এই বলে মামুন রিক্সা নিয়েই চলে গেল ।
বুঝলাম না মামুনের আবার কি কাজ পরে গেল । আরে একটু আগে না নিশি ফোন দিয়েছিল । নিশি আবার এখানে আসতে বলেনি তো ?
এই কথাটা তো আগে মনে আসে নি! যদি তাই হয়, মামুনের খবরই আছে ।
নাহ ! মামুনের বিশ্বাস নাই । নিশির কথায় ও এমনটা করতেও পারে । এখানে দাড়ানো আর ঠিক হবে না । আমি বা দিকে ঘুরে হাটা দিবো ঠিক এমন সময় দেখি নিশি আমার সামনে দাড়িয়ে ।
শালার মামুন রে....
তোর আজকে খবর আছে ।
আমি নিশিকে না দেখার ভান করে চলে যেতে চাইলাম । কিন্তু পারলাম না । নিশি আমার পথ রোধ করে দাড়াল ।
-আমি বাসায় যাবো ....
-বাব্বাহ এতো রাগ? যাবে তো , আমি তো বাধা দেবো না ।
-তুমি বাধা দেবার কেউ নও যে চাইলেই দিতে পারবে ।
নিশি কেমন যেন একটু হাসি দিল । বলল
-বুঝতে পারছি তুমি আমার উপর খুব রেগে আছো । কোন ভাবেই কি আমার উপর রাগটাকে কামানো যায় না ।
আমি কোন কথা বলি না ।
-আচ্ছা সরি বলছি ।
আমি তবুও চুপ ।
-আচ্ছা এই দেখ আমি কানে ধরছি ।
এই বলে নিশি সত্যি সত্যিই কানে ধরলো । মিষ্টি করে হেসে বলল
-প্লিজ এবার তো মাফ করে দাও ।
এই মেয়ে গুলা কি ঢং না করতে পারে ! কিন্তু আমার স্বীকার করতেই হবে এই সব ঢং য়ে কাজ হয় । কারন আমি বুঝতে পারছি নিশির উপর যে রাগটা ছিল তা এখন কমতে শুরু করেছে ।
নিশি আরো একটু কাছে এসে বলল
-আমি আসলে বুঝতে পারি নি তুমি রেগে যাবে । আমি সত্যিই খুব সরি ।
এবার নিশির মুখটা দেখে আামর মনে হল নিশি সত্যি সরি ফিল করছে ।
নিশি আবার বলল
-দেখ, দেখ একটু ভুল হয়েই গেছে । সরি তো বলছি । আমি চাই না আমার এই ভুলের জন্য আমাদের সুন্দর বন্ধুত্ব্য নষ্ট হোক ! তবে..
আমি বললাম
-তবে.....।
নিশি একটু হাসল । বলল
-আমি কিন্তু গাজীপুর যাবোই
যে গাজীপুর যাওয়া নিয়েই এমনটা হল সেই গাজীপুরত যাবি তুই । যা তুই জান্নামে যা..........
নিশি আর একটু হেসে বলল
-আমি গাজীপুর যাবো তোমার সাথে । নিয়ে যাবো তো??
আসলেই এই মেয়েগুলা এমন ঢং জানে !!
আমি কেবল একটুা হাসলাম ।
আমার কথাঃ খুব ছোট্ট একটা গল্প একটা । গল্পটা লেখার শানে নূজুলটা বলি ।
কাল রাতে টিউশনি থেকে আসছিলাম । বাসে বসেছি । দেখলাম কলাবাগান থেকে দুজন ছেলে উঠল । আমার থেকে একটু বড়ই হবে । আমার পাশেই বসল । হাবভাবে বুঝলাম দুজন বন্ধুই হবে । যা হোক আমার পাশের ছেলেটি মোবাইল বের করর কাকে যেন এসএমএস করলো ।
আমার আসলে টাচ্ স্ক্রিন মোবাইলের উপর খানিকটা দূর্বলত আছে । কারো হাতে দেখলে আমি তাকায়ে দেখি সেট টা কেমন । ছেলেটা মেসেজে লিখছিল
when some1 react like this.....
আমি আর দেখতে পারি নাই । একটু পরেই দেখলাম অপর ছেলেটার মোবাইলে কল চলে এসেছে । ছেলেটা বলল
-দোস্ত ফোনটা ধরবো?
কিছুক্ষন পর দেখলাম ছেলেদুটা ২৭ নম্বরে নেমে পরলো । এই হল গল্প লেখার পেছনের গল্প ।আমার বেশ কিছু গল্প এই রকম ভাবে লেখা ।
মানে শুরুটা এভাবেই হয় । তারপর লিখতে লিখতে যায় কোন এক দিকে...
ফেবু লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:২১