somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা এরকম পাগলামীকেই বলে !!!

০২ রা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-ব্যস্ত ?
-একটু !
-তাহলে পরে ফোন দেই ?
-না ঠিক আছে বল ! এক স্যার ক্লাস নিয়ে মাত্র বের হল । আর একজন আসা পর্যন্ত কথা বলি ।
নিশি খুব ভাল করে জানে অপু খুব খুশি হয়েছে কথাটা শুনে । নিশি যখনই ওর সাথে কথা বলে কিংবা নিজ থেকেই ফোন করে তখন অপু অসম্ভব খুশি হয় ।
-দেখা করবা না ?
নিশির মনটা একটু খারাপ হয় । ছেলেটা প্রতিটা দিন কত আগ্রহ নিয়ে প্রশ্নটা করে । আশা করে আজকে নিশ্চই একটা পজেটিভ উত্তর আসবে ।
কিন্তু ও এমন কোন কথা শোনাতে পারে না ।
অপু তবুও রাগ করে না । একটু মন খারাপ করে কিন্তু মুখেও সেটা প্রকাশ করে না ।
বলে ঠিক আছে পাখি তোমার অসুবিধা হয় এমন কোন কাজ আমি করবো না ।
নিশি জানতে চাইল
-তুমি কবে যাবে ?
-কালকে সকালে !
নিশির মনটা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেল । এক সপ্তাহ আগে অপু ঢাকা থেকে এসেছে । নিশি একবারও ওর সাথে দেখা করার সুযোগ পায় নি ।
কি করে পাবে? ও যখন ট্রেনিংয়ে আসে প্রতি বারই বাড়ির কেউ না কেউ ওর সাথে আসে ।
ওকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যায় আবার গেট থেকেই নিয়ে যায় ।
-আজ দেখা করবে?
কিভাবে করবো বল ? আব্বা যে নিতে আসবে ?
-ও !
নিশি বুঝতে পারে অপুর মনটা খারাপ হয়ে গেছে । এতো দিন পর ও ঢাকা থেকে এসেছে কেবল ওর সাথে দেখা করার জন্য ।
আর ও কি করছে ? পরিবারের দোহাই দিয়ে ওর সাথে দেখা কয়ছে না ।
খুব কি অসম্ভব ওর সাথে দেখা করা টা ? নিশি বলল
-মন খারাপ করলে ?
-না ঠিক আছে । সমস্যা থাকলে তো মেনে নিতেই হবে । আর এখন এখন না হোক পরের বার নিশ্চই হবে । তবে ...
-তবে কি ?
-তোমার হাতটা ধরতে খুব ইচ্ছে করছিল পাখি ! একটু যদি ধরতে পারতাম !
নিশি লক্ষ্য করল ওর চোখে পানি চলে এসেছে ! বুকের ভিতরটা কেমন একটা খালি খালি লাগছে । ওর মনে ও যদি অপুর এই সমান্য ইচ্ছাটা পূরণ না করতে পারে তাহলে আজকেই ও দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে ।
নিশি এদিক ওদিক একটু দেখল । স্যার আসতে এখনও দেরী আছে মনে হচ্ছে । এই সুযোগটা কি কাজে লাগানো যায় ?
নিশি আর কিছু ভাবল না । আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে করিডোরের দিকে হাটতে লাগল ।
বারবার আল্লাহর কাছে দোয়া করতে লাগল যেন পেছন থেকে যেন কেউ ডাক না দেয় !
-আছো পাখি !
-এই তো আছি ।
-তোমাদের স্যার এখনও আসে নি ।
-নাহ । আচ্ছা শোন না একটা মজার কথা বলি ।
-বল ।
-জানো আমাদের এখানে একটা নতুন ভবঘুরে টাইপের একটা লোক এসেছে ।
-এতে মজার কি হল ?
অপু হাসল ।
নিশি বলল
-মজার হল আমাদের ট্রেনিং যেখানটাতে হয় ঠিক সেই ঘরের সামনে বসে থাকে চুপচাপ । আর আমরা যখন ট্রেনিং নিতে আসি ঠিক তখনই লোকটা আসে আর ট্রেনিং শেষে আমরা যখন চলে যাই ঐ লোকটাও চলে যায় ।
-বাহ বেশ মজার তো ! মনে হয় তোমাদের সাথে টেনিং নিতে চায় । তা কত দিন ধরে চলছে ?
-এই ছয় সাত দিন ধরে তো দেখছি ।
-তা দেখতে কেমন লোকটা ?
-কেমন করে বলি বল ! লোকটা যে এই গরমের ভিতরও চাদর মুড়ি দিয়ে বসে থাকে ।
-তাহলে তো খুব বেশি সুবিধার লোক মনে হচ্ছে না ।
-হুম ! আমারও তাই মনে হচ্ছে । আচ্ছা আমি এখন রাখি, কেমন ?
-এখনই রাখবে ?
-হুম বাবু রাখতে হবে ।
-আচ্ছা ।
নিশি ফোন টা কেটে দিল । ফোন টা কেটে দিতেই হল । কারন ঐ চাদর মুড়িদেওয়া লোকটার কাছে চলে এসেছে ও ।
পেছন দিক দিয়ে ঘুরে এসেছে যাতে লোকটা টের না পায় । নিশি খুব আস্তে করে লোকটার কাধে হাত রাখল ।
নিশি ঠিক করে এসেছিল খুব রাগ করবে, খুব বকাবকি করবে অপুর সাথে কিন্তু অপুর এরকম হাসি মুখে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ও কিছুতেই রাগ করতে পারল না । কেবল বলল
-এরকম টা কেন করলে ? এই যে প্রতিটা দিন তুমি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তুমি এখানে বসে থাকো , কেন ? এটার কি কোন দরকার আছে ?
অপু কোন জবাব না দিয়ে কেবল একটু হাসল ।
-হাসবে না খবরদার । জবাব দাও । আমি তো প্রথমে বুঝতেই পারি নি । কালকে তুমি যখন চলে যাচ্ছিলে তোমার প্যান্টটা দেখে বুঝেছি । এরকম পাগলামো করার মানে টা কি ?
অপু আবার একটু হাসল । বলল
-হয়তো কোন মানে নেই কিন্তু এই যে তুমি আমার আশেপাসে আছো এর থেকে আনন্দের আর কি কিছু আছে আমার কাছে ! পাখি, আমি কেবল তোমার আসেপাশে থাকার জন্য কেবল সকাল থেকে বিকাল না সারাটা জীবন এখানে বসে থাকতে পারবো ।
নিশি আরো কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু কেন জানি বলতে পারল না । কেবল অপুর দিকেই তাকিয়ে রইল একভাবে ।
এই পাগল ছেলটাকে নিয়ে ও যে কি করবে !
কিভাবে দুরে থাকবে অপুর কাছ থেকে ! খুব ইচ্ছা হল অপুকে একটু জড়িয়ে ধরতে । কিন্তু সেই উপায় নেই এখানে ।
যে কারো চোখে পরে যেতে পারে ! তবুও অপুর হাত টা ধরল । অন্তত এই ইচ্ছাটা ওর পুরণ হোক !


ফেবু লিংক
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১২ বিকাল ৪:১৩
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×