somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি বিকেলের জন্য অপেক্ষা !!

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নিশি কথাটা আবার বলল । মেজাজটা এমনিতেই খারাপ ছিল নিশির কথাটা শুনে আরো একটু বেশি খারাপ হয়ে গেল । বললাম
-তুমি বড় বেশি কথা বল । একবার বললাম না বলতে ইচ্ছে করছে না তবুও শুনতে চাচ্ছ কেন ?
আমি জানি নিশি এই কথায় শান্ত হবে না । আবার জানতে চাইবে । আমি ওকে আরো কঠিন একটা ধমক দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেই ।
-বললে কি হবে ? সব তো ঠিক ছিল । সুমন আর ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার পর থেকেই কেমন গম্ভীর হয়ে গেলে । বল না কি হয়েছে ?
সুমনের গার্লফ্রেন্ড এই শব্দটা শুনে সত্যিই মেজাজটা আরো খারাপ হয়ে গেল । নিশি কে বলল
-এতো প্রশ্নের জবাব আমি তোমাকে দিবো না । তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড না ! আমরা কমিটেড না যে সব কিছু শেয়ার করতে হবে ! চুপচাপ বসে থাকবা তা না হলে সামনে থেকে দুর হয়ে যাবা ।
নিশি আমার ধমক শুনে মন খারাপ করলো । অন্য সময় হলে আমার মনটা নরম হয়ে আসতো । ওকে সরি বলে আবার কথা বলা শুরু করতাম কিন্তু এখন মাথাটা গরম হয়ে আছে ।
-একটু বল না ?
নিশি আবার অনুনয় করলো ।
দুর !!
এই প্যানপ্যান করা মেয়েকে নিয়ে আর পারা যাবে না । রিক্সায়ালাকে থামতে বললাম ।
-মাহিব শোন প্লিজ ।
-চুপ একটা কথা না । রিক্সা করে সোজা হলে যাবা । আর এক সপ্তাহ আমার ধারে কাছে আসবা না খবরদার ।
নিশির চোখে এইবার পানি দেখলাম । মেয়েটার যদিও কোন দোষ নাই তবুও এখন এসব কিছুই আমার মাথায় ঢুকছে না । মাথার মধ্যে কেবলই সুমনের গার্লফ্রেন্ডের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে ।
সুমনের গার্লফ্রেন্ড !
সুমনের গার্লফ্রেন্ড অরিন ।

কদিন থেকেই সুমন বন্ধু মহলে খুব হইচই করছিল । আমাদের যে ফ্রেন্ড সার্কেল টা আছে তার মধ্যে কেবল সুমনেরই কোন গার্লফ্রেন্ড ছিল না । আমারও অবশ্য নেই । কিন্তু বন্ধুদের সবাই নিশি আর আমাকে কাপল মনে করে ।
যা হোক সুমন কত সপ্তাহে এসে বলল যে সে একজনের সাথে রিলেশন করেছে । আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে । সেই সুবাদেই আজ দেখা হওয়া ।
কিন্তু যখন আড্ডায় সুমন তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে হাজির হল আমি কেবল নাই হয়ে গেলাম মেয়েটা কে দেখে !
একে বারে নাই !
সবার আগে আমার সাথেই পরিচয় করিয়ে দিল ।
-এ হচ্ছে আমার সব চেয়ে কাছের বন্ধু মাহিব ।
আমি যেমন অরিনকে দেখে চমকে গিয়েছিলাম অরিনের চোখ দেখে মনে হল ও ঠিক একই ভাবে চমকে গিয়েছে আমাকে দেখে ।
কিন্তু দ্রুত সামলে নিল নিজে কে । একটু হেসে বলল
-হ্যালো ভাইয়া ।
আহ ।
সেই কন্ঠস্বর !
সেই হাসি !
এতোদিন পরেও হাসিটা চিরোচেনাই মনে হল ।
অরিন স্বাভাবিক আচরন করলেও আমি কেন জানি স্বাভাবিক থাকতে পারছিলাম না । কাজ আছে এই অজুহাতে চলে এলাম আড্ডা থেকে । আর আমি চলে আসলে নিশিতো আসবেই আমার পিছন পিছন ।

সকাল সকালই আজ শুয়ে পড়লাম । অন্যদিন একটা দুইটার আগে কখনই ঘুমাই না কিন্তু আজ কিছুই ভাল লাগছিল না । বারবার কেবল পুরনো কথা গুলোই মনে পড়ছিল । তখন সবে মাত্র সিগারেট খেতে শিখেছি । কিন্তু নিজ এলাকায় সিগারেট খাওয়ার মত এতোটা দুঃসাহস তখনও হয়ে ওঠে নি ।
বাবা সম্মানীয় ব্যাক্তি ছিল । আমাকে কেউ সিগারেট খেতে দেখলেই রিপোর্ট সোজাসুজি বাসায় পৌছে যেত । তাই সিগারেট খেতে হলে পাশের এলাকায়ে যেতাম প্রায় । ওখানে আমার বন্ধুও ছিল কয়েক জন । একদিন সিগারেট খেতে গিয়ে দেখি প্যাকেট খালি । তখনও বন্ধুদের কেউ আসে নি । ভাবলাম ওদের আসার আগেই আমি কিনে এনে টানতে থাকি । তারপর না ওরা আসলে ওদের কাছ থেকে নেওয়া যাবে ।
কাছেরই একটা মুদি দোকানে গিয়ে উকিঝুকি দিতে লাগলাম কিন্তু দোকান খালি । কোন লোক নাই । চলে আসবো বলে ঘুরেছি ঠিক তখনই পিছন থেকে চিকন সুরে কেউ বলে উঠল
-ভাইয়া কি লাগবে ?
যাক এতোক্ষনে দোকানদার এলো !! দোকানদারের উপর খানিকটা বিরক্ত লাগলই এতো সময় দোকান ফাকা রেখে কোথায় ছিল !!
আমি ঘুরে দাড়াতেই স্তদ্ধ হয়ে গেলাম । আমি তখন ঠিক মনে পড়ল না এমন মিষ্টি চেহারা আমি আর কোন দিন দেখেছি কিনা ।
কিছুক্ষন একভাবে তাকিয়েই কেবল রইলাম মেয়েটার দিকে ।
-ভাইয়া কি লাগবে ?
মেয়েটি আবার জানতে চাইল ।
-হুম ?
আমি বাস্তবে ফিরে এলাম ।
-কিছু নিবেন ভাইয়া ?
হুম! নিবো মানে তোমার মনটা নিবো । আমি জানি না এই অনুভূতির নাম কি তবে এই টুকু নিশ্চিত যে প্রথম দেখাতেই মেয়েটাকে আমার ভাল লেগে গেল ।
খুব বেশি ভাল লেগে গেল ।
আমি হঠাৎ লক্ষ্য করলাম আমার বুকের ভিতরটা খুব বেশি পরিমান লাফাচ্ছে । আমার হাটুর নিচে কেমন একটা কেমন একটা দুর্বল ভাব অনুভব করলাম ।
আমি কোন রকম বললাম সিগারেট দেওয়ার জন্য ।
মেয়েটি সিগারেটের প্যাকেটটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিতে বলল
-আমি বুঝি না আপনারা ছেলেরা কেন যে সিগারেট খান ? কি এমন আছে এর ভিতর ? এর থেকে জুস খেলেই পারেন ।
আমার মাথায় তখন আর কিছু নাই । কেবল মেয়েটার চেহারাটা ভাসছে ! আর মেয়েটার কথা গুলো ! কি মিষ্টি করেই না মেয়েটা কথা গুলো বলল !!
কি মেয়েটা সিগারেট পছন্দ করে না ?
মেয়েটা সিগারেট পছন্দ করে না !
আমি বললাম
-শুনুন ।
-জি ।
আমি সিগারেটের প্যাকেট টা ফেরৎ দিয়ে বললাম
-আমাকে এক প্যাকেট জুসই দিন ।
আমার কথা শুনে মেয়েটা একটু চমকালো । কিছু যেন বোঝার চেষ্টা করলো যে আমি ঠিক ওর সাথে ইয়ার্কী করছি কি না !!
একটু যেন খুশিও হল । একটা ছেলে কেবল তার এক কথাতেই সিগারেট ফেলে দিয়ে জুসের প্যাকেট নিল এটা খুশি হবার মতই কথা ।
আমি যখন প্যাকেট টা হাত দিয়ে নিতে গেলাম একটু যেন স্পর্শ লাগল মেয়েটার হাতের সাথে !
কি এক বিদ্যুৎ খেলে গেল আমার পুরো শরীর জুড়ে ।
আমি কেবল তাকিয়েই রইলাম মেয়েটার দিকে ।
ফিরে যাবার সময় যতবার ফিরে তাকালাম ততবারই দেখলাম মেয়েটা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে ।

ফোন বাজছে ।
অতীত থেকে বাস্তবে ফিরে আসতে হল । নিশির ফোন । একবার মনে হল ফোনটা না ধরি । কিন্তু ফোন ধরেও উপাই নাই । যতক্ষন না ফোন ধরবো নিশি বিরাম হীন ভাবে ফোন করেই যাবে । ফোনটা ধরলাম ।
-বল ।
-মন ভাল হয়েছে ?
-কি কারনে ফোন দিয়েছ বল ?
- মাহিব তোমার কি হয়েছে আমাকে বল প্লিজ । একবার বল !
-শোন তোমার সাথে এখন কথা বলতে ভাল লাগছে না ।
-আমি জানি কিছু একটা প্রবলেম হয়েছে । আমার সাথে শেয়ার কর । তোমার ভাল লাগবে ।
এবার আমার মেজাজ টা সত্যিই খারাপ হল ।
-শোন মেয়ে , একটা কথা তোমার কানে যায় না নাকি মাথায় ঢোকে না ? আমি তোমার সাথে এটা শেয়ার করতে চাই না ।
নিশি চুপ করে থাকলো । আমি নিশ্চিত এখন ও কাঁদবে । আমি বললাম
-দেখো আমার মেজাজটা এখন সত্যিই খারাপ । কি বলতে কি বলছি । তুমি আর এখন ফোন দিও না ।
এই বলে আমি ফোন রেখে দিলাম ।
ফোন রাখার সঙ্গে সঙ্গে আবার ফোন বেজে উঠল । আমি ভাবলাম নিশি হযতো আবার ফোন কয়েছে । খুব বড় একটা ধকম দেওয়ার প্রস্তুতি নিলাম কিন্তু ফোন স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার ।
কে ফোন দিল ?
নিশির ফোন হবার সম্ভাবনা কম । আমি যতদুর জানি মেয়েটা এখন বালিশে মুখ লুকিয়ে অথবা বাধরুমে গিয়ে কাঁদবে ।
তাহলে ?
ফোন রিসিভ করলাম ।
-ইয়েস !
-মাহিব ! আমি ...
কিছুক্ষনের জন্য চুপ হয়ে গেলাম । মেয়েটির নাম বলার দরকার হল না । আমি কেবল অবাক হলাম এই ভেবে যে এতো গুলো দিন পার হয়ে যাওয়া সত্তেও মেয়েটির কন্ঠস্বর আমি ভূলি নি ।
আশ্চর্য !

ঐ দিনের পর আমার মনের শান্তি যেন সব উড়ে গেল । সারা দিন কেবল ঐ মুদি দোকানে দেখা হওয়া মেয়েটার কথাই ভাবতে লাগলাম । দুদিনের ভিতরেই মেয়েটার নাম পরিচয় সব খুজে বের করে ফেল্লাম ।
মেয়েটার নাম অরিন !
আমার বছর খানেকের জুনিয়র । আমি আর যেন নিজেকে ধরে রাখতেই পারছিলাম না । সারা দিন কেবল ঐ দোকানের আসে পাশেই ঘোরাঘুরি করি কিন্তু ঐ অরিনের দেখা আর পাই না । কেবল এক বুড়ো মত লোক কে দেখতে পাই দোকানে বসে আছে ।
তবে ভাগ্য খুব বেশিদিন বিপক্ষে থাকলো না । একদিন ওদের এলাকা থেকে আসছি দেখি আমার ঘুম হারাম করা মেয়েটি আমার এলাকার এক ছোট বোনের সাথে হেটে আসছে ।
আর দেরি না করে ঐ ছোট বোনকেই গুরু দায়িত্ব দিলাম । তারপর কদিন যে কি উত্কন্ঠায় কাটলো !!
তিন দিন পর আমার মোবাইলে এক আননোন নাম্বার থেকে ফোন এল । রাতের বেলা । সবে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়েছি । ফোনটা এল তখনই ।
-ইয়েস ! কে বলছেন ।
-মাহিব ভাইয়া বলছেন ? আমি ...
যদিও এখনও ফোনে আমি তার কন্ঠস্বর কোনদিন শুনিনি কিন্তু আমাকে বলে দিতে হল না যে কে ফোন দিয়েছে ।

নিজেকে সংযত করলাম ঐদিন কার পরস্থিতি আর আজকের পরিস্থিতি এক না । ঐদিন আমি যেরকম উচ্ছাসিত হয়েছিলাম আজ সেরকমটা হওয়া মানায় না । আমি বললাম
-কেন ফোন দিয়েছ ?
অরিন কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর বলল
-তোমাকে আজ দেখে আমি আসলেই খুব অবাক হয়েছি জানো ? আমি কখনও ভাবি নি তোমার সাথে আবার দেখা হয়ে যাবে ।
অরিনের কথা বলার ধরন দেখে আমি অবাক না পারলাম না । এমন একটা ভাব যেন কিছুই হয় নি ।
-তুমি কি এই কথা বলার জন্য আমাকে ফোন দিয়েছ ?
-না মানে ! কাল তোমার সাথে একটু দেখা করতে চাই ।
-তুমি চাইলেই যে আমি দেখা করবো এটা তুমি কিভাবে ভাবলে ?
-একবার দেখা করলে কি এমন হবে ? তোমার সাথে কয়টা কথা ছিল । তোমার বন্ধু সুমনের ব্যাপারে ।
-সুমনের ব্যাপারে ??
সুমনের ব্যাপারে কি কথা থাকতে পারে ? ব্যাটা সুমন একটা আস্ত গাধা । প্রেম করার আর মানুষ পাই নি জগতে ! অবশ্য সুমনকে দোষ দিয়ে আর লাভ কি ! আমি নিজেও তো একই ভুল করেছিলাম ।

ঐ দিনের কথার পরে থেকে অরিন ছাড়া যেন জীবনে আর কিছুই ছিল না । সকাল বিকাল যেতাম অরিনদের দোকানে । অরিন ঐ সময়টাতেই বসতো ।
আহা কথা বলতাম কত !!
ও যখন কলেজে যেত ওর যাওয়ার পথে কিংবা আসার পথে ! মাঝে মাঝে ও আসতো আমার কলেজের সামনে । দিন গুলো আসলেই ভাল কাটছিল । কিন্তু ভাল দিন খুব বেশি যায় না ।
একদিন আমার এক বন্ধু আমার মোবাইলে একটা ভিডিও ক্লিপ ট্রান্সফার করে বলল
-দেখ মামা একেবারে দেশি মাল ।
আমি ভিডিওটা ওপেন করে দেখলাম একটা কলেজের ড্রেস পরা একটা মেয়ে একটা ছেলে কে কিস করছে ।
মেয়েটাকে কেমন চেনা চেন .......
আমি মনের কথা মনেই রয়ে গেল । আমি আমার চোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না । ক্লিপের মেয়েটা আর কেউ না আমার গার্লফ্রেন্ড অরিন । অরিনের সম্পর্কে আরো খোজ খবর নিয়ে যা কিছু জানতে পারলাম তা জানে আমি এবার সত্যি সত্যিই নাই হয়ে গেলাম ।
কেবল আমি তার একা বয়ফ্রেন্ড না আরো গোটা কয়েক বয়ফ্রেন্ড তার আছে ।
আর ...
আমি কিছু ভাবতে পারলাম না ।

অরিন আজ সাদা রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরেছে । স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে অরিন আগের থেকে আসলেই আরো সুন্দর হয়েছে । যদি ওর আসল চেহারাটা আমি না জানতাম তাহলে হয়তো অরিনের দিক থেকে চোখ ফেরানো আমার পক্ষে সহজ হত না ।
কিন্তু ওর ভিতরটা এতো কুৎসিত যতটা ওর বাইরের রুপটা সুন্দর !
আরিন আমার সামনে এসে আমাকে বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে দেখলো । তারপর বলল
-তুমি আগে থেকে আরো সুন্দর হয়েছে , জানো ?
-সুমনের কি কথা বলবা বল ।
অরিনের কোন কথা না বলে হাসলো ।
-মাহিব তোমার প্রতি আমার সব সময় একটা আলাদা টান ছিল জানো ?
-মানে ?
এই মেয়েটা কি বলতে চাইছে !!
-মানে তুমি একমাত্র ছেলে যে আমাকে উপেক্ষা করে চলে গিয়েছিলে । আর কোন ছেলে পারে নি । আমার সব কথা জানার পরও না । সবাই আমার পিছন পিছন ঘুরেছে । তোমার ঐ বন্ধু সুমনও ঘুরবে ! তাই ওকে আমার ব্যাপারে বলে কোন লাভ নাই । বুঝেছ ?
আমি ঠিক বুঝলাম না অরিন আসলে ঠিক কি বোঝাতে চাইছে । আমি তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে !
অরিন আবার বলল
-আমার আকর্ষন সে এড়াতে পারবে না । সে তো আর তুমি নও ! তবে আমি তোমার প্রতি হতাশ !
আমি আবার কিছু না বলে কেবল তাকিয়ে রইলাম অরিনের দিকে !
-আমি ভেবে পাই না তুমি নিশির মত একটা মেয়ের সাথে প্রেম করলে শেষ পর্যন্ত !
আমি অনুভব করলাম আমার বুকের ভিতয়ে কেমন একটা ক্রোধ বোধ হচ্ছে ।
-দেখতো তো একটুও ভাল না । আমার তুলনায় তো পেত্নী বলা চলে ।
আমার ভিতরটা যেন বিশ্ফোরন হল ।
এই বেশ্যার বেশ্যা বলছে কি ?
আমার পরীর মত নিশিকে বলছে ...........
এতো বড় সাহস !
আমার হাত শক্তই হয়ে ছিল সোজাসুজি অরিনের গালে কষে একটা চড় মারলাম ।

ক্লিপ দেখা আর অরিনের আসল কথা জানার পর নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারি নি । সোজাসুজি ওর কলেজে গিয়ে হাজির হলাম । ওকে কলেজের পিছনে ডেকে নিয়ে এসে ক্লিপ দেখালাম ।
ও কিছু না বলে মাথা নিচ করে দাড়িয়ে রইল কিছুক্ষন । আমার তখন রাগে সারা শরীর জ্বলছে ।
এই মেয়েকে আমি ভালবেসেছি এটা ভাবতেই আমার নিজের উপরেই রাগ হচ্ছিল । অরিন কিছু বলতে যাচ্ছিল আমি আর সহ্য করতে পারলাম না । অরিনের গালে পরপর দুটো চড় মেরে ওখান থেকে চলে আসলাম । আমি আর কিছু ভাবতেই পারছিলাম না ।
আমার পুরো পৃথিবী যেন ধ্বংশ হয়ে গেছে । এতো বিশ্বাস করে যাকে ভালবাসলাম সে এমন বের হল ।

সেদিন অরিনকে যে ভাবে চড় মেরেছিলাম আজ তার থেকে বেশি জোরে মেরেছি । আসলেই কিছুটা জোরেই মেরেছি । নিজের হাতটা কেমন ব্যাথা করতে লাগল ।
অরিন কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়েই রইলো । চোখে খানিকটা যেন অবিশ্বাস !
-তোর মত একটা মেয়ের সাথে নিশির তুলনা চলে না । আর একবার ওকে একটা বাজে কথা বলেছিস তো একেবারে মাটির নিচে পুতে ফেলবো ।

আমি আর দাড়ালাম না ওখানে । আসলে এতো দিন পর নিশির প্রতি টান টা আমি বুঝতে পারলাম । ওর ব্যাপারে একটা বাজে কথা আমার সহ্য হল না ।
অরিন কে এই ব্যাপারে একটু ধন্যবাদ দিতেই হয় । তা না হলে ঠিক বুঝতে পারতাম ওর প্রতি আমার ফিলিংসটা কেমন !
ইস!! বেচারীকে খামোখা কত কষ্টই না দিয়েছি ।
ওকে একটা ফোন দেই ।
-হ্যালো ।
এতো দিন ফোন করলেই নিলি আমাকে আগে জিজ্ঞেস করতো যে মন ভালো ? আজ আমি বললাম
-মন ভালো তোমার ?
কিছুক্ষন নিরবতা ! আমি আবার বললাম
-কি মন ভাল তোমার ?
-হ্যা ।
নিশির কন্ঠে কেমন একটা উচ্ছাস ।
-খুব ভাল ।
আমি বললাম
-আজ বিকালে আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে ?
-বিকালে ? আমি এখন আসি ?
না এখন আসতে হবে না । বিকালে আসো আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো । ঠিক আছে ?
-আচ্ছা !
-আর ঐ নীল রংয়ে চুড়িদার পরে এসো ! আর সম্ভব হলে মেহেদী দিও হাতে ! সম্ভব !!
নিশি বলল
-খুব সম্ভব !!

আমি আর কিছু বললাম না । কিছুটা কৌতুহল বিকেলের জন্য বাকী থাকুক ! নিশি নিশ্চই খুব খুশি হবে ! ও অলরেডি কত খানি খুশি এটা আমি ওর কন্ঠস্বর শুনেই আমি বুঝতে পারছিলাম !
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যে নিশিকে বিনা কারনে কষ্ট দিবো না ! আর সব থেকে বড় কথা সুমন গাধা টাকে আগে থেকে সাবধান করতে হবে !!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:০৩
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×