somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমের নয় একটি ভালবাসার গল্প!!

০১ লা মে, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-ভাইয়া, আমার ভয় লাগছে !
সাদির নিজেরও ভয় করছে ! যেই পরিস্থিতে ওরা পরেছে এতে সবারই ভয় লাগার কথা ! সাদি আস্তে করে নিজের স্কেটিং সু টা খুলে ফেলল ! কিন্তু একটু একটু চাপ লাগতেই বরফ পৃষ্টের ফাটল যেন আর একটু বাড়লো !
সাদির দেখা দেখি মিমি যখন নিজের স্কেটিং সু টা খুলতে যাবে সাদি বলে উঠল
-না ! খুলবি না !
মিমি খুলল না ! কেবল নিচর দিকে তাকালো একবার ! দেখতে পেল আস্তে আস্তে বরফ পৃষ্টের ফাটল বাড়ছেই ! একটু নড়াচড়া করার সাথে সাথে বাড়ছেই ! যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে নিচে পড়টে পারে সে ! আর নিচে পড়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু !
মিমির এখন কান্না আসছে ! মিমিই ওর ভাইয় সাদিকে নিয়ে এসেছে এখনে স্কেটিং করার জন্য ! বনের ভিতর একটা বড় লেক এটা ! পানি জমে স্কেটিং করার মত হয়েছিল ! কিন্তু এতোটা শক্ত হবে যে ওদের ভার স হ্য করতে পারে ! প্রথম প্রথম ওরা কেউই বুঝতে নাই ! কিন্তু যখন মাঝ বরাবর এসে হাজির হল তখন আসলে ব্যাপার টা বুঝতে পারলো যে এখনে স্কেটিং করা নিরাপদ না ! কিন্তু ততক্ষনে দেরি হয়ে গেছে ! মিমি মাঝখানে চলে গেছে !
আর তখন থেকেই ফাটল শুরু হয়েছে ! যেকোন সময় মিমি নিচে ভেঙ্গে পড়তে পারে !
সাদি আবার বলল
-তোর কি ভয় লাগছে
মিমি কোন মতে চোখের জল আটকে রেখে বলল
-হুম ! ভয় লাগছে !
-ভয় কি রে ! আমি আছি না ! আমি তোকে কিছু হতে দিবো না ! আমি তোর পাশে আছি !
-তুমি তো প্রতিবারই বল কিন্তু থাকো না তো !
-না ! এবার থাকবো ! তুই দেখিস এবার থাকবো !
এই বলে সাদি আর একটু সরে গেল ! একটু ফাটল বাড়লো ! সাদি জানে ও মিমি থেকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে আসে ! কিন্তু বেশি নড়া চড়া করলে সেটাও খুব বেশিক্ষন টিকবে না !
সাদি একটু একটু করে মিমির দিকে এগুতে লাগলো ! যেকোন ভাবেই মিমিকে ঐ জায়গা থেকে সরাতে হবে ! সাদি ভাবলো যে ওর পায়ে যেহেতু স্কেটিং সু আছে কোন মতে একটা ধাক্কা মারতে পারলেই ও দুরে সরে যাবে !

সাদি খুব আস্তে আস্তে এগোতে লাগলো ! যত বারই ওর পা বরফ পিষ্ঠের ইরপ পরছে ততবারই ও বরফ ফাটার আওয়াজ পাচ্ছে ! যে কোন সময় ওর পায়ের নিচের পৃষ্ঠটা ভেঙ্গে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে মিমিকে বাচানোর আর কেউ থাকবে না ! তবুও এভাবে বোনটা কে চোখের সামনে মরতে দেখতে পারে না !
সাদি এগোতে থাকে ! আর মাত্র কয়েক হাত !
এই তো !
এই তো চলে এসেছে ! সাদির বুকটা কেমন কাঁপতে থাকে ! তবুও সে মুখে হাসি নিয়ে থাকে ! কারন ওর মুখ বেজার দেখলে মিমি নিজেও আশা হারিয়ে ফেলবে ! যেভাবেই হোক মিমির মনবল টিকিয়ে রাখতে হবে !
সাদি বলল
-শোন মিমি আজকে যখন বাসায় যাবো তখন কিন্তু তোর জমানো চকলেট থেকে আমাকে ভাগ দিতে হবে !
-হুম দিবো !
-আর সেদিন যে তোকে পাশের বাড়ির তমা কে একটা চিঠি পৌছে দিতে বলেছিলাম সেটাও দিতে হবে !
-হুম ! কিন্তু আপু যদি বকে !
-বকলে, বকা খাবি ! সমস্যা কই ! ভাইয়ের জন্য একটু বকুনি খেতে পারবি না ?
-হুম পারবো ! তাহলে তুমিও কিন্তু আমাকে তোমার সাথে করে মাঠে নিয়ে যাবে !
-আচ্ছা !
সাদি দেখলো মিমি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে ! এই তো !
আর এক হাত !
মাত্র এক হাত !
ঠিক তখনই সাদি বড় রকমের ফাটলের আওয়াজ পেল !
নাহ আর রক্ষা নাই !
সাদি ঐ অবস্থায় লাফ দিল মিমি কে লক্ষ্য করে ! তবে ওকে ধরার জন্য না ! ওকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য !
সাদির ধাক্কা খেয়ে মিমির শরীর টা খানিকটা উড়ে গিয়ে পড়লো কিছু দুরে ! তারপর পিছলে চলে গেল আরো বেশ খানিকটা দুরে !
মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই ঘটলো ঘটনা !
সাদি কেবল দেখলো তার বোনটা নিরাপদ দুরুত্বে চলে গেছে ! আর কিছু দেখতে পারলো না ! পায়ের নিচের বরফ পৃষ্ঠ আর ভার স হ্য করতে পারলো না ! ভেঙ্গে পড়লো !
সেই সাথে সাদিও !

একটু দুরে দাড়িয়ে থাকা মিমি কেবল তার ভাইকে নিচে তলিয়ে যেতে দেখলো ! তবুও একটা বারের জন্য মিমি দেখলো তার ভাইয়ের মুখে কোন মৃত্যুর ভয় নাই ! সেখানে কেবল একটা প্রশান্তির ছায়া !!

(একটি মুভির দৃশ্য থেকে অনুপ্রাণিত)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×