somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ অনীনদিতা

২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-তুমি কেবল প্রেমের গল্প কেন লেখো ?
অনীনদিতার এমন প্রশ্ন শুনে একটু অবাক হতে হল ! যে মেয়ে আমার লেখা প্রেমের গল্প পড়েই আমার জন্য পাগল হয়েছে সেই মেয়ে যদি বলে আমি কেন কেবল প্রেমের গল্প লিখি তাহলে তো একটু অবাক হতেই হয় !
আমি অনীনদিতা কে বললাম
-আমি প্রেমের গল্প ছাড়া যে আর কিছু লিখতে পারি না !
-কেন পারো না ?
-আরে এটা কেমন প্রশ্ন হল কেন পারো না ? পারি না তাই পারি না !
-আচ্ছা শুনো আমি তোমাকে একটা গল্পের থিম দেব তুমি সেটা লিখবা ! কেমন ?
যদিও আমার গল্পের অভাব নাই তবুও বললাম
-আচ্ছা বল ! তবে এটা প্রেমের গল্প তো !
-আরে না ! প্রেমের না । প্রেমের গল্পের থিম তো তোমার কাছে আছে । আমি তোমাকে অন্য একটা থিম দেব !

আমি একটু বিরক্ত হলাম ! কিন্তু সেটা প্রকাশ করলাম না ! আসলে প্রেম ভালবাসা ছাড়া অন্য কোন গল্প লিখতে কেন জানি আমার ঠিক ভাল লাগে না ! মানে ঠিক মত শান্তি পাই না ! তবুও অনীনদিতার কথায় মন দিলাম ! অনেক দিন ধরে কেবল প্রেমের গল্পই লিখছি । একটা এক ঘেয়ে ভাব চলে এসেছে । আমার যে কয়জন পাঠক আছে তারাও বলছে যেন অন্য কিছুও সাথে সাথে লিখি !
দেখা যাক চেষ্টা করে পারা যায় নাকি ?
আমি বললাম বল
-শুনো এই হবে একটা মেয়ের গল্প !
-আরে আমি প্রায়ই লিখি মেয়ের গল্প ! আর আমার সব গল্পে তো একটা করে মেয়ে থাকেই !
-আহা ! শুনো না ! এই মেয়েটা সব মেয়ের মত না !
-মানে কি ? সব মেয়ের মত না বলতে তুমি কি বলতে চাইছো ? তুমি কি ....
-অপুপুপুপুপু....... ফাজলামী করবানা ! একটা চড় খাবা ! আগে কি বলছি শুনো মন দিয়ে !
আমি হেসে উঠলাম । বললাম
-ফাজলামীর কি করলাম ? আর আমি কি কিছু বলেছি ! তুমি কি বুঝে নিয়েছো ?
এবার অনীনদিতার কন্ঠে একটু উত্তাপ !
-শুনো তোমার "ক" শুলেই আমি বুঝে যাই তুমি কি বলবা ? ফাজিল কোথাকার ! চুপচাপ শোন কি বলি !
-আচ্ছা ! আচ্ছা ! আর কোন কথা না । এই চেইন আটকাইাম মুখের ! বল
অনীনদিতা বলতে শুরু করলো !
-শুনো গল্পটা হবে একটা একা মেয়ের মেয়েটা ঢাকার একটা অভিজাত একটা এলাকায় থাকে । একা থাকে । ধর মেয়েটার না অনী !
-তোমার নামে নাম ?
-আবার কথা ! চুপ !
-আচ্ছা চুপ!
-মেয়েটা নিজের ফ্লাটে একা থাকে ! কারো সাথে খুব একটা কথা বলে না ! নিজের প্রয়োজন ছাড়া ঠিক বাইরেইও যায় না । কেবল সপ্তাহের ঠিক বৃহস্পতি বারে দেখা যায় মেয়েটা একটা কালো পোষাক পরে বাইরে বের হয় !
-কি রকম কালো পোষাক ? টাইটস ?
-অপু ? তোমার মাথায় তো টাইটস/ল্যাগিংস ছাড়া আর কোন পোষাক কাজ করে না ? তুমি না ! আচ্ছা যাও ! মেয়েটা প্রতি বৃহস্পতিবারে টাইটস পরেই বের হয় ! মেয়েটার একটা কালো বিএমডাব্লিউ আছে সেটাতে করে ! ফিরে আসে বেশ রাত করে ! এভাবেই দিন চলতে থাকে !
-তারপর ?
-তারপর আর পর নাই ! এইটা হল গল্পের শুরু ! এর পর থেকে লেখার দায়িত্ব তোমার !
-আরে এটা আবার কেমন থিম হল ! এর পর থেকে লেখার দায়িত্ব তোমার !!! বললেই হল নাকি? এটলিষ্ট আরো একটু তো বলতে হবে ! তা হলে আমি গল্প কোন দিকে নিয়ে যাবো ?
-তোমার ইচ্ছা ! যেদিকে নিয়ে যাও !
-তাহলে তো আমি আমার পছন্দ মত রাস্তায় নিয়ে যাবো ! তখন তো আর এটা অন্য রকম গল্প হবে না ! আমার প্রেমের গল্প হয়ে যাবে ! দেখো এমন একটা নামও হতে পারে "|কালো ল্যাগিংস পরা মেয়েটি এবং আমার সম্ভাব্য প্রেমের গল্প !"
-হাহাহাহা ! তুমি আসলেই পারো বটে ! আসলে আমারই ভুল হইছে ! তোমার কোন গল্প লিখতে হবে না ! ঠিক আছে ! এখান রাখি ! পরে আবার কথা হবে !
-আরে শুনো না !
-কি ?
-কি কথা ছিল আমাদের ?
-কি কথা ?
-আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল না ?
-হুম ! ছিল তো !
-তাহলে ? কবে দেখা হবে ?
অনীনদিতা কি যেন ভাবলো ! তারপর বলল
-আচ্ছা সামনের বৃহস্পতি বারে ! ঠিক আছে ?
-কোথায় ?
-যেখানে আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল !
-তোমার সাথে আবার আমার কখন দেখা হল !
অনীনদিতা আমার কথা শুনে হাসলো । কেমন জানি একটু রহস্যময় শোনালো ।
অনীনদিতা আমার কথার কোন জবাব দিলো না ! আমি আবার বললাম
-সিরিয়াসলি ? কবে দেখা হল বলত ?
-অনীনদিতা বলল
-কদিন আগে আরমান একটা ফটো এক্সিবিশন করে ছিল মনে আছে ?
-হুম !
-আমি ওখানে যেতাম প্রায় প্রতিদিন ই !
-তাই নাকি ? সেখানে তুমি যেদিন গিয়েছিলে আমিও সেদিন গিয়ে ছিলাম ! তুমি যখন আরমানে সাথে কথা বলছিলে আমি দুর থেকেই তোমাদের দুজনকে দেখছি ! বুঝছো ?
-হুম বুঝলাম ! তো ওখানে আসবো নাকি ?
-হুম ! ঐ আর্ট গ্যারিতে এসো ! ওখানে একটা এক্সিবিশন চলতেছে ! ওখানে এসো কেমন ?
-হুম ! অবশ্যই !

অবশেষে আমাদের দেখা হতে যাচ্ছে । আসলে অনীনদিতার সাথে দেখা হওয়ার ইচ্ছা ছিল অনেক দিন ধরেই ! বিশেষ করে সে আমার গল্পের একজন একনিষ্ঠ পাঠক ! অন্যরা যেখানে আমার সব লেখা গুলো পড়ে আবার পড়ে না কিন্তু অনীনদিতা সব গুলো পড়ে নিয়মিত ভাবে ! আমার চিন্তার সাথে নিজের চিন্তা শেয়ার করে । অন্য পাঠকদের থেকে একটু বেশিই এগিয়ে । আমার খারাপ লাগে না ! আসলে সব লেখকই ছেলে পাঠক থেকে মেয়ে পাঠককে বেশি পচন্দ করে ! আর লুল পাবলিকেরা তো করেই !

-এই অপু ?
আমি অনেক্ষন বেঙ্গল আর্ট গ্যালারীর এদিক ওদি ঘোরাফেরা করছিলাম । মনে মনে ভাবছিলাম অনীনদিতা আজকে আসবে তো ?
চারিপাশে কেমন সব মানুষ জন ঘোরা ফেরা করতেছে । আসলে এই শিল্প বোঝার মত মেধা আমার এখনও হয়ে উঠে নাই ! চারিপাশে সবাই দেখতেছি খুব মনযোগ দিয়ে ছবির দিকে তাকিয়ে আছে । চেহারায় একটা জ্ঞানি জ্ঞানি ভাব আনার চেষ্টা কতেছে ! আমিও জ্ঞানি জ্ঞানি ভাব আনার চেষ্টা করতে লাগলাম ! তখনই পেছন থেকে একটা মেয়ে কন্ঠের ডাক !
পেছন ফিরে তাকিয়েই আমার চোখ চকর গাছ !
অনীনদিতা !
সত্যি কি ও !
ওর ছবি দেখেছি আগেই কিন্তু সরাসরি দেখলাম এই প্রথম ! পুরা ব্লাক পরে এসেছে ! কালো তেই যেন ওর চেহারা টা আরো সুন্দর করে ফুটেছে । কালো কামিজের সাথে কালো ল্যাগিংস !
-তুমি সত্যি তো !
আমি আর একটু কাছে এগিয়ে গেলাম । ওর কাছে যেতেই ওকে আর একটু ভাল করে লক্ষ করলাম ! সব কিছুই পার্ফেক্ত কিন্তু তবুও কেন জানি আমার একটা কিছু মন মত হল না !
আমি ঠিক বুঝতে পারছি না ! কিন্তু কিছু একটা এমন অনীনদিতার ভিতর রয়েছে যেটা আমার ভাল লাগছে না !
কিন্তু কি ?
-কি লেখক সাহেব ? চুপ কেন ?
-আরে চুপ কোথায় ? তোমাকে দেখছি ! তুমি তো আসলেই সুন্দের অনেক ! আমি আসলে ভাবতে পারি নাই তুমি এতো সুন্দের হবে !
-তাই !
এই বলে অনীনদিতা হেসে উঠল !
-আচ্ছা চল ! পাশে একটা কাবারের ঘর আছে ! তোমাকে খাওয়াবো !

অনীনদিতার সাথে পাশের কাবাবের ঘরে গেলাম ! এখান কার কাবা গুলো আসলেই বেশ ভাল !
খাচ্ছি আর কথা বলছি ! যদিও আমি কেবল খাচ্ছি ! অনীনদিতা ঠিক মত খাচ্ছে না ! দুএক পিচ মুখে নিচ্ছে আবার নিচ্ছে না !
-আর তুমি কেন খাচ্ছ না কেন ?
-খাচ্ছি তো !
-কই ? নাকি তুমি খাওয়াচ্ছ বলে কম করে খাচ্ছ ?
-অপু ফাজলামী করবা না ! আসলে আমার খাবার আমার সাথেই আছে ! বাসায় গিয়ে খাবো !
-কি ?
আমার এই কথার জবাব অনীনদিতা ঠিক মত দিল না ! কেবল হাসলো ! আবারও কেন জানি অনীনদিতার হাসিটা আমার কাছে ঠিক মত পছন্দ হল না ! হাসিতে কোন সমস্যা ছিল না কিন্তু কেন জানি আমার ভাল লাগলো না !
কি ব্যাপার এমন কেন হচ্ছে ?
আমার মন বলছে এখন যাওয়া উচিৎ ! অনেকটা সময় অবশ্য পার হয়ে গেছে ! রাতও হয়ে যাচ্ছে । এখন না গেলে হয়তো বাস পাওয়া যাবে না !
আমি অনীনদিতাকে বললাম
-এখন ওঠা উচিৎ !
-মানে কি ?
-মানে কি মানে ? রাত কয়টা বাজে লক্ষ্য করেছো ! এখন না গেলে বাসায় পৌছাতে পারবো না ! দায়োয়ান গেট বন্ধ করে দিলে সারা রাত বাইরে থাকতে হবে !
-সমস্যা কি ? আমার বাসা আছে ! আর আমার সাথে গাড়ি আছে । আমি তোমাকে পৌছে দিবো ! টেনশন নিও না !
-না তবুও ! আমাকে এখন যেতেই হবে !
-আহা ! বস না ! একটু বস !
-দেখো ! আবার দেখা হবে আ সমস্যা নাই তো ! সেদিন না হয় কথা হবে ! আর একদিনেই যদি সব কথা বলে ফেলি তাহলে কেমন হবে ?
আমি উঠে যাওয়ার জন্য একটু ব্যাস্ত হয়ে উঠলেই অনীনদিতা আমার হাত ধরলো ! বেশ ঠান্ডা হাত ওর ! ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি সেখানে একটু রাগের ছোয়া !
ছোট বেলায় অনেক মানুষের ভিতর বাবার অবাধ্য হলে বাবা যেমন চোখ গরম করতো ঠিক সেই রকম ! আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না ! অনীনদিতা বলল
-আচ্ছা চল ! তোমাকে পৌছে দেই !
-অনী এতো কষ্ট করতে হবে না ! আমি চলে যাবো !
-তোমার সাথে অনেকটা সময় থাকবো ভেবেছিলাম । তা তো আর হল না ! অন্তত বাসা পর্যন্ত পৌছিয়ে দিতে দাও ! প্লিজ !
আমি মানা করতে পারলাম না !


-এই কি বিএমডাব্লিউ ?
অনীনদিতা খানিকটা হেসে বলল
-হুম !
-আরে আগে কইবা না ? তাহলে তো আর এতো কথা বলা লাগে না ! আমি কোনদিন বিএমডাব্লিউতে উঠি নাই !
আমি উঠে বসলাম ! ভিতরটা বেশ আরামদায়ক ! অনীনদিতা গাড়িতে উঠতেই আমার আবার সেই অস্বস্তিটা ফিরে এল ! কেন জানি মনে হল আমি ঠিক কাজটা করছি না ! তবুও খুব একটা পাত্তা দিলাম না !

ড্রাইভার গাড়ির ভিতরেই বসা ছিল ! অনীনদিতা বসতেই গাড়ি চলতে শুরু করলো ! অনীনদিতা আবার কথা শুরু করলো !
বেশ কিছুক্ষন পরে মনে এত সময় তো লাগার কথা না ! এতোক্ষনে তো আমার বাসার কাছে পৌছে যাবার কথা । তখনই মনে হল আর ড্রাইভারকে তো বলাই হয় নি আমার বাসা কোথায় !
তাহলে আমি এখন কোথায় ?
আমি যখনই কথাটা বলতে যাবো তখন অনীনদিতা খুব দ্রুত আমার মুখের কাছে একটা রুমাল চেপে ধরলো ! তারপর ......
আর কিছু.....


যখন আবার চেতনা ফিরে এল তখন চোখ মেলে প্রথমে কিছুক্ষন আমি বুঝতে পারলাম না আমি কোথায় আছি ! আস্তে আস্তে সব মনে পড়লো !
অনীনদিতা ?
কি হয়েছে ?
ও এমন করলো কেন ? আমার সাথে এমন করার কোন মানে তো ঠিক বুঝলাম না !
আমি চোখ মেলে দেখি আমি একটা অন্ধকার ঘরে শুয়ে রয়েছি ! অবশ্য একেবারে অন্ধকার ঘর না ! একটা আবছা আলো আসছে কোথা থেকে যেন !
আমি কোথায় ?
একটু নড়তে যাবো তখনই অবাহ হয়ে লক্ষ্য করলাম আমি নড়তে পারছি না ! আমার হাত বাঁধা ! পা নাড়ালোর চেষ্টা করেও ঠিক একই ব্যাপার লক্ষ্য করলাম !
কি হচ্ছে এখানে ?
কেন হচ্ছে ?
আমাকে চিৎ করে শুইয়ে রাখা হয়েছে ! কিন্তু কোন খাটের উপর না ! একটা শক্ত কোন কিছুর উপর !
আমি আসলেই কোন কিছু বুঝতে পারছি না !
কি হচ্ছে ?

হঠাৎই ঘরের লাইট টা জ্বলে উঠলো ! প্রচন্ড আলোতে সারা ঘর আলোকিত হয়ে গেল ! আমি আমার চোখ বন্ধ করলাম কিছুক্ষন ! চোখ খুলে আমি আমার মাথাটা ঘুরিয়ে কোন মতে দেখার চেষ্টা করলাম কে ?
দেখলাম অনীনদিতা !
কিন্তু অনেক কেন জানি একটু অন্য রকম লাগছে ! একটু যেন অন্য রকম ! একুটু যেন বেশি লম্বা আর একটু চিকন বেশি!
অনীনদিতা সুইচবোর্ড থেকে এক প্রকার উড়েই চলে এল আমার কাছে ! আমার মনে হল যেন আমি ভুল দেখলাম !
ও কি সত্যি উড়ে চলে এল ?
সত্যি নাকি ?
না আম চুল দেখেছি ! অনেক্ষন অন্ধকারে থাকার কারনে একঝটকায় আলোতে আসাতে এই রকম দেখেছি !
আমি অনীনদিতাকে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে গিয়েও পারলাম না ! কিছু একটা যেন আমার ঠোট দুটো খুলতে দিচ্ছে না !
হটাৎ অনীনদিতা বলল
-খুব অবাক লাগছে ?
কিছু বলতে পালাম না !
অনীনদিতা আরো আমার মুখের দিকে ঝুকে এসে বলল
-জানো ! আমার না খুব খারাপ লাগছে ! তোমার গল্প আর কোনদিন পড়তে পারবো না এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে ! কিন্তু আমার কিছু করার নাই ! গত সপ্তাহে আমি কাউকে পাই নি ! বুঝো তো ! না খেয়ে আর কত দিন থাকা যায় !
মানে কি অনীনদিতা কি বোঝাতে চাইছে !
গত সপ্তাহে কাউকে পাই নি ! না খেয়ে থাকা !
এসবের মানে কি ?
অনীনদিতা বলল
-জানো আরমানের কবিতাও আমি খুব মিস করি ! কিন্তু ওপর কবিতা থেকে ওর কলিজাটা আরো বেশি মিষ্টি ছিল ! আর একটু ভাল লাগতো খেতে যদি ও সিগারেট না খেত ! সেই দিক দিয়ে তোমারটা অনেক মিষ্টি হবে ! তুমি তো আর সিগারেট খাও না ! হাহাহহাহা !

আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না ! আরমান ! কলিজা !
কি বলছে এই মেয়ে ?
এই মেয়ের মাথা ঠিক আছে তো ?
আরমান ?
কদিন থেকেই আরমানের কোন খোজ পাওয়া যাচ্ছে না !
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে । ওর বন্ধুবান্ধব কারো সাথে কোন যোগাযোগ নাই !
সেদিন ওর ছোট ভাইয়ের পোষ্ট দেখলাম !
ছেলেটা ভাল ছিল ! ভাল কবিতা লিখতো ! মাঝখানদিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল !
আরে আমি আর মানের চিন্তা করছি কেন ? যদি অনীনদিতা যা বলতে তা ঠিক হয় তাহলে তো আমার অবস্থাও ......।
আমি আর ভাবতে পারছি না ! না এমন টা হতে পারে না । অনীনদিতা এমন হতে পারে না ! ও নিশ্চই আমার সাথে ঠাট্টা করছে !

কিন্তু অনীনদিতা আবার যখন ঘরে আসলো তখন ভয়ে আমার বুকের রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল !
কুরবানীর ঈদের সময় গরু জবাই করার সময় যে বড় ছুরি ব্যবহার করা হয় অনীনদিতার হাতে সেই রকম একটা ছুরি !
আমি তাহলে মরতে যাচ্ছি !
আমি মরতে যাচ্ছি !

হঠাৎ করেই আমি কেমন যেন অনুভুতি শুন্য হয়ে গেলাম ! আমার বাঁচার আর কোন উপায় না দেখে আমার মনটা আমার দেহকে ছেড়ে দিয়েছে !
শুনেছি ফাঁসির আসামীরাও মরার আগে একদম শান্ত হয়ে যায় ! যে মৃত্যুর হাত থেকে কোন পরিত্রান নাই সেটা স্বাভাবিক ভাবে নেওয়াই ভাল !

অনীনদিতা একটা পৌচাশিক হাসি নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এল ! আমার কানের কাছে মুখ দিয়ে বলল
-তোমাকে না এক অন্য রকম মেয়ের গল্প লিখতে বলেছিলাম ! সেই মেয়েটা কে জানো ? সেই মেয়েটা হলাম আমি ! আমি প্রতি বৃহস্পতিবারে বাইরে যাই ! আমার শিকার ধরে আনি ! তারপর .... হাহহাহাহাহাহা !!

আমার কান দিয়ে কিছুই ঢুকছে না ! আমি কিছু অনুভুব করতে পারছি না ! এখন যদি মুন্নী শাহা আমাকে জিজ্ঞেস করে আপনার অনুভুতি কি তাহলে আমি বলতাম খুব ভাল লাগছে ! নিজেকে খুব ফ্রী মনে হচ্ছে !

আমি মুক্ত দেহে অপেক্ষা করতে থাকি ! একটা তীক্ষ ছুরির ফলা আমার দেহকে এফোড়ওফোর করে দিবে সেইটার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি !



বিঃদ্রঃ গল্পটি সম্পূর্নই বানানো ! জীবিত মৃত অথবা অর্ধমৃত কারো সাথে কোন মিল নাই ! এবং গল্পে ব্যবহৃত নামটি অনীনদিতার অনুমুতি সাপেক্ষে ব্যবহার করা হয়েছে !


Click This Link
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×