somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেক্টু মিয়ার দ্বিতীয় ডেটিং বিপর্যয় !!

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-এই টাই ?
-হুম ভাই এই বাসা । আনিকারা দুইতালায় থাকে । এই দেখেন বাসা নাম্বার তের ।
-তুমি কেমনে জানো ? এর আগে বার ঠিক জাইনা কেমন বিপদে পড়ছিলা মনে নাই ? পাজামা ধরে টানা টানি শুরু হইয়া গেছিল ।
-আরে আমার কি দোষ বলেন ? আনিকা বলছিল হাউজিংয়ের বাসা নাম্বার তের । আমি তো তের নাম্বার বাসাতেই গেছিলাম ।
-হুম বুঝলাম । তোমার কোন দোষ নাই তো । সে কইছে মোহাম্মাদি হাউজিংয়ের বাসা নাম্বার তের আর তুমি হাজির হইছো কাদেরাবাগ হাউজিংয়ের তের নাম্বার বাসার সামনে । তোমার দোষ কেমনে থাকে ?

দেখলাম হেকটর দাঁত বের করে হাসলো । আজ দুপুর বেলা ওর যে ভয়ংকর ঘটনা ঘটে গেল সেটা যেন খুব একটা হাসির ঘটনা । অবশ্য যারা যারা ঘটনা প্রত্যেক্ষ করেছে তাদের কাছে হাসির ঘটনাই বটে । হেকটর যখন পাজামা ছাড়া পাঞ্জাবী পরে ঝেড়ে দৌড়াচ্ছিল আমরা বড় আগ্রহ নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম । যদিও ঐটা হেকটরের জন্য মোটেও আনন্দময় কোন ঘটনা ছিল না । হেকটর বলল
-অপু ভাই এতো সমস্যা নেওয়া ঠিক না । যা হওয়ার হইছে । এখন আসেন আসল কাজ করি ।
আমি খানিকটা চমকে উঠি ! ব্যাটা কয়কি ? বললাম
-আসল কাজ মানে কি ?
-আরে আপনাকে কি বললাম ? আনিকার সাথে দেখা করতে হবে মনে নেই ? ওর সাথে দেখা করার কথা ছিল আজকে কিন্তু মাঝখান দিয়ে তো দেখলেনই কি ঝামেলা বেঁধে গেল । আমি না যাওয়াতে ও খুব মাইন্ড করেছে ! এখন ওকে কোন মতে বুঝিয়ে ঠিক করেছি । এখন দেখা না করলেই নয় ভাই ।


আমি আবার তের নাম্বার বাড়িটার দিকে তাকালাম । কেবল বাড়ির সামনের দিকে একটা এনার্জি সেভিং লাইট জ্বলছিল দেখেছি ! তাছাড়া পুরা বাড়ি একাবারে অন্ধকার ! একটা আলোও জ্বলছে না !
অবশ্য রাত এখন যথেষ্ঠ হয়েছে । একটার কিছু বেশি বাজে ! এই সময়ে কারো বাড়িতে মানুষ কেমনে যায় আমি ঠিক বুঝলাম না ! আর ঐ মাইয়ার মাথায় কি আছে কে জানে ? আর আমাদের হেকটরের মাথায়ই বা কি কাজ করতেছে কে জানে ?

এমনিতেই হেকটরে আজকে একটা বড় ফাড়া গেছে ! এখন আবার কি বিপদ হয় কে জানে !
আমরা দাড়িয়ে আছি বাড়ির ডানদিকে ! হাউজিংয়ের এই দিকটা একাবারে নির্জন । মানুষজন কেউ নেই এমন কি একটা কুকুরও দেখা যাচ্ছে না ! এখন যদি কেউ আমাদের দেখে ফেলে তাহলে কি ভেবে বসবে কে জানে ?
হেকটরকে দেখলাম পরনের লুঙ্গি কাঁছা মারতে !


বিকেল থেকে হেকটর সেই বাহারী পাঞ্জাবী পরে আছে । পাজামা তো আর নেই তাই আমার একটা লুঙ্গি পরে আছে !
দুপুরের ঘটনার পরে আমি পাশের এলাকায় যাই একটা কাজে ! হেকটরের জন্য একটু চিন্তা হচ্ছিল কিন্তু কিছু করার নাই ! ওর ফোন বন্ধ ছিল আর আমার মনে হয় না ও তখন কথা বলার মুডে ছিল ! যাই হোক কাজ সেরে যখন বাসায় আসলে দেখি হেকটর আমার ঘরের বিছানায় বসে আছে !
আমি দেখে বললাম
-আরে তুমি ? কই ছিলা ? কখন আসছো ?
-আর কইয়েন না ! মাত্রই এলাম !
-ঘটনা কি ? দেখা হইছে ?
দেখলাম ওর মুখটা মলিক হয়ে গেল ! যদিও অনেকটাই জানি তবুও আবারও ওর মুখে শুনলাম পুরো ঘটনা ! শুনে হাসতে হাসতে শেষ !!
একটু পরে ভাল করে তাকিয়ে দেখি এখনও কেবল পাঞ্জাবীতেই আছে ! আমার কোন প্যান্ট ওর হায়ে লাগলো না তাই লুঙ্গিই দিলাম ! বললাম
-আজকে রাতটা আমার এখানেই থেকে যাও ! কাল সকালে কিছু ভাবা যাবে !
হেকটরের মনে হয় সেই রকমই ইচ্ছা ছিল !

রাতে খেয়ে যখন ঘুমাতে যাবো তখনই হেকটর নতুন কথা শোনালো ! একটা ভুল হয়ে গেছে ! সারা দিন নাকি আনিকা তার জন্য অপেক্ষা করেছে । হেকটর না যাওয়াতে খুব রাগ করেছে । এখন যে করেই হোক তার রাগ ভাঙ্গাতে হবে !
তা না হলে নাকি সে বাঁচবে না ! হেকটর কে কিভাবে মরতে দেই তাই এতো রাতে এখনে আসা ! কিন্তু হেকটর আসলে কি করতে যাচ্ছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না !

আমাকে খানিকটা অবাক করে দিয়ে হেকটর বাধরুমের পাইপ বেয়ে উঠতে লাগলো !
-আরে তুমি কর কি ? কেউ চলে আসলে উপায় আছে ?
খানিকটা উপরে উঠে হেকটর থামলো ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-চিন্তা নিয়েন না ! কেউ আসবে না !
হেকটরের মুখে কথা মুখেই রয়ে গেল ! কোথা থেকে একটা চিৎকার ভেসে উঠলো
-এই চোর চোর !
আমার বুকটা ধরাৎ করে কেঁপে উঠলো ! এই সেরেছে । এবার বুঝি মাইরই খেতে হয় ! আমি কি করবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ! কয়েক মুহুর্ত কেটে গেল এভাবেই ! একটা পায়ের আওয়াজ এগিয়ে আসছে দ্রুত ! আমি শুনতে পাচ্ছি !
এর মধ্যেই হেকটর যত টুকু উঠেছিল সে খান থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়লো ! তারপরই দৌড় !
কেবল একটা কথাই ওর মুখ দিয়ে বের হল
-অপু ভাই দৌড়ান !
আমিও আর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না ! একবার যদি ধরা পরি তাহলে খবরই আছে ! আমরা দুজনেই গলির শেষ মাথা বরাবর দৌড়াতে শুরু করলাম। হেকটর আমার থেকে একটু এগিয়ে আছে । আমার আগেই সে পৌছে গেল গলির মাথা ! কোন কথা চিন্তা না করে ডান দিকে মোড় নিল ! আমি ওকে সাবধান করতে গেলাম যে ডানদিকে যেও না ! এই এলাকায় আগে থাকতাম ! গলীর ঐ দিকে একটা বড় নর্দমা আছে ! রাস্তা শেষ ! কিন্তু আমার কথা ওর কানে পোছায় ততক্ষনে সে চলে গেল চোখে আড়ালে !
কি আর করা আমি বাঁ দিকে দৌড় দিলাম !
পাঁচ সাত মিনিট পরে যখন মনে হল আমার পিছনে কেউ নেই তখন একটু দম নেওয়ার জন্য থামলাম ! যাক এবারের যাত্রায় বাঁচা গেল মনে হচ্ছে ! আমি এমনটাই ভাবছি তখনই আমার ভুল ভাঙ্গল ! একটা হেড লাইটের আলো এসে আমার চোখে লাগল !
এতো রাতে গাড়ি ?
এখানে ?
প্রথম যে কথা টা মনে হল সেটা হল
পুলিশ !
টহল পুলিশ !
সেরেছে রে !
হঠাৎই একটা গম্ভীর কন্ঠ বলে উঠল !
-কে ? এদিকে আসুন !
আমি দুরুর দুরুর বুক নিয়ে এগিয়ে গেলাম ! এখান থেকে দৌড় দেওয়ার মানে নেই !
আমি কাছে যেতেই ভাল করে দেখালাম চেহারাটা ! বেশ শক্ত সামর্থ্য চেহারা ! পুলিশ ভ্যানের সাথে হেলাদ দিয়ে দাড়িয়ে আছে ! সিগারেট টানছে একভাবে ! আমার দিকে না তাকিয়ে বলল
-দৌড়াচ্ছিলেন কেন ?
কি বলবো প্রথমে কিছু বুঝতে পারছিলাম না । তখনই মাথায় বুদ্ধিটা আসলো !
বললাম
-আসলে আমি একটা অনলাইন সংবাদ পত্রিকায় কাজ করি ! রাতে বাসায় আসছিলাম । বাড়ির কাছে আসতেই দেখি একজন কাঁছা মারা লোক আমাদের বাসার বাথরুমের পাইপ দিয়ে উপরে ওঠার চেষ্টা করছে । তের নাম্বার বাসা ! তাকে তাড়া করছিলাম !
আমার কথা শুনেই পুলিশ অফিসার খানিকটা কৌতুহলী হয়ে বলল
-ঠিক দেখেছেন কাঁছা মারা ?
-জি ! ঠিক দেখেছি !
-কি রংয়ের লুঙ্গি ছিল !
-সাদা কালো চেক !
নিজের লুঙ্গির রং নিজে না জানলে কি আর চলে !
পুলিশ চরাৎ করে লাফ দিয়ে উঠলো ! খানিকটা চিৎকার করেই বলল
-দ্যাটস দ্যা কার্লপ্রিট !
আমি খানিকটা সংকিত গলায় বললাম
-কে ?
-ছায়া হেকমত ! সব সময় সাদা কালো চেকের লুঙ্গি পরে !
-ছায়া হেকমত ?
আমার কথা কোন জবাব না দিয়ে পুলিশ অফিসার বলল
-আপনি কোন দিকে দিয়ে আসছেন ?
-এই তো তের নাম্বার বাড়ির সামনে দিয়ে !
-হুম ! আজকে বেটাকে পেয়েছি ! এদিকে যেতেতু আসে নাই ! ডান দিকে গেছে নিশ্চিত । ঐ দিকে রাস্তা বন্ধ !

তারপর পুলিশ অফিসারটি নিজের ওয়ারলেস বের করে কি যেন হ্যালো ওভার আউট বলতে শুরু করলো ! কাকে কাকে যেন নির্দেশ দিচ্ছে ! আমি চুপচাপ শুনছি আর ঘামছি ! ঐ দিকে হেকটর গেছে । না জানি ওর কপালে আজকে কি আছে !
এখন যদি এখান থেকে কেটে পরা যায় তাহলে ওকে একটু সাহায্য করা যায় ! বেটা কিছু না বুঝে কেন যে ঐ দিকে দৌড় দিল !
আমি বললাম
-আমি কি যেতে পারি ?
-দাড়ান !
পুলিশ অফিসারটি কথা শেষ করে আমার দিকে ফিরলো ! বলল
-আইডি কার্ড আছে ?
-জি !
-কোন পত্রিকা ?
-জি দৈনিক বটবৃক্ষ !
-হুম ! ভাল পত্রিকা ! আমি প্রায়ই ঢু মারি আপনাদের পেইজে ! যাই হোক ! শুনেন আজকে ঐ ছায়া হেকমত কে ধরতেই হবে ! আপনাদের পত্রিয় একটা নিউজ করা যায় না আামকে নিয়ে ! কি বলেন ! এমন একটা ছবি ছাপলেন যে আমি ছায়া হেকমত কে ঘাড় ধরে নিয়ে যাচ্ছি ! শিরনাম হবে "এস আই হাসান মোশারফ হাতে ধরা পড়লো ছায়া হেকমত" ! কেমন ?
-হুম ! যাবে না কেন ? অবশ্যই যাবে ! তা এই ছায়া হেকমত টা কে ?

আমার মুখে ছায়া হেকমতের কথা শুনেই এস আই হাসান মোশারফের মুখ টা বিকৃত হয়ে উঠল ! বলল
-আই বলবেন না ! শ্লা একটা ছেচড়া চোর ! এই এলাকায় খুব উৎপাত করছে কদিন থেকে ! আর সব থেকে বড় কথা হল ....।
কথা শেষ না করে এস আই চুপ করে গেলেন !
-বড় কথা ?
-হেকমত কোন দামী জিনিস চুরি করে না !
-তাহলে ?
-তার পছন্দের তালিকায় আছে মেয়েদের ছায়া ব্লাউজ পেটিকোর্ট এই সব ! কি অদ্ভুদ দেখেন ?
-হুম !
-আর দুঃখের কথা কি বলবো আমার নিজের বউয়ের ছায়া ব্লাউজ তিন বার চুরি করে নিয়ে গেছে । লজ্জায় কাউকে বলতেই পারি না !
-তাই নাকি ?

আরো কিছু কথা বলার ইচ্ছা ছিল দেখলাম একটু দুর থেকে কাদের যেন গলার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ! দুর থেকেই একজন বলে উঠল
-স্যার আজকে পেয়েছি ব্যাটা কে !
দেখলাম এস আই হাসান মোশারফ হৈ হৈ করে উঠলো !
-আজকে পেয়েছি !
আস্তে আস্তে লোক গুলো আলোতে আসলো ! আমি তাকিয়ে আছি তাদের দিকে ! মোটা চার জন পুলিশের পোষাক পরা লোক ! সিপাহীই মনে হল ! তাদের মাঝ খানে কালো মত কিছু একটা হেটে আসতে টালতে টালতে !
আরো কাছে আসলে তাদের চেহারা আরো ফুটে উঠলো ! দেখলাম
মাঝখানে দাড়ানো লোকটা টালছে ! সারা গায়ে নর্দমার কালো ময়লা লেগে আছে ! সেখান থেকে বিকট দুর্গন্ধ আসছে ! যদিও ওর চেহারা বোঝা যাচ্ছে না কিন্তু আমার একটুও বুঝতে বাকি রইলো না এই হেকমত চোর মনে করে ওরা কাকে ধরে নিয়ে এসেছে !

এস আই হাসান মোশারফ রুমাল দিয়ে নাক চেপে ধরে বলল
-এটার এই অবস্থা কেন ?
চারজন সিপাহীদের একজন বলল
-আর বলবেন না স্যার ! অন্ধকারে মনে হয় হুশ করতে পারি নি । সোজা ডোবার ভিতরে গিয়ে পরেছে ! উঠতেই পারছিলনা ! শেষে আমরা দড়ি দিয়ে টেনে তুলেছি ! দেখছেন কেমন টলছে !
আমি আর একটু ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম হেকটরের গায়ে একটা সেন্ডু গেঞ্জী ! ওর বাহারী রংয়ের পাঞ্জাবীটা গেল কোথায় ?
আমার মনের কথার জবাব দিয়ে দিল আরেক সিপাহী ! বলল
-স্যার জানেন আজকে বেটা পাঞ্জাবী পরে চুরি করতে এসেছিল ! পাঞ্জাবীর কারনে ডোবার পানিতে ঠিক মত সুবিধা করতে পারছিল না । শেষ ওটা খুলেই ফেলেছে !

যাহ ! গেল ! এতো সাধের পাঞ্জাবীটা গেল !
এস আই বলল
-কি বেটা আজকাল পাঞ্জাবী পরে চুরি করিস ? চল আজকে থানায় চল ! তোকে মজা দেখাবো ! এই টাকে গাড়িতে তোল !
দেখলাম অনেকেই কেমন নাহু নাহু করতে লাগলো ! কিন্তু কোন লাভ হল না ! তুলতেই হল !
আমার দিকে তাকিয়ে এস আই বললেন
-আপনার বেশি সময় নেবো না ! জাষ্ট আধা ঘন্টা ! থানায় যাবেন ! একটা ছবি তুলবেন ! তারপর আপনার ছুটি !
-কিন্তু আমি ক্যামরা আনি নি !
-সমস্যা নাই ! মোবাইলের ক্যামারা দিয়ে তুললেও চলবে ! আপনার টা না হলে আমার হবে ! আমার মোবাইলের ক্যামারা দিয়ে তুলবেন ! এটা দিয়ে খুব ভাল ছবি উঠে !
এই বলে এস আই তার বিশাল সাইজের একটা মোবাইল বের করলেন !
আমি মানা করতে পারলাম না ! যেতেই হল ! আর টার উপর হেকটরে অবস্থাটা খুব সুবিধার মনে হচ্ছে না ! আমি কিছু বলতেও পারছি না !
আমার কাছে মনে হল হেকটর ঘোরের ভিতর আছে ! ডোবার ভিতরে পরার শক মনে হয় এখনও কাটাতে পারে নাই !
আমরা সবাই মিলে আদাবর থানার দিকে রওনা দিলাম !

-চা খাবেন ?
-এখন ? না মানে !
-আরে খান ! খান !
দেখলাম এস আই সাহেব আমার খুব খাতির যত্ন করছে ! কেন করছে কে জানে ? হয়তো আমি তার সংবাদ ছাপব এই জন্য হয় তো !
এস আই বলল
-আপনার নামটাই তো জানা হল না এখনও ?
-আমি অপু তানভীর !
-অপু তানভীর ?
এই বলে এস আই আমার দিকে ভাল করে তাকালো ! তারপর বলল
আপনাকে কেমন যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছে ! অন্ধকারে ঠিক মত দেখতে পারি নি আপনার চেহারা টা !
এই সেরেছে ! আমাকে কিভাবে চেনা চেনা মনে হচ্ছে !!

-আপনি কি ব্লগে লেখা লেখি করেন নাকি ?
আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম
-আপনি কিভাবে জানেন ?
-আরে আপনাকেই তো খুজছি !
-আমাকে ?
-হুম ! আপনার ভাবীতো আপনার লেখার খুব ভক্ত !
-তাই নাকি ?
কোন ভাবীর কথা বলছে কে জানে ? আমি না বুঝেই একটু হাসার চেষ্টা করলাম !
আমি আরো কিছু বলতে গেলাম তখনই ভেতর থেকে হেকটরের চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেলাম !
গেলাম গো !! মাইরা গেলাম !
আর করুমনা !! আর করুম না ! আমারে বাঁচান !

কতক্ষন চলল এই খেলা ! আমি অনেক্ষন চুপ করে থেকে বললাম
-ঐ চোর কে নিয়ে করবেন ?
-আজকে আর একটু সাইজ করবো ! তারপর কালকে ছেড়ে দিবো !
-সাইজ ! এটা কি হচ্ছিল ?
দেখলাম এস আই হাসলো ! বলল
-এটা তো এমন কিছু না ! আজকে ব্যাটারে কাছে পাইছি ! জানেন আপনের ভাবীর কাছে আমার মান সম্মান কিছু ছিল না এই হেকমতের কারনে ! আপনার ভাবী আমাকে কটাক্ষ করে বলত তুমি আমার কেমন এস আই যে তোমার বউয়ের ছায়া কেউ চুরি করে নিয়ে যায় ! তখন কিছু বলতে পারি নি ! আজকে ব্যাটা কে থ্যাড়াপী দেবো!
-থ্যাড়াপী ?
-হুম ! ডিম থ্যাড়াপীর নাম শুনেন নাই ! আপনাদের তো শোনারই কথা ।
-ডিম ! হুম ! আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ?
-ডিম থ্যাড়াপী দেওয়ার পর আপনারা ডিম গুলো কি করেন !
আমার এই কথা শুনে দেখলাম এস আই বিচিত্র ভঙ্গিতে হাসলো ! বলল
-আসলে ডিম গুলো আমরা ওদের কেই খেতে দেই !
-মানে কি ?
-মানে আর কি ! রাতের বেলা একদিন ঢোকে আর দিনের বেলা অন্য দিক দিয়ে ! যাক বাদ দেন ওসাব কথা ! ডিম থ্যাড়াপী দেওয়ার আগেই কয়েকটা ছবি তুলে ফেলেন তো ! ডিম দেওয়ার পরে ও আর দাড়িয়ে থাকতে পারবে না ! চলেন চলেন !

ফটো তোলার কাজ চলল কিছুক্ষন ! আরও কিছু কথা বার্তা জিজ্ঞেস করলাম এস আই কে ! এবার এস আইয়ের কাছে অনুমুতি চাইলাম হেকটরের সাথে কিছু কথা বলার জন্য !
এক পাশে নিয়ে গেলাম ওকে ! ওকে মোটামুটি ধুয়ে সাফ করা হয়েছে । কিন্তু গা থেকে দর্গন্ধ এখনও আসছে !
-হেকটর !
-জে ! কেডা !
-আমি !
-আমি কেডা ?
-তোমার নাম কি ?
-আমার নাম ছায়া হেকমত !
-কি বল !
-জি ঠিকই বলি ! আপনে কে ভাই ! আমি প্রতিদিন মাইয়া গো ছায়া ব্লাউজ চুরি করি !
-তাই নাকি ?
আসলে হেকটর একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে । কোথায় আছে ঠিক বুঝতে পারছে না ! সিপাহী মনে হয় ভাল ডলা দিয়েছে । এখনও ডিম থ্যাড়াপী দেয় নাই দিলে কি হবে কে জানে !!
শুনেছিলাম পুলিশের হাতে পড়লে সবাই সব কিছু স্বীকার করে নেয় ! কিছু শুরু না হতেই এতো কিছু স্বীকার করেন নিচ্ছে না জানি সামনে আরো কত কিছু বলবে ! বললাম
-ছায়া পেটিকোর্ট দিয়ে কি কর ? বিক্রি কর ?
-জে না ! বাসায় জমা করে রাখি !
-জমা কেন কর ?
-শখ বলতে পারেন !
-আর কি কর ?
-আর সব করি !
-সব কি ? ছিনতাই কর ?
-জে করি ! নিয়মিত করি !
-গাঁজা খাও ?
-জে ! খাই ! আজকাও খাইছি !
-ইয়াবা !
-জি খাই !
বুঝতে পারছি এখন ওকে যা বলা যাবে সব কিছুতেই হ্যা বলবে । এর মাঝেও আমার কেন জানি একটু মজা করতে মন চাইলো ! বললাম
-তা আকলিমাকে ভালবাসো তো ?
-জে বাসি ! খুব বাসি !
-বিয়া করবে তাকে ?
-জি ! কাইলই বিয়া করবো ! আপনেরে দাওায়ত দিবো !

আমি আর কিছু জিজ্ঞেস না করে বের হয়ে এলাম ! এস আই দেখলাম আমার দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে আছে ! আমি কাছে আসতেই বলল
-এখ যদি ওকে বলি রাজিব গান্ধিকে কে মেরেছিল ও বলবে ও নিজে মেরেছিল ! পুলিশি মাইরের এমনই চমক !
-হুম বুঝতে পারছি ! যাই হোক ! আমি কি এখন যেতে পারি ?
-হুম ! অবশ্যই ! অবশ্যই ! এই তামিন !! কোথায় গেলে ! গাড়ি বের কর ! অপু সাহেব কে নামিয়ে দিয়ে আসো ! আর আপনার কিন্তু আমার বাড়ি দাওয়াত রইলো ! মনে থাকবে তো !

আমি হেকটরের দিকে আর একবার তাকিয়ে বের হয়ে এলাম থানা থেকে !
নাহ ! বেচারা ! আজকে বেশ ধকল গেল ! আরও যাবে সারা রাতে !
পুয়র হেকটর !


বলেছিলাম যে বেগে ইট আসবে পাটকেল যাবে তার থেকে দ্বিগুন বেগে ! পুলাপাইন শুনে না কথা বার্তা !!

ওয়ার্ডপ্রেস

হেক্টু মিয়ার প্রথম ডেটিং বিপর্যয় !!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×