somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্জনতার গল্প

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আপনি এখানে কতক্ষন থাকবেন ?
আমি এতোক্ষন মেয়েটার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম । একটু অবাক লাগছিল মেয়েটাকে দেখে । এতো নির্জন একটা রাস্তায় একা একটা মেয়ে এতো দুর হেটে চলে আসছে, ব্যাপারটা একটু অন্য রকম ।

আমার অবশ্য ভুলও হতে পারে । হয়তো মেয়েটার সাথে আরো কেউ আছে । কিন্তু আমি যেখানটাতে বসে আছি সেখান থেকে তাকিয়ে আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না ।
মেয়েটাকে হেটে সরাসরি আমার পাশেই বসতে দেখলাম । একটু মনে হয় দম নিচ্ছিল । অনেক দুর হেটে এসেছে ।
আমি চুপচাপ চারপাশ দেখছিলাম । নির্দিষ্ট কোন কিছু না । তাকিয়ে থাকা আর কি ! আমার কেবল তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নাই । হঠাৎই মেয়েটি প্রশ্নটা করলো ।
-আপনি এখানে কতক্ষন থাকবেন ?
-কেন বলুন তো ?
-না মানে আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি । কোন দিকে যাবো ঠিক বুঝতে পারছি না ।
আমি খানিকটা রহস্য করে বললাম
-আমি যে সঠিক পথটা জানি সেটা আপনি কিভাবে জানেন ?
মেয়েটি একটু অবাক হয়ে বলল
-আপনিও কি পথ হারিয়েছেন আমার মত ?
আমি হাসলাম ।
-না ! আমি পথ হারাই নি ! আমি পথ হারাতে পারি না ! আর এই পথ কোন দিন আমাকে হারাতে দিবে না ।
-মানে ?
মেয়েটার চেহারায় একটু দ্বিধা দেখতে পেলাম ।
-কোন মানে নেই । বাদ দিন । আমি কতক্ষন থাকবো কেন জানতে চাইছেন ?
-না মানে জায়গাটা খুব সুন্দর । এতো গাছ গাছালী আমি এর আগে কোন দিন দেখি নি । হাটতে হাটতে তাই কখন পথ হারিয়ে ফেলেছি বুঝতে পারি নি । আপনি যদি আরো কিছুক্ষন থাকতেন তাহলে ঐ দিকটা একটু ঘুরে দেখতাম ।

আমি মেয়েটির কথা শুনে হেসে ফেললাম । মেয়েটি পথ হারিয়েছে তবুও আর একটু ঘুরে দেখতে চাইছে । আমি বললাম
-ঐ দিকটায় গেলে এই পথটাও আবার হারিয়ে ফেলবেন । তখন ?
-ও !
একটু যেন হতাশ হল মেয়েটি । আর একটু মনেহয় বেড়াতে মন বলছে মেয়েটির । আসলেই এই জায়গাটাই এমন । কেমন একটা নেশা ধরিয়ে দেয় । প্রথম প্রথম আমারও এমন হত । আমি বললাম
-আপনার আমার পাশে হাটতে আপত্তি না থাকলে আর একটু সামনে যাওয়া যায় । সামনে একটা চমৎকার বাঁধানো পুকুর আছে ।
-তাই নাকি ?
মুহুর্তের ভিতর মেয়েটির মুখটা উজ্জল হয়ে উঠলো । আমার আর কিছু বলার আগেই মেয়েটি উঠে দাড়ালো ।

আমি মেয়েটিকে আবার ভাল করে তাকালাম । সাদা রংয়ের একটা কামিজ পরেছে মেয়েটা সাথে সাদা ল্যাগিংস । নিলার পছন্দের পোষাক । প্রায়ই ও এই রকম পোষাক পরত ।
শেষবার যখন ওকে এখানে নিয়ে এসেছিলাম সেদিনও নিলা সাদা সেলোয়ার কামিজ পরেছিল । চুল গুলো খোলা ছিল । বাতাছে উড়ছিল । মাঝে মাঝে ও সেই অবাধ্য চুল গুলো সামলানোর চেষ্টা করছিল ।


মেয়েটা বলল
-কৈ চলুন । আলো কমে আসছে ।
আমি উঠে দাড়ালাম ।

পাশাপাশি হাটছি । মেয়েটা এক মনে কথা বলেই চলেছে । যেন ওর সাথে আমার কত দিনের চিন-পরিচয় ।
এই মেয়ে গুলো কত অদ্ভুদ হয় । কত দিনের পরিচিত মানুষের সাথে কেমন অচেনার মত আচরন করে । আবার নাম না জানা কারো সাথে কত পরিচতি ভঙ্গিতে কথা বলে !
সব মেয়ে কি এমন হয় ? কত দিনের পরিচিত নিলা কেমন করে অপরিচিত হয়ে গেল ।
আর এই মেয়েটি ?
আচ্ছা এই মেয়েটির নাম কি ?
একবার কি জিজ্ঞেস করবো ?
থাক ! দরকার নেই । চেনা পরিচয় হলেই বরং ঝামেলা ।
না চেনাই থাক । আমি মেয়েটির পাশে হাটতে লাগলাম চুপচাপ ।


পুকুর দেখিয়ে যখন আবার ফিরে এলাম তখন আলো মিলিয়ে গেছে । আর একটু এগুতেই দেখি কয়েকটি টর্চ লাইটের আলো এদিকে এগিয়ে আসছে । মেয়েটিকে খুজতে আসছে মনে হয় । হল ও তাই । মেয়েটির জন্যই এসেছে ওরা ।

মাঝ বয়সী এক লোক মেয়েটিকে কিছুক্ষন বকাবকি করলো । আমি মেয়েটিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসছিলাম শুনে আমাকে ধন্যবাদ দিল ভদ্রলোক । আরো কিছুক্ষন কথাবার্তা বলে ওরা চলে গেল ।

আমি দাড়িয়ে রইলাম । আলো গুলো যখন মিলিয়ে গেল তখন মনে হল মেয়েটির নামটা তো জানা হল না । একবার জিজ্ঞেস করলেই হত ।


*****
-আচ্ছা আপনি কেমন মানুষ বলুন তো ?
আমি কিছুক্ষন মেয়েটির চেহারার দিকে তাকিয়ে রইলাম । কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছি । মেয়েটার চেহারায় দেখে ঠিক মত বুঝতে পারছি না আসলে মেয়েটা কি বলতে চাচ্ছে । আমি কিছু না বোঝার ভান করে বললাম
-বুঝলাম না । কেমন মানুষ মানে আসলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন ?
মেয়েটা এমন একটা মুখ ভঙ্গি করলো যেন আমি বড্ড ছেলেমানুশী প্রশ্ন করে ফেলেছি । মেয়েটি বলল
-কালকে আপনার সাথে এতো কথা বললাম আপনিতো একটা বারও আমার নাম জানতে চাইলেন না ! এমন কি নিজের নাম টাও তো বললেন না ! জানেন আমি রাতের বেলা অনেকক্ষন এইটা নিয়ে ভেবেছি ।

আমি কিছু না বলে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন । গতকাল যাওয়ার পরে আমি বেশ কিছুক্ষন ধরে মেয়েটির কথা ভেবেছি । বেশ কয়েকবার মনে হয়েছিল মেয়েটির নাম টা জিজ্ঞেস করা উটিত্‍ ছিল । এমনটা মনে হওয়ার কি খুব বেশি কারন ছিল ?
আমি নিজেও খানিকটা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম মেয়েটাকে নিয়ে এতো ভাবছি দেখে । এতো তো ভাবার কথা না ।
তাহলে ?
প্রতি দিন বিকেলের এই ভ্রমনটা শেষে যখন বাংলোতে ফিরি মনটা আশ্চার্য রকম উদাস হয়ে থাকে । একটা সীমাহীন বিষন্নতা আমাকে পেয়ে বসে । তখন নিলার কথা খুব বেশি করে মনে পড়ে । ওর প্রয়োজনীয়তাটা খুব বেশি করে অনুভত হয় । বারবার মনে হয় ওর পাশে থাকাটা হয়তো দরকার ছিল খুব বেশি । কিন্তু ও পাশে থাকে নি ।

কিন্তু কাল সন্ধ্যায় এমনটা মনে হয় নি । কালকে সন্ধ্যা থেকে রাতের ঘুমানোর আগ পর্যন্ত মেয়েটির কথা ভেবেছি ।
কেন ভেবেছি ?
এই প্রশ্নটার উত্তর হয়তো আমার কাছে জানা । আবার হয়তো জানা নেই । তবে আমার মেয়েটির কথা ভাবতে ভাল লেগেছে ।
আচ্ছা মেয়েটিও কি নিলার মত আচরন করবে । সব কিছু জানার পরে আমার সাথে অচেনার মত আচরন করবে ?
কে জানে !

-কি হল চুপ করে গেলেন যে ?
মেয়েটির কথায় আবার বাস্তবে ফিরে এলাম ।
-আমি ?
-জি আপনি ? আচ্ছা আপনি এমনই নাকি ?
-কেমন ?
মেয়েটি এবার একটু কপট রাগ দেখানোর মত মুখ ভঙ্গি করলো । বলল
-বুঝেছি । থাক এ ব্যাপারে আর কথা বলে লাভ নেই ।
-হুম ।
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম
-আচ্ছা আজকেও কি আপনি পথ হারিয়েছেন ?
-নাহ । আজকে পথ হারায় নি । পথ চিনেই এসেছি ।
-যদি হারিয়ে যেতেন কালকের মত ? আর যদি আজকে আমি এখানে না থাকতাম ? তাহলে ?
-উহু ! আপনি বড্ড বেশি "যদি" ব্যবহার করেন দেখছি ।
কয়েক মুহুর্ত আমার দিকে তাকিয়ে থাকার পর বলল
-আসলে আমার মন বলছিল আপনি আজকেও এখানে থাকবেন । আর পথ যেন না হারাই যেই জন্য একজন কে নিয়ে এসেছি !
-কোথায় ?
-আছে আসেপাশেই ! এই জায়গাটায় নাকি ভুত থাকে তাই সে আসতে চায় নি । তাকে ঐ মোড়ের মাথায় রেখে এসেছি !


আমার মনটার ভিতর একটু চাঞ্চল্য দেখা দিল । এই জায়গাটাতে আসলেই লোকজন আসতে চায় না । বনের ভিতর যারা কাঠ কাটে তারাও এই জায়গা টা এড়িয়ে চলে । তাদের চোখেও নাকি কখন কি পড়েছে !
কে জানে ?
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম
-তা আপনার ভয় লাগে না ? জায়গাটা এতো নির্জন ? ভয় লাগারই তো কথা !
মেয়েটা আবার সেই মুখ ভঙ্গি করলো যেন আমি খুব হাসির কোন কথা বলে ফেলেছি । বেঞ্চে বসা থেকে উঠতে উঠতে মেয়েটি চারিদিকে একবার ঘুরে চোখ বন্ধ করলো । হাত দুটো বুকের কাছে নিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল
-নির্জনতা আমার অসম্ভব প্রিয় । বিশেষ করে এই রকম নির্জনতা ! ইচ্ছে হয় সারা জীবন এখানেই থেকে যাই ।
-সারা জীবন থাকার জন্য কিন্তু এই রকম নির্জনতা মোটেই ভাল নয় । এই রকম নির্জন নিস্তদ্ধতায় মানুষ কিন্তু বেশিদিন বাঁচতে পারে না !
-কেন ? আপনি বেঁচে নেই ?

কথাটার উত্তর দিতে গিয়েও দিতে পারলাম না । চুপ করে তাকিয়ে রইলাম মেয়েটার দিকে ।


*****
নির্জনতার আলাদা একটা শব্দ আছে । আলাদা একটা সুর । প্রথম প্রথম সবাই সেই সুরটার প্রেমে পড়ে যায় । নির্জনাকে আপন করে নিতে চায় । মনে হয়ে যেন পৃথিবীর সবটুকু সুখ বুঝি এরই ভিতর নিবদ্ধ । কিন্তু আস্তে আস্তে এই সুরটাই হয়ে যায় সব থেকে অসহ্যের কারন ।

নিলাও ঠিক একই ভাবে আমার কাছে এসেছিল । আমার কাছে, এই নির্জনতার কাছে নিজেকে সপে দিয়েছিল । আমার হাতে হাত রেখে বলেছিল আমার পাশেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিবে এই নির্জন নিস্তবদ্ধ জগতে । যেখানে কেবল থাকবো আমি আর তুমি !

কিন্তু নিলা পারে নি । পারবে না জানতাম । এরকম মৃত্যুপুরির ভিতর কেউ বেশি দিন বাঁচতে পারে না ।

মেয়েটির কথায় আবার আমি বাস্তবে ফিরে আসি ।
-কি ব্যাপার ? কথা বলছেন না ? আপনি বেঁচে নেই ?
এই বলে মেয়েটি বাচ্চা মেয়ের মত হেসে উঠল । এমন একটা ভাব যেন খুব মজার কোন কথা বলেছে । মেয়েটার হাসি টা সুন্দর । দেখলে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে । আমার বিবর্ণ জীবনে অনেক দিন পর এমন মিষ্টি হাসি দেখতে পেলাম ।
-এই যে মিষ্টার ! আপনার সমস্যা কোথায় বলুন তো ? কথা জিজ্ঞেস করলে জবাব দেন না কেন ?
-আমি ?
-জি আপনি ?
-লেখক মানুষ তো ! মুখ চলে কম ! চিন্তা করি বেশি !
মেয়েটার চোখে এবার বিশ্ময় দেখতে পেলাম ।
-আপনি লেখক ? সত্যি ? কি লেখেন ? গল্প নাকি কবিতা ?
-কবিতা অনেক কঠিন জিনিস । আমি ঠিক বুঝি টুঝি না । হালকা পাতলা গল্প লেখার চেষ্টা করি ।
-তাই নাকি ? প্রেমের গল্প লিখেন ?
-নাহ । তাও না । হরর গল্প লেখার চেষ্টা করি আর কি !
-ভুত ! হুম বুঝেছি ! এই জন্য লোকে বলে এখানে ভুত থাকে । ভুত থাকে না । ভুতের লেখক থাকে ।
মেয়েটি আবারও বাচ্চাদের মত হেসে উঠল । তারপর হাসি থামিয়ে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল
-আচ্ছা লেখক সাহেব । আমার নাম তানজিনা কবির । তবে আমার বন্ধুরা আমাকে লিয়া ডাকে । ইচ্ছে করলে আপনিও লিয়া ডাকতে পারেন ।
-আচ্ছা ! লিয়া ডাকবো ।
-এবার আপনার নাম বলেন !
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললাম
-আমি যতদুর মনে হচ্ছে আপনি আমার নাম জানেন । আমার সম্পর্কে খোজ খবর নিয়েই তারপর এসেছেন । তাই না ?

লিয়া এবার কিছুটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো । বাচ্চা মেয়ের অপরাধ বা মিথ্যা ধরা পড়ে গেলে যেমন মুখ ভঙ্গি করে লিয়া ঠিক সেই রকম করে রইল । তারপর বলল
-আসলেই লেখকদের বুদ্ধি বেশি থাকে । তবে কাল কিন্তু আমি সত্যিই পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম ।
-জি আমি জানি ।
-আর সত্যি কিন্তু আজকে ঠিকই আসতাম আপনার সাথে দেখা করতে । আপনার পরিচয় যাই হোক না কেন ! আসলে আমরা যে রেস্ট হাউজটাতে উঠেছি সেখানে আপনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই এতো গুলো কথা বলল আর কি বলব । আর বলুন এতো বিখ্যাত একজন লেখকের সাথে কে না দেখা করতে চাইবে বলুন ।
আমি একটু হাসলাম ।
-আমি কি আসলেই বিখ্যাত কেউ ?
-কি বলেন ! আপনি তো সব সময় নিজের চারিপাশে একপ্রকার ধোঁয়া তৈরি করে রাখেন । এই জন্য মানুষ জনের আপনার সম্পর্কে দারুন আগ্রহ । লেখেন ভুতের গল্প । থাকেন জঙ্গলের ভিতর । ফোন ব্যবহার করেন না কারো সাথে যোগাযোগ করেন না । একা একা থাকেন । বিকেল হলে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান । আগ্রহ হবে না কেন বলুন ?
-বাহ ! আমার সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন দেখছি ।
লিয়া একটু হেসে বলল
-আরও অনেক কিছু জানি ।
-হুম ।

একটু হতাশ হলাম মনে মনে। কেন জানি এই মেয়েটিকে আর ভাল লাগছে না । গতকাল মেয়েটিকে কেন জানি পরিচিত মনে হয়েছিল আজকে বড্ড অপরিচিত মনে হচ্ছে ।
মনে হচ্ছে আমার নির্জন পৃথিবীতে বড কোলাহল ঢুকে পরেছে । যা পছন্দ নয় মোটেও ।
-আচ্ছা আজকে উঠি ।
মেয়েটিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমি উঠে পড়লাম ।
কালকে থেকে কদিন আর এখানে আসা যাবেনা । মেয়েটার কাছ থেকে দুরে থাকতে হবে ।


******
নিলাও ঠিক এই রকম ভাবেই একদিন আমার কাছে এসেছিল ! আমার হাত হাত রেখে বলেছিল আমাকে ছেড়ে যাবে না কোন দিন । কিন্তু সে কথা রাখে নি !
কিছুদিন এই নির্জনতার ভিতর থেকে কেমন যে হয়ে গেল ! কোন কিছুতেই আর তাকে বেধে রাখা যাচ্ছিল না ! আমার ভালবাসাও না !
আমাকে রেখে সে চলে যাবেই । কিন্তু আমি কিভাবে তাকে যেতে দেই ?
তাকে যেতে দেই নি !

ও যখন আমাকে রেখে চলে যাবেই ঠিক করেছিল আমি ওকে শেষ বারের মত আমার সাথে এই নির্জনতার ভিতর এনেছিলাম শেষ বারের মত ওর হাত ধরে হাটবো !

হাটছিলাম ওর হাত ধরে ! সাদার শুভ্রতায় ওকে কেমন দেবীর মত লাগছিল ! আমি খানিক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি আবার খানিকক্ষন বিষন্যতা নিয়ে ! নিলা চলে যাবে ?
কেন চলে যাবে ? ভাবতেই পারছিলাম না !

আমরা ঐ সান বাঁধানো পুকুরের পাড়ে বসেছিলাম অনেকক্ষন ! নিলা উঠতেই যাচ্ছিল হঠাৎ কি হল ওর পা পিছলে গেল ! আমার চোখের সামনে নিলা ঘন কালো পানির ভিতর পরে গেল !

আমি দাড়িয়ে রইলাম চুপচাপ ! যখন পানির ভিতর হাবুডুবু খাচ্ছিল মাঝে মাঝে কেমন অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল ! এমন একটা ভাব যেন আমিই ওকে ধাক্কা মেরেছি !
তাই কি ?
কি জানি ! ঠিক মত বলতে পারি না ! আমি নিজেই তখন একটা ঘোরের ভিতরে ছিলাম ! কি করেছি কিছুই জানি না !

নিলা যেতে পারলো না ! রয়ে গেল আমার কাছেই !

এ মেয়েটিও তেমন হবে ! প্রথমে আমার সব কিছুই ভাল লাগবে তারপর আস্তে আস্তে সব কেমন অসহ্য হয়ে উঠবে !
নাহ ! দরকার নেই !

আমি পুকুরের দিকে হাটতে থাকি ! নিলা ওখানে আমার জন্য অপেক্ষা করছে !!


Click This Link
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×