somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ দ্যা ড্রিমারিষ্ট

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হালকা সবুজ রংয়ের আকাশটা যেন আজকে খুব কাছে চলে এসেছে । গাঢ় নীল রংয়ের পানিটা কে কেমন জানি একটু ফিকে মনে হচ্ছে সবুজ রংয়ের আকাশটা কাছে । তার উপর সবুজ আকাশের ছায়া পরেছে নীল সমুদ্রের পানির উপর ! কেমন একটা মিশ্রন ফুটে উঠেছে সমুদ্রের পানিতে । মনে হচ্ছে অন্য জগতে রয়েছি !
অন্য জগৎ ?
এই সন্ধ্যা নামবে মনে হয় একটু পরেই । এই আলোতেই নিহিনকে অন্য রকম লাগছে । আমি তাকিয়েই থাকি ! বাকি সব যেন থেমে গেছে আমার জন্য !
-এই কি দেখো ?
-তোমাকে দেখি !
-ইস ! ঢং ! আমাকে দেখতে হবে না ! দেখো না কি চমৎকার লাগছে সূর্যটা ! নীল পানি আর সবুজ আকাশের মাঝে । দেখো না !
-আমার কাছে অন্য কিছু আছে দেখার ।
-তুমি না !
নিহিনের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি ওর মুখটা একটু লাল হয়ে গেছে !
আমি এই দৃশ্যটা খুব পছন্দ করি ! যেমন টা এই ডুবন্ত লাল সূর্যটা আমার পছন্দ তার থেকেও নিহিনের এই লজ্জা মিশ্রিত চেহারা টা !
-আমি একটু শোব তোমার কোলে ?
-শোবে ? আচ্ছা !
আমি আস্তে করে নিহিনের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ি ! একটু দুরের ভেসে আসছে নীল সমুদ্রের মৃদু গর্জন সাথে নিহিনের কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকা ! আমি চোখ বন্ধ করে এই সময়টা উপভোগ করতে থাকি !

আমি চাই এমন টা সারা জীবন হোক ! এই সময়টা যেন কিছুতেই শেষ না হয় ! আমি চাইলে হয়তো আরও লম্বা হবে এই দৃশ্যটা কিন্তু লম্বা করে কি লাভ !

-এই অপু !
আমি চোখ খুলে দেখি নিহিন এক ভাবেই ডুবন্ত সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে । আর আলতো করে আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছে !
তাহলে কে ডাকছে ?
-এই অপু !
ডাকে কে ?


চোখ মেলে দেখি মা ডাকছে !
-কিরে ক্লাসে যাবি না ?
-হুম ! কটা বাজে ?
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি নটার কাছাকাছি বাজে ! জাহিদ স্যারের ক্লাস সাড়ে দশটায় ! আমি ধীরে সুস্থে বিছানা ছাড়ি !


নিহিন আমার সোজা-সুজি বসেছে । ক্ষনে আমার চোখ ওর দিকে চলে যাচ্ছে ! জাহিদ স্যার এক মনে ক্লাস নিয়ে চলেছে পেছনে কে তার কথা শুনছে সে দিকে তার কোন লক্ষ্য নেই । আমি মাঝে মাঝে তাকাচ্ছি নিহিনের দিকে ! যতবার আমার সাথে নিহিনের চোখাচোখি হয়েছে ততবার নিহিন কেমন একটা অস্বস্থি নিয়ে আমার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে । আমি মনে মনে হেসেছি কেবল ! নিহিন তো একটু অস্বস্থি অনুভব করবেই ! যে মানুষটা সে প্রায় প্রতিদিন স্বপ্নে দেখে যে মানুষটা ওর কোলে মাথা রেখে সূর্যাস্ত দেখে তাকে যদি চোখের সামনে দেখতে হয় তাহলে তো একটু অস্বস্থি লাগারই কথা !


সকাল বেলা ঠিক যে স্বপ্নটা দেখে আমার ঘুম ভেঙ্গেছে , আমি জানি নিহিননের ঠিক ঐ একই স্বপ্নটা দেখে ঘুম ভেঙ্গেছে ! প্রতিদিনই এমন হয় !
শুনতে খানিকটা অন্য রকম হলেও আসলে ব্যাপারটা এমনই ! বাস্তব জীবনে আমরা যেমন হেটে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারি ঠিক তেমনি আমি স্বপ্নের দুনিয়াতে একজন থেকে অন্যজনের কাছে যেতে পারি ।
ব্যাপারটা আরেকটু পরিস্কার করি !
মনে করা যাক আমাদের বাড়িওয়ালার মেয়েটি স্বপ্নে দেখছে সে বিকেল বেলা সে ছাদের উঠে চা খাচ্ছে । আমি ইচ্ছে করলেই সেই ছাদে গিয়ে হাজির হতে পারি । মেয়েটির সাথে কথা বলতে পারি । সোজা কথায় আমি আর সে একসাথে একই স্বপ্ন দেখতে থাকবো !
চমৎকার না ?

আরও একটু সোজা করে বলি ! বাস্তবের একটা দৃশ্যের কথা কল্পনা করি ! মনে করুন আপনি রুমের ভিতর শুয়ে শুয়ে বই পড়ছেন । এটা আপনার একটা নিজের দৃশ্য । ঠিক তখনই আপনার মা পাশের রুম থেকে আপনার রুমে আসলো ! আপনার মা যখন পাশের রুমে ছিল তখন সেই পাশের রুম টা ছিল তার নিজের দৃশ্য । কিন্তু সে যখন পাশের রুম থেকে আপনার রুমে চলে এল তখন আপনার রুম টা হয়ে গেল তার নিজের বাস্তব দৃশ্য ! কিন্তু আপনার নিজের রুমটা তো আপনার নিজের দৃশ্যের অন্তর্ভুক্ত ! তাহলে কি হবে ?
এই এখন আপনার নিজের রুমে যা হবে সেটা আপনার এবং আপনার মায়ের সম্মিলিত দৃশ্য ! এখানে যা ঘটবে তা আপনাদের দুজনের জীবনেরই অংশ ! দুজনের জীবনেই তার একটা স্মৃতি জমে থাকবে !
ঠিক একই ভাবে মনে করেন আপনি স্বপ্নে ছাদের ঘুরে বেড়াচ্ছেন ! সেটা আপনার নিজের স্বপ্ন ! আমি ছাদের দরজা ঠেলে আপনার ছাদে ঢুকে পড়লাম, মানে আপনার স্বপ্নের ভিতর ঢুকে পড়লাম ! তখন এইটা আমারও স্বপ্ন হয়ে যাবে । আমরা একসাথে স্বপ্নটা দেখতে শুরু করবো ।

ইনসেপশন মুভি আছে অনেক টা সেই রকম ! তবে একটা পার্থক্য হল আমি চাইলেই স্বপ্নের দৃশ্যটা নিজের মত করে তৈরি করে নিতে পারি । ঠিক যেমন আজকে সকালে করেছিলাম !

মাঝে মাঝেই আমি নিহিনকে নিয়ে নিজের তৈরি এই রকম অনেক জায়গায় চলে যাই ! ওর সাথে ঘুরে বেড়াই ! বাস্তবে ওর সাথে কথা না বললেও আমার স্বপ্ন সে আমার প্রেমিকা ! আমি তার হাত ধরে ঘুরে বেড়াই তার কোলে মাথা ঘুমাই ! তার দিকে তাকিয়ে থাকি । যা ইচ্ছা তাই করতে পারি ।

সেখানে নিহিন নিজেও সেটা মনে করে । সে যেন আমার মনের মানুষ । কিন্তু ঘুম ভাঙ্গেই সেটা আর থাকে না । তবে তার ঠিকই মনে থাকে স্বপ্নে সে কার সাথে ছিল কার হাত ধরে সমুদ্র পাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ! এই রকম স্বপ্ন প্রায়ই দেখে সে । আর দেখার পর যখন আমাকে তার সামনে দেখে তখন তার লজ্জার সীমা থাকে না কিংবা খুব অস্বস্থিতে পরে যায় সে ।


এই রকম ক্ষমতা কবে থেকে আমার ভিতর এসেছে আমি ঠিক জানি না । তবে যেদিন থেকে বুঝতে পারি সেদিনের কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে ।
তখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম । আমার সব থেকে কাছের বন্ধু সবুজ ! প্রায়ই আমাকে এসে বলতো আজকে স্বপ্নে আমাকে দেখে । আমরা নাকি একটা খেলার মাঠে দুজন দৌড়াচ্ছি । আমি কেবল অবাক হতাম । কারন ঠিক একইস্বপ্ন আমিও দেখতাম !
আমি ওর কাছে জানতে চাইলাম যে ও কখন থেকে এই স্বপ্নটা দেখতে শুরু করেছে । এই প্রশ্নের জবার দেওয়া সময় ও ঠিক কেমন যেন একটু ভ্যাবা চ্যাকা খেয়ে গেল ! মাথা দুলিয়ে বলল ঠিক বলতে পারবে না । ও কেবল দেখতে শুরু করে যে আমরা দৌড়াচ্ছি ।
কিন্তু আমি এই জিনিসটা দেখতাম না । আমার যতদুর মনে আছে আমি দেখি একটা অন্ধকার মত জায়গায় আমি পৌছে গেছি যেখানে ক্ষনে ক্ষনে জায়গায় বিভিন্ন আলো ! আমার নিজের সাথেও একটা আলো মত থাকতো ! আমি যেখানে যেতাম সেটা যেত আমার সাথে সাথে ! আর অন্য সব আলোর কাছে গিয়ে আমি একে রকম দৃশ্য দেখতে পেতাম একেক রকম মানুষের সাথে । সেই মানুষ গুলোর বেশির ভাগই আমি চিনি কিছু অবশ্য অপরিচিত মানুষও আছে । আমি যে আলোটার ভিতর ঢুকে যেতাম সেখানে তাকে পেয়ে যেতাম ।

আরো কয়েক দিন পরে আমি বুঝেছি আসলে ওগুলো হল অন্যের স্বপ্নের ঢোকার প্রবেশ পথ !
তারও বেশ কিছু দিন পরে আমি আবিস্কার করি আসলে আমার সাথে যে আলোটা থাকে সেটা আমি ইচ্ছা মন অনুযাযী পরিবর্তন করতে পারি ! তারপর কেবল আমি যে আলোর ভিতর ঢুকে পড়লেই হল ! সেইটা আমার নিজের মত হয়ে যায় !!


আমি নিহিনকে বেশ পছন্দ করতে শুরু করি সেই প্রথম থেকেই । আমি তখন প্রায়ই সময় স্বপ্ন নিহিনের আলো খুজতে থাকি ! কিন্তু আসে পাশে এতো আলো ছিল যে ওকে খুজেই পাই না !
অনেক চেষ্টার পর ওর আলোটা খুজে পাই !
প্রথম যেদিন ওর স্বপ্ন ঢুকি সেদিনের কথা বলি । ঘুম ভাঙ্গার পরে আমি ডায়রীতে লিখে রেখেছিলাম !
ঐ দিন নিহিন একটা বৃষ্টির স্বপ্ন দেখছিল ! চারিদিকে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে নিহিন তার ভিতর ভিজছে । খোলা মাঠ ! নিহিন সেই মাঠে একা একা ভিজছে । আমি দুর থেকে দাড়িয়ে দেখছি ওর বৃষ্টিতে ভেজা ! হঠাৎ করেই দেখতে পেলাম ও আমাকে লক্ষ্য করছে ।
পরপর কদিন ওকে খুজে পেতে একটু খুজে পেতে কষ্ট হয়েছে । প্রথম প্রথম আমরা নতুন জায়গার রাস্তা খুজে পেতে যেমন হয় আর কি !
তারপর থেকে আমি কেবল লুকিয়েই দেখতাম ওকে । বাস্তবে তো দেখতামই স্বপ্নের ভিতরেও আমি ওর কাছে যেতে লজ্জা পেতাম !


একদিন এক সাহস করে বরফ ঢাকা একটা পাহারের স্বপ্ন নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম নিহিন স্বপ্নের কাছে । তারপর থেকে খুজে খুজে হাজির হতাম আমার স্বপ্ন গুলো নিয়ে !
প্রথম প্রথম না হলেও কয়েক দিন পরে নিহিনের চোখের দৃষ্টি আমি লক্ষ্য করা শুরু করি । নিহিন আমাকে অন্য দৃষ্টিতে দেখা শুরু করেছে ।
আমি কেবল অপেক্ষায় আছি কোন দিন নিহিন আমার কাছে আসবে ।
আমি জানি আসবে একদিন না একদিন আসবেই ।


এর ভিতর একদিন একটা বাজে ঘটনা ঘটে গেল ! আমাদের এক ইয়ার সিনিয়ার বড় ভাই, রাসেল নিহিনের পেছনে লাগা শুরুর করলো ! পথে ঘাটে ওকে ডিষ্টার্ব করা শুরু করলো !
দাড়া শালা কে মজা দেখাই !

রাতের বেলা হাজির হলাম রাসেলে স্বপ্ন ! এমন একটা পরিবেশ তৈরি করলাম যেখানে রাসেল দৌড়াচ্ছে পেছনে একটা পাগলা কুকুর ওকে তাড়া করছে । এক পর্যায়ে কুকুরটা রাসেলের জামা কাপড় টেনে সব ছিড়ে ফেলতে শুরু করলো । আস্তে আস্তে একেবারে উলঙ্গ করে ফেলল !
এর পর আমি আস্তে আস্তে রাসেলের স্বপ্নটা টেনে পরিচিত সবার স্বপ্নের কাছে জুড়তে শুরু করলাম । একপার্যায়ে দেখা গেল রাসেল উলঙ্গ হয়ে সবার সামনে হেটে বেড়াচ্ছে !

পরদিন ক্যাম্পাসে গিয়ে আমি রাসেলের আসে পাশে হাটছি । যেই রাসেলের দিকে তাকাচ্ছে সেই হাসছে । এমন আর রাসেল বিব্রত চোখে সবার দিকে তাকাচ্ছে ! এই রকম চলতে লাগলো প্রতিদিন !
বেচারা কাউকে মুখ দেখাতেও লজ্জা পাচ্ছিল । আরও কদিন এই রকম যন্ত্রতা ভিতরে রাসেলকে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু একটু মায়া হল ।
একদিন রাসেলের মোবাইলে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে মেসেজ পাঠালাম ! লিখলাম "যতদিন তুই মেয়েদের সাথে বেয়াদবি করতে থাকবি তত দিন তোকে দেখে মানুষজন হাঁসবে"

কাজ হল পরদিনই ! দেখলাম রাসেল যাকে যাকে বিরক্ত করতো সবার কাছে ক্ষমা চাইলো ! যদিও আমি সবার সামনে ওকে ক্ষমা চাইতে বলি নি তবুই দেখলাম ও ক্ষমা চাইলো !
যাহ ওকে ছেড়ে দিলাম !


এদিকে আমি প্রতিদিন নিহিনের সাথে স্বপ্নে ঘুরে বেড়াই ! নিজের স্বপ্ন রাজ্যে আমার রাজ কন্যা কে নিয়ে ঘুরে বেড়াই ! দিন ভালই কাটতে লাগলো !


-বলবে তো ?
আমি নিহিনের দিকে তাকাই ! কিছু একটা বলতে চাই কিন্তু পারি না । কিছু একটা যেন আটকে যাই !
-তুমি যদি কালকে আমাকে না বল তাহলে আমি আর তোমার সাথে আসবো না !
আমি তবুও চুপ !
কদিন থেকে নিহিন কেমন যেন হয়ে গেছে । মানুষের মন বড় অদ্ভুদ জিনিস ! যদিও ও স্বপ্ন দেখছে তবুও ও যেন খানিকটা বুঝে গেছে আসলে ও যা দেখছে সেটা সত্য না । তাই ওর ইচ্ছা আমি ওর বাস্তবেই কথা বলি ! কিভাবে বুঝলো আমি ঠিক বুঝলাম না ! মানুষের মন বড় অদ্ভুদ জিনিস !
প্রথম যেদিন কথাটা বলল আমি ভেবেছিলাম হয় তো ও পরের দিন মনে রাখবে না । কিন্তু পরের দিন ওর ঠিকই মনে রইলো !
স্বপ্নের ভিতর আমি খানিকটা অস্বস্থির ভিতরে পরলাম ! ভালই চলছিল ! ওকে নিয়ে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও যাচ্ছিলাম । ওর হাত ধরছিলাম ওর কোলে মাথা রাখছিলাম !
কিন্তু নিহিনের যেন এসব কিছু ভাল লাগছিল না !
পরের কদিন নিহিনের আর কোন দেখা পেলাম না । অনেক খুজলাম ! কিন্তু তার কোন খোজ নাই । একটাই মানে হতে পারে নিহিন আজকে কোন স্বপ্ন দেখছে না । তারমানে ও হয়তো ঘুমাই নি রাতে !
একটু চিন্তা হল ! এমন কেন হবে !



সপ্তাহ খানেক পরের কথা ! ক্লাস শেষে বের হতে যাবো ঠিক তখনই নিহিন আমার সামনে এসে হাজির ! ওর চোখ টা কেমন লাল !
বুঝলাম না ঘুমানোর ফল !
আমাকে প্রথম বারের মত বলল
-তোমার কি একটু সময় হবে ?
-হুম !
-এসো আমার সাথে !
এই বলেই ও হাটতে লাগল ! এমন একটা ভাব যেন আমি ঠিকই ওর পিছু নেব ! আমি ওর পিছু পিছু হাটতে শুরু করলাম !

-আমি জানি না আমি কি করছি ।
আমি চুপ করে আছি !
গত কয়েক দিন তুমি আমার দেখা পাও নি । তাই না ?
-হুম ! তুমি তো ক্লাসে আসো না !
-আম ক্লাসে আসার কথা বলছি না !
-তাহলে ?
-তুমি বোকা সাজার চেষ্টা করবে না প্লিজ ! তুমি খুব ভাল করেই জানো আমি কিসের কথা বলছি !
আমি তবুও কথা বলি না ! চুপ করে থাকি !
নিহিন ব্যাগ থেকে একটা কাগজ বের করে আমার সামনে ধরলো ! আমি তাকিয়ে দেখি একটা ড্রয়িং !
নীল সমুদ্রের পানি । সামনে খোলা সবুজ আকাশ ! আকাশের বুকে সূর্য আস্তমিত যাচ্ছে ! সমুদ্র তীরে বসে আছে একটি ছেলে আর একটি মেয়ে !
নিহিন বলল
-মেয়েটি আমি ! ছেলেটিকে তুমি কি চিন্তে পারছো ?
আমি চুপ ! নিজকে একটা কষে চড় মারতে ইচ্ছা করছে ! এখনও সংকচ !
বেটা বলে ফেল !
কিন্তু সত্য কথা বলার পরে কি হবে ?
নিহিন যদি আমাকে দোষারোপ করে ! আমি কেন আর কিভাবে ওর স্বপ্নের ভিতর যাই !
এটা কিভাবে সম্ভাব ! যদি ও সব জানার পরে আমার আমার কাছ থেকে দুরে চলে যায় !!


আমার এই বিশেষ ক্ষমতাটা আছে এটা আমি কাউকে বলতে চাই না ! নিজের এই ক্ষমতা টা লুকিয়ে রাখতে চাই । তার অবশ্য একটা কারনও আছে । ক্লাস নাইনে পড়ি তখন ! তখনও নিহিনের মত একটা মেয়েকে পছন্দ করি ! টুকটাক কথা হত ! একদিন বলেছিলাম ওকে আমার এই স্বপ্ন ভ্রমনের কথা টা ! ও প্রথমে বিশ্বাস করে নি ।
যখন সেদিন রাতে ওর স্বপ্নে হানা দিলাম বলে কয়ে তারপর থেকেই ও আমাকে কেমন যেন ভয় ভয় চোখে দেখতো ! আমাকে এড়িয়ে চলতো !

যদি নিহিনও এমন কিছু করে তাহলে ?
নিহিন আবারও বলল
-তুমি চিনো না এই জায়গা টা ?
আমি চুপ করে রই !
নিহিন বলল
-দেখো, আমি জানি তুমিও দেখো স্বপ্নটা ! কিংবা আমার মনে হচ্ছে সা হাউ তুমি নিজেই কোন ভাবে আমার স্বপ্ন হানা দাও ! যাই হোক না কেন আমি এইকয় দিনে .....
-এই কয় দিনে ?
-যতবার তুমি আমাকে নিয়ে এ সব জায়গায় গেছে তার সারাটা সময় আমি কেবল তোমার কথা ভেবেছি ! কেন ভেবেছি আমি জানি না ! তবে ভেবেছি !
-তুমি ভয় পাও নি !
-কেন পাবো ? আমার স্বপ্নটা যে আমার মনের মত ! কিন্তু আমি আর কেবল স্বপ্নে বাঁচতে চাই না ! আমি বাস্তবেও এমন টা চাই !
প্রথমে মনে হল আমি ঠিক শুনছি তো !
নিহিনও তাও চায় । সত্যিই তাই চায় তো ?





পরিশিষ্টঃ

-এই নাও !
-এটা কি ?
-এটা পড়বা ! আর ভিতরে কয়েকটা ড্রয়িং আছে ! আজকে এখানে যাবো ! মনে থাকবে তো ?
আমি খামটা নেই !
মনে মনে হাসি ! নিহিন সারা দিন বসে ঠিক করে আজকে রাতে আমরা কোথায় যাবো ! নিজের হাতে ছবি আকে ! নিজর স্বপ্নের দেশে আমরা একসাথে ঘুরে বেড়াই ! বাস্তবের মতই !
জীবনটা নেহৎ খারাপ না !


সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×