যান্ত্রিক কম্পিউটারাইজ কন্ঠ টা বলে উঠলো
-মেধাবী ডট কমে আপনাকে স্বাগতম ! আপনি জেএসসি পরীক্ষার্থী হলে এক চাপুন, এসএসসি পরীক্ষার্থী হলে দুই চাপুন এবং এইচএসসি পরিক্ষার্থী হলে তিন চাপুন !
জনি মোবাইল টা কান থেকে চোখের সামনে এনে তিন চাপ দিল !
-মেধাবী ডট কম প্রশ্ন সম্ভারে আপনাকে স্বাগমত ! আপনি কোন বোর্ডের অন্তর্গত ?
ঢাকা বোর্ড হলে এক চাপুন
চট্টগ্রাম বোর্ড হলে দুই চাপুন
যশোর বোর্ড হলে তিন চাপুন
রাজশাহী বোর্ড হলে চার চাপুন
সিলেট বোর্ড হলে পাঁচ চাপুন !
বরিশাল বোর্ড হলে ছয় চাপুন !
রংপুর বোর্ড হলে সাত চাপুন !
জনি এক চাপ দিল !
যান্ত্রিক কন্ঠটা আবার বলল
-আপনি কোন বিভাগের প্রশ্ন চান ? বিজ্ঞান বিভাগ হলে এক চাপুন, মানবিক বিভাগ হলেও দুই চাপুন, ব্যবসা বিভাগ প্রশাসন হলে তিন চাপুন !
জনি এক চাপলো !
যান্ত্রিক কন্ঠটা আবার বলে উঠলো !
-রচনামূলক প্রশ্ন পত্র চাইলে এক চাপুন, নির্বাচনী প্রশ্নপত্র চাইলে দুই চাপুন, উভয় প্রশ্নপত্র চাইলে তিন চাপুন !
আজকে ফেসবুকে প্রশ্ন পত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে ঠিক পরীক্ষার আগের দিন ! কদিন পরে এভাবে মোবাইল সার্ভিস দিয়ে পরীক্ষার আগের দিন প্রশ্নপত্র ঘরে ঘরে পৌছে যাবে আশা করি !
নব্বই দশকের পর থেকে নকল ছিল পাবলিক পরীক্ষাগুলোর অপর নাম। মানুষজন বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন কায়দায়, বিভিন্ন উপায়ে নকল করতো সেই কথা আবার পরীক্ষার শেষে গর্বের সাথে বলেও বেড়াতো মানুষজন কে ! যতই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলি না কেন একটা কথা কোন ভাবেই স্বীকার না করে উপায় নেই যে, যে মানুষটা একান্ত চেষ্টায় বাংলাদেশের পাবলিক পরীক্ষা থেকে নকল জিনিস টা একেবারে গায়েব হয়ে গিয়েছি তার নাম এহসানুল হক মিলন। তৎকালীন এই শিক্ষামন্ত্রী চেষ্টায় বাংলাদেশ নকলের বেড়াজাল থেকে বের হয়ে এসেছিল ! ছেলেমেয়েরা সেই সময়ে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিতে যেত ! এবং আমি অনেক টা গর্ব করে বলতে পারি আমি ঠিক এই সমটাতেই পাবলিক পরীক্ষা গুলোতে অংশ নিয়েছিলাম !
তারপর ফকরুদ্দিন সরকার এল ! তখনও ঠিকই ছিল !
এরপর আওয়ামীলীগ সরকার এল ! প্রথম প্রথম ঠিকই ছিল ! কিন্তু দুতিন বছর যেতে না যেতেই ঝামেলা শুরু হল ! তবে এবার সমস্যা দেখা দিল অন্য ভাবে । নকল ফিরে এল না ঠিকই কিন্তু তার থেকেই ভয়ংকর জিনিস দেখা দিল ! প্রশ্নপত্র হাজির হয়ে যেত পরীক্ষার আগের রাতে !
প্রথম প্রথম গুজব মনে হলেও যতই অনলাইন টা সহজলভ্য হল প্রশ্ন পত্র ফাঁসের ব্যাপার টা এখন ডালভাত হয়ে দেখা দিল !
গত দুই বছরে এমন একটা পাবলিক পরীক্ষা হয় নি যেটার প্রশ্ন ফাঁস হয় নাই !
আফসোস ! এটার ব্যাপারে আমার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী কোন পদক্ষেপই নেন নি । বরং তিনি এটা জোর গলায় বলেন পশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে গুজবে কান দিবেন না !
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমি গুজবে কান দেই নি ! নিজ চোখে দেখা প্রশ্নপত্র দেখে তবেই বিশ্বাস করেছি !
কিছু একটা করুন মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী !
কিছু একটা করুন !
মন্ত্রনালয়ের ভিতরকার লোকজন, বোর্ডের ভেতরকার লোকজন ছাড়া কোন ভাবেই পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে না, কোন ভাবেই না ! দোষী লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন ! যথাযত ব্যবস্থা নিন নয়তো বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার এই কলংকিত ইতিহাসে কিন্তু সব লেখা থাকবে !
মানুষ কিন্তু ভুলে যাবে না !
মানুষ ক্ষমা করবে না !
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






