somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিকিতার গল্প

২২ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রুমের চাবিটা হাতে নিয়ে নিকিতা যখন লবির কাছে গেল, আমি ওকে থামালাম। আমাদের পেছনে হোটেলের বয় দাঁড়িয়ে। নিকিতা তাকে ব্যাগ আর চাবি দিয়ে আগে যেতে বলল। আমি খানিকটা বিরক্ত মুখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ওর ঠোঁটের কালো লিপস্টিক টা আমার বিরক্তিটা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আমি কিছু বলব, তার আগেই নিকিতা বলল
-রুমে ডাবল বেড। সমস্যা নেই। আমার সাথে ঘুমাতে হবে না তোমার।
-আলাদা রুম নিলে সমস্যা ছিল কি শুনি?
নিকিতা বলল
-আমার রাতে একা ঘুমাতে ভয় লাগে।

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিকিতা হাটা শুরু করলো। আমি কিছু সময় বোকার মত লবিতে দাঁড়িয়ে রইলাম। বারবার মনে হচ্ছে যে এই কক্সবাজার ট্যুরে আসা একদম ঠিক হয় নাই। নিকিতার সাথে আসা তো আরও ঠিক হয় নাই।

নিকিতাকে আমি কোন দিনই ঠিক পছন্দ করি নি। পছন্দ না করার কারন ওর উগ্র মেকাপ দেওয়ার অভ্যাস। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক যা আমার খুবই অপছন্দ। আর অন্যতম প্রধান কারনটা হচ্ছে ও একজন স্মোকার। বলা যায় চেইন স্মোকার। আমি নিজে সিগারেট খাই না, অন্যের খাওয়াটাও ঠিক আমার পছন্দ না। কিন্তু আমি ওকে পছন্দ না করলে কি হবে, নিকিতা কি এক অদ্ভুদ কারনে আমাকে পছন্দ করে এবং এটা সে আমার কাছ থেকে লুকায় না।

তাই যখন ও জানতে পারলো যে আমি কক্সবাজার আসবো, ও আমার সাথে আসতে চাইলো। মানা করতে পারলাম না কারন ওর কাছে আমি খুব ভাল ভাবে ঋণী ছিলাম। নিকিতা ফিফথ সেমিস্টারে থাকতে আমার খুব বড় একটা উপকার করেছিল। যে কারনে আমি ওর কথাটা ফেলতে পারলাম না। যদিও জানি আমি যদি ওকে নিতে রাজি নাও হই ও ঠিকই আমার সাথে চলে আসবে। সেই ব্যবস্থা করার ক্ষমতা ওর আছে। আইমিন ওর বাবার আছে। তাই মানা করে লাভ হত না। আমি তবুও বললাম
-আমি সিগারেটের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারি না। আমার সাথে যেতে হলে সিগারেট খাওয়া চলবে না।
নিকিতা খানিকটা মুখ ভেঙ্গিয়ে বলল
-তাহলে প্রতি সিগারেটের বদলে আমাকে একটা করে চুমু খেও। তাহলে আমি খাবো না সিগারেট। ডিল।

অবশ্য পুরো রাস্তায় ও একটা সিগারেটও খাই নি। মোটামুটি ভালই ছিল জার্নি কিন্তু এখন দুজনের জন্য একটা রুম নিতে দেখে মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। এমনিতেই আমাদের নিয়ে কম কানাঘুষা চলে না ক্লাসে। এখন যদি জানতে পারে আমরা একই রুমে আছি তাহলে কি কি রিউমার চালু হবে কে জানে!

আমি আর কিছু না ভেবে রুমের দিকে হাটা দিলাম। কক্সবাজার ট্যুরটা শান্তিময় হবে ভেবেছিলাম, সেটা সম্ভবত আর হল না।

অবশ্য রুমের ভেতরে এসে মেজাজটা খানিক শান্ত হল। বিশাল বড় রুম। দুইটা আলাদা আলাদা বড় খাট। রুমের ডান দিকে একটা বড় বারান্দা রয়েছে। সেখান থেকে বাইরের সমুদ্র দেখা যায় একদম পরিস্কার। আমি তো এখান থেকেই সমুদ্রের ডাক শুনতে পাচ্ছি।

নাস্তা করেই হোটেলে রুমে ঢুকেছিলাম। নিকিতা বলল
-চল একবার সমুদ্র দেখে আসি। এখন ভিজবো না। কাল ভিজব, ঠিক আছে?আমি কেবল মাথা ঝাকালাম। যদিও খানিকটা ইচ্ছে করছিল বিছানায় গড়াগড়ি করার জন্য কিন্তু সেটা আর হল না। নিকিতাকে নিয়েই রওনা দিলাম।

সমুদ্র আমাকে কেন জানি বারবার উদাস করে দেয়। এই বিশাল সমুদ্রের সামনে আসলেই নিজেকে বড় ক্ষুদ্র লাগে। একভাবে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
আমরা একটা ছাতার নিচে বসলাম। এদিক খুজতে থাকলাম ছাতার লোক কোথায়। কিন্তু কাউকে দেখলাম। সময় দেখে নিলাম। আমাদেরকে বসে থাকতে নিশ্চয়ই আসবে।
নিকিতা এক মনেই ছবি তুলতেই আছে। আমার সাথে কত গুলো সেল্ফি যে তুলল সেটা বলতে পারবো না। প্রথম প্রথম খানিকটা সময় বিরক্ত লাগলেও ওর উচ্ছাস দেখে ভাল লাগলো। মেয়েটার হঠাৎ এতো আনন্দ দেখে ভাল লাগছে।
নিকিতা বলল
-এই চল সমুদ্রে নামি!
-কি! এই না বললে নামবা না?
-তাতে কি হয়েছে? এখন নামবো?
-আরে এভাবে বললেই হয় নাকি, পকেটে মোবাইল মানিব্যাগ রয়েছে। এসব নিয়ে নামা যায় নাকি?
-কিচ্ছু হবে না।
-তুমি নামো। আমি এখানে আছি।
নিকিতা আমার দিকে কপট রাগ দেখিয়ে বলল
-বললাম না কিছু হবে না।
তারপর আমাকে অবাক করে দিয়েই ওর মোবাইল ব্যাগ সী চেয়ারের উপর রাখলো। তারপর আমার মোবাইল ব্যাগও একই ভাবে রাখল সেখানে। তারপর আমাকে প্রায় জোর করেই টানতে টানতে সমুদ্রের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। যতই ওকে বলে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে এভাবে খোলা রাখলে জিনিস গুলো কেউ নিয়ে যাবে। ও কিছুইতেই শুনলো না। বলল যে কিচ্ছু হবে না, কেউ নেবে না। যখন পানিতে নেমে পড়েছি তখনও আমার চোখ সেই ছাতার নিচের সীচেয়ারে রাখা আমাদের জিনিস গুলোর উপরেই। কিন্তু বেশি সময় আমি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে পারলাম না। নিকিতা অনেকটাই ভিজে গেছে। ওর মুখের
উগ্র মেকাপ ধুয়ে গেছে। ঠিক সেই সময়েই আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে নিকিতা অসম্ভব সুন্দর একটা মেয়ে। মেকাপ দেওয়ার ফলে ওর চেহারাতে একটা উগ্র ভাগ লেগে থাকতো অথচ এখন ওর চেহারাতে আশ্চর্য একটা কোমলতা প্রকাশ পাচ্ছে। আমি সত্যি এমনটা আশা করি নি।

ওর সাথে আক্ষরিক অর্থেই অনেক লাফালাফি করলাম। যখন ফিরে আসছি তখন নিশ্চিত যে আমাদের জিনিস পত্র নেই। কেউ নিয়ে গেছে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম যেখানে ছিল তাই আছে। বর্ষার সিজনে মানুষজন কম হলেও আসে পাসে মানুষজন ছিল। চাইলেই যে কেউ নিয়ে যেতে পারতো।

আমি জিনিস পত্র তুলেও এদিক ওদিক দেখতে লাগলাম। ছাতাওয়ালা মামাকে টাকা দিতে হবে কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার তখনও তার দেখা নেই। এমন তো খুব একটা হয় না। সীচেয়ারে বসার সাথে সাথে ওরা চলে আসে।
নিকিতা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-দাড়ালে কেন? রুমে চল।
-আরে ছাতার টাকা দিতে হবে না?
-লাগবে না।
-মানে কি?
-বললাম যে লাগবে না। আসো।
-কিন্তু....
নিকিতা বলল
-অপু ট্রাস্ট মি। আসো সমস্যা নেই।

নিকিতার কথার ভেতরে কিছু একটা ছিল। জিনিস পত্র গুলো সীচেয়ারে রেখে যাওয়ার সময়ও ওকে অদ্ভুদ নিশ্চিত দেখেছিলাম এখনও তাই মনে হচ্ছে।

রুমে যখন ফ্রেস হয়ে নিকিতা বের হল আমি ওর দিকে কিছুটা সময় তাকিয়েই রইলাম। সেই কোমলতা আর শুভ্রতা যেন আরও বহুগুনে বেড়ে গেছে। একটা অচেনা আভা ছড়িয়ে পরছে ওর চেহারা থেকে।
আমাকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিকিতা বলল
-কি দেখো?
আমার খানিকটা বিব্রত হওয়া উচিৎ কিন্তু কেন জানি হলাম না। নিকিতার প্রশ্নের জবাব না দিয়েই বললাম
-তুমি সব সময় ওরকম উগ্র মেকাপ দিয়ে কেন থাকো? এতো চমৎকার দেখতে তুমি!
-লাভ কি তাতে? ছেলে আকর্ষণ হত?
-মানে?
-এতো কিছু বুঝতে হবে না।
নিকিতা হাসলো কেবল।

আমি ভেবেছিলাম নিকিতা সাথে আসার কারনে এ ট্যুরটা ভাল হবে না। কিন্তু সময় কাটতে লাগলো চমৎকার।

রাতের বেলা ঘুমানোর সময় একটু যে অস্বস্তি লাগছিলো না সেটা বলব না তবে নিকিতা ছিল খুবই স্বাভাবিক। আমিও নিজেকে স্বাভাবিক রেখেই ঘুম দিলাম।

মাঝরাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আবছায়া চাঁদের আলোতে নিকিতাকে ওর বিছানার উপর বসে থাকতে দেখলাম। মেয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। কি যেন দেখছে।
আমি ডাক দিলাম ওকে। আমার দিকে একটু তাকাল তারপর আবার যেদিকে তাকিয়েছিল সেদিকেই তাকিয়ে রইলো।
আমি উঠে গিয়ে লাইট জ্বালালাম। নিকিতার মুখোমুখি বসলাম। ওর চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝলাম মেয়েটা কিছু একটা বিষয় নিয়ে অস্থির হয়ে আছে। সেটা বুঝতে আমার খুব বেশি সময়ও লাগলো না। বলল
-সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে?
যারা নিয়মিত ধুমপান করে তারা হঠাৎ করেই যদি সেটা বাদ দিয়ে দেয় তাহলে একটু ঝামেলা তো হবেই।
নিকিতা বলল
-সব ফেলে দিয়েছি।
-ঘুম আসছে না?
-উহু।

আমি মেয়েটার চোখের দিকে তাকালাম। চোখের মনি গুলো কেবল এদিক ওদিক নড়ছে। মেয়েটা আমার কথা মত একটা সিগারেটও খায় নি আসার পর থেকে। কেমন যেন খুব মায়া লাগলো নিকিতার জন্য। হঠাৎ করেই কি হল আমি ওর খুব কাছে চলে গেলাম। তারপর খুব গভীর ভাবে ওর ঠোঁটে চুমু খেলাম। কয়েক মুহুর্ত পরে আবিস্কার করলাম নিকিতা নিজেও সেই চুমুতে অংশ গ্রহন করলো।

কত সময় ধরে একে ওপরে চুমু খেয়েছি সেটা দুজনের কেউই জানি না একটা সময় আমরা খান্ত হলাম। বালিশে হেলান দিয়ে শোয়ার পরপরই নিকিতা আমার বুকের উপর মুখ গুজে শুয়ে রইলো।
বললাম
-এখন ঘুম আসবে?
-হুম।
-তাহলে ঘুমাও।
-না ঘুমাবো না। গল্প করব।

বাচ্চা মেয়ে যেমন আদুরে কন্ঠে কিছু বলে নিকিতার কন্ঠটাও ঠিক তেমন ছিল। আমি হেসে বললাম
-আচ্ছা কর।
তারপরই আমার একটা কথা মনে পড়লো। আমি বললাম
-আচ্ছা সকালে তুমি অতো নিশ্চির কিভাবে ছিলে যে আমাদের মোবাইল ব্যাগ কেউ নিয়ে যাবে না?

নিকিতা তখনই উত্তর না দিয়ে কিছুটা সময় চুপ করে শুয়ে রইলো। তারপরেই বলল
-তোমার কি মনে হয় আমার বাবা আমাকে এভাবে একা একা কোথায় ছেড়ে দিবে?
-মানে?
-মানে হচ্ছে আমি যেখানেই যাই না কেন আমার আগে পিছে মানুষ থাকে আমাকে দেখে রাখার জন্য, আমার দরকারি জিনিস গুলো হাতের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য।
-সত্যি। এই যে আমার কাছে এখন সিগারেট নেই আমি যদি দরজা খুজে একটু জোরে বলি আমার সিগারেট লাগবে, কয়েক মুহুর্ত পরে ঠিকই সেটা হাজির হয়ে যাবে। আমাদের ঐ ব্যাগ দেখে রাখা, ছাতার ভাড়া সবই সেই লোক দিয়েছে।
-তার মানে তোমার বাবার সব কিছুতেই চোখ আছে। তুমি কোথাও যাও কি কর সব জানে সে?
-এই যে তোমার সাথে একই রুমে আছি এটাও জানে সে।
-সর্বনাশ! বল কি! আমার সম্পর্কেও জানে?
নিকিতা একটু হাসল। তারপর বলল
-তোমার সম্পর্কে সে আজকে না, আরও অনেক আগে থেকেই জানে। বাবার অফিসে যে সার্ভে করেছিলে মনে আছে?
-হুম।
-তারও আগে থেকে। যেদিন থেকে আমি তোনাকে জানি সেদিন থেকে। তুমি কি কর কোথাও যাও কাদের সাথে মিশো সব। যদি কোন বড় কোন বিপদে পড় দেখবে কোথা থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে আপনা আপনিই।
-নিজেকে বড় ভিয়াইপি মনে হচ্ছে। তোমার বাবা দেখি আসলেই তোমার প্রতি অনেক বেশি কেয়ারফুল।
নিকিতা একটু চুপ করে থেকে বলল
-হুম। কিন্তু জীবনে একটা সময় সে কেয়ার ফুল ছিল না।
-মানে?
-এতো মানে বুঝতে হবে না। ঘুম দাও।

পরের দিনটা আমাদের অনেক বেশি চমৎকার কাটলো। ওকে যেভাবে দেখে এসেছি, ক্লাসে একটা ড্যামকেয়ার ভাব নিয়ে থাকতো কিন্তু এখানে ওকে একদম অন্য রকম মনে হচ্ছে ওকে।
কিন্তু রাত হলেই আগের দিনের মতই পেলাম। বিছানার উপর উঠে বসে আছে। আমি গতদিনের মতই ওকে আবারও চুমু খেলাম। বললাম
-কি হয়েছে? সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে?
-উহু।
-তাহলে?
নিকিতা কিছুটা সময় চুপ করে রইলো। তারপর বলল
-তোমাকে আমি কেন এতো পছন্দ করি জানো?
-কেন? আমার অনেক দিনের জানার ইচ্ছে!
নিকিতা আমার দিকে ফিরে তাকাল। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি কোনদিন কোন মেয়ের দিকে অন্য চোখে তাকিয়েছো?
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। বললাম
-ঠিক বুঝলাম না। কি বলতে চাও?
নিকিতা বলল
-তোমার কোন দিন মনে হয়েছে আমার সাথে তুমি.....
নিকিতা লাইনটা শেষ করলো না। আমি বুঝে গেলাম ও কি বলতে চায়। একটু অস্বস্তি লাগল। বললাম
-না।
-অন্য কোন মেয়ের প্রতি?
-না।
যদিও এইসব কথা মেয়েরা ঠিক বিশ্বাস করে না। তারা ভাবেই সব ছেলেই মেয়েদের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়। নিকিতা বলল
-আমি জানি। এইজন্যই তুমি এখানে রয়েছ। অন্যকেউ নেই। আমি পুরুষের এই চোখের দৃষ্টি খুব ভাল করে চিনি। খুব ভাল করে।

কথা বলতেই দেখলাম ওর মুখের ভাবটা কেমন হয়ে গেল। মনে হল ওর কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। নিকিতা বলল
-জানো এই দৃষ্টি আমি কিভাবে চিনি?
খানিকটা কৌতুহল নিয়েই বললাম
-কিভাবে?

কথাটা বলেই নিকিতা কিছুটা সময় চুপ থাকলো। তারপর বলল
-আমি যখন ক্লাস আইটে পড়ি, আমার বাবার এক বন্ধু প্রায়ই আসতো আমাদের বাসায়। বাবার ব্যবসার কাজে তার শেয়ার ছিল। তার দৃষ্টি আমার ভাল লাগতো না। প্রথমে মাকেই বলেছিলাম তারপর বাবাকে। কিন্তু বাবা আমার কথা বিশ্বাস করেনি। বরং বিরক্তি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তার মাস খানেক পরে একদিন, একদিন......
আমি বললাম
-থাক আর বলতে হবে না।
নিকিতার দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে ।
-ঐদিন ঐ লোকটার দৃষ্টি আমি ভুলতে পারি না। যে যে পুরুষের দিকে তাকাই কেবল সেই দৃষ্টিই দেখি। আমি তারপর থেকেই নিজেকে বদলে ফেলি, বাবা নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল, তার আমার কথা বিশ্বাস করা দরকার ছিল কিন্তু সে করে নি। তারপর থেকেই সে আমার নিরাপত্তার জন্য কত কিছুই যে করেছে তার ঠিক নেই কিন্তু যা হয়েছে সেটা সে কোন দিন বদলাতে পারবে না। একটা।
এই বলে নিকিতা বেশ কিছুটা সময় চুপ করে রইলো। আমি বললাম
-তাকে তোমার ক্ষমা করে দেওয়া উচিৎ।
-চেষ্টা করেছি অনেক। পারি নি। এটা বাবাও জানে। তিনি নিজেও অপরাধবোধে ভোগেন। সেদিন যদি আমার কথা বিশ্বাস করতেন তাহলে আজকে আমার জীবনটা এমন হতো না হয়তো।
আমি বললাম
-জীবন তো এখনও শেষ হয়ে যায় নি।
-আমিও জানি। কিন্তু একা একা পারছি না। তাই তোমার কাছে এসেছি। তোমাকে দরকার আমার। প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি সেদিন আমি ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে তুমি আসলেই এমন। আমি আমার কেবল মনে হয়েছে তোমাকে ছাড়া আমার চলবে না কিছুতেই।

আরও একটু যেন শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমার মনে হল ও আমাকে কোন ভাবেই ছেড়ে দিবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৪৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×