আমি অনেক বেশি মুভি ফ্রিক বলা যায় কিন্তু মাস্টার পিস গুলো দেখতে অনেক কষ্ট করতে হয় । অনেক খোজা খুজি করে দেখতে হয় । সময় থাকলেও সুযোগ হয় না । আবার রিসোর্স একটা বড় ফ্যাক্ট । যাই হোক এত দিন ইচ্ছে ছিল দি গ্রেট মুভি " দি শশাঙ্ক রিডেম্পশন " দেখার । দেখে ফেললাম মুভিটা ।
ফক্স টিভিতে প্রচারিত বিখ্যাত প্রিজন ব্রেক ছিল ছিল থ্রিলার ধাঁচের নাটক। শশাঙ্ক রিডেম্পশন ও জেলখানা থেকে মুক্তির কাহিনী। কিন্তু সেটি মোটেও প্রিজন ব্রেকের মতো নয়। একদমই ড্রামা ধাঁচের চলচ্চিত্র। মূলত জেলখানা থেকে মুক্তিই সিনেমার মূল বক্তব্য নয়। এখানে যেন বলা হচ্ছে জীবন থেকে বাঁচো।
জীবনকে তার চাহিদার পথে উন্নীত করো। আশায় বাঁচো। কখনো হাল ছেঁড়ে দিও না। তার উপর তুলে ধরা হয়েছে জেলখানার পরিবেশের নাটকীয় বাস্তবতা। জেলখানা সম্পর্কে বিস্তৃত ও বাস্তবধর্মী ধারণা থাকলেই তবে এমন চমৎকার কাহিনীর প্লট সাজানো যায়। আসলে প্লট বললেও ভুল হবে, বলতে হবে জেলখানার মন ছুঁয়ে যাওয়া বাস্তবতা।
আমার কাছে মূল বিষয়টা একটু অন্যরকম। এই সবগুলোই শশাঙ্ক রিডেম্পশনকে শতাব্দীর অন্যতম সেরা মুভিতে পরিণত করতে ভূমিকা রেখেছে, কিন্তু আসল কাজ যেটা করেছে সেটা হচ্ছে এই মুভির মূল থিম।
“Let me tell you something my friend. Hope is a dangerous thing. Hope can drive a man insane.”
শশাঙ্ক রিডেম্পশন এই আশার গল্প। হাল না ছাড়া এক ইনসেন মানুষের গল্প। যে মানুষ ১৯ বছর ধরে ছোট্ট একটা হাতুরি নিয়ে একটু একটু করে টানেল খুঁড়েছে জেল থেকে পালাবে বলে। পুরো মুভিতে এন্ডি দোষী না নির্দোষ, সেটা ঠিক বোঝা যায়নি। তবে যেটা পরিষ্কার হয়েছে, মানুষ চাইলে সব কিছুই সম্ভব।
মুভি সংক্ষেপ
১৯৪৬ সালে দাম্পত্য জীবনে ব্যর্থ হয়ে প্রচন্ড হতাশাগ্রস্থ ব্যাংকার অ্যান্ডি । হঠাৎ তার জীবনে ঘোর অমানিশা নেমে আসে দুটি নাটকীয় খুনের (স্ত্রী এবং তার প্রেমিক) অভিযোগ । অভিযোগের কারনে নাটকীয় এই কারনে যে এই খুন দুটি সম্পর্কে অ্যান্ডি নিজেই দ্বিধান্বিত । আসলে সেই প্রকৃ্ত খুনী নাকি অন্য কেউ । আর তাইতো উকিলের নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত অ্যান্ডি এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয় । এর ফলস্বরুপ অ্যান্ডিকে দুটি খুনের জন্য পরপর দুইবার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয় ।
জেলখানার প্রথম ২ বছর খুবই খারাপ কাটে অ্যান্ডির। সিস্টারদের অনবরত উত্যক্ত করা, যৌন নির্যাতন, গার্ডদের অমানুষিক নির্যাতন সব কিছুই মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছে তাকে। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয় যখন তার ব্যাংকিং স্কিল কাজে লাগিয়ে গোপন টাকার পাহাড় জমাতে থাকে।
কয়েক বছর পর তাকে জেলের লাইব্রেরির দায়িত্ব দেয়া হয়। এখানেও অ্যান্ডি তার লেগে থাকার পরিচয় দেয় ৬ বছর প্রতিদিন কর্তৃপক্ষের কাছে বই চেয়ে একটি করে চিঠি লিখে। শেষ পর্যন্ত সে বই আদায় করেই ছাড়ে। শুধু তাই না, ১৯৬৩ সালে সে ঐ লাইব্রেরিকে পুরো নিউ ইংল্যান্ডের সেরা প্রিজন লাইব্রেরিতে পরিণত করে।
প্রথম দিকে হয়তো খেয়ালের বশেই সে টানেল করা শুরু করে। কিন্তু জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনা সে চূড়ান্ত করে টমি উইলিয়ামসের মৃত্যুর পর। ১৯৬৫ সালে টমি শশাঙ্ক জেলে আসে। অল্প সময়েই সে এন্ডিদের গ্যাং-এর একজন সদস্য হয়ে যায়। একদিন কথা প্রসঙ্গে সে রেড আর অ্যান্ডিকে জানায় এন্ডির স্ত্রীর প্রকৃত খুনী কে সে জানে। অ্যান্ডি ডুফ্রেইন সেই কথা জানায় ওয়ার্ডেন নর্টনকে। কিন্তু নর্টন তার সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে ছেড়ে দিতে রাজী ছিল না। খুব নৃশংসভাবে টমিকে খুন করে সে গার্ডদের মাধ্যমে।
অ্যান্ডি শুধু পালানোরই না, বের হয়ে যেন অর্থকষ্টে পড়তে না হয় আর সাথে ওয়ার্ডেনকে শিক্ষা দিতে তার ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্টে কারিগরি শুরু করে। ডামি একাউন্ট ক্রিয়েট করে সেখানে পাস করতে থাকে ওয়ার্ডেনের অবৈধ টাকা। এরপর সে অপেক্ষা করে। অপেক্ষা করে এক ঝড়ের রাতের, যে রাতে সে পালাবে ।
সে কি পালাতে পারবে নাকি ধরা পরে যাবে। জানতে হলে মুভিটি দেখতে হবে।
আমি মুভিটা এত দিন দেখিনি । আজ দেখলাম । যারা মোটিভেশন চান তাদের জন্য একদম পারফেক্ট মুভি ।
I'm unable to rate this movie.
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:২১