somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"" দি শশাঙ্ক রিডেম্পশন "" অনবদ্য এক মাস্টার পিস (মুভি রিভিউ)

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





আমি অনেক বেশি মুভি ফ্রিক বলা যায় কিন্তু মাস্টার পিস গুলো দেখতে অনেক কষ্ট করতে হয় । অনেক খোজা খুজি করে দেখতে হয় । সময় থাকলেও সুযোগ হয় না । আবার রিসোর্স একটা বড় ফ্যাক্ট । যাই হোক এত দিন ইচ্ছে ছিল দি গ্রেট মুভি " দি শশাঙ্ক রিডেম্পশন " দেখার । দেখে ফেললাম মুভিটা ।

ফক্স টিভিতে প্রচারিত বিখ্যাত প্রিজন ব্রেক ছিল ছিল থ্রিলার ধাঁচের নাটক। শশাঙ্ক রিডেম্পশন ও জেলখানা থেকে মুক্তির কাহিনী। কিন্তু সেটি মোটেও প্রিজন ব্রেকের মতো নয়। একদমই ড্রামা ধাঁচের চলচ্চিত্র। মূলত জেলখানা থেকে মুক্তিই সিনেমার মূল বক্তব্য নয়। এখানে যেন বলা হচ্ছে জীবন থেকে বাঁচো।

জীবনকে তার চাহিদার পথে উন্নীত করো। আশায় বাঁচো। কখনো হাল ছেঁড়ে দিও না। তার উপর তুলে ধরা হয়েছে জেলখানার পরিবেশের নাটকীয় বাস্তবতা। জেলখানা সম্পর্কে বিস্তৃত ও বাস্তবধর্মী ধারণা থাকলেই তবে এমন চমৎকার কাহিনীর প্লট সাজানো যায়। আসলে প্লট বললেও ভুল হবে, বলতে হবে জেলখানার মন ছুঁয়ে যাওয়া বাস্তবতা।



আমার কাছে মূল বিষয়টা একটু অন্যরকম। এই সবগুলোই শশাঙ্ক রিডেম্পশনকে শতাব্দীর অন্যতম সেরা মুভিতে পরিণত করতে ভূমিকা রেখেছে, কিন্তু আসল কাজ যেটা করেছে সেটা হচ্ছে এই মুভির মূল থিম।

“Let me tell you something my friend. Hope is a dangerous thing. Hope can drive a man insane.”

শশাঙ্ক রিডেম্পশন এই আশার গল্প। হাল না ছাড়া এক ইনসেন মানুষের গল্প। যে মানুষ ১৯ বছর ধরে ছোট্ট একটা হাতুরি নিয়ে একটু একটু করে টানেল খুঁড়েছে জেল থেকে পালাবে বলে। পুরো মুভিতে এন্ডি দোষী না নির্দোষ, সেটা ঠিক বোঝা যায়নি। তবে যেটা পরিষ্কার হয়েছে, মানুষ চাইলে সব কিছুই সম্ভব।

মুভি সংক্ষেপ

১৯৪৬ সালে দাম্পত্য জীবনে ব্যর্থ হয়ে প্রচন্ড হতাশাগ্রস্থ ব্যাংকার অ্যান্ডি । হঠাৎ তার জীবনে ঘোর অমানিশা নেমে আসে দুটি নাটকীয় খুনের (স্ত্রী এবং তার প্রেমিক) অভিযোগ । অভিযোগের কারনে নাটকীয় এই কারনে যে এই খুন দুটি সম্পর্কে অ্যান্ডি নিজেই দ্বিধান্বিত । আসলে সেই প্রকৃ্ত খুনী নাকি অন্য কেউ । আর তাইতো উকিলের নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত অ্যান্ডি এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয় । এর ফলস্বরুপ অ্যান্ডিকে দুটি খুনের জন্য পরপর দুইবার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয় ।

জেলখানার প্রথম ২ বছর খুবই খারাপ কাটে অ্যান্ডির। সিস্টারদের অনবরত উত্যক্ত করা, যৌন নির্যাতন, গার্ডদের অমানুষিক নির্যাতন সব কিছুই মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছে তাকে। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয় যখন তার ব্যাংকিং স্কিল কাজে লাগিয়ে গোপন টাকার পাহাড় জমাতে থাকে।

কয়েক বছর পর তাকে জেলের লাইব্রেরির দায়িত্ব দেয়া হয়। এখানেও অ্যান্ডি তার লেগে থাকার পরিচয় দেয় ৬ বছর প্রতিদিন কর্তৃপক্ষের কাছে বই চেয়ে একটি করে চিঠি লিখে। শেষ পর্যন্ত সে বই আদায় করেই ছাড়ে। শুধু তাই না, ১৯৬৩ সালে সে ঐ লাইব্রেরিকে পুরো নিউ ইংল্যান্ডের সেরা প্রিজন লাইব্রেরিতে পরিণত করে।




প্রথম দিকে হয়তো খেয়ালের বশেই সে টানেল করা শুরু করে। কিন্তু জেল থেকে পালানোর পরিকল্পনা সে চূড়ান্ত করে টমি উইলিয়ামসের মৃত্যুর পর। ১৯৬৫ সালে টমি শশাঙ্ক জেলে আসে। অল্প সময়েই সে এন্ডিদের গ্যাং-এর একজন সদস্য হয়ে যায়। একদিন কথা প্রসঙ্গে সে রেড আর অ্যান্ডিকে জানায় এন্ডির স্ত্রীর প্রকৃত খুনী কে সে জানে। অ্যান্ডি ডুফ্রেইন সেই কথা জানায় ওয়ার্ডেন নর্টনকে। কিন্তু নর্টন তার সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে ছেড়ে দিতে রাজী ছিল না। খুব নৃশংসভাবে টমিকে খুন করে সে গার্ডদের মাধ্যমে।
অ্যান্ডি শুধু পালানোরই না, বের হয়ে যেন অর্থকষ্টে পড়তে না হয় আর সাথে ওয়ার্ডেনকে শিক্ষা দিতে তার ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্টে কারিগরি শুরু করে। ডামি একাউন্ট ক্রিয়েট করে সেখানে পাস করতে থাকে ওয়ার্ডেনের অবৈধ টাকা। এরপর সে অপেক্ষা করে। অপেক্ষা করে এক ঝড়ের রাতের, যে রাতে সে পালাবে ।

সে কি পালাতে পারবে নাকি ধরা পরে যাবে। জানতে হলে মুভিটি দেখতে হবে।

আমি মুভিটা এত দিন দেখিনি । আজ দেখলাম । যারা মোটিভেশন চান তাদের জন্য একদম পারফেক্ট মুভি ।

I'm unable to rate this movie.

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:২১
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×