আমি ধীরে ধীরে অলস হয়ে যাচ্ছি । কেন জানি কোন বিষয় নিয়ে ভাবতে বা লিখতে ইচ্ছে করে না । তারপর ও ভাবছি জোর করেই লিখব । কারন একবার অনেক দিন লেখালিখির বাইরে ছিলাম । কতটা কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না । তারচেয়ে বরং লিখেই যাই । সেটাই ভাল হবে ।
কিছু দিন থেকেই নির্বাচনের হাওয়া সবার গায়ে লেগেছে । সবাই এখন ব্যস্ত সমীকরন মিলাতে । বিএনপি আগের বার যে ভুল করেছে সেটা ভুলে এখন নির্বাচনে এসেছে । এখন আবার ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে ড. কামাল সাহেব ব্যস্ত আছেন । সবার মাঝেই একটা চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে । সবার মনেই এখন ভাবনা কি হবে ৩০ ডিসেম্বর । আর তার আগে বা পরে কি হবে । এটা নিয়ে বিশদ আলোচনা চলছে ।
তবে এটা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারন করে দেবে । সত্যি বলতে যারাই জিতুক তারা নিজেদের দিকটাই বেশি দেখবে । এখানে উল্লেখ্য যে লীগের থাকাটা জরুরী । আমার যুক্তি হচ্ছে তারা যেসমস্ত কাজ গুলো শুরু করেছে তা শেষ করা । কারণ তাদের বাইরে যারাই আসুক তারা কন্টিনিউ করবে এটা ভাবাটা অবাস্তব কল্পনা । আমি যখন থেকে বুঝতে শুরু করেছি তখন থেকেই দেখেছি ।
আবার বিএনপি আসলে বাংলাদেশের অবস্থা পুরো পালটে যাবে । কারন তারা যদি হিসেব করি তবে প্রায় প্রায় বারো বা এগার বছর ক্ষমতায় ছিল না । তাদের নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি আছে । তারা সেই অনুযায়ী কাজ করবে । আর তাদের ভেতর যে ক্ষোভ আছে তা বাইরে আসবে । আর এটা হবে লীগের জন্য বড় ধরনের একটা আঘাত । তবে বিএনপি আসবে সেটাও কল্পনা ।
এইদিকে কামলা সাহেব, মান্না, রব যারা আছেন তাদের মধ্যে দ্বন্দ হবেই এটা শিওর । কারণ প্রধানমন্ত্রী কে হবেন বা রাষ্ট্রপতিই কেন হবে সেটা নিয়ে একটা ঝামেলা বাধতেই পারে । যদিও এখনই বলছি না হবেই । আসলে ক্ষমতার লোভ সবার ই আছে তাই ঐক্যফ্রন্ট কি করবে তা নিয়ে এখনো সন্দেহ থেকেই যায় ।
আমি রাজনীতি এতো বুঝি না । তবে বাবার কাছ থেকে এই বিষয়ে জ্ঞান ধার নেই । উনি আবার লীগের (বঙ্গবন্ধুর লীগ) ভক্ত । তবে উনি হাসিনার উপর ও আস্থা রাখেন । আমিও রাখি । তবে কিছু বিষয় এড়িয়ে যেতে পারি না । তখন ওনার সাথে আমার ছোটখাট একটা তর্ক হয় । যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ আমার বিশ্বাস তাই লীগের উপর কিছুটা হলেও আস্থা রাখি ।
আমি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতির পরিবেশে বড় হয়েছি । আমার মামা উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা ছিলেন । ছোট মামা বিএনপি করতেন । যদিও লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দুবাই চলে যান । তো ওনাদের দেখে বড় হয়েছি । দুই দল এক জায়গায় এক সেটা হচ্ছে কেউ কাউকে ছাড়বে না । কারন সেটা করেছে তার মানে ভুল । মামারা তিন ভাই মেঝ মামা শিক্ষক তাই এই সব বিষয়ে জড়ান না । তবে বড় মামা ও ছোট মামা আগে এক্টিভ থাকলেও তারা দূরে সরে এসেছেন কারন পা চাটা লোকজনে ভরে গিয়েছে ।
এখন যারা চাটতে পারে তাদের দাম বেশি । কিন্তু মামারা এটা পারবে না তাই তারা সরে গিয়েছেন । তবে আমার ভয় এই নির্বাচন নিয়ে । কারন আইনেস্টাইন বলেছিলেন, " কী অস্ত্র দিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে, তা জানি না। তবে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ হবে লাঠি আর পাথর দিয়ে " । আমার ধারনা এই নির্বাচনে তেমন কিছু হতে পারে । আমি সাধারন মানুষ সাধারন ভাবে শান্তিতে বাচতে চাই ।
সত্যি বলতে রাজনীতি করার ইচ্ছে ছিল একটা সময় বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারন করে আজও চলছি । তাকে স্বরন করেই ভাবি একদিন বাংলাদেশ তার বাংলাদেশ হবে । তার ভাবনা চিন্তা নিয়ে প্রতিটি রাজনীতিবিদ রাজনীতি করবে । সব কাজে তাকেই স্বরন করে করা হবে । কারন তিনি সব কিছুর উর্দ্ধে ।
আমার বাবা ইউপি নির্বাচন করেছিলেন আমাদের গ্রামে । প্রথমবারের মত তখন দল থেকে নির্বাচন হয়েছে । প্রতি দল থেকেই প্রার্থী দেয়া হয়েছে । বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন । যদিও তিনি জিত্তে পারেনি । যিনি হয়েছিলেন তিনি ক্লাস ফাইভ পাস করা একজন । প্রার্থী ছিল পাচ জন । বাকি চারজন ই গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করা প্রার্থী । আমি বাবাকে না করেছিলাম । কারণ গ্রামের রাজনীতি সম্পূর্ন আলাদা ।
যাইহোক তিনি হেরেছেন তাতে আমার কোন সমস্যা নেই তিনি ইচ্ছে করেছেন তাই তার ইচ্ছেটা পূরন করলাম । তবে গ্রামের মানুষের ভাল করতে হলে একজন শিক্ষিত মানুষের বিকল্প নেই । তিনি আসলে বুঝবেন আসল সমস্যাটা কোথায় । তাই তাকে বলেছি রাজনীতির বাইরে থেকে গ্রামের সেবা করে যাও ।
নির্বাচনে এখন কে কে প্রার্থী হবে যাচাই বাছাই চলছে । তবে সেটা আমরা বুঝছি । কারা প্রার্থী হবে সেটা অনেক আগেই নির্ধারন হয়ে গিয়েছে বলে আমার ধারনা । কারন সব দলের ই নির্বাচন নিয়ে অনেক আগে থেকেই প্ল্যান আছে । তাছাড়া শেখ হাসিনার প্রজ্ঞার উপর আমার আস্থা আছে । এই যেমন আমাদের এলাকার এমপি কে তিনি এবার আর সুযোগ দেবেন না । দিলে সে সিট তাকে হারাতে হবে । যদি তিনি বুঝে থাকেন তবে অবশ্যই বদলাবেন ।
এই দিকে বিএনপি আবার প্রার্থীতা সংকটে ভুগতে পারে নাও পারে । এখন প্রশ্ন হতে পারে কেন? যতদূর দেখেছি সব নেতাই তো লীগে যোগ দিচ্ছে । বড় নেতারা পারলে তারাও যোগ দিত লীগে । আমি গত দুমাসে কয়েকটি জেলা ঘুরেছি । তখন সেখানের পরিচিত জনদের কাছ থেকে এই তথ্য শুনেছি । এমন কি আমাদের এলাকা গাজীপুরেও এটা হয়েছে ।
এখন লীগ ভুল প্রার্থী নির্বাচন করে তবে তাদের সিট খোয়াতে হবে এটাই সত্য । গাজীপুরের মেয়র নির্বাচন থেকে তাদের এটা শিক্ষা নেয়া উচিত । কারন সেখানে নির্বাচনে আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি । আমরা জানতাম যে লীগ মেয়রে নির্বাচন হারতে যাচ্ছে । কারন জাহাঙ্গীর আলম এর জনপ্রিয়তা তারা ধারনা করতে পারেনি । সেই ভুলটা আশা করা যায়া তারা দ্বিতীয় বার করবে না ।
আমি এত রাজনীতি নিয়ে ভাবিনা । কারন দেশের পরিস্থিতির চেঞ্জ হবে বলে মনে হয় না । লীগের সময়ে অবকাঠামোর উন্নতি হলেও আইনের শাসন ব্যবস্থায় তারা ব্যর্থ । তারা সার্বিক দিক বিবেচনাতে যুদ্ধাপরাধী, ২১ শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা, বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সফল হলেও মাঠ পর্যায়ে তারা ব্যর্থ । প্রতিদিন ধর্ষন, ডাকাতি, খুনের খবর আসছে । এই দিকে ধর্ষিতারা মামলা করতে পারছে না কারন তাদের ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে আটকে রাখছে । লীগের উপর কেউ কথা বলতে পারে না । যার কাছেই শুনি উনি বলেন আমি জয় বাংলার লোক । "জয় বাংলা" কি এতোই সহজ ।
তবে এবারের নিবার্চন যে একটা চাপা গর্জন নিয়ে আসছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । প্রতিদিন টক-শো হচ্ছে । না না মুনি, না না মত দিচ্ছেন । কেউ বলছেন এই হবে আবার কেউ বলছেন ওই হবে । কিন্তু কেউ সাধারন মানুষের কথা বলছেন না । কেউ এটা বলছে না জনতা কি চাচ্ছে । কেউ এটা জানতে চাইছে না সাধারন মানুষ কি চাচ্ছে । তাদের নির্বাচন সম্পর্কে কি ধারনা । তারা আদৌ কি নির্বাচনে অংশ নেবে ।
আমরা জনতা ক্ষমতার কাছে বন্ধি । আমরা সাধারন মানুষ এক হতে পারি না । কারন তাদের মধ্যে ধারন কি হবে । আমি একা কি করব । কিন্তু আমরা তো একা নই । আমরা সবাই মিলে একা নই । তারপর ও আমরা এক হতে পারি না । কবে পারব জানি না । তবে আশা হারাই না আমি । হয়ত একদিন আমরা এক হবো । গর্জে উঠবো অন্যায় আর অত্যাচার এর বিরুদ্ধে ।
আপাতত নির্বাচন আসছে । ভোট দিতে যাবো কিনা ভাবছি । আগে জীবন বাচাতে হবে । তারপর অন্যকিছু । দেখা যাক কি হয় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৯