ডিজিটাল বাটি চালান চর্চাঃ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভূতের আবির্ভাব হয়েছে। প্রশাসন অসহায়-কবিরাজি জানেনা বলে। সাদা পোষাকের লোকজন দ্বারা মাঝে মাঝে পূর্ণবয়স্ক লোকজনের নিখোঁজের খবর পাওয়া যাচ্ছে, আগে ছিলো ছেলেধরা যদিও তারা ছেলে-মেয়ে উভয়ই ধরতো। বর্তমানে পূর্ণ বয়স্কদের নিখোঁজে আতংকিত অসহায় পরিবার ভুলে-ভালে থানা-পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলে কর্তাব্যক্তিরা চেয়ার থেকে পড়ে যান-ভাবটা এমন যে, তিনি আকাশ থেকে পড়লেন!! তাহলে নিখোঁজ পরিবারের করনীয় কি? বাটি চালান, বেত চালান দেওয়া ছাড়া উপায় কি? ভূতের কাজ থামানোর কবিরাজের কাছে জিডি করা ছাড়া আর কোথায় যাওয়ার জায়গা থাকে? কালেভদ্রে কোনো সৎ অফিসার একটু আধটু নিখোঁজের খবর নিতে গিয়ে যখন দেখেন সর্ষের মধ্যেই ভূত, তখন নিজেই বেকুব বনে গিয়ে মু্ক্ত তালাশ করেন খালি হাতে ফেরেন মধ্যরাতে।
সুদিন ফিরলো বাংলাদেশেরঃ
প্রধানমন্ত্রী গতকাল শপথ অনুষ্ঠানে তৃপ্তি নিয়ে বেরসিক সাংঘাতিকদের প্রশ্নে বলেছেন বিশ্ববাসী বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখছে, প্রশংসা করছে। কেবল বাংলাদেশ বিরোধী কতিপয় দুর্জন এই উন্নয়ন/সফলতা দেখতে পায়না। দেখিনি, ধারণা করছি বিশ্ববাসী ব্যাপক উন্নয়নের স্বীকৃতি দিয়ে একটি মানপত্রও দিয়েছে হয়তো সরকারকে। যেখানে লেখা আছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ইতিমধ্যেই পদ্মাসেতুর কাজ সম্পন্ন করা, টিপাইমুখ টিপাটিপি করেই বন্ধ দেওয়া, তিস্তার পানিকে দোয়েল-ভিস্তায় নিয়ে আসা, শেয়ারবাজারকে নিজেদের মধ্যে শেয়ারকরে ভাগ নেওয়া, গণপরিবহন দিয়ে জনতাকে গনধর্ষন করার ব্যবস্থা করা, অযোগ্য ইউনুসকে অমায়িক ফিউজ করা, মহাসড়ক বন্ধ করে পরিবেশের উপকার করা, গুম ও নিখোঁজের মাধ্যমে জনসংখ্যা হ্রাস করায় এই আম্লীগ সরকারের প্রতি বিশ্ববাসী চিরকৃতজ্ঞ। সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ ও লজ্জার তাড়নায় বিদেশী রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের কামলাদেরকে আমলায় মর্যাদাসীন করতে না পারায় ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আগামীদিন গুলোতে বাংলাদেশের এই মহাজটের সরকারের কাছ থেকে মতলব ও চমক আমদানীর প্রতিশ্রুতিও তারা পূর্ণপূন ব্যক্ত করেন ব্যাঘ্রভাবে। বান্ধব এবং সমস্ত বিশ্ব এর জন্য শেখ হাসিনার কাছে মহাকৃতজ্ঞ!! আমাদের উন্নয়ন আমাদের চোখে পড়ছেনা চোখের সমস্যার কারণে। অথচ বাংলাদেশের উন্নয়নের জোয়ারে ডুবন্ত নৌকা আমেরিকা থেকে গুগল দিয়ে দেখা যায়, জানালা খুলেই সকাল- বিকাল বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে দেখে হয়রান ও উদ্বিগ্ন হচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের দুঃখে ও চিন্তায় ভারত ঢাকাই জামদানী গায়ে জড়িয়ে ইলিশ খাচ্ছে-নিরামিষ ছেড়ে!!
মেয়াদ ফুরালেই প্রশাসকঃ
সাবাস মতলববাজী। জয়তু মতলববাজী। নিজের ফাঁদে নিজেই পড়লেন শেখ হাসিনা। কোমড়ে গামছা বেধেঁ জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের জন্য দিনের পর দিন হরতাল দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্মদিয়ে পরে সেই সন্তানকে নিজহাতে গলাটিপে যুক্তি দিলেন, গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনির্বাচিত কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই, তাদের অধীনে নির্বাচন সভ্য মানুষ মেনে নিতে পারেনা। আহা সেকি যুক্তি, গনতন্ত্রের চর্চায় বিমুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করলেন।
ঢাকা বিভক্তি হলো, আজ তিনি বলছেন মেয়াদ ফুরালেই প্রশাসক- তাহলে ডিসিসিতে কেন অনির্বাচিত ব্যক্তি আসবে? কোন মুখে এই কথা বলতে পারেন? জানি মতলববাজীতে বাংলাদেশে আম্লীগের ধারে কাছে কেউ নেই। আম্লীগ 10 মিনিটেই ঢাকা বিভক্তির বিল পাস করে বুঝিয়ে দিলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরকার আছে। তাই বিরোধী দল গুলোর উচিত হবে এই বিষয়টি নিয়ে কেয়ারটেকার বিরোধীদের ছাই দিয়ে ধরা।
অনেক অনেক আগেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে নিধিরাম ইসি আম্লীগের ধমকে পিছিয়ে যায়। আম্লীগের ভয় সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভার নির্বাচন গুলোতে 30 আসন পাওয়া বিএনপি যেভাবে ঘুরে দাড়ানোর ফলাফল করেছে সকল ইঞ্জিনিয়ারিং করার পরও, তাহলে ঢাকায় তারা কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারবেনা। বাধ্য হয়ে খোকাকেই তাদের মানতেই হচেছ কারণ মেয়াদ শেষ হলেও প্রচলিত আইনে কোনো প্রশাসক বা অনির্বাচিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান নেই।
কোনো ভাবেই ঢাকার বুকে খোকাকে মানা শেখ হাসিনার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনিতেই খোকা বিএনপির, তার উপর স্বয়ং শেখ হাসিনা খোকার কাছে নির্বাচনে হেরেছেন এমপি ইলেকশনে। এই জ্বালা কেমন সহ্য করা খুবই যন্ত্রনার? তাই যেকোনো উপায়ে খোকাকে সরাতে হবেই। সঙ্গতকারণে নানা ফন্দির ভিতর দিয়ে ঢাকা বিভক্তির স্বপ্ন। ঢাকাবাসী, কোনো রাজনৈতিক দল, কোনো প্রেশারগ্রুপ কিংবা কোনো দাতগোষ্ঠির কোনো ধরণের অনুরোধ বা আবদার কিংবা কোনো দাবী না থাকার পরও তারা সকল পক্ষকে উপেক্ষা করে বিল পাস করলো। জোর করেই তারা সেবা দিবেই দিবে। যেমন সেবা দিচ্ছে শেয়ার বাজারে, দ্রব্য বাজারে, পদ্মা সেতুর সুবিধাভোগীদের সেরকম আরকি।
ক্লাইভের দ্বৈতনীতির কথা আমরা কমবেশী জানি। ভাগ কর এবং শাসন কর। কিন্তু ২৫০ বছর পরও যে ক্লাইভের ভূত আমাদের কারো উপর আছর করবে-সেটা এই ঢাকা বিভক্তি না দেখলে মনে পড়তো না।
ঢাকা বিভক্তিঃ আমার ব্যক্তিগত ভবিষ্যতবানী।
ঢাকা বিভক্তির আইন থাকবে। নির্বাচন এই সরকারের সময়ে আর হবেনা। সেখানে কোনো ভৃত্যকে নিয়োগ দেওয়া হবে প্রশাসক হিসাবে-যা নির্বাচন করে পাওয়া সম্ভব হতোনা কখনোই। এমনকি শেখ হাসিনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দাড়ালেও হারবে এখন। প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে আগামী দুই বছর তাইরে নাইরে করে পার করবে সরকারের মেয়াদকাল। প্রকৃত উদ্দেশ্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে আম্লীগ দলীয় পূর্র্ণবাসন কেন্দ্র বানানো। টেন্ডার, চাদাঁবাজি, বখরা এবং প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য লক্ষীকে হাতছাড়া আম্লীগ করতে পারেনা, পারবেনা।
আম্লীগের কর্মী সমর্থক হওয়া গর্বের : তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ একটি মন্ত্রণালয়ের শেষ চেষ্টা হিসাবে গতকাল সংসদে বলেছেন, খালেদা জিয়ার দলের মন্ত্রী হওয়ার চাইতে আম্লীগের একজন কর্মী-সমর্থক হওয়াও গর্বের। তাই সরকার তাকে গর্বিত করে রাখলো, কোনো মন্ত্রীত্ব তার জুটলো না। যদিও তোফায়েল মন্ত্রীত্ব ডিজার্ভ করেন। যারাই আম্লীগ করে-তারাই নাকি গর্বিত। আম্লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। দেশের খ্যাতিমান রাজনীতিবিদরা আম্লীগ গঠন করেছিলেন। কিন্তু আম্লীগকে স্বৈরতন্ত্রের মার্কিন কাপড়ে মুড়ে বাকশাল কায়েম করায় সেই ঐতিহ্যবাহী আম্লীগের দাফন সম্পন্ন হয় বঙ্গবনধুর হাত ধরেই। পরে আবার সেই আম্লীগের কাছেই গর্বিতরা ফিরে যায়, যে আম্লীগকে গঠন করেছিলো ভাসানী-শামসুল হক। আজকের আম্লীগ গর্বিত জসিম উদ্দিন মানিকদের নিয়ে, উলংগ মিন্টুদের নিয়ে, ইডেনের শরীরজীবীদের নিয়ে, পরিমলদের নিয়ে ও হাইব্রিড হানিফুনদের নিয়ে। তাই তোফায়েলের গর্বে দেশবাসী গর্বিত হতে না পেরে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ধর্ষনে গর্ববতী হওয়ার দিকে এগুচ্ছে। শেয়ার বাজারের আগুনে পুড়ছে বহু বহু সংসার। কত সন্তানের কান্নায় নির্বাক বাংলাদেশ-তবুও দাতঁ কেলিয়ে পারসোনায় আনা-গোনায় ব্যস্ত মন্ত্রী, কানিজের সেবায় গর্বিত হয়!!
দুই বোমা বন্ধ করলামঃ শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রীর এই বোমাবিষয়ক কথায় ষ্পষ্টতই বুঝা যায়, মন্ত্রণালয়ে কাজের লোকের দরকার ছিলোনা, কেবল সরব দলীয় সমালোচক অক্সিজেন কাদের আর গুপ্তবাবুর গুপ্ত মিশনকে ঠেকিয়ে দিতেই মন্ত্রণালয় দান!! কিন্তু রাষ্ট্র কেন অপ্রয়োজনীয় বাড়তি মন্ত্রীর জন্য রাষ্ট্র কেন অর্থ ব্যয় করবে? জনগণ কেন দলীয় বোমা বন্ধের খরচ বহন করবে? এখানে খুব খেয়াল করলে একটি অংক চোখে পড়ে। যে অংকের হিসাব মেলাতে প্রধানমন্ত্রী আতংকিত ছিলেন। অংকটি এমন যে, খালেদা জিয়ার যোগদান আহবান এবং নাগরিক সমাজের নতুন আত্মপ্রকাশিত একটি সংগঠন-এই বিষয়টির কারণেই দ্রুত মন্ত্রণালয় দিয়ে থামিয়ে দেওয়া-যাতে থলের বিড়াল বেরিয়ে না যায়। আরেকটি ঋণশোধের দায় হিসাবে দেশপ্রেমিক টোকাই সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদাসীন হাছান মাবুতকে পুর্ণ মন্ত্রণালয় দেওয়া হয়েছে। এই পুরুষ্কার তার আরো আগেই পাওনা ছিলো বলে দুর্জনেরা বলে থাকেন। লোকমুখে শুনা যায়, এই মাবুত কোনো এক ডালিম কুমারের সকল টাকা পাচারের ভারবাহী গাধা। প্রতি সফরেই নাকি তিনি এই মহান দায়িত্বপালন করছেন। এরপরে রয়েছে, ইকো প্রজেক্ট এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং ফান্ডে আসা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয়ের প্রজেক্ট-যেখানের হরিলুটের অর্র্থ যথাস্থানে তা প্রেরণ করার দায়িত্ব। অধিকন্তু আনু মুহাম্মদদের মতো টোকাই/বিদেশী এজেন্টদের চিহ্নিত করার ভারবাহী দায়িত্ব তিনি অবলীলায় পালন করে যাচ্ছেন। এতগুলো গুরুদায়িত্ব বিশ্বস্ততার সহিত পালনের জন্য বহু আগেই একটি মন্ত্রণালয় তাকে দান করার যৌক্তিকতা ছিলো।
একটি নির্মম ও নির্দোষ অনুকথাঃ
গার্ল কলেজের ক্লাশে বাংলা শিক্ষকের প্যান্টের জিপার খোলা দেখে মেয়েরা জোরে জোরে হাসতে লাগলো। শিক্ষক না বুঝেই বললো, ‘‘ বেশী হে হে করলে একদম বাইরে বের করে খাড়া করে রাখবো, তখন যেন আবার ইস আহা উহু করোনা। এই নির্দোষ শাসনের জন্য অবুঝ শিক্ষকের বেকুবীকে কি বলা যায়? কিংবা ছাত্রীদের হাসাহাসিকে কিভাবে দেখা যায়? প্রিয় পাঠক এই লেখাটি/পোস্টটিকে ছাত্রীদের দিক থেকেও দেখতে পারেন, আবার বোকা শিক্ষকের দিক থেকেও দেখতে পারেন। আমি দেখবো আপনাদের মন্তব্যের মধ্য দিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




