সরাসরি তার সাথে আমার কখনো দেখা হয় নাই। ছোটবেলায় তার অনেক নাটক বিটিভিতে দেখে আনন্দ পেয়েছি। এইসব দিন রাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই ইত্যাদি। একুশে বইমেলা আর বইয়ের সাথে আমাদের পরিবারের আলাদা সম্পর্ক ছিল আর এখনো আছে। আমার আব্বা মরহুম প্রচ্ছদশিল্পী প্রচ্ছদ করা বই প্রতিটি বইমেলায় বের হতো, আবার তিনি জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে সহকারী পরিচালক ছিলেন, বইমেলার আয়োজনের সাথে জড়িত ছিলেন। হুমায়ুন আহমেদের প্রথম বই নন্দিত নরকে বই আকারে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমার আব্বু সামান্য হলে অবদান ছিল। সেই সময় এতো চিকন বই বের হতো না। প্রকাশককে রাজি করার ক্ষেত্রে আব্বার অবদান ছিল। যাই হোক, এটা হুমায়ুন আহমেদ জানতেন কিনা আমি জানি না। এখন আমার কথায় আসি। আমি বোধহয় তার প্রথম যে বই পড়েছিলাম তা ছিল বোতল ভুত। বইটা পড়ে খুব মজা পেয়েছিলাম। ক্লাস এইটে শান্তিপুর হাই স্কুল থাকতে তার অনেক বই পড়েছিলাম। আমার ক্লাসমেট সৌরভ সরকার আমাকে তার অনেক বই ধার দিয়েছিল। তবে আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক হচ্ছেন সত্যজিৎ রায়। ক্লাস সেভেনে যখন সত্যজিতে পড়ে শেষ করে ফেলেছি, তখন হুমায়ুনের লেখা পড়া শুরু করেছি। মিসির আলীকে অনেক ভাল লেগেছিল। আমার আব্বা তাকে উপন্যাসিক হিসাবে স্বীকার করতেন না, তবে সে গল্পকার ছিলেন, পাঠককে কিভাবে ধরে রাখতে হয় তা তারচেয়ে ভাল কেউ জানতো না। বাংলাদেশের নাটকে নতুনধারা তার মাধ্যমে শুরু হয়েছে। সিনামাগুলো আমাকে নতুন ভাবে চিন্তা করতে শিখিয়েছে। তাকে শিক্ষক হিসাবে নতুন লেখকদের নিতে হবে। তার ব্যক্তিজীবনে একটি ঘটনা প্রেক্ষাপটে তার লেখনি থেকে আমি দূরে ছিলাম। পৃথিবীর কোন মানুষই কালো দিক ছাড়া নয়।
তার স্থান নেওয়ার মতো লেখক তৈরি হওয়ার জন্য আমাদের অনেক প্রস্তুতি নিতে হবে। জনপ্রিয়তা সবার ভাগ্যে হয় না। পাঠকে বুঝতে পারা, পাঠককে আনন্দ দেওয়া, শুধু পাঠকের কথা চিন্তা করা। আমার কাছে তার একটা ভাল লেগেছে। সে কোন দালাল লেখক ছিলেন না। আজ তার জন্মদিনে তাকে আমরা বেশি করে মনে রাখবো তার কিছু নতুন চরিত্রে সৃষ্টির জন্য। হুমায়ুন তুমি মরে গেছ, রেখে গেছ..।.।.।.। হিমু, শুভ, মিসির, ছোট মামা সহ অনেককে।
১৩-১১-২০১৭
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪২