somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গেরিলাঃ চলচ্চিত্র নাকি রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা ???:P:P

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ ভোর ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কিছু দিন হল পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ এর ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে। চলচ্চিত্রটি নিয়ে দর্শক সমাজে যে আগ্রহ, উদ্দিপনা এবং প্রেক্ষাগ্রিহগুলোতে যে উপচে ভরা ভীড়, তাতে যে চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিকভাবে সফল, এতে কোন সন্দেহ নেই।সৈয়দ শামসুল হক এর উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ এবং একজন মুক্তিযোদ্ধার বাস্তব অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তৈরী হয়েছে গেরিলা চলচ্চিত্রটি। যেহেতু পরিচালক একজন মুক্তিযোদ্ধা, পাশাপাশি একজন দুর্দান্ত মঞ্চাভিনেতা, ফলে তার নির্মিত গেরিলা ছবিটি নিয়ে মানুষের ম‌ধ্যে একটু বাড়তি প্রত্যাশা থাকাটাই স্বাভাবিক। ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মীত হয়েছে। ফলে কিছুটা নতুনত্ব আর শিল্প সমৃদ্ধ চলচ্চিত্রের আশায়, সকলের নজর ছিল গেরিলার দিকে। কিন্তু সে আশা যে গুড়ে বালি তা এখন সবাই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। চলচ্চিত্রের যে আলাদা একটা ভাষা আছে, ইউসুফ সাহেব তা হয়ত জানতেন না। যদি জানতেন তাহলে হয়ত সেলুলয়েডের পাতায় গল্প বলা বাদ দিয়ে কোন রাজনৈতিক প্রচারনা চালাতেন না। লুমিয়ের ভ্রাতৃদ্বয়ের সেই এক মিনিট দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র আজ শুধু বিনোদনের মাধ্যমই নয় বরং তা অনেক ক্ষেত্রে ইতিহাসের ধারক বাহক এমনকি ব্যাখ্যাকারকও বটে। কিন্তু চলচ্চিত্র যে ইতিহাসকে অপব্যাখ্যাও করতে পারে, তা গেরিলা ছবিটি না দেখলে বোঝার উপায় নেই। এটাকে চলচ্চিত্র না বলে, রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা বলাই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত।

যারা উপরের অংশটুকু পড়েছেন তারা হয়ত ভাবছেন আমি জামায়াতের পক্ষে সাফাই গাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা। কেন এটিকে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা বলছি তা একটু ব্যাখ্যা করা যাক।

সিনেমার প্রথমদিকে দেখা যায়, বিলকিস (জয়া আহসান) এর ব্যাংকে একজন বোরখা পরিহিতা নারী আসেন চেক বই নেবার জন্য। অত:পর বোরখা পরা মহিলাটি চলে গেলে আর একজন ভদ্র মহিলা সঙ্গে বাচ্চা নিয়ে আসেন বিলকিস এর সাথে দেখা করতে। ভদ্র মহিলাটি বেরকা পরা মহিলা সম্পর্কে বিলকিস কে জিজ্ঞাসা করে। জবাবে বিলকিস হেসে এবং তাচ্ছিল্যের সঙ্গে জবাব দেয় “জামায়াতের রুকন”।
এখানে জামায়াতের রুকন শব্দটি দ্বরা যে জামায়াত কে অপমানিত করা হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। পাশাপাশি একজন বোরখা পরা নারীকে সম্মানের বদলে দর্শকের সামনে হেয় করা হয়েছে। যা শুধু একজন নারীকেই নয় বরং বোরখা পরা সকল নারীর জন্যই অপমানকর। জামায়াত নারীদের বোরকা পরতে আগ্রহ সৃষ্টি করে। এটা নি:সন্দেহে ভাল দিক। একটা ভাল জিনিসকে অসম্মান করা, পরিচালকের সংকীর্ন মানসিকতাকেই তুলে ধরে।
সিনেমাতে বিভিন্ন সময়ে গোলাম আযম, নিজামী এবং মুজাহিদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেমাতে বিভিন্ন সময়ে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” “রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিন” এসব শ্লোগান ব্যবহার করা হয়েছে। এ কথা সত্য যে, ৭১ এ জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয়া হয় তা এখনও প্রমানিত না। সুতরাং একটি অপ্রমাণিত বিষয় নিয়ে এই ধরনের প্রপাগান্ডা চালানোর অধিকার পরিচালকের নেই।
তাছাড়া সিনেমাতে রাজাকার এবং পাকিস্তনি আর্মিদের যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তি সংগ্রামই ঢাকা পড়ে গেছে।
এছাড়া রাজাকারদের উগ্রভাবে উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে জামায়াতের চরিত্র হননই যে মূল উদ্দেশ্য তা সহজেই অনুমেয়।
বস্তুত সরকার এই সিনেমাটি নির্মাণে যে আর্থিক অনুদান দিয়েছে তা আবার সুদে আসলে তুলেও নিয়েছে। সিনেমার অভ্যন্তরে অযাচিত এবং অযেৌক্তিক জামায়াত বিরোধী প্রচারনা চলচ্চিত্রকে তার মুল ভাব থেকে দূরে আসতে বাধ্য করেছে।
তাই এটিকে সিনেমা না বলে, একটি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রচারনা বলাই কি যৌক্তিক নয়?
:P
২৯টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×