
ছবি: দীপু মালাকার
দরজায় করাঘাত !! ঠক ঠক !! ঠক ঠক !!
দরজা খুলতেই হুমড়ি খেয়ে ৪/৫ জন ঘরে ঢুকে পরে। হাতে লোডেড গান।
কে আপনারা ! কি চাই আপনাদের !
কথা বলার সময় নাই , আমরা ডিবি অফিস থেকে আসছি, তোরে যাইতে হইব আমাদের সাথে।
না , আমার স্বামী নিরপরাধ ,উনি কিছু করেন নাই ................
৪ দিন পর অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবকের লাশ উদ্ধার। লাশের গন্ধে আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। ঘন্টা খানেক খোঁজ করার পর জানা গেলো যুবদল থানা সেক্টরেটরির লাশ।
এইটা একটা রূপক গল্প মাত্র। প্রতিদিন এই রকম ঘটে চলছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা শুরু করে দিয়ে গেছে আর আমরা তার ধারা চলমান রেখেছি। এই রকম লক্ষ লক্ষ খুনের সুরাহা হয়না। যারা মারা যায় তারা তো পৃথিবী থেকে মুক্ত হলেন। তবে একটা পরিবার সারা জীবনের জন্য অচল হয়ে যায় সেই খবর কেউ রাখেনা। যারা ক্ষমতায় আসছে তারাই একচ্ছত্র ক্ষমতার ব্যবহার করে যাচ্ছে আর প্রতিপক্ষরা সেই জুলুম এর স্বীকার হয়েই যাচ্ছে। ক্ষমতায় যেই এসেছে একই পথে হেঁটেছে।
উপরের দৃশ্য খানা মোটেই দেখা যায়না কয়েক যুগের ভিতর। প্রথম আলোর মাধ্যমে জানা গেছে যে শেষ ২৮ বছর আগে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে এইটা আলোচনার বিষয় ভেবে যারা হুমড়ি খেয়ে পারছেন তারা নিশ্চয়ই ভ্রমের ভেতর আছেন।গোলাম রাব্বি অথবা রাজীব আহ্সানরা কখনোই দলের স্বার্থ থেকে বের হয়ে জনগণের স্বার্থের কথা ভাবতে পারবে না। কারন জনগণের কথা ভাবলে যে তাদেরকেই বাহির করে দেওয়া হবে দল থেকে।
হত্যার রাজনীতি এত সহজে থামছে না এদেশে। বছরের শেষে হলেই যে নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হবে তাতে আওয়ামীলীগের পরাজয়ের সম্বাভনা খুবই কম। জোর করে হউক আর যেভাবেই হউক, এত সহজে তারা ক্ষমতা ছাড়ছে না। কারণ আওয়ামী নেতারা নির্বাচনে পরাজয় হলে কত জন নেতাকর্মী খুন হতে পারে তার এস্টিমেটও করে ফেলছেন। এর মানে কেউ সাধ করে নিজের মৃত্যু ডেকে আনবে না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকবে। যদি ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহলে গুম খুনের রাজনীতি আরো বেশি অব্যাহত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ওপর দিকে যদি হেরে বসে তাহলে প্রতিপক্ষরা ক্ষমতায় এসে শুরু করবে ভয়ানক খুনের লীলা। এক কোথায় রক্তের বদলে রক্ত চাই-এই ধরনের রাজনীতি। আর মাঝখানে প্রকৃত শোষণ-নিপীড়ণের স্বীকার হব আমরা আমজনতা। ১০ বছর পরে হলেও তো রাজনীতিবিদদের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ থেকে যাচ্ছে। পার্টির কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বজিৎদের মত সাধারণ জনতার হত্যার বিচারের কোনো সুরাহা হয় না এদেশে।

তখন রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লার বাতাসে লাশের গন্ধ কবিতার কথা মনে পরে যায়। এই কবিতা কেন আমাদের জাতীয় সংগীত হয়না তা আমার জানা নেই। সুন্দরবন থাকছে না, তিস্তা থাকছে না। বুড়িগঙ্গা আর শীতলক্ষার হারিয়ে গেছে মহাকালের গহ্বরে। বাংলার দরদী মা থাকছে না। স্কুল ব্যাগ নিয়ে বোনটি ফিরছে না। সেপ্টিন ট্যাংকে লাশের গন্ধ ছাড়া কিছুই পাচ্ছি না। কি হবে সোনার বাংলা গেয়ে যদি কিছুই না থাকে।
ক্ষমা করবেন জাতি। খুব কষ্ট থেকেই বলতে হচ্ছে। আমার সোনার বাংলা কোনো দিন মলিন হতে পারে না। জাতীয় সংগীত যে প্রাণের থেকেও বেশি ভলোবাসি আমরা। তবে তার থেকে জরুরি দেশকে রক্ষা করা। কে করবে সেই মহান কাজ। আমরা তো এখনো গোলামীই ছাড়তে পারলাম না। ব্রিটিশরা আমাদের যেই গোলামী করতে শিখিয়ে গেছে তার গন্ডি থেকে বেরুতেই পারছি না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




