somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশ দেশ করে মাথা খাচ্ছে তারা, যত নক্সালবাদীর দল !

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একজন মানুষ তার জীবনের খুব কম সময় নিরপেক্ষ ভাবে কোনো কিছু চিন্তা করে বা করতে পারে। আবার সাময়িক ভাবে মনে হতে পারে সে নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করছে। কিন্তু আসলেই খুব কম মানুষ থাকে যারা কোনো কিছু নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করতে পারে।
আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর চাই, স্রেফ নিরপেক্ষ ভাবে এবং শুধুই নিরপেক্ষ ভাবে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন। উত্তর না দিলেও একটু ভাববেন তাতেও হবে।
আমাদের দেশের নাম বাংলাদেশ। দেশ নিয়ে এর পরের লাইনে উঠে আসে ৭১ এর কথা। আদৌ বাংলাদেশ মানে শুধুই ৭১ হতে পারে না। এত কম সময়ে একটা যুদ্ধে জয়ী হওয়া যায়না যখন প্রতিপক্ষের হাতে থাকে অধিক উন্নত মরোণস্ত্র। তাও বেশির মুক্তিযোদ্ধারা তার জীবনে এর আগে কোনো দিনও বন্দুক ধরে দেখেনি। তাহলে এত সাহস আর অনুপ্রেরণা উৎস কোথায় ? এই দেশের ইতিহাস কি এতই কম সময় নিয়ে বিস্তৃত ? নিশ্চয়ই না, এর উত্তর আমার ব্লগার ভাইয়ের আমার থেকে অনেক গুন্ ভালো জানেন।
আমরা কখনোই ভালো ছিলাম না। ব্রিটশ প্রিয়ডের আগে অর্থনৈতিক ভাবে আমরা খুব স্বয়ংসম্পূর্ন থাকলেও প্রকৃতঅর্থে শোষিত হয়েছি। ব্রিটিশরা এসে সেই শোষণকে একটা ফর্মেশনে নিয়ে এসে শোষণ করে। তারপর পাকিস্তান প্রিয়ডে শোষনের ষোলকলা পূরণ হলো। দেশস্বাধীন হলো, ইতিহাস বিকৃত হওয়া শুরু হলো। সেই থেকে এই পর্যন্ত সত্যিকারার্থে একজন কুলি-মুজুরের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য রাজনীতি কেউ করেনি। যদি করেও থাকে তবুও সেই রাজনীতি কুলি-মুজুরের ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন বয়ে আনতে পারেনি। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ এর রাজনৈতিক অবস্থানই কেবল স্বয়ংসম্পূর্ন হয়েছে। আপনার দ্বিমত থাকতেই পারে। তবে ইতিহাস নিয়ে আজকে আমার লেখার উদ্দেশ্য নেই। আমি যেই প্রশ্ন গুলো করব তার জন্য দেশ নিয়ে আমার অবস্থান কিছুটা পরিষ্কার করার চেষ্টা করলাম। আশা করি পরবর্তী কথা গুলো আরো বেশি নিরপেক্ষ ভাবে গ্রহণ করবেন।


আমাদের দেশের মানুষ এক ভয়াবহ সময়ের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে। একজন ব্যক্তি হিসেবে আমাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে কোনো কোনো কাজ গুলো আমাদের দেশে পরিবর্তে প্রভাব ফেলতে পারে আমরা সেটা ভাববো।

১। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ফিরে যাই চলুন। বাচ্চারা যখন রাজপথ দখল করে বসে আছে তখন ওইদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলছে। সেদিন আর কেউ খেলা নিয়ে ভাবছে না। কেউ আর ঘন্টার পর ঘন্টা টিভি সেটের সামনে বসে সময় পার করছে না। কারন রাজপথের ওই শিশুদের গায়ে যে হাত তোলা হয়েছে যারা অধিকারের জন্যে নেমেছিল রাজপথে। এমনকি যাদের খেলা দেখব বলে আমরা উত্তেজনায় ঘুমাতে পারতাম না সেই জাতীয় দলের পক্ষ থেকে আহামরি কোনো সমর্থন আমরা পাইনি। শিশুদের উপর হামলার প্রতিবাদ যেইভাবে করার দরকার ছিল তারা করেনি। অধিকার আমরা কখনোই পাইনি সেদিনও পাইনি। মাস খানেক না যেতেই আমরা সব ভুলে গেলাম। ঘুরে ফিরে আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ক্রিকেট ক্রিকেট শুধুই ক্রিকেট। বাহ্ মশাই ! বাহ্। একটা দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার কথা জাতীয় শিক্ষ্যা ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, প্রশাসিক ব্যবস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জাতীয় দুর্যোগ, জনগণের অধিকারের কথা ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এইটা যে ক্রিকেট প্রেমীদের দেশ। এখানে অন্যকিছু প্রধান আলোচনার বিষয় হতে মানা।
আরেকটু স্পেসিফিক ভাবে যদি প্রশ্ন করি, ক্রিকেট কি আমাদের দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, শিক্ষ্যা ব্যবস্থা, অন্যায়-অপরাধ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রভৃতিতে কোনো পরবির্তন আনতে পেরেছে বা আদৌ পারবে ?
সত্যি কি ক্রিকেট আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থার সাপেক্ষে প্রধান আলোচনার বিষয় হওয়ার দাবিদার ?


২। আমাদের দেশের জ্ঞানী গুণীজনদের সবথেকে বড় একটা অংশ আস্তিক হলে নিজের ধর্মকে সঠিক ব্যাখ্যা অথবা নাস্তিক অন্য ধর্মকে ছোট করতে ব্যস্ত। যাদের বেশিরভাগের কথার কোনো সাবলীলতা নেই বা নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য নেই। কেন বললাম ? ধরুন আপনি একটা স্কুলের টিচার। স্টুডেন্টকে শেখাতে হবে। স্টুডেন্ট আদব কায়দা জানলে আপনাকে সম্মান করবে আপানর কথা বুঝার চেষ্টা করবে। বছর শেষে আপনিও বলতে পারবেন কিছুতো অন্তত শেখাতে পারলাম বাচ্চাদের। আর স্টুডেন্ট বেয়াদব বা উশৃঙ্খল হলে নিশ্চয়ই আপনার কথা বুঝার বা শোনার মত অবস্থায় সে নেই। তার কাছ থেকে সেই জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী স্টুডেন্টের মত ভালো কিছু আশা করতে পারেননা। তবুও এখানে একটা গন্তব্য আছে। আজ অবধি এই রকম কয়টা উদাহরণ দিতে পারবেন আপনি যেখানে আস্তিকের যুক্তিতে নাস্তিক ধরাশয়ী হয়ে বা নাস্তিকের যুক্তিতে আস্তিক ধরাশয়ী সেই বিষয়টা মেনে নিয়েছে ? এই রকম নজির খুবই কম। আসলে ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে আপনারা যে পথে এগুচ্ছেন এইটা দেশের সার্বিক উন্নয়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে তো এইটা তো কোনো সমাধানের উপায় না, দ্বিতীয়ত এইটা নিয়ে দেশের মানুষের মাঝেই বিভেদ তৈরী করি তৃতীয় পক্ষকে কে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতিবিদরা এর ফায়দা কম লোটেনি।
একটা বৃহৎ গোষ্ঠীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই আস্তিকতা বা নাস্তিকতা কে এস্ট্যাব্লিশ করা। তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় শিক্ষ্যা ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবকাঠামো, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, প্রশাসিক ব্যবস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জাতীয় দুর্যোগ, জনগণের অধিকারে ইত্যাদি হয়ে উঠে না।
আসলেই কি এই ধরণের কার্যক্রম দেশের জন্য কোনো সুফল বয়ে নিয়ে আসে ?


৩। রাজনৈতিক চেতনার ভিত্তিতে মুখোমুখি অবস্থান। এই ব্যাপার নিয়ে আমার খুব বেশি বলার নেই। কারণ এই মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়। তবে এখন নিরপেক্ষতা খুব জরুরি হয়ে পরেছে। দয়া করে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সড়ে এসে উত্তর দিবেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই মুখোমুখি অবস্থান কি দেশের কোনো সুফল বয়ে আনতে পেরেছে ?

৪। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই ব্যাপারে কিছু বললেই তো মামলা দিয়ে বসবেন আমার নামে। দেশটা যে তেলবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে তাই। যেই চেতনা চেতনা করে বুক ফাটাচ্ছি আমরা, সেই চেতনার প্রতি সম্মান কি আমরা দেখাতে পেরেছি ? পারিনি। বরং চেতনার নাম করে আমরা মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য কে ছোট করে ফেলেছি অনেক ক্ষেত্রে। আপানর কাছে এর অজস্র উদাহরণ আছে। না থাকলে জানাবেন কয়েকশ উদাহরণ দিতে প্রস্তুত আছি। ওইদিকে একদল তো চেতনা নাম বেঁচে দিনকে দিন অন্যায় অবিচারের পাহাড় গড়ে তুলেছে। তাকে কে দিয়েছে সুযোগ ? আমরাই। আমরাই চেতনা চেতনা করে তাদের কথায় চোখ ভিজিয়েছি। একেই বলে রাজনীতির মারপ্যাচ। ক্ষমতাশীলরা এই চেতনাকে যে ব্যবহার করেছে তা আর জানার বাকি নেই জনতার।স্বাধীন দেশে আরো ৩০ লক্ষ মানুষ মরলেও চেতনার ডুগডুগি বাজবেই ?


৫। দেশপ্রেমের শো অফ। ৯০কোটি টাকা দিয়ে মানব পতাকার রেকর্ডের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। আমিও এর পক্ষে। তবে যখন দেখি বন্যায় নদীভাঙনে লক্ষ লক্ষ কৃষক নিঃস্ব তখন এই সব কিছুই অযৌক্তিক মনে হয়। এই রকম শতশত কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে শুধুই শো-অফ এর নামে। যদি এমন হতো যে রাজনীতিবিদরা নিজের উপার্জিত টাকা থেকে এই সব করত তাহলে এক কথা ছিল। এইটা তো জনগণের টাকা। যেই কাজ আমার দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিও অর্জনে সাহায্য করছে না, শো-অফের নাম জনগণের টাকা দিয়ে এই এই ধরণের কাজ কে কি আমরা সমর্থন করতে পারি ?


লোপামুদ্রা গানের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই "আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক। "

কি করলে দেশের পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হবে সেই কথা থেকে আমরা সরে যাচ্ছি দিনকে দিন। নিজেদের কর্মদোষেই অনেকটা আশাহত হয়ে পড়েছি।

বিঃদ্রঃ উপরের কাজ গুলোকে আমি মোটেই ছোট করছি না। সব কিছুরই দরকার আছে। আমি শুধু কোনটাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার দরকার তা নিয়ে পর্যালোচনা করার চেষ্টা করেছি। এইসব ব্যাপার সাধারণ সচেতন জনগণ খুব ভালো করেই জানে। আমি শুধু প্রচারে অংশগ্রহণ করলাম। আমার সাথে দ্বিমত থাকতেই পারে আপানর। অথবা আরো বেশ কিছু বলার থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আর্টিক্যালের দ্বিতীয় পার্ট আপনি লিখতে পারেন। বানানে ভুল থাকলে তার জন্য দুঃখিত। সম্পূর্ণটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
photo credit duckduckgo
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৭
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×