somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে। ৩৮ বছরে অর্জন অসামান্য ও অবিশ্বাস্য।

২৫ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাদাঁগাদীঁ করে ১৫ কোটি মানুষ বসবাস করিতেছি বিশ্বমানচিত্রে নখতুল্য যৎসামান্য এই ক্ষুদ্র ভূখন্ডে। উত্তর-দক্ষিনে ১০০০ আর পূবে-পশ্চিমে ৫০০ কিলোমিটারের বেশী জমিন আমাদের ভাগে বিশ্ব-রাজনীতি বরাদ্ধ করেনি। সামান্য প্রাকৃতিক গ্যাস ছাড়া বড় কোন সোনা দানা তেল হীরা জহরতের খনিও ভাগে পড়েনি। আল্লাহর এই দুনিয়ার পুরোটা জুড়ে রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সৌদিআরব, মার্কিন মুল্লুক বা আলাস্কা। অথচ থাকার মত মানুষ নেই। জমি লোভী রাস্ট্রগুলি মহাসাগরের হাজার হাজার দীপপূঞ্জ পর্যন্ত নিজের দখলে নিয়েছে। হাত বাড়িয়েছে এন্টার্কটিকা, আর্কটিকের বরফ খন্ডে। চাদঁ ও নাকি তাদের! একদিন বলবে, তারাগুলো আমাদের, সুর্য আমাদের, নি:সীম মহাশুন্য আমাদের! তারপর করে ফেলবে প্যাটেন্ট রাইট। দাবি করবে রয়েলটি। সূর্যালোক বাবদ এত ডলার, চন্দ্রালোক বাবদ এত ডলার। প্রবহমান বাতাস বাবদ..।
তবু আমরা ভাল আছি। এত অল্প জায়গায় আমরা কাচাঁপাট রপ্তানীতে এক নাম্বার, নিজেদের প্রয়োজনীয় ধান, শাক-সবজি, ফলমুল, মাছ, মুরগি, ছাগল, ডিম, মরিচ, ভুট্টা উৎপাদন করার পর চিংড়ি, ইলিশ, সবজি রপ্তানি করছি। পোশাক তৈরী করছি বিশ্বের ৬০০ কোটি পূরুষ, মহিলা বা বাচ্চাদের জন্য। এমনকি প্রয়োজনীয় কাপড় বা সুতাও বানাচ্ছি। জমি থাকলে তুলার জন্য মধ্যএশিয়া যেতামনা। আগে জাহাজ ভাংতাম শুধু এখন জাহাজ বানচ্ছি। নিজেরা প্রতিদিন ৩/৪ কাপ চা পান করার পরও ব্যাপক রপ্তানি করছি। সিমেন্ট, সিরামিক, টাইলস, কাচঁ, সার এর মত ভারী শিল্পে আমাদের ইউরোপীয় সাফল্য।
জলবসন্ত ও পোলিও দূরীভূত। একটি বাচ্চাও টিকাদান ব্যতীত নেই। প্রসূতি ও মাতৃস্বাস্থ্যে আমরা অল্পসময়ে ছাড়িয়ে গেছি দক্ষিন এশিয়া। কন্যাশিশুদের শিক্ষার হার পুত্রদের ছেয়ে ঢের বেশী। তাদের প্রতি বাবা মা, পরিবার, রাস্ট্রের যত্ন প্রতিবেশী পারমানবিক শক্তিধর ভারত, পাকিস্তানের তুলনায় ইর্ষনীয় ও অনুকরনীয় বেটার। ছেলে শিশুরা ও ভাল আছে যথারীতি। দম্পতি প্রতি ৮/১০ বাচ্চার এ দেশটিতে ১৫/২০ বছরের প্রচারনায় ২ সন্তান অভ্যাসে চলে এসেছে। কমেছে মৃত্যুহার।
খালবিল নদীনালার দেশে ধমনী শিরার মত পাকা সড়ক হয়ে গেছে অলরেডি। ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু করেছি আমরা। টেলিফোনহীন একটি রাস্ট্রের আবালবৃদ্ধবনিতা সবার হাতে এখন মোবাইল। দ্রুত বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহার। WiMax সেবাতে আমরা প্রথম দের কাতারে নাম লিখাচ্ছি। রাজধানীর কিছু ঘাটতি ছাড়া বিশুদ্ধ পানি আমাদের সবার নাগালে যা বহূ দেশে দুর্লভ।
মত, মতপ্রকাশ এখানে সম্ভবত: স্বাধীনতার চূড়ান্ত। শত শত সংবাদপত্র, ডজনাধিক টিভি চ্যানেল, ওয়েবসাইট, ব্লগসাইট, রেডিও সারাক্ষন ইচ্ছামত সরকার বা যেকারোর সমালোচনা করছে। সভা, সমিতি, সেমিনার, বই, সংঘটনের জোয়ারে দেশ ভাসছে। আরব বিশ্ব, আফ্রিকা, চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ ও ল্যাটিনের মানুষের কাছে যা সপ্ন মাত্র! মুক্ত বিশ্বের আঁতুড়ঘর মার্কিন যুক্তরাস্ট্রও অতটা মুক্ত নয়।
আমাদের প্রকৌশলী, ডাক্তার, আর্কিটেক্ট, লয়ার, একাউন্টেটস রা নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভীনদেশেও সেবা দিচ্ছে। দ্রুত এগোচ্ছে প্রোগামাররা। সফটওয়ার, গেমস, এনিমেশন তৈরী শুরু হয়েছে।
সুতরাং, বালাদেশ এগুচ্ছে। ৩৮ বছরে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য ও অবিশ্বাস্য। এশিয়া, আফ্রিকা বা ল্যাটিনের অনেক মানুষের কাছে আমাদের গল্প বললে বলবে- একবার নিয়ে চলুনতু দেশটাতে। যেখানে বৃদ্ধ মা-বাবাকে আকঁড়ে থাকে সন্তান, নিয়ম করে বাপের বাড়ি নাইওর যায় বিবাহিত কন্যা, প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে চারদিন খাবার পাঠায় প্রতিবেশী, পাড়ার মুরব্বীদের সামনে পড়লে লুকিয়ে ফেলা হয় হাতের জ্বলন্ত সিগারেট, শিক্ষকের সামনে নত থাকে বয়োবৃদ্ধ সাবেক ছাত্রটিও, স্বামীর আগে খাবার হজম হয়না স্ত্রীর, আর সন্তান মানে নিজের হৃৎপিন্ড। এমন দেশটি আমার মাতৃভূমি। বাংলাদেশ। আমার মা। মা'র ৩৮ তম জন্মবার্ষিকীতে সবাইকে আগাম শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০৪
১৮টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×