somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিলবিল কিলবিল GPA 5.0, ক্যাডেট ও ভিকারুন্নিসাদের হোলি, মুখস্থ আর ভর্তুকি নির্ভর গর্দভ শিক্ষাব্যবস্থার বাৎসরিক প্রসবোৎসব

২৬ শে জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সেই একই ছবি। একই শব্দ। একই ঢোল। ক্যামেরাম্যানের কষ্ঠকর ভ্রমনের কোনই প্রয়োজনীয়তা দেখিনা। বরং স্টুডিওতে বসেই প্রচার করা যায়- ভিকারুন্নিসা, সিটি, নটরডেম, চট্টগ্রাম কলেজ, হলিক্রস, ক্যাডেট কলেজ সমুহের প্রায় সবাই জিপিএ ৫ পেয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকমন্ডলী মিলে ঝুলে দিনভর ব্যাপক নর্তন কুর্দন করছেন। দুপুর ২টার আগেই মিস্টির দোকানের ঝাপ নামানো হয়ে গিয়েছে। Congratulation! এক অদ্ভুৎ গ্রেড বন্যা চালু হয়েছে। কাটখোট্টা বা নিন্দুক যে সমালোচনাই কপালে জুটক, বিদ্যমান HSC (& SSC) Level এর মূল্যায়ন, ফলাফল ও জিপিএ ৫ পাওয়ার কারনে নাচানাচি বা না পাওয়ার কারনে ক্রন্দন কোনটাই হজম হচ্ছেনা! সত্যিকার অর্থে এটাকে কোন অর্জন বলতেই দ্বিধা হয়। অজপাড়াগাঁয়ে কিন্চিৎ ইজ্জত সম্মান পাওয়ার নিভু নিভু আশা থাকলেও ঢাবি, বুয়েট, মেডিক্যালগুলোর ক্যাম্পাসে কাউকে জিপিএ জিজ্ঞেস করাই নাকি এখন অপরাধ! কারন এটা সবারই সমান!! পাচঁ এর কম কারো থাকলেই বরং বৈচিত্র্যজনিত কদর!!!
আর বাংলাদেশ মানেই নামকরা কটি কলেজ- অন্তত এধরনের ফলাফলের দিন। ঢাকা আর ঢাকার বাইরে মূলত পুরনো জেলার প্রধান কলেজটি। এর বাইরে ৫৫০০০ বর্গমাইল সেই তিমিরে, যে তিমিরে বাদুড়রা উড়াউড়ি করে, প্যাচারাঁ ইঁদুর অভিযানে বেরুয়! আমার জেলায় সরকারী, এমপিও, ননএমপিও মিলে কমছে কম ৩০টি কলেজ আছে, আলিম মাদ্রাসার সংখ্যা অগনিত। না! নাম শুনিনি। বছর বছর পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ দুটোই হচ্ছে। কালে ভদ্রে গোবরে পদ্মফুল গজিয়ে জাতীয় পত্রিকার স্থানীয় সংবাদও হচ্ছে বটে! কিন্তু অই অতটুকুই! মোটাদাগে হারিয়ে যাচ্ছে ফেল, ১.০, ২.০ বা বড়জোর ৩.০ নিয়ে। বর্তমানে বাজারে এসব নিতান্তই থার্ড ক্লাস! ভালোছাত্র কৈশোরেই পাড়ি জমাচ্ছে বিভাগের প্রধান কলেজ বা নটরডেমে। ফলে ওখানকার কর্তৃপক্ষকে আর বেশী ধকল পোহাতে হয়না। মোটাদাগে চরম কেন্দ্রীভুত ও বাজে অবস্থায় শিক্ষাবিস্তার। উপজেলা স্তরের কলেজগুলো একধরনের গোচারনভুমি ও টাউটবাটপারদের আড্ডাখানা। English, Math, Accounting, Stat এসবের শিক্ষক নেই বললেই চলে। ওনারা থাকতে চাননা। প্রাইভেটের রেট ও মুরগীসংখ্যা দুটোই কম।
বলদ মার্কা এ শিক্ষার হাস্যকর আরেক হাল শহরের মেধাবীদের আখড়ায়ও। সেটা প্রাইভেটের মিছিল। চট্টগ্রাম কলেজের কথাই বলি। বুঝে না বুঝে ভেড়ার পালের মত সকাল বিকেল অমুক আলী, তমুক আলম স্যারদের বাসায় রীতিমত স্ট্যান্ড করা বন্ধুরা ৩০/৪০ জনের ব্যাচে দৌড়ায়। পদার্থ, রসায়ন, গনিত, ইংরেজী কার কাছে পড়ছিস? কারো কাছেই না জবাবে চোখ তুলে কপালে ঠেকাত পোলাপান। ইতরবিশেষ কিছু বাংলা, বায়োলজিকেও মাফ করেনি। আরে হালায় ইসহাক নুরুন্নবীর মোটা বইটা বা সিরাজুর রহমান (বা ইসলাম) এর পদার্থ, রসায়ন মূল বইটা Thoroughly পড়লে কি অমন বাকী থাকে? বোটানীর মেইন বই দু দফা ঝালাই করলে কি রহস্য বকেয়া থাকে স্যারদের বাসায় দৌড়ানোর জন্য? প্র্যাকটিক্যাল নম্বর? ওটাতো খরছা করলেই হত!!
তবে সবমুর্খতাই ছাড়িয়ে যায় ইংরেজীর কাহিল অবস্থা দেখলে। এ একটা বিষয়ে ভারত, পাকিস্তান বা শ্রীলংকার মত সম-বাস্তবতার রাস্ট্র থেকে আমরা যোজন যোজন দুরে। এর খেসারতও নগদ। সেটা আমেরিকার কর্পোরেট মার্কেটে, মিডলইস্টের Blue Collar Job বা অন্যান্য বাণিজ্যে। Medical Transcription, IT এসবেও গোত্তা খাওয়ার এটা বড় এক কারন। Call Center এও খাবে ইনশাআল্লাহ্‌!!! ১২ বছর বা আরো বেশী সময় ধরে নিছক একটা Language Course এ পাঠ নেয়ার পরও এটা পড়তে পারেনা, প্রশ্ন বা ইনস্ট্রাকশান বুঝেনা এমন গ্রাজুয়েট কোটি কোটি, একপাতা লিখতে দিলেতো প্রাণটাই ফুরুৎ করে উড়াল দেয় কিনা! আর স্পিকিং? থাক্‌! কারন একটাই পিটিয়ে Paragraph, Essay, Letter, Application মুখস্ত করানো হয়েছে। ফলে আজব এক কথা শুনা যেত Essay Common পড়েনি!!! শৈশব থেকে বানিয়ে বানিয়ে উত্তর লিখার অভ্যাস ছিল বলে হাইস্কুলে এ লেখক কম পিটুনীর শিকার হয়নি- মোটামাথার শিক্ষককূল দ্বারা!
তবে যাই হোক প্রসব প্রক্রিয়া চলছে। একটি গর্ধভ শিক্ষাব্যব্স্থার প্রসুতি ওয়ার্ডে কি আর প্রসব হবে? ভুলে ভালে দু'চারটা বেজম্মা অন্যান্য প্রাণি! আর মিছিলের পর মিছিল......!
ছোট ভ্রাত, ভগিনী, ভাস্তেদেরকে এন্তার অভিনন্দন! আমার কথায় কান দিয়ে লাভ নেই। নিজের মত এগিয়ে যাও।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৫
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×