বেশ কিছু দিন থেকে বাংলাদেশে নাস্তিক-মুরতাদ নিয়ে সমাজের শীর্ষ পর্যায় থেকে প্রান্তিক মানুষ পর্যন্ত চায়ের কাপে প্রচন্ড ঝড় তুলছে। যে নাস্তিক তার নাম মুসলমানী হলেও তার তো কোন ধর্মে বিশ্বাস নেই, কাজেই সে মুসলমান নয়। এই বাংলাদেশে যারা নিজেকে মুসলমান মনে করেন আমার মনে হচ্ছে তারা আজ দুভাগে বিভক্ত। প্রথম পক্ষ হচ্ছে, তারা মহান আল্লাহ পাক ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে কোন তুলনা ও কটুক্তি করেন না এবং দ্বিতীয় পক্ষ হচ্ছে তারা মহান আল্লাহ পাক ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে তুলনা ও কটুক্তি করেন।
প্রথম পক্ষ হচ্ছে যারা মহানবী (সঃ) এর সুন্নত, সাহাবায়ে কেরাম, পীর-অলিআউলিয়া ( বড়পীর আব্দুল কাদের জীলানী, খাজা মঈন উদ্দিন চিশতী, হযরত শাহ্ জালাল (রঃ) ইত্যাদি ) এর অনুসারী। তারা মনে করেন মহান আল্লাহ তায়ালা কোন ভূল করেননি বা করেননা। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে সৃষ্টির জন্য আল্লাহ সমগ্র পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তারা হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে কারও সাথে তুলনা করেন না্ । হযরত মুহাম্মদ (সঃ) সম্পূর্ণ নিষ্পাপ ও সমালোচনার উপরে। তারা মনে করেন সাহাবায়ে কেরামগন, পীর অলি-আউলিয়ারা (ভন্ড পীর ব্যতীত) আল্লাহর প্রিয় মানুষ । সাহাবায়ে কেরাম ও পীর-অলি আউলিয়ারা হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে যথাযথ অনুসরন করে এসেছেন তাই সাহাবায়ে কেরাম ও পীর-অলি আউলিয়ারা অনুসরনযোগ্য। তারা মনে করেন ইসলামে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। যারা ধর্মের নামে বোমা মারে, মানুষ হত্যা করে, রগ কাটে তারা ধর্মের বরখেলাপ করছে। এই প্রথম পক্ষ হচ্ছে আহলে সুন্নাতুল জামাত।
দ্বিতীয় পক্ষের মধ্যে আবার দুইটি ধারা আছে। প্রথমটি হচ্ছে ওহাবীবাদ ও
২য়টি হচ্ছে মওদুদীবাদ। ওহাবীবাদ হচ্ছে বর্তামন হেফাজতে ইসলাম আর মওদুদীবাদ হচ্ছে বর্তমান জামাত-শিবির।
হেফাজতে ইসলামের সভাপতি আহমদ শফী তার ‘ভিত্তিহীন প্রশ্নের মুলৎপাটন’ বইতে লিখেছেন, ‘‘আল্লাহ মিথ্যা কথা বলার ক্ষমতা রাখেন কিন্তু বলেন না। আল্লাহ ওয়াদা খেলাফ করার ক্ষমতা রাখেন কিন্তু করেন না।’’
তিনি তার আরেক বই ‘ত্বাকভিয়াতুল ঈমান’ বইয়ের ৬১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,‘‘নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আমাদের বড় ভাইয়ের মত, উনাকে বড় ভাইয়ের মত সম্মান কর, এর বেশী নয়।’’
‘‘নবীর মর্যাদা উম্মতের মধ্যে গ্রামের চৌধুরী ও জমিদারের মত।’’তারা মনে করেন নবী করীম (সঃ) অন্য সব মুসলমানের মত একজন সাধারন মানুষ। (নাউযুবিল্লাহ)
আবুল আলা মওদুদী তার ‘তাফহীমাত-২য়খন্ড-২৮১পৃষ্ঠায় লিখেছেন,‘‘যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ)’’
“ফেরেশতা প্রায় ঐ জিনিস যাকে গ্রীক, ভারত ইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে।” (নাঊযুবিল্লাহ) (তাজদীদ ও ইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০ পৃষ্ঠা)
“নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যক নবী গুনাহ করেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ)(তাফহীমাত, ২য় খন্ড, ৪৩ পৃষ্ঠা)
“সাহাবাদিগকে সত্যের মাপকাঠি জানবে না।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(দস্তরে জামাতে ইসলামী, ৭ পৃষ্ঠা)
আমি সকল মুসলমানদের বলব, আপনার ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন কোন পক্ষে থাকবেন। মহান আল্লাহ আমাদের সবার ঈমান ও আমল হেফাজতে রাখুন। আমিন।