পত্রিকা অফিসের পিয়নও একজন বড় সাংবাদিক, কাজেই কম্পোজার হিসেবে স্বপন তার চেয়ে এক কাঠি বড় সাংবাদিক দাবী করতেই পারে। কেবল দাবী করলেই তো চলেনা, এর একটা প্রমাণ থাকা চাই। আর সাংবাদিক কোটায় টেলিটকের সীম পাওয়ার পর সেটা জানান দিয়ে আমার চিকন ব্যাথাটা আরেকটু বাড়িয়ে দিয়ে গেল। আক্ষরিক অর্থে সাবএডিটরকে এমনিতেই সাংবাদিক বলা চলেনা তার ওপর সাংবাদিকতায় গ্রাজুয়েশন না করায় এই লাইনে নিজেরে কেমন জানি ২য় শ্রেনীর নাগরিক লাগে। কেবল বেকার বসে থাকায় পাড়ার এক বড় ভাই এর সুবাদে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কে দুই একটা অনুবাদ আর বাকী সময় ঝিমানোর দায়িত্ব পেয়েছি। তবে সাংবাদিকদের দেখলে জাদরেল মন্ত্রীকেও যেমনে ঢোক গিলতে দেখা যায় তাতে নিজেরে সাংবাদিক না ভাবতে পারার মধ্যে চিকন একটা ব্যাথা রিন রিন করাটা অস্বাভাবিক নয়। বিধাতাকে মনে হয় আমার এই গোপন ব্যাথাটা একটু নাড়া দিয়েছিল আর এর শিকার হলো স্বয়ং স্বপন। নির্ধারিত দিনে লাইনে দাড়িয়ে টেলিটকের সীম তুলতে গিয়ে পুলিশের বেমক্কা ঘুষিতে স্বপনের এক চোখ আদিবাসী কোটাভুক্ত দেখে নিজেকে ধন্য মনে না করলে অন্যায় - ভাগ্যিস লটারিটা লাগেনি।
সেটাই- টেলিটকের ফার্স্ট জেনারেশনের সীম পেতে অনলাইনে আবেদন, লটারী জেতার উতকন্ঠিত অপেক্ষা, বিজয়ের আনন্দের পর কয়েকমাস পর ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে সীম উত্তোলন (২৬০০ টাকা যতদুর মনে পড়ে, তখন গ্রামীনর সীম ৫০০/৬০০ টাকায় পাওয়া যেত), তারপর লাইনে হট্টগোল আর পুলিশের উষ্টানি - সে এক বিরাট ইতিহাস (ফোনের সিম পেতে এরকম দজ্ঞযজ্ঞ নিশ্চয় টেলিকমুনিকেশনের ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা থাকবে)
সেকেন্ড জেনারেশন
ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের দিকে রিক্সায় মাইকিং করে কি যেন বিক্রি করছিল। যৌবন পুনরুদ্ধারের ওষুধ হয়তো, কিন্তু তার জন্য এরকম পশ এরিয়াটা কি যুতসই হতে পারে, ভাবতে ভাবতেই চোখ ছানাবাড়া ...মাত্র একশ টাকায় টেলিটকের সিম বিক্রি হচ্ছে, শুধু এক কপি ছবি যদি থাকে! মানিব্যাগের চিপায় এক কপি ছবি মিলে গেল, তারপর...... আমি টেলিটকের ২য় প্রজন্মের (আকাশের টেলিটক রাস্তায় নেমে আসার জন্য ২য় প্রজন্ম বলাটা যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত) একজন গর্বিত গ্রাহক। যদিও কল প্রেরকদের অব্যাহত গালি আর প্রেরণকারী হিসেবে নিজেকে অজস্র গালি দেয়া সত্বেও টেলিটকটা আর ছাড়তে পারছিলামনা, কারণ নিম্মির সাথে ২৫/২৫ পয়সায় রাতালাপটার জন্য বেশি সাশ্রয়ীই ছিল বটে
থার্ড জেনারেশন
আবুল হোসেন বা মান্যবর প্রধানমন্ত্রী নিজেদের যতই দেশপ্রেমিক ভাবেননা কেন একটা ঘাটতি ঠিকই রয়ে গেছে। ওনাদের কেউই টেলিটক ইউজার না। ৫ বারের চেষ্টায় আউটগোয়িং আর ৩ বারের চেষ্টায় ইনকামিং কল, ৩ বারের মাথায় রিচার্জ সাকসেস - এমন পরিস্থিতির পরও যারা টেলিটক ছাড়তে পারছেনা তারা নিছক দেশের টানেই ছাড়তে পারছেনা, তাদের চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক আর কজন আছে। যদিও এবার প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলাম বিশ্বাসঘাতক হয়ে গ্রামীন বা এয়ারটেলে চলে যাব। কিন্তু ৩য় প্রজম্নের লোভে যেতে পারিনি। যদিও গ্রাভিটি ক্লাবের ফাদে পা দেইনি। কারণ ১ম প্রজন্মের ইতিহাস ভুলিনি। আর ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়াটা কতটা উপকারী তা ভুক্তভোগীদের সীম বদলানোর জন্য বিশাল লাইন থেকেই বোঝা যায়। মাঝখান দিয়ে সিমের ডাটা আর ৮০০/৯০০ টাকা গচ্চা..
তবে একেবারে হতাশ নই, এখনও কখনো কখনো কল আসে আবার যায়ও।
অভাগা দেশের টেলিটক হস্তি
বিদ্যুতের সাথে করিয়াছে দোস্তি
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




