somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালাবাসা দিবস।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধুরা, আগামী 14 ফেব্রুয়ারী
বিশ্ব ভালাবাসা দিবস।
ভালোবাসা শব্দটি খুব সহজেই
সকলের সহজাত প্রবৃত্তির সাথে
মিশে যায়। কেননা জন্মের পর
থেকেই মানুষের বেড়ে উঠা এই
ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই।
আর তাই ভালোবাসার
দিনটিকে নিয়ে সকলের
ভাবনাটাও থাকে বিশেষ।
ভালোবাসা' পৃথিবীর
সবচেয়ে মধুর কোমল দুরন্ত
মানবিক অনুভূতি। ভালোবাসা
নিয়ে ছড়িয়ে আছে কত কত
পৌরাণিক উপাখ্যান।
সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতি সর্বত্রই
পাওয়া যায় ভালোবাসার
সন্ধান। আর তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি
মানেই প্রজন্মের কাছে একটি
কাঙ্ক্ষিত দিন। দুনিয়াজুড়ে
দিনটিকে অত্যন্ত আগ্রহ ও আনন্দের
সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে।
তারুণ্যের অনাবিল আনন্দ আর
বিশুদ্ধ উচ্ছ্বাসে সারা বিশ্বের
মতো আমাদের দেশেও দিনটি
নিয়ে থাকে প্রচুর মাতামাতি।
কী এই ভ্যালেন্টাইনস ডে?
কীভাবে তার উত্পত্তি?
কেনইবা একে ঘিরে
ভালোবাসা উত্সবের আহ্বান?
প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আছে
নানা মুনির নানা মত। এর মধ্যে
সবচেয়ে বেশি প্রচলিত
ইতিহাসটি হচ্ছে ধর্মযাজক সেন্ট
ভ্যালেন্টাইনের। ধর্মযাজক সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন ছিলেন
শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও
সদালাপি এবং খ্রিস্টধর্ম
প্রচারক। আর রোম সম্রাট
দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন
বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায়
বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে
তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে
বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা
অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ
করা হয়। সম্রাটের বারবার
খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা
প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০
খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি
রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে
ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান
করেন। সেই থেকেই দিনটির শুরু। এ
ছাড়া আরও একটি প্রচলিত ঘটনা
আছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে
নিয়েই। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন
কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত
যুবক-যুবতীদের অনেকেই
প্রতিদিন তাকে কারাগারে
দেখতে আসত এবং ফুল উপহার
দিত। তারা বিভিন্ন
উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট
ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত।
এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও
ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত।
অনেকক্ষণ ধরে তারা দু'জন প্রাণ
খুলে কথা বলত। একসময়
ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে
যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের
আধ্যাত্মিক চিকিত্সায় অন্ধ
মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।
ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা
ও তার প্রতি দেশের যুবক-
যুবতীদের ভালোবাসার কথা
সম্রাটের কানে গেলে তিনি
ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪
ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এছাড়া খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে,
২৬৯ খ্রিস্টাব্দের
সাম্রাজ্যবাদী, রক্তপিপাষু
রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের
দরকার এক বিশাল
সৈন্যবাহিনীর। একসময় তার
সেনাবাহিনীতে সেনা সংকট
দেখা দেয়। কিন্তু কেউ তার
সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে
রাজি নয়। সম্রাট লক্ষ করলেন যে,
অবিবাহিত যুবকরা যুদ্ধের কঠিন
মুহূর্তে অত্যধিক ধৈর্যশীল হয়।
ফলে তিনি যুবকদের বিবাহ
কিংবা যুগলবন্দী হওয়ার উপর
নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
যাতে তারা
সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে
অনীহা প্রকাশ না করে। তার এ
ঘোষণায় দেশের যুবক-যুবতীরা
ক্ষেপে যায়। যুবক সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন নামের এক
ধর্মযাজকও সম্রাটের এ
নিষেধাজ্ঞা কিছুতেই মেনে
নিতে পারেননি। প্রথমে তিনি
সেন্ট মারিয়াসকে
ভালোবেসে বিয়ের মাধ্যমে
রাজার আজ্ঞাকে প্রত্যাখ্যান
করেন এবং তার গির্জায়
গোপনে বিয়ে পড়ানোর
কাজও চালাতে থাকেন। একটি
রুমে বর-বধূ বসিয়ে মোমবাতির
স্বল্প আলোয় ভ্যালেন্টাইন ফিস
ফিস করে বিয়ের মন্ত্র পড়াতেন।
কিন্তু এ বিষয়টি একসময়ে সম্রাট
ক্লডিয়াসের কানে গেলে
সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে
গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ২৭০
খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি
সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনকে হাত-
পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে
সম্রাটের সামনে হাজির করলে
তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন।
আরেকটি খ্রিস্টীয় ইতিহাস
মতে, গোটা ইউরোপে যখন
খ্রিস্টান ধর্মের জয়জয়কার, তখনও
ঘটা করে পালিত হতো
রোমীয় একটি রীতি। মধ্য
ফেব্রুয়ারিতে গ্রামের সকল
যুবকরা সমস্ত মেয়েদের নাম
চিরকুটে লিখে একটি পাত্রে
বা বাক্সে জমা করত। অতঃপর ওই
বাক্স হতে প্রত্যেক যুবক একটি
করে চিরকুট তুলত, যার হাতে যে
মেয়ের নাম উঠত, সে পূর্ণবত্সর ওই
মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত। আর
তাকে চিঠি লিখত, এ বলে
'প্রতিমা মাতার নামে
তোমার প্রতি এ পত্র প্রেরণ
করছি।' বছর শেষে এ সম্পর্ক নবায়ন
বা পরিবর্তন করা হতো। এ
রীতিটি কয়েকজন পাদ্রীর
গোচরীভূত হলে তারা একে
সমূলে উত্পাটন করা অসম্ভব ভেবে
শুধু নাম পাল্টে দিয়ে একে
খ্রিস্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং
ঘোষণা করে এখন থেকে এ
পত্রগুলো 'সেন্ট ভ্যালেনটাইন'-
এর নামে প্রেরণ করতে হবে।
কারণ এটা খ্রিস্টান নিদর্শন,
যাতে এটা কালক্রমে খ্রিস্টান
ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়।
অন্য আরেকটি মতে, প্রাচীন
রোমে দেবতাদের রানি
জুনোর সম্মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি
ছুটি পালন করা হতো।
রোমানরা বিশ্বাস করত যে,
জুনোর ইশারা-ইঙ্গিত ছাড়া
কোনো বিয়ে সফল হয় না।
ছুটির পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি
লুপারকালিয়া ভোজ উত্সবে
হাজারও তরুণের মেলায়
র্যাফেল ড্র'র মাধ্যমে সঙ্গী
বাছাই প্রক্রিয়া চলত। এ উত্সবে
উপস্থিত তরুণীরা তাদের
নামাংকিত কাগজের স্লিপ
জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে
ফেলত। সেখান থেকে যুবকের
তোলা স্লিপের তরুণীকে
কাছে ডেকে নিত। কখনও এ জুটি
সারা বছরের জন্য স্থায়ী হতো
এবং ভালোবাসার সিঁড়ি
বেয়ে বিয়েতে গড়াতো ওই
সম্পর্ক। ওই দিনের শোক গাঁথায়
আজকের এই 'ভ্যালেন্টাইন ডে'।
এমন অনেক প্রচলিত ঘটনা, তথ্য-
উপাত্ত পাওয়া যায়
ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস
নিয়ে। একেকজন একেকভাবে এর
যুক্তি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ
উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা
হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার
অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড
ব্যয় করে এই ভালোবাসা
দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট,
অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও
শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করতে, এবং
আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি
শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা
হয়।
আগামী ভালবাসা দিবসের
ভালবাসা শুধু স্বামী-স্ত্রী বা
প্রেমিক-প্রেমিকার ভালবাসা
নয়, মিশে আছে বাবা-মা, ভা্ই-
বোন, বন্ধুদের ভালবাসার মধ্যেও।
তাই এদিনে ঘরে-বাইরে
বেহায়াপনা নয়, সকলস্থানে-
সবসময় আমরা আমাদের পরিবার,
বন্ধু-বান্ধব, আত্বীয়-স্বজন,
পাড়াপ্রতিবেশিদের
ভালবাসবো-তাহলেই আসবে
এদিবসের স্বাথর্কতা।
ভালবাসা নিয়ে আপনার প্রিয়
অনুভুতির কথাগুলো লিখুন এই
স্ট্যাটাসে।


((বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রিহিত))
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×