আমাদের দেশের পুলিশ বিভাগকে মুলতঃ পেশাদারী সংস্থা হিসেবে গড়ে না তুলে বিভিন্ন সময়ের সরকারগুলো ভিন্নমত ও দলগুলোকে দমন করার মানসে তাকে একেবারেই ঠ্যাঙারে বাহিনীতে পরিণত করে ফেলেছে। তাছাড়া নিয়োগে যদি মেধাবীদের অগ্রাধিকার না দিয়ে দলীয় পরিচয় ও ঘুষ-বানিজ্যের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ করা হয়, তাহ’লে সৃষ্টিশীল কিছু তাদের দিয়ে কি আশা করা যায় ? বর্তমান কালে অপরাধের ধরণে অনেক বৈচিত্র এসেছে, যা মোকাবেলায় যেমন প্রযুক্তি দরকার, তেমনি দরকার মেধা-সম্পন্ন কর্মী, যারা অপরাধের ধরণ বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির বাইরেও অনেক কারিশমা দেখাতে পারেন। তাই পুলিশ বাহিনীকে জঙ্গী দমনসহ অন্যান্য নানা অপরাধ দমনে কার্যকর করার জন্য শাখা হিসেবে বিশেষায়িত বাহিনী গড়া হয়ত দরকার, কিন্তু তারও আগে যা দরকার, তা হ’ল ঐ বাহিনীকে দলীয় বা সরকারী ঠ্যাঙারে বাহিনীর গন্ডী থেকে অবমুক্ত করে সত্যিকারের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের নিয়োগ দিয়ে তাকে চৌকস করে গড়ে তোলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হ’ল- তা এদেশে হবার নয় !পুলিশ চেষ্টা করলে আসল অপরাধীরা ধরা পরবেই, কিন্তু তাদের কাজ শুরু করার আগেই, হাছান সাহেব, মতিন সাহেব, হানিফ সাহেব বলে দেন কারা অপরাধী, তখন আর পুলিশ এর কিছু করার থাকেনা। তখন পুলিশ তাদের কথা সত্য প্রমান এর কাজে লেগে পরেন। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত কোন জংগী মামলার রায় হয়েছে বলে আমার জানা নাই।
পুলিশ র্যাব দিনরাত সরকারের গতি রক্ষায় জামায়াত বিএনপির বিরুদ্ধে দৌড়াচ্ছে ওরা দেশের জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার যে পরিকল্পনা সেটা করার সময় নাই । দেশে সি আইডি ডিআই বি যারা আছেন তারা সবাই দলীয় চাপে আছেন যে কারণে পিলকানার মতো হত্যাকান্ত ঘটার আগে তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন নাই। ঢাকা শহরে র্যাব পুলিশ পরিচয়ে কালো গ্রাসের গাড়ি দিয়ে খুন গুম অপহরন হচ্ছে,।
পুলিশ আছে ঘুষ খাওয়ার তালে !পোসটিং পেতে হলে পুলিশ কে পুলিশ কে ই ঘুষ দিতে হয় !!! মামলার তদন্তে কোন নিরদোষ ব্যাক্তির নাম বাদ দিতে ও পুলিশ কে তার চেয়ে বড় পুলিশ কে টাকা দিতে হয় !!!তাই ঐ নিরদোষ ব্যাক্তি কে ও বাচার জন্য পুলিশ কে টাকা দিতে হয় ! এমন ই গুনি এ দেশের পুলিশ !!!!
সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে শুধুমাত্র র্যাবই যথেষ্ট ছিল জঙ্গী দমনে। কিন্তু না ২০০৫/০৬ এর সময়কার র্যাব আর আজকের র্যাব বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক তফাৎ।মনে পড়ে কর্ণেল গুলজারের কথা।একের পর এক ফিল্মী স্টাইলের অভিযান..... কোটি কোটি চোখ তখন টিভির পর্দায় "সরাসরি সম্প্রচারে"।সানীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল কিন্তু কেউই টের পায়নি এই সেই াদুর্ধর্ষ জঙ্গী সানী,শায়খ আব্দুর রহমানের ছোট ভাই।মজার ব্যাপার হল পরদিন সকালে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনেরর আগ পর্যন্ত মিডিয়াও কিছুই জানতে পারেনি এ বিষয়ে।এমনই সুক্ষ্ম পরিকল্পনা ছিল।এর বিনিময়ে কর্ণেল গুলজার পেয়েছিল অধুনা বিডিআর সদর দপ্তরে নির্মম হত্যাকান্ড!!... যে লোকটার কারণে হাজার হাজার প্রাণ বেচেঁছিল (জেএমবি দমন) সে নিজেই ঘাতকের প্ল্যানে পৃথিবী থেকে চলে গিয়েছে । র্যাব একটা সময় স্বাধীন ছিল, স্বাভাবিকভাবে পেশাদারিত্ব অনেক ভাল ছিল, ছিল চৌকস গোয়েন্দা বিভাগ । এখনকার র্যাব কতটা দক্ষ এ বিষয়ে আমি সন্দিহান, তবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না এটা নিশ্চিৎ, অনেক অযোগ্য দলীয় লোক ঢুকানো হয়েছে, রাস্তায় বিরোধী দল দমনে ব্যবহার করা হয়েছে, র্যাবের কিছু মানুষের দুর্নীতির কারণে নিরাপরাধ মানুষকে ক্রসয়ায়ারে দেওয়া হয়েছে । ফলাফল জনগণের হিরো র্যাব আর আগের অবস্হানে কোনভাবেই নাই, অপরাধীরা র্যাববে আর কেয়ার করে না, জানে এরা পুলিশের মতো এখন 'ম্যানেজম্যান্ট' যোগ্য । একটা এ্যালিট ফোর্সের কি করুণ অবস্হা । আশা করি র্যাব হয়তো আবার আগের সক্ষমতায় ফিরে আসবে, দেশের এ পরিস্হিতিতে এটা খুবই প্রয়োজনীয় । লীগ সরকার যত তাড়াতাড়ি এটা বুঝবে, দেশ ও জনগণের জন্য ততোই মঙ্গলজনক ।
আসলেই কি আপনারা এইসব নিউজ ব্লগে ছেপে দেশটাকে শান্তির পথে এগিয়ে নিতে চাই ? এসব কেন হচ্ছে , কোথায় এসবের রহস্য নিয়োজিত তা কি আপনারা বুঝতে পারেন না ? না কি না বোঝার ভান করেন ? যা জলের মত পরিস্কার করে বলতে চাই, তাতো আপনারা জবাই করে দেন । প্রচার করেন না । কোন জু জু র ভয়ে ? আপনারা জু জুর ভয় নিয়েই থাকুন, আর এসব গদ বাধা কথা লিখতে থাকুন, এর পরে যখন সত্যিকার বুঝবেন তখন দেখবেন রাখাল বালক ঠিকই বাঘের পেটে চলে গেছে । বেশী কিছু নয়, নির্বাচনের সময় পংকজ শরণ প্রকাশ্যে কি বলেছিল ? সেই কথাটা স্মরণ করে বালিশে মাথা দিয়ে বালিশকে প্রশ্ন করুন, এসব কেন হচ্ছে, পুলিশ কেন ধরি ধরি নাটক করে, তদন্তকারীরা কেন এগুতে পারেনা, দেশকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে ।এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর একটি বড় অংশকে বিরোধী দলের কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ আর তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করার কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। বাহিনীগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া অনেক কর্ম কর্তা রয়েছেন যাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও মেধার ঘাটতি রয়েছে। সেই সাথে ঘুষ, চাঁদাবাজি আর দুর্নীতির রমরমা অবস্থা, যে যেভাবে পারছে লুটে নিচ্ছে। পুরো সিস্টেমটাইতো ভেঙ্গে পড়েছে। মনোপলি গণতান্ত্রিক রাজনীতির সুদূরপ্রসারী প্রভাব এগুলো। নিজেদেরকে এতটাই অরক্ষিত মনে হয়, যে েকউ ইচ্ছা করলেই যেন কিছু একটা করে ফেলতে পারবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪