somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ

১১ ই মে, ২০১২ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধ অপরাধ বলতে আমরা বুঝি যেকোনো যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন কে । যুদ্ধ যদিও মানবাধিকার এর বিপক্ষে একটি চরম অবস্থা , তার পর ও ওই সময়েও নুন্যতম মানবাধিকার সংরক্ষণ এর জোর দেয়া হয়েছে International humanitarian law এ ।

কিছু ধারণা থাকা উচিত এই আইন সম্মর্কে , “চরম পরিমানে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হলে তাকে যুদ্ধ অপরাধ বলা হবে” , যুদ্ধ বন্দীদের হত্যা এবং অমানবিক অত্যাচার হলে , ব্যাপক পরিমানে অকারণে স্থাপনা ধংশ করা হলে এবং বেসামরিক মানুষ হত্যা করা হলে এই আইন অনুসারে সেই বেক্তি বা বাহিনীকে দোষী সাব্যস্থ করা যেতে পারে ।

যুদ্ধঅপরাধী হিসেবে যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এই পর্যন্ত বিভিন্ন যুদ্ধে তারা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন . কেও শারীরিক কিংবা কেও প্রতীকী ।

ঘটনাচক্রে বাংলাদেশ এইরকম এক যুদ্ধের সাক্ষী যেই যুদ্ধে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা কিন্তু হারিয়েছি যা তা পূরণীয় নয় কয়েক যুগেও । ত্রিশ লক্ষ্য লোক এই যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন , অগনিত মা বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন, কোটি কোটি টাকার স্থাপনা ধংস হয়েছে এবং সবচেয়ে মূল্যবান যা হারিয়েছি তা হলো আমর দেশের প্রতিভাবান আত্মা গুলু যাদের হাত ধরে দেশ পুনর্গঠিত হত সেই সব বুদ্ধিজীবীরা ।

কেন এই হত্যা কান্ড এবং করা করলো এই হত্যা কান্ড । আমাদের দুর্ভাগ্য যে সেই হত্যা কারীদের নাম বলার সময় আমর দেশের মানুষের নাম চলে আসে, কিন্তু কেন ? আক্রমন করলো পাকিস্তানি হানাদার রা অথচ হত্যাকারী আমার দেশের মানুষ । একটু ইতিহাস দেখলে বুজতে পারব যে কি উদ্দেশ্যে ওই বেইমান এবং বিশ্বাসঘাতকরা হানাদার পাকিস্তানি দের সাথে হাত মিলিয়ে এই অপরাধ সংঘটিত করেছিল ।

বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ৬৯ এর জাতীয় নির্বাচন জয়ী হওয়ার পর থেকেই একটি সংঘঠন ক্ষমতার লোভে মাথা নারা দিয়ে উঠে যারা ছিল মূলত পাকিস্তানি জামায়াত এ ইসলাম এর একটি বর্ধিত সংঘঠন । তারা জানত বাংলার মানুষ কখনো তাদের কে আওয়ামী লিগ এর মত সমর্থন দিবে না তাই তারা চাচ্ছিলেন এই দলএর ধংস যার মধ্যে দিয়ে এই দেশে পাকিস্তানি শাসন কায়েম করা যায় . এই লোভ থেকেই তাদের ওই নর পিচাস এর রূপ আমরা দেখতে পাই ৭১ এর সাধীনতার যুদ্ধে ।

এখন একটু নজর দিব তাদের কর্ম গুলুর দিকে , তারা কি করেছেন ৭১ সালে তাদের লক্ষই ছিল বাংলাদেশ কে পঙ্গু এবং পরনির্ভরশীল জ্ঞানহীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা । তাদের আঘাত গুলু ছিল আমাদের মান ও সম্মানের উপর. যেমন তা দেখা যায় তারা আমাদের নারীদের উপর যেই অত্যাচার করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ম্বভ না । তাদের এই কাজ টি ছিল ইচ্ছেকৃত কারণ নারীরা দেশের সম্মান আর সেই সম্মান যদি লুন্ন্থিত করা যায় তাহোলে দেশ লজ্জার ভারে আর মাথা উচু করে দাড়াতে পারবে না । তাই নয় তারা হত্যা করেছে ১৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষ দের যাতে জাতি আর শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে, তার পর ও এরা থামেনি জাতির আত্মা ধংশ করার জন্য তারা হত্যা করলো আমাদের বুদ্ধিজীবিদের যাতে করে এই জাতীয় শক্তি যাতে কোনো দিন পূর্ণতা না পায় ।

এই জাতির উপর এটা একটি লজ্জা যে এই ৪০ বছরেও আমরা এই অপরাধীদের বিচার করতে পারি নি ,কিন্তু কেন ? আমরা কি এতটাই অসহায় নাকি কোনো এক লুকানো সার্থ আছে এর পিছনে ।

আসুন দেখি করা এরা ,কি এদের পরিচিয় ,কি এদের উদ্দেস্য, করা আছেন এদের পিছনে ?

কম বেশি আমরা সবাই এদের চিনি । এরা জামাত এ ইসলাম এর নেতা গোলাম আজোম ,মতিউর রহমান নিজামী ,দেলাওয়ার হোসাইন সাইদী, মুজায়িদ এবং সা.কা চোধুরী সহ আরো অনেকে । এদের উদ্ধেস্য ছিল বাংলাদেশের জন্ম হতে না দেয়া . এবং এরা সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছে বিভিন্ন চক্রের ।

সাধীনতার আগে এরা সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছে পাকিস্তানি শোষক দের আর সাধীনতার পর এরা সাহায্য পেয়েছে আমাদের রাজনৈতিক দল গুলুর ।

সাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু গোলাম আজোম এর নাগরিকত্ব বাতিল করেন । এবং তখন সে স্থায়ী ভাবে পাকিস্থান এ বসবাস করতে লাগলেন এবং দেশ বিরোধী প্রচার চালাতে লাগলেন মধ্য এশিয়া র বিভিন্ন দেশে । কিন্তু পরবর্তিতে জিয়াউর রহমানের সরকার তার নাগরিকত্ব পুনরায় নবায়ন করেন এবং জামাত ই ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সহয়তা করেন । এই গোলাম আজোম জামাত প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব সরকার এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় সাহায্য পেয়েছেন বিভিন্ন ভাবে । এরা বিভিন্ন সময় বড় মূল জাতীয়তাবাদী দুই দল বি.এন.পি এবং আওয়ামী লিগ এর সাথে জোট করে ক্ষমতায় ছিল । ১৯৯১ এর পর থেকে আওয়ামী লিগ এর সাথে এবং ১৯৯৬ এর নির্বাচন এর পর থেকে বি.এন.পি র সাথে ।

দুখের সাথে বলতে হয় যখন এই দল এর সাহায্য কারীদের কথা বললে বলতে হয় সেখানে আমাদের সাধীনতার পক্ষের দুটি দল এর নাম চলে আসে যেই দল গুলুর অর্ধেক নেতারাই সাধীনতার অগ্র পথিক । উনারা কিভাবে এই রাজাকার দের সাথে একই টেবিল এ বসে । তাদের শরীরে কি রক্ত মাংশ সুখিয়ে গিয়েছে নাকি রক্ত মাংসের আশাতেই এই তোষামোদ ।

অবশেষে বিচার শুরু হয়েছে যেটা আমি বলব রাজনৈতিক উদ্দেস্য হাসিল এর জন্য আর কিছুই নয় । কারণ বিচার প্রক্রিয়া অতি ধীর এবং দুর্বল যে এই আন্তর্জাতিক চক্রের নেতা দের শাস্তি দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না ।

কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত ছিল না , এই শাস্তি হওয়া উচিত ছিল নিরপেক্ষ যেখানে সরকারী ও বিরোধী দল একত্রে দাবি জানিয়ে এই বেইমান দের শাস্তি কার্যকর করবে । কিন্তু আমরা কি দেখছি ? সরকারী দল উদ্দেস্য হাসিল এর জন্য বিচার আয়োজন করেছে অন্যদিকে বিরোধী দল সেটা বন্ধ করার আন্দোলন করছে । এই সুযোগে ওই অপসক্তি বিভিন্ন দেশে এই বিচার বানচাল করার জন্য তদ্বির চালাচ্ছে । ফলে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে বাংলাদেশ এর উপর ।

কচ্ছপের দৌড় এর চেয়েও ধীর গতিতে চলছে আমাদের জাতীয় চেতনার অভিশাপ মোচনের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল । আমার বেক্তিগত ভাবে ভাবে এর কোনো রকম কার্যক্রমই আমার চোখে পরে না শুধুমাত্র লোক দেখানোকিছু গ্রেফতার এবং শুনানি ছাড়া । সরকার এর এই উদ্যোগ নিসন্ন্দেহে প্রসংসার দাবি রাখে কিন্তু ট্রাইবুনালের এই ধীর গতি সবার মনে সন্দেহের যোগান দিচ্ছে যে আসলেই কি সরকারের সদিচ্ছা আছে এই বিচার সম্পাদন করার বিষয়ে ? এবং এর সাথে যোগ হয়েছে আরো কিছু প্রশ্ন যেমন বৈদেশিক শক্তির প্রভাব মোকাবেলায় কি উদ্যোগ গ্রহণ করছে সরকার ? বিচার তরান্নিত করার জন্য আরো ট্রাইবুনালের সংযোজন হবে কিনা ? এবং ট্রাইবুনালের শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জাতীয় পর্যায়ের কোনো আইনজীবীর সংযোজন হবে কিনা ? ইত্যাদি নানা বিধ প্রশ্ন লালিত হচ্ছে জন মনে এই বিচার এবং ট্রাইবুনাল নিয়ে …

লাখ মানুষের বুকে লালিত স্বপ্ন এই যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার তাই আসুন এগিয়ে আশি যার যার অবস্থান থেকে এই বিচার সফল করতে ।

শেষ করার আগে এতটুকুই বলব দুই নেত্রী কে ত্রিশ লক্ষ্য শহীদের পরিবারের সাথে বেইমানি করবেননা । সজন হারানোর কষ্ট আপনাদের চেয়ে ভালো কেও বুজবে না । যদি এই বিচার না হয় তাহলে এর জবাব দিতে হবে জাতির কাছে আপনাদের কেই । তাই বিচার করুন জাতি বিচার দেখতে চায় মিষ্টি কথা নয় ……………..
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×