somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কি হাদীস নির্ভর ভুল ইসলাম পালন করছি না?

২২ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অধিকাংশ মুসলমানগণই মনে করেন যে হাদীস ছাড়া ইসলাম অচল। বুখারী, মুসলিম এবং সিহাহ সিত্তাকে তারা প্রায় কুরানের সমপর্যায়ের বলে মনে করেন। কিন্তু বেশ কিছু হাদীস যে ইসলামের বড় ক্ষতি করে চলেছে সেটা আমরা অনেকেই জানিনা। অনেকেই মনে করি যে সহিহ হাদীস বিশ্বাস করা ঈমানের অঙ্গ (যদিও এই কথা কোরান তো বটেই শরীয়তের কোথাও বলা নাই)। বর্তমান বুখারী আর মুসলিম শরীফের সকল হাদীসই নাকি সহিহ। অথচ এই বুখারী শরীফে আছে অসংখ্য আজগুবি, মিথ্যা আর উদ্ভট হাদীস। হাদীস অবশ্যই পড়বেন এবং যে হাদীসগুলো সুন্দর, উপকারী, মহৎ সেগুলো মেনে চলবেন। তবে সহিহ বুখারী/ সিহাহ সিত্তাহ শুনলেই অন্ধ বিশ্বাস করে উদ্ভট, অবাস্তব, ভয়ঙ্কর, ক্ষতিকর হাদীসগুলো মেনে চলা একেবারেই উচিৎ নয়। আসুন আজ তেমনই উদ্ভট একটি হাদীস জেনে নেই।

আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত যে, নবী (স) বলেছেন, জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হয়। জাহান্নাম বলে দাম্ভিক ও পরাক্রমশালীদের দ্বারা আমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। জান্নাত বলে, আমার কি হলো? আমাতে কেবল মাত্র দুর্বল এবং নিরীহ লোকেরাই প্রবেশ করেছে। তখন আল্লাহ জান্নাতকে বলবেন, তুমি আমার রহমত। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছা আমি অনুগ্রহ করব। আর তিনি জাহান্নামকে বলবেন, তুমি হলে আমার আযাব। তোমার দ্বারা আমার বান্দাদের যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেব। জান্নাত ও জাহান্নাম প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে পরিপূর্ণতা। তবে জাহান্নাম পূর্ণ হবেনা যতক্ষণ না তিনি (আল্লাহ) তার কদম মুবারক তাতে রাখবেন। তখন সে বলবে ব্যস ব্যস ব্যস। তখন জাহান্নাম ভরে যাবে এবং এর এক অংশ ওপর অংশের সাথে মুড়িয়ে দেয়া হবে। আল্লাহ তার সৃষ্টির কারো প্রতি জুলুম করবেননা। অবশ্য আল্লাহ জান্নাতের জন্য অনি মাখলুক পয়দা করবেন।

(সহিহ বুখারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন বঙ্গানুবাদ: অষ্টম খন্ড, হাদীস নং ৪৪৮৬) Click This Link
Click This Link

(কুরান:৩৮/৮৫): তোর (ইবলিশ) দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর (ইবলিশ) অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।

আল্লাহ কোরানে সরাসরিই বলে দিয়েছেন যে তিনি শয়তান আর তার অনুসারী দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। তাহলেএই হাদীস কি আল্লাহর পা কে শয়তানের অনুসারী বলছেনা? (নাউযুবিল্লাহ) । এটা কিভাবে চিন্তা করা যায় যে আল্লাহ তার স্বীয় পা জাহান্নামে ঢুকিয়ে তা পূর্ণ করবেন?

এখনো সময় আছে। হাদিসের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসুন। যেখানে কোরান নির্দেশ দেয় সকলেই যেন আল্লাহর রাস্তায় একটা মাত্র পথ/রজ্জু ধরে থাকে সেখানে আমরা মুসলমানেরা আজ বহু দলে বিভক্ত হয়েছি কিসের কারণে?

শিয়া সুন্নী হানাফি মালিকি শাফী হাম্বলী আহলুল বায়াত পীরের মুরীদ তাবলীগ জামাত জামাত শিবির ওয়াহাবী কাদিয়ানী এমন আরও অনেক।

এই যে এতগুলো দলের কারণ টা কি হাদীস নয়? এক পীরের মুরীদ অন্য পীর দেখতে পারেনা। শর্শীনা বলে আটরশি খারাপ আর আটরশি বলে শর্শীনা খারাপ। সকল পীরেই বলে তাবলীগ জামাত খারাপ, তাবলীগ বলে তারাই আসল বাকি সব খারাপ। সবাই বলে জামাত শিবির খারাপ, শিবির বলে তারাই ভাল। আপনার এত সাধের সিহাহ সিত্তার কানাকড়ি মূল্য নাই শিয়াদের কাছে। কওমী বলে আলীয়া খারাপ, আলীয়া বলে কওমী খারাপ। সৌদীরা বলে বাঙ্গালীরা নাকি মুসলমানই নয়।

এই বিভিন্ন দলগুলোকে এক করার কোন উপায় জানা আছে কি? আমার আছে, সেটা হল বিভক্তির মূল কারণ বিভ্রান্তিকর হাদীসগুলোকে বাদ দিয়ে এক কোরানের এবং কোরানের আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুন্নাহর ছায়াতলে আশ্রয় নেয়া।

এইসব বিভ্রান্তিকর হাদীসগুলোর কারণেই নিচের ধারনাগুলো গজিয়ে উঠে।

১) কোরান বুঝে পড়া জরুরী নয়। বেশী করে হাদীস পড়। আর না বুঝে কোরান শুধু সকাল/বিকাল তেলাওয়াত করলেই ১ হরফে ১০ নেকি----- অথচ এটা কোরানের ১৫/২০ টা আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক।

২) নামাজ পড়ার সময় না বুঝে আয়াত পড়ে গেলেও নামাজ কবুল হবে। ------ অথচ এটা কোরানের আয়াতের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। কোরানে সরাসরি আয়াত আছে না বুঝে নামাজ পড়ার বিপক্ষে। ইমাম আবু হানিফাও নিজ ভাষায় নামাজ পড়ার পক্ষে ছিলেন কারণ তাতে যা পড়ছি তা বুঝা যায়।

এর বাস্তবতা যাচাই করতে চান? যেকোন ওয়াজ মাহফিলে যান দেখুন হাদীস কিভাবে ডমিনেট করে, কোরান কিভাবে উহ্য থাকে। পীরের বাতসরিক জলসায় যান দেখুন কোরানের অবস্থান হাদীসের তুলনায় কত নিম্নে অবস্থান করে। তাবলীগের যেকোন গোল বৈঠকে বসুন দেখুন কোরান বাদ দিয়ে কিভাবে হাদীস পড়া হয়। সকল সাধারণ মুসলিমের ধারণা কোরান বুঝা কঠিন, কোরান শুধু আবৃত্তি করে নেকি কামানোর মাধ্যম। হাদীস পড়লে কোরান তো বুঝা হবেই বরং কোরানের ১০ গুন বেশী বুঝা হয়ে যাবে।

এর প্রভাবটা কি তা কি বলে দিতে হবে? হাদীসের প্রভাবে আমরা সকলেই জেনে নেই যে ঠিকমত নামাজ রোজা করলে আর শেষ জীবনে হজ্ব করলে যত পাপই করিনা কেন বেহেশত পাওয়ার আশা করা যায়। এর ফলে কোরানে আল্লাহ সরাসরি কি নির্দেশ দিলেন তা কেউই আমরা জানিনা। পাপ করতেও আমরা অনেক সময় দ্বিধাবোধ করিনা। হুজুরেরা দেখেছি বেশি পাপ করে কারণ তারা ভাবে তারা তো নামাজ রোজা ঠিকমত করে তাই কোন অসুবিধা নাই। আমার পরিচিত যত মসজিদের ইমাম দেখেছি কেউই কোরান বুঝতেননা বা বুঝে পড়তেননা। সকলেই হাদীসে বিরাট পন্ডিত ছিলেন। ছোটবেলায় বেশি করে হাদীস পড়তে বলতেন আর কোরান তেলাওয়াত করতে বলতেন। কখনো কোরান এর অনুবাদ পড়ার উতসাহ দিতেননা। হাদীসের কল্যানে স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরেও যেতে পারেনা এমনকি বাবা অসুস্থ হয়ে গেলেও। নারীদেরকে অবমাননা করে ঘরে বন্দি করে ভোগ্য বস্তু বানানোর পাকা ব্যবস্থা করেছে হাদীস যা কোনভাবেই কোরানিক নয়। এতে করে দেশের সমাজের বারোটা বাজতেছে। পশ্চিমাদের মত নগ্নতা যেমন কাম্য নয় তেমনি আরবের মত বোরখায় পেঁচানোও কাম্য নয়। পর্দা শুধু মেয়েদের নয় কোরানে আল্লাহ ছেলেদেরকেও পর্দার কথা বলেছেন। অথচ একজন ধর্ষিতা হলে আমরা পর্দার দোহাই দিয়ে মেয়েটিকেও দোষ দিতে ছাড়িনা। নিচে পয়েন্ট আকারে কোরানের কিছু ব্যাপার উল্লেখ করে দিলাম যা হাদীসের কারণে ভুল ভাবে বুঝা হয়:

১) চোরের শাস্তি হাত কেটে ফেলা! সম্পূর্ণ কোরান বিরোধী! হাত কেটে ফেলার অর্থ চোরের চুরি করার ক্ষমতা কেটে ফেলা বুঝানো হয়েছে কোরানে। ক্ষমতার প্রকাশে আল্লাহ নিজের হাতের কথা অনেকবার বলেছেন কোরানে, অথচ আল্লাহ নিরাকার। ইউসুফ নবীকে দেখে মহিলারা ছুড়ি দিয়ে লেবু কাটতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেছিল ( একই হাত আর কাটা শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে)। চুরির চেয়ে অনেক বড় অপরাধেও কোরানে এত বড় শাস্তির কথা বলা নেই। ইউসুফ নবীর এক ঘটনা বর্ণনা করে চোরের শাস্তি কি তা আল্লাহ বলে দিয়েছেন, তা হল ক্ষতিপূরন আদায় করা বা কিছুদিনের নির্বাসন জাতীয় কিছু, তা থেকে আমাদের সকলের শিক্ষনীয় বিষয় আছে তা সরাসরী বলা আছে।

২) স্ত্রী প্রহার! এটাও সম্পূর্ণ হাদীস নির্ভর অনুবাদ। সমগ্র কোরানের থীম বা ছন্দের সাথে স্ত্রী প্রহার মোটেই যায় না তবু আরবী শব্দটির বিভিন্ন অর্থ থাকার পরেও প্রহার অর্থটি নেয়া হয়েছে শুধুমাত্র হাদীসের কল্যাণে! বিস্তারিত জানতে চাইলে আলোচনা করব।

৩) চার বিয়ে হালাল! কোরানে কোথাও সাধারণ নারীদের ব্যাপারে এই কথা বলা হয়নি, শুধু এতীম মেয়েদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে আর সাথে কোরানে 'যদি' শব্দটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যদি এরুপ আশঙ্কা দেখা দেয় যে এতীম মেয়েদেরকে নিরাপদে রাখা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না তাহলেই শুধু তাদের বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ চার পর্যন্ত। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতে পারলে বিয়ের অনুমতি নেই! সাধারণ মেয়েদের ক্ষেত্রে তো আরও নেই।

৪) বেহেশতের হুর!! হাদীসের প্রভাবে হুর বলতেই সবাই বুঝে সুন্দরী নারী, যা সম্পূর্ণ ভুল। এই শব্দের অর্থ সঙ্গী বা স্পাউস। তারা ছেলেও হতে পারে আবার মেয়েও হতে পারে। ৭২ হুরের কোন কথা কোরানে নেই! কোরানের একটি আয়াত আছে যে হুরেরা অনেক উন্নত চরিত্রের অধিকারী, অথচ হাদীসের কল্যানে অনুবাদ হয় হুরেরা অনেক উন্নত স্তনের অধিকারী!!

৫) দাসপ্রথা। ৪৭/৪ আয়াত অনুযায়ী দাসপ্রথা রহিত হয়ে যায় কারন যুদ্ধবন্দী হলে তাকে হয় মুক্তিপণ সহ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে অথবা মুক্তিপণ ছাড়া ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে, তৃতীয় কোন অপশন রাখা হয়নি। কিন্তু হাদীসের কল্যাণে দিব্যি যুদ্ধবন্দীদের দাস বানানো হয়েছে যা সরাসরী কোরানের লঙ্ঘন!

৬) বোরখা। কোরান অনুযায়ী ছেলে মেয়ে সবারই পর্দা করতে হবে। মেয়েরা আটোঁসাটোঁ কাপড় না পড়ে বুকে ওড়না জড়ালেই কোরান অনুযায়ী পর্দা হয়ে যায়! মাথায়ও কাপড় দেয়া লাগেনা!

এর বাইরে আপনি কোরানে আর কি খুঁজে পান যা মানবাধিকার লঙ্ঘণ করে? বরং যেকোন মানবাধিকার আইনের চাইতে বেশী মানবিক কথা বলে এই কোরান! কোরান পড়লেই বুঝা যায় এর উদ্দেশ্য মানুষকে সৎ পথে চালানো তাই এর অনুবাদ হতে হবে সৎ এবং পজিটিভ, হাদীস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নেগেটিভ অনুবাদ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কোরানে নৈতিকতার কিছু মানদন্ড দিব?
জন্মসূত্রে সব মানুষের সমান মর্যাদা (১৭/৭০), লিংগ বৈষম্যহীনতা (৪/৩২, ৩৩/৩৫), শুধু চরিত্রের গুনেই উচ্চতর অবস্থান অন্য বাহ্যিক গুন নয় (৪৯/১৩, ৪৬/১৯), কাজের ন্যায় প্রতিদান (৫৩/৩৯, ৫৩/৪১, ৩৯/৭০, ৩৭/৩৯), মৌলিক চাহিদার যোগান (২০/১১৮-১৯), বিশ্বাস, জীবন, মন, সম্মান এবং সম্পদের নিরাপত্তা (৬/১০৯, ৬/১৫২, ২/২৬৯, ১৭/৩৬, ২৪/২, ২২/৪০, ৬/১৫২, ৫/৯০, ২/১৯৫, ৫/৩২, ১৭/৩২, ১৭/৩৫, ১৭/২৯, ৮৩/১), জীবনসঙ্গী বাছাই (৪/১৯), ধর্ম স্বাধীনতা (২/১৪৮, ২/১৯৩, ২/২৫৬, ৪/৮৮, ৬/১০৪, ৬/১০৭-৮, ৭/১৭৭-৭৮, ১০/৯৯, ১২/১০৮, ১৮/২৯, ২২/৩৯-৪০, ২৭/৮০-৮১, ৩৯/৪১, ৫৬/৭৯, ৭৩/১৯), সত্য মিথ্যা প্রকাশের অধিকার (২/৪২, ৩/৭১), সম্মানের একমাত্র বৈশিষ্ট সদ আচরণ লিংগ বর্ণ জাতি অর্থ কিছুইনা (৪৯/১৩) ......আর কত লিখব হাত ব্যাথা হয়ে গেছে তাও লিখা শেষ হয় না। আর মানবাধিকার এর লিস্ট লিখতে বসলে নির্ঘাৎ মোটা একটা বই হয়ে যাবে। সকল মানবাধিকার আইন এক বিদায় হজ্বের ভাষনের কাছেই বিবর্ণ, আর কোরানের সামনে তো শিশু! এর পরেও কেন আপনি কনভিন্সড হতে পারেননা? সারা জীবন শরিয়া আর হাদীস নামক জিনিস কারনে অনেক মানুষ বোকা বনে আছে

আমার কথাগুলো একটু ভেবে দেখবেন, হাদীস বিরোধী মানে হাদীস/নামজ/রোজা বর্জন নয় বরং হাদীসের কারণে ক্ষতিগুলো বর্জন। আপনি যদি আর দশ জন মানুষকে এটা বুঝাতে পারেন যে -''না বুঝে নামাজ পড়ে (আর সেই কারণে কোরানে বর্ণিত আদেশ অনুযায়ী আমল না করে) বেহেশতের আশা করা কোরান সঙ্গত নয় বরং হাদীস হতে প্রাপ্ত আদর্শ''- তাহলে কিন্তু আপনার ধর্মের এক বিন্দু ক্ষতিও হবেনা বরং দেশ ও সমাজের অনেক লাভ হবে।

কোরানের আরো কিছু বক্তব্য আমি একটু নিজের ভাষায় বলছি। বাপ দাদা থেকে পাওয়া একটি ধারণা অন্ধভাবে অনুকরন করা মানেই ধ্বংশে পতিত হওয়া (২/১৭০),যা সম্পর্কে তোমাদের পরিষ্কার ধারণা নেই তা অন্ধ অনুকরন করোনা (১৭/৩৬), শুধুমাত্র নামজ পড়াতে কোন লাভ নেই বরং যারা একাজ করে তারা বিপথে আছে, বেশী গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভাল কাজ করা (২/১৭৭, ৯/১৯, সুরা মাউন),যারা নিজেদের চিন্তাশক্তি আর যুক্তিবোধ ব্যবহার করেনা তারা পরিপূর্ণ মানুষের মত নয়, সাব হিউম্যান (৭/১৭৯), নবী যুক্তিবোধ ব্যবহার করেই মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেন, অন্ধ বিশ্বাস বা মিরাকলের মাধ্যমে নয় (১২/১০৮), মেজরিটি মানেই যে সঠিক তা ঠিক নয় বরং বেশীরভাগ লোকই শোনা কথা বিশ্বাস করে এবং তারা পথভ্রষ্ঠ (৬/১১৬, ১০/৩৬, ১০/৬০, ১৬/৭৫), আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে (৬/১১৬)।

চিন্তা করে দেখুন, অধিকাংশ মুসলিম কেমন শোনা কথায় ইসলাম পালন করে চলছে, তারা নামাজ পরে কিন্তু সৎ কর্ম করেনা, এতে যে কোন লাভ হচ্ছেনা তা তারা বুঝেনা শরীয়ত নামের মানুষ্য আইনের কারণে। সবাই অন্ধভাবে শরীয়ত ফলো করছে, এটা যে কোরানের বিরুদ্ধ তা কেউ যুক্তি দিয়ে বিচার করছেনা, কোরান অনুযায়ী এরা সবাই ভুল পথে আছে। আরও কিছু আয়াত দেখি: কোরান পূর্ণ সহজ সরল (১৮/১, ৩৯/২৭-২৮, ১৭/৯, ১৭/৪১, ৫৪/১৭ ২২ ৩২ ৪০, ২/২২১, ৩/১১৮, ৬/৩৮, ৬/৫৯, ১০/৬১, ১৬/৮৯, ১৭/৮৯, ২৭/৭৪-৭৫)
কোরান ব্যাখ্যা সহ অবতীর্ণ (১৮/১, ১৮/৫৪, ৬/১২৬, ২৪/১৮ ৪৬ ৫৮ ৬১, ১২/১১১, ৬/৬৫, ৭/৫৮, ১৭/৪১)
কোরান বুঝে পড়ার কঠিন তাগিদ (২/৪৪, ৪/২৬, ১৯/৯৭, ২৪/৬১, ৪৪/৫৮, ২/১৭১, ৬২/৫, ৪৭/২৪, ২১/১০, ৮/২২, ৭/১৭৯, ১০/১০০, ২/৭৮, ২/১২১)
কোরানের বাইরে অন্য কোন হাদীস কখনোই গ্রহনযোগ্য নয় (কমপক্ষে ৮/৯ টি আয়াত আছে, খুঁজে দেব পরে)



কোরান বুঝে পড়ুন, এবং হাদীসগুলোকে সেই কোরান দিয়েই এবং হাদীসের বক্তব্য দিয়ে যাচাই করে নিন সেগুলো সত্য কিনা। হাদীসের সনদ ঠিক থাকলেই সেটা সহিহ এমন উদ্ভট ভয়ঙ্কর কথা পরিত্যাগ করুন। প্রথম স্টেপে আগে সবাইকে কোরান পড়তে বলুন, বুঝে শুনে, পরে নাহয় যৌক্তিক হাদীস পড়া যাবে। আলেমরা বলে হাদীস ছাড়া কোরান বুঝা সম্ভব না, হাদীস আগে পড়া উচিৎ পরে কোরান বুঝে পড়লে পড়ুক না পড়লেই নাই। দেখুন হাদীস ছাড়া নাকি কোরান বুঝা সম্ভব নয়, তাহলে কোরান প্রথমে পড়ার উতসাহ কিভাবে পাবে মানুষ? যেখানে মানুষ জানে যে কোরান বুঝে পড়া জরুরী নয়?

কোরানেই একবার দুইবার নয় বহুবার বলা হয়েছে যে কোরান সয়ংসম্পূর্ণ/ পরিপূর্ণ। তো হাদীস পন্থীদের কথা অনুযায়ী ধরে নিলাম এই সম্পূর্ণ কোরান বুঝার ক্ষমতা আমাদের নাই, তাই আমি কোরানের কথাগুলো বুঝার জন্য যে হাদীস গুলো প্রয়োজন সেগুলোই নেই। বাকি গুলোর কি দরকার? শুধুমাত্র কোরানের আদর্শ বাস্তবায়িত হলেই যে একটা দেশ স্বর্গে রূপান্তরিত হতে পারে তাতে কি আপনার অবিশ্বাস? সত্যি বলছি হাদীসের প্রয়োজনীয়তা নেই।

প্রেক্ষাপট ১/ উন্নত ইয়োরোপীয়ান দেশগুলোঃ এইখানে পরিবার প্রথা, নগ্নতা, অবৈধ যৌনতা সহ আর দুই একটা জিনিস বাদ দিলে বাকি সকল কিছু শুধুমাত্র কোরানের আদর্শের সাথে পুরোপুরি প্যারালাল। এই দেশগুলোর সুখ শান্তির কথা বলে বুঝানো সম্ভব না। ১০০% কোরানিক হয়ে গেলে এইখানে অশান্তি বলতে কিছুই থাকতোনা।

প্রেক্ষাপট ২/ আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং আরব বিশ্বঃ এইখানে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন এই দেশগুলোতে কোরানের উপরে হাদীস/শরীয়া কিভাবে ডমিনেট করে। এই দেশগুলোর অবস্থা আর বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলামনা। মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘণ হয় এখানে।

পরিশেষে কোরানের একটা আয়াত দিয়ে শেষ করি।

৩৯:১৮> যারা মনোনিবেশ সহকারে সকল কথা শুনে, অতঃপর তার মাঝে যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১২ ভোর ৪:২৫
৬৮টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×