বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আস সালামু আলাইকুম!
[.....আগের লেখার ধারাবাহিকতায় - কেবল মাত্র বিশ্বাসী মুসলিম ভাইবোনদের জন্য লিখিত]
আমরা ধর্ম-বিশ্বাসকে শুদ্ধ করাটাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান করে, ইমাম তাহাভী (রহ.) রচিত "আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়া" থেকে আহলুস সুন্নাহ্ ওয়া আল জামা'আহর আক্বীদাহ্ বা ধর্ম-বিশ্বাসগুলোকে পর্যায়ক্রমকিভাবে লিপবিদ্ধ করে চলেছি। এখানে একটা তথ্য উল্লখে করা আবশ্যক; সেটা হচ্ছে এই যে, "আহলুস সুন্নাহ্ ওয়া আল জামা'আহ্" কোন দল বা গোষ্ঠীর নাম নয়। রাসূল (সা.) নিজে, তিনি ও তাঁর সাহাবীদের নিয়ে গঠিত সমষ্টিকে "আল-জামা'আহ্" বলে আখ্যায়িত করেছেন । ঐ সময়টায় সকল মুসলিমই ঐ জামা'আতের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। কিন্তু আজ যখন মুসলিম উম্মাহ্ বহু ধারায় বিভক্ত এবং "আল-জামা'আহ্" বলে একক কোন জামাত নেই - তখন আদর্শ সেই জামাতকে, যারা পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করেছিলেন বা এখনো করে চলেছেন, তাদের বুঝাতে "আহলুস সুন্নাহ্ ওয়া আল জামা'আহ্" কথাটা ব্যবহৃত হয়।
আসুন তাহলে "আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়া" থেকে ৫১ নম্বর থেকে ৬০ নম্বর পয়েন্টগুলো কি কি, তা আমরা জেনে নিই:
৫১। তিনি সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন এর ঊর্ধ্বে থেকে, এবং যা কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন তা তাঁকে পরিবেষ্টন করতে অক্ষম।
৫২। আমরা বিশ্বাস, স্বীকৃতি ও আনুগত্যের সাথে বলি যে, আল্লাহ ইবরাহিমকে (আ.) অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসবে নিয়েছিলেন এবং তিনি মুসার (আ.) সাথে সরাসরি কথা বলেছিলেন।
৫৩। আমরা ফেরেশতা, নবীগণ এবং অবতীর্ণ কিতাবসমূহে বিশ্বাস করি, এবং আমরা সাক্ষ্য দেই যে, এরা সবই প্রকাশ্য সত্যের অনুসরণ করে।
৫৪। আমরা কিবলার অনুসারীদের মুসলিম ও মু’মিন বলি যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নবী (সা.) যা এনেছেন, তা স্বীকার করে, সব কিছু যা তিনি বলেছেন এবং আমাদের করতে বলেছেন তা সত্য হিসাবে গ্রহণ করে।
৫৫। আমরা আল্লাহ সম্পর্কে কোন অসার বিতর্কে লিপ্ত হই না, বা আমরা আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে কোন বিবাদ অনুমোদন করি না।
৫৬। আমরা কুরআন নিয়ে তর্ক করি না এবং সাক্ষ্য দেই যে, এটা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহর বাণী যা তাঁর কাছ থেকে বিশ্বস্ত আত্মা নিয়ে এসেছেন এবং সব রাসূলদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানিত মুহাম্মাদ (সা.) কে শিখিয়েছেন। এটা আল্লাহর বাণী এবং তাঁর সৃষ্টির কারো বাণীর সথে তুলনীয় নয়। আমরা বলি না যে এটা সৃষ্ট এবং এ সম্পর্কে আমরা মুসলিমদের জামা’আ-র বিরোধী নই।
৫৭। আমরা কিবলার অনুসারী কাউকে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোন ভুলের জন্য "কাফির" বলি না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা সেটাকে হালাল বলে না মনে করে।
৫৮। আমরা এটাও বলি না যে, মুমিনের খারাপ কাজ তার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।
৫৯। আমরা আশা করি যে, মু'মিনদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের মাফ করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তাঁর রহমতে, কিন্তু আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারি না, এবং আমরা এটা সাক্ষ্য দিতে পারি না যে, তা নিশ্চিতভাবে ঘটবে এবং তারা জান্নাতে যাবে। আমরা মু'মিনদের মধ্যে যারা অসৎকর্ম পরায়ণ, তাদের জন্য মাফ চাই। যদিও আমরা তাদের জন্য ভীত - আমরা তাদের সম্পর্কে হতাশ নই।
৬০। নিশ্চয়তা এবং হতাশা দুটোই একজনকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে, কিন্তু কিবলার অনুসারীদের সত্য পথ হচ্ছে দুয়ের মাঝামাঝি (যেমন, কেউ আল্লাহর হিসাব সম্পর্কে ভয় ও সচেতনতা অনুভব করবে, একই সাথে আল্লাহর ক্ষমার আশা করবে)।
আল্লাহ্ হাফিজ!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



