একজন সেনা ছাত্রের কলার ধরার কারণে ফুঁসে উঠল পুরো দেশ ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আত্তসম্মানে লেগেছে!!তারা হলো স্ফুলিংগ। তাদের গায়ে হাত দেয়া যাবে না ,খবরদার!!!
গত চার বছর যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে আছি (এফ,এইচ,হল)। দেখেছি তাদের আত্তসম্মানবোধ।
পলিটিক্যাল জুনিয়র ছেলেরা গায়ে হাত তোলে,ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকি।ক্যান্টিনে প্রতিবেলা ৩০ জন ফাও খায়,যার দাম দিতে হয় আমাদের, বেশী দামে অখাদ্য খেয়ে।টিভি রুমে বাংলাদেশের খেলার সময় তিন বছরের জুনিয়র এক ছেলে রিমোট হাতে নিয়ে এম টি ভি তে হিন্দী ভিডিও সং দেখে, কিছুই বলতে পারি না। দেখলে ওরা যা দেখে তাই দেখো,নয়তো নয়।দু একজন প্রতিবাদ করে জুনিয়রদের হাতে অপমান হয়েছে, তাই এখন সবাই চুপ।
হায়রে আত্তসম্মানবোধ!!!
পেপার রুমে আর গেমস রুমে তারা আসলেই সিট ছেড়ে দিতে হবে, হোক না জুনিয়র।আমরা হলাম দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক। এগুলো আসলে তাদের জন্য।আমার সামনে এক নেতা হলের হাউস টিউটরকে বাইনচোত গালি দেয়।আমি স্যারের দিকে তাকাই,চোখাচোখি হলে দুজনেই চোখ নামিয়ে নেই, ব্যর্থতায়,অপমানে।ক্যান্টিনে আমাদের জন্য রাত ৯টার পর ভালো কিছু থাকে না,তাদের জন্য ১১টা পর্যন্ত রুমে খাবার যায়।
প্রথম বর্ষে মিছিলে না গিয়ে ল্যাবে যাওয়ায় থাপ্পড় খেয়েছি নিজের বর্ষের ছেলের হাতে।ঐ ভুল আর করি নি।পলিটিক্স করবো না বলে ৪ জনের রুমে পুরো একবছর ২৪ জন থেকেছি,শুধু রাতে এক পাশ হয়ে ঘুমিয়েছি।আর তারা বহিরাগত ফ্রেন্ড নিয়ে ৪ জনের রুমে দু্ইজন থেকেছে।এগুলো আমাদের আত্তসম্মানে লাগে নি।তাই কখনো প্রতিবাদ করতে পারি নি।মেনে নিয়েছি।
আর এখন তাদের অসময়ে,তাদের ইন্ধনে আমাদের আত্তসম্মানবোধ উপচে পড়েছে।তারা আমাদের একটু মূল্য দিচ্ছে,এতো আমাদের পরম পাওয়া!!!
প্রথম দু দিন মিছিলে গিয়েছি কিছু না বুঝে,আমার ভাইয়ের অপমানের শোধ নিতে।পরে তাদের আনাগোনা দেখে নিজের হাত নিজে কামড়েছি।এ কি করছি আমরা? কাদের পথ সুগোম করছি?যা আশংকা তাই হলো।
এ আন্দোলন কখনই সফল হতো না যদি না দু দলের দু:সময় যেতো।তা না হলে যে দল ক্ষমতায় থাকতো তাদের ছাত্র সংগঠনই পিটিয়ে ঠান্ডা করে দিতো (যেমন,হ্যাপীর মৃত্যুর আন্দোলন) অথবা নিজেদের দেনা পাওনার হিসেব মেটাতো আমাদের ব্যবহার করে (যেমন,আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরীর পদত্যাগ)।
আমি বিশ্বাস করি এই দলগুলো সাধারণ ছাত্রদের মাজা এভাবে ভেংগে দিয়েছে যেন তাদের ছাড়া সাধারণ ছাত্ররা আর কখনই দাড়াতে না পারে।হলে থাকার প্রতিটি (এখনও আছি) মূহুর্তে নিজেকে মনে হয় পরাধীন,নপুংশক।আস্তে আস্তে তাই মেনে নিয়েছি।শুধু আমি না,বেশীরভাগ ছাত্রই।
এ অবস্হার পরিবর্তনের জন্যই দরকার এ সরকারকে।যাতে আমরা নিজেরাই নিজেদের দ্বায়িত্ব নিতে পারি।নিজেদের মেরুদন্ড সোজা করে হাটতে পারি, চোখ তুলে তাকাতে পারি।কারও ইন্ধন ছাড়াই যাতে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারি।
আর কিছু কথা সংযুক্ত করি : ২৬-০৮-০৭ ১২:৪৪
কেউ কেউ আমার কথার প্রতিবাদ করেছেন গত দুদিনে,আমাকে গালমন্দ করেছেন।আবার কেউ কেউ প্রতিবাদ কারীদেরও ভর্ত্তসনা করেছেন।একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটা খুবই স্বাভাবিক,আমি মেনেও নিয়েছি।
কিন্তু মেনে নিতে পারি না তখন,যখন কেউ কেউ ঐ সব ক্যাডারদের আমার ভাই বানাতে চান(আবার আদরের ছোট ভাই!!!)।
আপনারা এমন কোন ভাতৃত্ববোধ কখনও দেখেছেন,যেখানে গ্রুপিং এর কারণে রাতের অন্ধকারে রড,হকিষ্টিক,চাপাতি দিয়ে হাড় গুড়ো গুড়ো করে কোপানো হয় যতক্ষন না অগ্ঙান হয়?
এমন কোনো ভাই দেখেছেন যে কিনা নিজের স্বার্থের কারণে তার ভাই এর জীবনের দু থেকে তিনটা বছর কেড়ে নেয়?
দেখে থাকলে দয়া করে আমাকে বলবেন,আমার পোষ্ট উইথড্র করবো।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০০৭ দুপুর ১:৩৬