somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্র, কনষ্টিটিউশন ও ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়েল

১৫ ই মার্চ, ২০১০ রাত ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা কী কেউ চাইলেই ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়েল পক্ষে দাঁড়াতে পারব? কোন চিরায়ত ভুমি ব্যবস্হার পক্ষে?

এপ্রসঙ্গ নিয়ে এখানে কথা পড়ব। তবে রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশন নিয়ে কথা আলোচনা এর সাথে এসে পড়বে - এটাই এখানে এবার আলোচনার বিষয়।

আমি আগের কোন পোষ্টে কোথাও এই ম্যনুয়েল নিয়ে মোটা দাগে কিছু কথা বলেছিলাম। এবার একেবারে অন্যদিক থেকে।
অনেকে ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েল প্রসঙ্গে কথা বলার সময় কোন সংস্কৃতির নৃবৈশিষ্ঠ সংরক্ষণ পক্ষে আমরা যেমন কথা বলি সেরকম ভাবে ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েলকে পাহাড়ীদের সংস্কৃতিক বিষয় মনে করে বসে। এমনিতেই যে কোন সংস্কৃতিতে ঐ জনগোষ্ঠির ভুমি ব্যবস্হার কী কী প্রভাব বৈশিষ্ঠ আরোপ করেছে - তা খুজলে আমরা বের করতে পারব। এর মানে, কোন ভুমি ব্যবস্হা আসলে কোন সাংস্কৃতিক বিষয় নয়; মূলত লিগাল (আইনি) বিষয়, সেই সূত্রে রাজনৈতিকও বটে। কিন্তু সংস্কৃতিতে এর প্রভাব আছে।
যেমন, বাংলার পয়লা বৈশাখ। এর উৎস ভূমি ব্যবস্হা থেকে; মোগল আমলে খাজনা ভূমি ব্যবস্হায় খাজনা পরিশোধে দিনকে কেন্দ্র করে। কিন্তু খাজনা পরিশোধে সম্রাটের আইন পালন কী আচার মেনে করবে - তা মানতে গিয়ে ওর একটা সাংস্কৃতিক রূপ বৈশিষ্ট দাড়িয়ে গিয়েছিল একসময়।

খাজনা কেন দিবে, কীভাবে দিবে - ওর আচারী বা শরিয়তি রূপ কেমন হবে? সাধারণভাবে সব রাজা, সম্রাটের বেলায় ঐ রাজা-রাজ্য সমাজের শাসন ব্যবস্হার নৈতিক ভিত্তি যেটা মোটামুটি প্রায় সবক্ষেত্রে দেখা যায়, মূল কথায় সেই ভাবনাটা হলো এরকম: রাজা, প্রজা, জমিসহ তার কাছে দৃশ্যমান ধরণী দুনিয়ার সবকিছুকে এক একক সত্ত্বা, একটা কমিউনিটি ও আইডেনটিটি মনে করা হত - এরই সাকার প্রতীক হলো রাজা বা সম্রাট। রাজা বা সম্রাট কোন একক ব্যক্তি নয়; আজকের মত বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিবোধ ঐ সমাজে তখন আসেনি, জাগেনি, ওখানে ছিল না। ঐ কমিউনিটির সবার পক্ষ হয়ে সবকিছুর প্রতিপালকের মত এক ভুমিকা নেয়া - ওখানে ধরে নেয়া আছে রাজা বা সম্রাটের সেটা কর্তব্য। আবার প্রজাদের কর্তব্য - রাজা, রাজ্য, শাসন টিকিয়ে রাখতে রাজাকে সহায়তা করা - খাজনা দেওয়া। এই খাজনা দেবার উৎসব মানে সমাজে ঐ নৈতিক ভিত্তির একটা চর্চাগত আচারি শরিয়তি রূপ - কালক্রমে এটাই ঐ সমাজের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্টের অংশ। ওখানে রাজার পূণ্য কামনা করা, দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়; রাজা মানে সে নিজেও, কমিউনিটির এক উপাদান মাত্র। রাজার জন্য কামনা তাই ঘুরিয়ে দেখলে ফিরে তা প্রজার নিজের জন্য কামনা।

তাহলে কথা দাঁড়ালো, রাজার শাসনে সমাজের ভূমি ব্যবস্হায় পালনীয় আইনি দিকটা চর্চা করতে গিয়ে ওর একটা সাংস্কৃতিক দিক রূপ লাভ ঘটছে।
পাহাড়ীদের মধ্যে সম্ভবত পূর্ণাহ বা এরকম কোন নামে এমন এক উৎসব আছে।

এখন আমার মূল কথা হলো, খাজনা ভূমি ব্যবস্হা অবশ্যই একটা আইনি বিষয়। কিন্তু উৎসব রূপে ওর চর্চা করতে গিয়ে একটা সামাজিক সাংস্কৃতিক রূপ বৈশিষ্ট ও থেকে আকার পাচ্ছে। খাজনা ভূমি ব্যবস্হা নিজে সাংস্কৃ্তিক বিষয় নয়, আইনি বা রাজনৈতিক বিষয়। ঐসব সময়ে সমাজের নৈ্তিক ভিত্তি, আইন, সংস্কৃতি একত্রে জড়াজড়ি করে থাকত; আজকের মত সমাজের নৈ্তিক ভিত্তি, আইন, রাজনীতি, সংস্কৃতি যেমন সহজেই চোখা ভাবে আলাদা, আলাদা আলাদা করে একে অনেক স্পষ্ট দেখতে পাওয়া সম্ভব - তেমন নয়।
আবার এখনকার বাংলার পয়লা বৈশাখ পালন আগের মোগল ভূমি ব্যবস্হার আইনী ভিত্তির আচার শরিয়তিতে তৈরি সাংস্কৃতিক প্রকাশ নয়; ষাটের দশকের পাকিস্তান আমলে রাজনৈতিক লড়াই সংগ্রাম থেকে ওর রাজনৈতিক ভিত্তির আচার শরিয়তি মানতে, করতে গিয়ে তৈরি সাংস্কৃতিক প্রকাশ। অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ পালনের ভিত্তি এখানে রিনিউ করে নেয়া হয়ে গেছে - ভূমি ব্যবস্হার আইনী ভিত্তি থেকে রাজনৈতিক ভিত্তিতে।

আমার উপরের কথা থেকে পাঠক, কোন সমাজের নৈতিক, আইনি, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক দিকগুলো কিভাবে একটা আর একটার সাথে যুক্ত থাকে, প্রভাবিত করে আবার, এর প্রত্যেকটা আপন সীমানায় নিজস্ব বৈশিষ্ট, রূপ তৈরি করে হাজির থাকে - সে সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়ার জন্য এখানে বলা হলো।

১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েল কোন সাংস্কৃতিক বিষয় নয়, আইনী বিশেষত ভূমি আইনী বিষয়।
কোন জনগোষ্ঠির সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট সংরক্ষণের কথা উঠলে আমরা যেমন সহানুভূতির সাথে একমত হই; ওর ভিতরে একটা "চিরায়ত" ভাব বৈশিষ্ট বোধহয় আছে যাকে রক্ষার ব্যাপারে সতর্ক হয়ে যাই - ঠিক তেমনি করে ঐ জনগোষ্ঠির আইনী, বিশেষত ভূমি আইনী বিষয়গুলো - সংরক্ষণ করতে চাই একথা বলে উঠে দাড়ানোর কোন মানে হয় না। কারণ, সমাজের ভূমি আইনী ব্যবস্হাগুলো নিজের আভ্যন্তরীণ শ্রেণী, স্বার্থ গুলোকে কেন্দ্র করে নিজেই ভাঙতে থাকে, বাইরের উপাদানও ওকে ভাঙতে আরও সহায়তা করতে পারে, পুরানো বন্ধনগুলো সব আলগা হতে থাকে - এক সময় স্বার্থ সংঘাতগুলো অসহনীয় মাত্রায় পৌছে যায়, পুরানো সমাজ, রাষ্ট্র একে ধারণ যোগ্যতা হারায়। খোল নলচেতে মৌলিক বদল ঘটিয়ে নতুন সম্পর্ক সমাজ, রাষ্ট্র, নতুন আইন গড়ে নেয়।

তাই, সারকথায় সমাজের যেগুলো আইনী বৈশিষ্ট - তা নিয়ে সংরক্ষণের আওয়াজ উঠানো অর্থহীন। তবে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্টগুলো, তাও কেবল এর মৌলিক দিকগুলো যেমন মূল্যবোধ (value system) বা নৈতিকতার কোন বিশেষ দিক - এগুলো সংরক্ষণের পক্ষে দাঁড়ানো - হ্যা অবশ্যই এগুলোর একটা অর্থপূর্ণ মানে আছে এবং তা করা যেতে পারে, সম্ভবও বটে।

এককথায়, ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েল কোন সাংস্কৃতিক বিষয় বা প্রশ্ন নয়, আইনী বিশেষত ভূমি আইনী বিষয়। আইনী বিষয় সমাজ নিজ উদ্যোগে ভাঙবেই ফলে ওকে সংরক্ষণের পক্ষে দাড়ানো অর্থহীন। পিছনে ফেলে আসা কোন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক আবার পুনস্হাপন দেখতে চাই, এর সপক্ষে দাড়াতে চাই - একথা বলা অর্থহীন। চাইলেও সম্ভব নয়।
একই কারণে, পাহাড়ীরা যদি কোন নিজের আলাদা রাষ্ট্র গড়তে পারে সেই কাম্য রাষ্ট্রও ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েলের ভিত্তিতে দাঁড় করানো কখনই সম্ভব নয়, চাইলেও সম্ভব নয়। পাহাড়ী জনগোষ্ঠির মানুষের আন্তঃসম্পর্ক (কমিউনিষ্টদের ভাষায় উৎপাদন সম্পর্ক) ফলে ভূমি আইনগত রূপ এক নতুন মাত্রায় বদলে যেতে বাধ্য। সেই সাথে যে কোন র‌্যাডিক্যাল ভাবুককে এই বদলের পক্ষেই দাড়াবে।

এর আগে আমি ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যনুয়েল প্রসঙ্গ কিছু কথা বলেছিলাম। কিন্তু তা এদিক থেকে নয়। ওর ভিত্তি ছিল বাংলাদেশের এখনকার কনষ্টিটিউশন।

এখনকার কনষ্টিটিউশন: মানে যদি ধরে নেয়া হয় পাহাড়ী ও সমতলীরা বাংলাদেশ উপস্হিত কনষ্টিটিউশনের মধ্যে ও অধীনে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা খুঁজে পেতে চায় তাহলে এর একটা আইনী পর্যালোচনা (রাজনৈতিক নয়) - এটাই ছিল ওখানে বিষয়। মনে রাখতে হবে এখনকার কনষ্টিটিউশনের মধ্যে একটা আইনী পর্যালোচনা করেছি মানে এখনকার কনষ্টিটিউশন আমার প্রিয় জিনিষ তা নয়; আবার এখনকার কনষ্টিটিউশনের মধ্যেই সমাধান হতে হবে এটাও আমার দাবি বা ইঙ্গিত নয়, বুঝায়ও না।
এটা আইনী পর্যালোচনা, রাজনৈতিক নয়। কথাটা আরও ভেঙ্গে বললে, আমার পর্যালোচনার ভাবনা এখনকার কনষ্টিটিউশনের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে কথা বলতে হবে। বিবদমান যেকোন দুই পক্ষ যে কারণে কোন রাজনৈতিক সমঝোতা বা শান্তিচুক্তি করতে গেলে উপস্হিত কনষ্টিটিউশন সবসময়ই এই বাধা সীমাবদ্ধতা হাজির হবেই।
এই সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে চিন্তা করতে চাইলে তবে ওর র‌্যাডিক্যাল সমাধান একটাই - উপস্হিত কনষ্টিটিউশনটাই বাদ রেখে রাজনৈতিক সমঝোতায় যেতে হবে। তবেই আইনী পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধতা দূর হয়ে রাজনৈতিক পর্যলোচনা, কথা বলা তোলা সম্ভব।

এখন "উপস্হিত কনষ্টিটিউশনটাই বাদ রেখে" কথাটা যত সহজে কয়েক শব্দে বাক্যে লিখে ফেললাম এই কথার মানে তাৎপর্য ততই ব্যাপক গভীর ও কঠিন।
আসলে এর সোজাসাপ্টা মানে, উপস্হিত বাংলাদেশে আগে একটা বিপ্লব হতে হবে। তবেই একটা নতুন রাষ্ট্র গঠন বা constitute করা সম্ভব; রাষ্ট্র constitute করা মানে নতুন constitution পাওয়া।
উপস্হিত কনষ্টিটিউশনটাই বাদ - এই ছোট্ট কথাটার মানে এতই গভীর। উপস্হিত কনষ্টিটিউশনটাই বাদ মানে উপস্হিত রাষ্ট্রই বাদ; আর নতুন constitution মানেই নতুন রাষ্ট্র গঠন - একই কথা।

আমাদের অভ্যস্হ কমিউনিষ্ট বা প্রগতিশীল চিন্তা কনষ্টিটিউশনের নাম শুনতে পারে না। কনষ্টিটিউশন মানে একটা খুবই খারাপ শব্দ, বিপ্লবীদের বেধে রাখার, ফাঁসী দেবার, জেলে পুরে রাখার সংগ্রাম আন্দোলন, বদলকে রুখে দেবার হাতিয়ার - কমিউনিষ্টদের এই ভাবনা ১০০ ভাগ সত্য। কিন্তু একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ তবে আছে। পাঠক লক্ষ্য করবেন, উপরে কথা শুরু করেছি এভাবে "কনষ্টিটিউশন মানে একটা খুবই খারাপ শব্দ......"। ঐ কনষ্টিটিউশন বলতে বুঝানো হয়েছে উপস্হিত কনষ্টিটিউশন - সাধারণভাবে, কনষ্টিটিউশন মাত্রই - এমন ধারণা নয় ওটা। সাধারণভাবে, কনষ্টিটিউশন মানে? মানে হলো বিপ্লবের পরে কিংবা মুক্তিযুদ্ধের শেষে আবার একটা রাষ্ট্র গড়ে উঠবে মানে আবার একটা কনষ্টিটিউশন থাকবেই সেখানে - কারণ নতুন রাষ্ট্র মানে নতুন কনষ্টিটিউশন; রাষ্ট্র ছাড়া কনষ্টিটিউশন নাই, আবার কনষ্টিটিউশন ছাড়া রাষ্ট্র নাই।

এবার তাহলে নীট কথাটা হলো, কনষ্টিটিউশন মানেই একটা খুবই খারাপ শব্দ এই কথা সত্যি নয়। রাষ্ট্র মানেই একটা খুবই খারাপ নেতি শব্দ এই কথাও তাই সত্যি নয়। উপস্হিত রাষ্ট্র বা উপস্হিত কনষ্টিটিউশন নিপীড়ক, অপ্রতিনিধিত্ত্বমূলক ইত্যাদি কারণে খারাপ, নেতিমূলক ধারণা - এই কথা সত্যি, ১০০ ভাগ।
কাজেই কমিউনিষ্ট বা প্রগতিশীলদের রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশন শব্দ শুনলেই রাগে বা শ্রেণী ঘৃণা জাগিয়ে রি রি করে উঠতে হবে - চিন্তার এই অভ্যাস মারাত্মক ক্ষতিকর। উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের বিরুদ্ধে একটা নেতি ধারণা থাকতে পারে, হবেও হয়ত কিন্তু ওটা যথেষ্ট নয়। উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনকে বাধা হিসাবে দেখতে হবে, ভাঙ্গার কথা ভাবতে হবে - কিন্তু একটা নতুন রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশন কিভাবে গড়তে চাই সেই ভাবনার জায়গায় দাঁড়িয়ে। গভীর মনোযোগে রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের বিষয়ে পড়াশুনা, তত্ত্ব আলোচনা, বিভিন্ন রাষ্ট্রের গড়ে উঠার অভিজ্ঞতা, সীমাবদ্ধতা, সম্ভাবনাকে বুঝার চেষ্টা করা - এগুলোকে অবশ্য করণীয় জ্ঞান করা দরকার। এর অন্যথার মানে এক নৈরাজ্য, নৈ-রাষ্ট্র ভাবনায় খাবি খাওয়া। তবে আরও কঠিন কিছু কাজ আছে আপাতত কথা ভারী না করে বাদ রাখলাম।
আপাতত বাংলাদেশে রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনে বদলের জন্য জনগণ বা রাজনীতি তৈরি এমন আলামত সমাজে নাই। ফলে আমাদেরকে এই অবস্হায় রেখে পাহাড়ীরাই আলাদা রাষ্ট্র কায়েম করে ফেললে সেটাও আমাদের "উপস্হিত কনষ্টিটিউশনটাই বাদ রেখে" একটা সমাধান বটে।

যেখান থেকে উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশন বিষয়ে কথা তুলেছিলাম - আইনী পর্যালোচনা; আইনী পর্যালোচনা মানে তাই চিন্তাকে উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের সীমার মধ্যে বেধে রেখে একটা আইনগত এবং একাডেমিক এক্সসারসাইজ; চিন্তাকে খুলে রাখা মানেই রাজনৈতিক পর্যালোচনা - এটা তা নয়।

কিন্তু তবু এটা কেন করেছি? কারণ, উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের মধ্যে সমাধান খুজছি একথা আগাম মেনে নিয়ে কথা শুরু করার পর এবার আবার ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়ালও চাচ্ছি এই কথার আইনগত সমস্যা, অসারত্ত্ব ওখানে আলোচনার বিষয়।
ওখানে এই আলোচনার সারকথা ছিল - উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনকে আগে সুপ্রীম যদি মেনেই নেয়া হয় তবে ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়াল তার অধীনস্ত একথা মেনে নেয়েছি, এই মানে হবে; ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়ালের যা কিছু যতটুকু উপস্হিত কনষ্টিটিউশনের বিরোধী তা বাতিল হবেই একথা মেনে নেওয়া হবে। ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়ালে যাই থাক, উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের বসবাসের অধিকার মেনে নেওয়া হবে... ইত্যাদি।

আবার মনে করিয়ে দেই, ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়ালে যাই থাক, উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের বসবাসের অধিকার মেনে নেওয়া - এই কথা বলে আমি উপস্হিত কনষ্টিটিউশনের পক্ষের লোক হয়ে যাচ্ছি না, ওকালতি করছি না, উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের মধ্যেই আমি সমাধান চাই একথা বলছি না, দাবি করছি না।

আমি আইনী পর্যালোচনা করে দেখাতে চাচ্ছি - উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের মধ্যে সমাধান চাই বলে রাজনৈতিক সমঝোতা চুক্তি করার পর আবার ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়াল আমার আগে ছিল আমি ওটাও চাই - একথা বললে কোথায়, কতটুকু অর্থহীন আব্দার হয়ে দাড়ায় সেটাই দেখাতে চাচ্ছি; এটা এক সোনার পাথরের বাটি জাতীয় ভাবনা যেন নিজের সাথেই প্রতারণা করছি, নিজেকে এক মিথ্যা প্রবোধ দিচ্ছি।
আবার মনে করিয়ে দেই, আমি উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের পক্ষে ওকালতি করছি না। আমি উপস্হিত রাষ্ট্র বা কনষ্টিটিউশনের মধ্যে ১৯০০ সালের পাহাড়ী ম্যানুয়ালের দাবির সমস্যা, অসারতা কোথায় তা বুঝতে বলছি।

আশা করছি, এ লেখাকে কোন সমাধান হিসাবে না দেখে সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে ভাবতে আমাদের চিন্তা করতে সহায়তা করুক - এই কামনায় জানিয়ে শেষ করছি।
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×