somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~সৃজনশীলচর্চায় অনলাইন মিডিয়া~

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



~এক~
লেখালেখি মানুষের মজ্জাগত একটা বিষয়। এটা ভেতর থেকে আসে। আমরা মনের টানে লিখে থাকি। মনের ভালোলাগা বা মন্দলাগাটুকু আমাদের লেখায় ওঠে আসে। ওঠে আসে কষ্টবোধ বা সুখবোধ। তাই জোর করে লেখালেখি করা প্রায় অসম্ভব। তাই লেখালেখির এই প্রয়াস- একে বলা হয় সৃজনশীল কাজ। সৃজনশীল কাজে স্বভাবিকভাবেই থাকে – স্বতন্ত্র চিন্তা, বোধ ও চেতনার হৃদ্য প্রকাশ। জোর করে সৃজনশীল এই কাজ করা সম্ভব না হলেও, অনুশীলন ও শেখার আগ্রহ ভালো লেখক হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, পাঠকের পাঠ-প্রতিক্রিয়া এবং লেখক-পাঠক মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে লেখার মান উন্নত করা সম্ভব। আগেকার দিনে, পাঠকের প্রতিক্রিয়া এবং লেখক-পাঠক মিথস্ক্রিয়ার বিষয়টি সাধারণত আড্ডা/আলোচনা আর চিঠিপত্রের মাধ্যমে হয়ে থাকতো।

~দুই~
তথ্য-প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারলাভ করায় লেখালেখির মেজাজ ও মাধ্যমেও এসেছে (আসছে) অনেক পরিবর্তন। আগে নতুন কবি-লেখকগণের জন্য লেখা প্রকাশের মাধ্যম ছিলো খুব সীমিত। দৈনিক পত্রিকার সাহিত্যপাতা, হাতেগোনা সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো লেখা প্রকাশের মূল মাধ্যম। ঈদ-পার্বণের বিশেষ সংখ্যাগুলোও বড় লক্ষ্য থাকতো অনেক লেখা প্রকাশের জন্য। এর বাইরে বিভিন্ন বিশেষ দিবসে স্মরণিকা বা ম্যাগাজিন বেরুতো তখন। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারিতে এসব ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতো নতুন ও পুরনোদের লেখা নিয়ে। সপ্তাহের সাহিত্যপাতা কিংবা ম্যাগাজিন প্রকাশের জন্য কবি-লেখকদের অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করতে হতো।

~তিন~
প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই দিনে অনেককিছুর সাথে পরিবর্তন ও নতুন সংযোজন এসেছে- লেখালেখি ও লেখা প্রকাশেও। আগে লেখালেখির ড্রাফট বা প্রাথমিক হতো কাগজে কলমে। আরএখন তা হচ্ছে ফিঙ্গারটিপে- কীবোর্ডে। লেখালেখির জন্য এখন প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি এসেছে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সাহিত্য-আশ্রয়ী ওয়েবসাইট/ব্লগ এবং ফেসবুক এদের মধ্যে অন্যতম। ফেসবুকে ইদানিং অনেক গ্রুপ আছে যারা সৃজনশীল লেখালেখি ও সাহিত্যচর্চাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রত্যয়দীপ্ত। লেখালেখির জন্য অনলাইন সুবিধাসমূহ অত্যন্ত সুন্দর মাধ্যম- যেখানে পাঠকের পর্যবেক্ষণমূলক প্রতক্রিয়া, লেখক-পাঠক মতবিনিময় এবং গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে লেখার উৎকর্ষ সাধন করার যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে। লেখালেখি/ মতপ্রকাশের অনলাইন এই মাধ্যমকে তাই ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।

~চার~
স্বীকার্য যে, পত্রিকায় আর অনলাইন মাধ্যমে লেখার মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। পত্রিকা বা প্রিন্ট মিডিয়ায় লেখা প্রকাশের আগে সম্পাদকের হাতে তা পরিমার্জিত হয়ে যায়। কিন্তু অনলাইন মিডিয়ায়, মানে ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন আর ব্লগে সেই ফিল্টারটা নেই। তাই অনেক কাঁচা ও অপরিপক্ক লেখা এখানে প্রকাশ হবার সুযোগ থেকে যায়। তবে অনলাইনে লেখালেখির কিছু ভালো দিকও আছে যা এখানে উল্লেখ করাটা প্রাসঙ্গিকভাবেই জরুরি। তাহলো – মত প্রকাশের স্বাধীনতা। ব্লগ বা অনলাইন মিডিয়াতে, যে কেউ তার লেখাটি প্রকাশ করতে পারেন। আর সেই লেখায় -অন্যলেখক বা যেকোনো পাঠক মন্তব্য করতে পারেন। লেখক-পাঠকদের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত ভালো জানেন, তাঁদের গঠনমূলক মন্তব্য/সমালোচনা লেখার মান উন্নত করতে পারে সহজেই। লেখার ভুলগুলো ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মার্জিতভাবে (কখনোই অন্যের অনুভুতিতে আঘাত দিয়ে নয় ) ধরিয়ে দেবার মধ্য দিয়েই সম্ভব অনলাইন লেখালেখির সুফলটা পাওয়া যেতে পারে।

~পাঁচ~
প্রযুক্তির কল্যাণে সৃজনশীল-চর্চার এই সুযোগকে সুস্থভাবে কাজে লাগানো উচিত। গঠনমূলক মন্তব্য/আলোচনা/ সমালোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে যেমন দেখতে হবে; তেমনি কারো সেন্টিমেন্টে আঘাত দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করা থেকেও বিরত থাকতে হবে, ভিন্ন ভিন্ন মত নিতে না না মতবাদের ধারক-বাহক হয়ে অনেক গ্রুপ ও ব্লগের অস্তিত্ব দেখা যায়। সেসব গ্রুপ, ব্লগ বা ওয়েবসাইট বাদ দিয়ে, শুধু সাহিত্য- ঘেঁষা মিডিয়ার কথা মাথায় রেখে বলা যায়- সৃজনশীলতার চর্চায় এই অনলাইন মিডিয়ার কার্যক্রমকে সুন্দর মানসিকতা নিয়ে মননশীল অবদানের মধ্যদিয়ে পারস্পারিক উৎকর্ষ সাধনে সবার এগিয়ে আসা উচিত।
— —
সো আ প
Facebook: shohel121
১৮ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×