শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
২০০৮ সালের ঘটনা। ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দেয়ার জন্য, গ্রামের বাড়ি থেকে সকাল বেলা নাকে মুখে চারটে খেয়ে গাইবান্ধা শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বাস স্টেশনে এসে দেখি, চেয়ার কোচের ভাড়া দ্বিগুন, তারপরও আগামী সাত দিনের মধ্যে কোন সিট খালি নেই। সব টিকেট বিক্রি হয়েছে। বাধ্য হয়ে লোকাল বাসের কাউন্টারে গেলাম। সেখানেও একই অবস্থা। দুইশত টাকার ভাড়া পাঁচশত টাকা। ভাড়া কম দেয়ার কথা বলতেই কাউন্টার মাস্টার পান খাওয়া মুখ বাঁকা করে ভেংচিয়ে সোজা জবাব দিয়ে দিল, “একপয়সাও কম হবে না, গেলে যান, না গেলে অন্য কোথাও চেষ্টা করেন”। ঈদের পরে যাত্রীর ভিড় বেশি। সবাই যার যার কর্মস্থলে ফিরছে। যে কারণে ভাড়া দ্বিগুন হলেও যাত্রীরা যেতে বাধ্য।
বাড়তি ভাড়া আদায়ে সব বাস কাউন্টারের একই অবস্থা। উপায়ান্তর না দেখে দুইশত টাকার টিকিট পাঁচ শত টাকায় কিনতে সবাই বাধ্য হচ্ছে। আমিও অগত্যা ওই ভাড়াতেই টিকিট নিয়ে নিলাম। টিকিট কেনার আগে কাউন্টার মাস্টারকে জিজ্ঞেস করলাম, “বাস কখন ছাড়বেন”?
কাউন্টার মাস্টার চটপট জবাব দিয়ে দিলেন, “এই তো, আধ ঘন্টার মধ্যেই বাস ছেড়ে যাবে। আপনি তাড়াতাড়ি টিকেট নিয়ে সিটে গিয়ে বসেন, না হলে পরে কিন্তু হাজার টাকা দিলেও সিট পাবেন না”। ওদের কথা শুনে মনে হলো আরেকটু দেরি করলে টিকিট তো দুরের কথা বাসের চাকাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই তাড়াতাড়ি টিকেট নিয়ে বাসে উঠে জানালার পাশে সিট দখল করে বসলাম।
যখন বাসে উঠলাম তখনও বাসের অর্ধেক সিট খালি ছিল। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই সব সিট যাত্রী দিয়ে পূর্ণ হলো। বাস যাত্রী দিয়ে পূর্ণ হলো বটে তবে বাস ছাড়ছে না। ওদেরকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, “ও ভাই, বাস কখন ছাড়বেন”?
দাঁড়িয়ে থাকা হেলপার জবাব দিল, “এইতো এখনি ছাড়বো”।
এইতো এখনি ছাড়বো বলার পরেও বাসের হেলপার কন্ডাক্টারসহ আরো দু’তিনজন সহযোগী মিলে জোরে জোরে চিল্লাচিল্লি করছে, ‘এই ঢাকার ফাস্ট টিপ, ফাস্ট টিপ, এখনি ছাড়বে, এখনি ছাড়বে, উঠেন, উঠেন তাড়াতাড়ি’। এই এখনি এখনি করে আরো দু’ঘন্টা পার হয়ে গেল কিন্তু বাস আর ছাড়ে না। ‘ঢাকা ফাস্ট টিপ, ফাস্ট টিপ’ বলে ডাকাডাকির পাশাপাশি বাসের বডিতে জোরে জোরে থাপ্পর এর পর থাপ্পর দিয়ে যাচ্ছে আর যাত্রী যাকেই পাচ্ছে তাকেই উঠানোর চেষ্টা করছে। সহজ কথায় না উঠলে কখনও কখনও জোর করেই টেনে-হিঁচড়ে উঠানোর চেষ্টা করছে। মাঝে মাঝে রাস্তার পথচারীকেও ধরে উঠানোর চেষ্টার ত্র“টি করছে না। পথচারী ঢাকা যাবে না বলার পরও টেনে হিঁচড়ে খানিক নিয়ে আসে। লোকাল বাসের স্টাফদের মানসিক অবস্থা এমন, বাসে উঠাতে পারলেই মনে হয় নগদ পাঁচশত টাকা পেয়ে গেল।
বাসের ভিতরে তিল ধারনের জায়গা নেই তারপরও যাত্রী উঠাচ্ছে। মানুষের চাপ এবং ভ্যাপসা গরমে অস্বস্থিবোধ করছিলাম। বিরক্ত হয়ে বাস থেকে ভিড় ঠেলে অতি কষ্টে নিচে নেমে এলাম। উপরে চেয়ে দেখি বাসের ছাদে যে পরিমান যাত্রী উঠানো হয়েছে সেখানেও এতটুকু জায়গা ফাঁকা নেই। উপরে নিচে একই অবস্থা। নেমেও আহাম্মক হলাম। ভিতরে ঢুকতে গিয়ে রীতিমত মল্লযুদ্ধ করেই সিটের কাছে যেতে হলো। এর পর যখন বাস ছেড়ে দিল তখন বেলা সাড়ে বারোটা বাজে। ছেড়ে দেয়ার পরও নিস্তার নেই। রাস্তার পাশে দাঁড়ানো দু’চারজন মানুষ দেখলেই ‘ঢাকা ঢাকা’ বলে ডাকতে থাকে। এমনিতেই বাসের ভিতর দাঁড়ানোর জায়গা নেই, তারপরেও যাত্রী উঠাচ্ছে।
রাস্তায় যে সব যাত্রী উঠলেন তাদেরকে বলা হলো ভিতরে প্রচুর জায়গা। উপরে উঠেন, উঠলেই জায়গা হবে। তারা বাসের হেলপারের কথা শুনে উঠলেন ঠিকই কিন্তু বাসের ভিতরে আর ঢুকতে পারছেন না। দু’একজন যাত্রী এই অবস্থা দেখে নেমে যেতে চাইলে তাদেরকে বাসের হেলপাররা নিজের দেহের সমস্ত শক্তি দিয়ে ঠেলে, ধাক্কিয়ে, গুতিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দিল। এ যেন ছালার বস্তার ভিতর মাল ঢুকানোর অবস্থা। ছালার বস্তার ভিতরে যখন স্বাভাবিক অবস্থায় আর মাল ঢোকে না তখন দুই হাত, দুই পা দিয়ে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে যে ভাবে চাপ দিয়ে মাল বস্তায় ঢুকানো হয় আজকের বাসের যাত্রীদের তেমনি ভাবে ঢুকানো হচ্ছে।
ছাদের উপরে নিচে অধিক যাত্রী বোঝাই, বাসের গতি কি হতে পারে তা পাঠকসমাজকে এ বিষয়ে আলাদা করে বলার আর প্রয়োজন মনে করি না। তবে বাসের গতি বাড়ুক এটা আমি আর কল্পনা করিনা। আস্তে আস্তে কোনরকমে বাস ঢাকা গিয়ে পৌঁছুক মনে মনে এটাই কামনা করছি। ‘জাস্ট টাইম টু নো কমপ্লেইন’ কথাটি ড্রাইভারের পিছনে স্টিকারে লেখা আছে। ঐ কথাটি বাসে উঠার সময় সমর্থন না করলেও বাস ছাড়ার পরে শতকরা একশতভাগ সমর্থন করতে বাধ্য হলাম। বাসে বসা অবস্থায় এই মুহুর্তে স্টিকারে লেখা কথাটি সমর্থন না করলে চলন্ত পথে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
বাস কচ্ছপ গতিতে চলতে চলতে তিনটার সময় এসে বগুড়া একটি হোটেলে মধ্যাহ্ন্য বিরতির জন্য থামানো হলো। কন্ডাক্টর যাত্রা বিরতি বিশ মিনিট ঘোষণা দিয়ে নেমে গেলেন। সবাই নেমে যার যার প্রয়োজনমত টয়লেট সেরে হাত-মুখ ধুয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কেউ কেউ হোটেলে খেতে বসেছে, কেউ আবার বাসের কাছাকাছি ঘোরাঘুরি করে শরীরের জড়তা ভাঙছে। অনেক যাত্রী ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রাণভরে নিঃশ্বাসে নিচ্ছে, কারণ বাসের ভিতরে এমন খোলামেলা বাতাস পাওয়া তো সম্ভব নয় তাই অক্সিজেন যা গ্রহণ করা দরকার এখান থেকেই গ্রহণ করছে।
বাসের ভিতরে একটানা বসে থেকে ভ্যাপসা গরমে নাস্তানাবুদ হয়ে যখন নিচে নেমে এলাম তখন শরীর খুব ক্লান্ত মনে হলো। সেইসাথে প্রচন্ড ক্ষুধায় শরীর আরো দুর্বল লাগছে। হোটেলের টয়লেটে ঢুকে দেখি প্রস্রাবখানার কলে পানি নেই, পায়খানার অবস্থাও একই। হাতমুখ ধোয়ার কলে পানি আছে ঠিকই, তবে তাও পর্যাপ্ত নয়। অনেকে সেখান থেকে বদনা ভরে পানি নিয়ে টয়লেট সমস্যার সমাধান করছে। আমিও একই অবস্থায় হাতমুখ ধুয়ে একটি টেবিলে বসে খাবারের দাম জিজ্ঞেস না করেই মুরগীর মাংস দিয়ে বয়কে ভাত দিতে বললাম। বয় একটি বাটিতে দু’টুকরা মাংসের সথে তিন টুকরা আলু আর একটি প্লেটে মোটা চালের ভাত দিয়ে গেল। পরবর্তীতে আরেক প্লেট ভাত আর ডাল দিয়ে গেল। আমি চটপট বিশ মিনিটের মধ্যেই খেয়ে নিলাম।
আমার খাওয়ার টেবিলের পাশের টেবিলে একটি বাচ্চাসহ স্বামী-স্ত্রী দুইজন বসেছে। তাদের পোশাক পরিচ্ছদ দেখে মনে হচ্ছে খুব একটা সচ্ছল পরিবার নয়। রিক্সাচালক না হলেও কোনো কারখানা বা গার্মেন্টসের শ্রমিক হবে। আমার মতই হয়তো খুব ভোরে বের হয়েছে। ক্ষুধার তাড়নায় হোটেলে খেতে বসেছে। ভদ্রলোক বয়কে জিজ্ঞেস করল, “তরকারী কি কি আছে“?
বয় বলল, “মাছ আছে, মাংস আছে”।
ভদ্রলোক আবার জিজ্ঞেস করল, “দাম কত”?
বয় বলল, “মাছ খান আর মাংস খান, সব বিশ টাকা”।
ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করল, “কত বিশ টাকা”?
বয় ধমক দিয়ে বলল, “খান তো, আপনার কাছে বেশি নিব নাকি? তিনজন খাবেন তো, কম করেই বিল করবো।”
ভদ্রলোক আবার জিগ্যেস করল, “ভাত কত”?
বয় বিরক্তসহকারে বলল, “খান তো, বলছি না আপনাকে বিল কম করে দেব। আপনার জন্য ভাত পনর টাকা ধরব, এবার খান”।
ভদ্রলোক আর কোন কথা না বলে ভাত দিতে বলল এবং মাছের তরকারী দিতে বলল। ছোট বাচ্চাটির বয়স সাত আট বছর হবে। মাছের কথা বলতেই ছেলেটি বলে উঠল, “আব্বু মাছ খাবো না, মাংস খাবো”।
লোকটি ছেলেকে ছোট একটি ধমক দিয়ে বলল, “এখানে মাংস খাওয়া যাইবো না, মাংসের দাম বেশি। তিন দিন তো মাংস খাইলি আবার মাংস খাইবার চাস ক্যা? মাছ খা”।
বাচ্চাটি বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আর কোন কথা বলল না, তবে খাবার মনঃপুত না হওয়ায় মুখ ভার করে বসে রইল। বয় তিন প্লেটে ভাত আর তিন প্লেটে অল্প একটু সবজিসহ ছোট রুইমাছের একটি করে টুকরা দিয়ে গেল। রুই মাছের টুকরার আকার দেখে মনে হলো এটাকে হোটেলের বয় রুই মাছ বললেও রুই মাছ নয় আট নয় ইঞ্চি সাইজের নলা মাছ। তরকারীর পরিমাণ দেখে যে কেউ এটা বিশ টাকা অনুমান করতে দ্বিধাবোধ করবে না। পরিমান যতটুকুই হোক বিশ টাকার তরকারী মনে করে ভদ্রলোক তৃপ্তিসহকারে খেয়ে নিল।
আমার খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে বয়কে ‘কয় টাকা’ জিজ্ঞেস করতেই বলল, ১৬৫ টাকা। মোটা চালের ভাত এবং ফার্মের মুরগীর মাংস যে পরিমান দেয়া হয়েছে তাতে ঢাকা শহরের মান সম্মত হোটেলগুলোতেও সত্তর থেকে আশি টাকার উর্দ্ধে কোনক্রমেই দাম হয় না (২০০৮সালে ১৬৫ টাকার মূল্যমান এখনকার চেয়ে অনেক বেশি)। কিন্তু লোকজনের সামনে ভদ্রতা বজায় রাখতে গিয়ে ১৬৫ টাকা খাওয়ার বিল নিয়ে ঝগড়া করা অভদ্রতা দেখায়। ভদ্রতার কথা চিন্তা করে পকেট থেকে দু’টো একশ’ টাকার নোট বের করে দিলাম। হোটেল ম্যানেজার একশত পয়ষট্টি টাকা নিয়ে বাকী ৩৫ টাকা ফেরত দিল। এই ৩৫ টাকা থেকে পাঁচ টাকা বয়কে বকশিশ দিয়ে দিলাম।
বিল দিয়ে একটু দুরে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পরে ঐ দম্পতি বিল দিতে এসেছে। বিলের পরিমান শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসল। বয়কে বলল, “আরে তুই না আমাকে মাছ বিশ টাকা আর ভাত ১৫ টাকা কইলি। সেই হিসেবে তিনজনে এক শ’ পাঁচ টাকা হয়”।
বয় ভেংচি কেটে বলল, “ও মিয়া, আপনি কোন দ্যাশে বাস করেন? আলু ভর্তাও তো বিশ টাকায় পাওয়া যায় না? সেইখানে রুই মাছ বিশ টাকায় খাওয়ার চিন্তা করেন কিভাবে? মনে হয় মগের মুল্লুক পাইছেন? আমার আরো কাস্টমার আছে, দেরি না কইরা তাড়াতাড়ি চারশত পঞ্চাশ টাকা বিল দ্যান”।
লোকটি বলল, “আরে ভাই মাছের দাম এক শত বিশ টাকা আগে কইলি না ক্যা? তাইলে তো আমি ভাত খাই না। আমার কাছে তো এতো ট্যাকা নাই”।
পাশে দাঁড়ানো আরেকটি বয় বলল, “খওয়ার সময় হুঁস থাকে না, রুই মাছ দিয়া তো মজা কইরা খাইলেন। এহন বিল দিতে কষ্ট হয় ক্যান? বিল নিয়া মোড়ামোড়ি কইরা লাভ হইবো না। সাড়ে চারশো টাকা বিল না দিয়া এক পাও নড়তে পারবেন না। তাড়াতাড়ি বিল দ্যান, নইলে কিন্তু দড়ি দিয়া সবটিরে বাইন্ধা রাখমু।” বয়ের কথা শুনে মনে হলো এরা নামে বয় হলেও আসলে বেতনভুক্ত হোটেলের মাস্তান। যাত্রীদেরকে খাওয়ার পূর্বে খাবারের পুরো দাম খোলাসা করে বলে না কিন্তু খাওয়ার পরে তাদের ইচ্ছামতো বিল করে থাকে। কেউ না দিতে চাইলে জোরজুলুম করে আদায় করে নেয়।
বয়দের উগ্রস্বভাব আর অপমানজনক কথায় লোকটি অসহায়ের মতো অনুনয় বিনুনয় করতে লাগল। কিন্তু পুরো টাকা না দেয়া পর্যন্ত তাকে কিছুতেই ছাড়ছে না। বাস স্টার্ট দিয়েছে ছাড়ে ছাড়ে অবস্থা। বাসের হেলপাররা যাত্রীদের উঠার জন্য বার বার তাগাদা দিচ্ছে। বেশি দেরি করলে যাত্রী রেখেই হয়তো বাস চলে যাবে। এ অবস্থায় উপায়ান্তর না দেখে ভদ্রলোক নিজের পকেট, বউয়ের ভ্যানিটি ব্যাগ এবং বাচ্চার পকেট হাতিয়ে সর্বসাকুল্যে চারশত টাকা দেয়ার পরও ম্যানেজার মানতেছে না। বাস ছেড়ে দিচ্ছে অথচ পঞ্চাশ টাকার জন্য তিন চারজনে ঘিরে রেখেছে। ম্যানেজারের কাছে পঞ্চাশ টাকার জন্য জোড় হাত করে মাফ চাওয়ার পরও চিটার, বাটপার বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে ছেড়ে দিল।
তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি খাওয়ার পর যে টুকু তৃপ্তিবোধ করেছিল বিল দেয়ার পর তার চেয়ে বেশি অপমানবোধ হওয়ার কথা কিন্তু তারা অপমানবোধের চেয়ে হাতাশাবোধ করছে বেশি। হাতাশাবোধ করার কারণও আছে। ঢাকায় বাস থেকে নেমে বাসা পর্যন্ত পৌঁছতে পরবর্তী যানবাহনে যেতে যে ভাড়ার প্রয়োজন হয়তো তাদের কাছে সে টাকা নেই। সাথে ছোট একটি বাচ্চা রাস্তায় যদি কোন বিপদ-আপদ হয় তখন তারা কি করবে? সেই সব চিন্তা ভাবনা করেই হয়তো তারা হাতাশাবোধ করছে।
টাকা দিয়ে দ্রুত বাসের দিকে যাচ্ছে। যাওয়ার সময় মহিলাটি মনের দুঃখে বার বার বলতেছে, “এইগুলা হোটেল তো না হোটেলের নাম দিয়া ডাকাতি করবার বইছে। আগে জানলে না খায়া মইরা গেলেও হোটেলের ত্রিসীমানায় পাও দিতাম না”।
যাত্রীদের অসহায় অবস্থা এবং হোটেলের লোকগুলোর অতিরিক্ত বিল আদায়ের অপমানজনক উগ্র আচরণ দেখে মনে পড়ে গেল হোটেলে ঢোকার সময় তিনটি যুবকের কথা। দুই যুবক হোটেলে খাওয়ার কথা বলতেই আরেক যুবক নিষেধ করে বলল, আরে এখানে খাওয়া যাবে না, এ হোটেলে গলা কাটা দাম।
হোটেলের গলাকাটা দামের কথা বলেই যুবকটি সাইনবোর্ডের দিকে তাকিয়ে বলল, হোটেলের নামটা তো সুন্দর ‘হোটেল সাউদিয়া’, কিন্তু তারা মানুষের কাছ থেকে যে ভাবে জোর জুলুম করে টাকা নেয় তাতে নামটা বদল করে রাখা দরকার ‘হোটেল ডাকাতিয়া’ । তাদের কথা প্রথমে না বুঝলেও নিজের বিল দেয়ার পরে এবং এই দম্পত্তির বিল দেয়ার ঘটনা দেখে বিষয়টি বুঝতে পেলাম। ছেলেটার কথার সাথে হোটেলের লোকদের কার্যকলাপের যথেষ্ট মিল আছে।
— সমাপ্ত —
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৩১