শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ দুপুরে বাজারে গিয়েছি। আমার মোবাইলে হঠাৎ একটা ফোন এলো। হ্যালো বলতেই অপর প্রান্ত থেকে বিনয়ের সুরে এক লোক বলল, ভাই আপনার মোবাইলে আমার দোকানের ছেলেটা ভুল করে ১০০০/- টাকা পাঠিয়েছে দয়া করে যদি টাকাটা আমার নাম্বারে বিকাশ করে পাঠান তাহলে খুব উপকার হতো। আমি খুব গরীব মানুষ, এইটার উপর আমার সংসার চলে।
আমি বললাম, আপনার নাম কী?
সাথে সাথে সে তার নাম এবং বাবার নাম বলল, বাজারের সোরগোলের কারণে নামটা পুরোপুরি শুনতে পাইনি।
বললাম, ভাই, আমি পাঠাবো কি আপনে এসে টাকাটা নিয়ে যান, আমি ঢাকায় আছি।
সে বলল, আমি তো ঢাকার বাইরে।
জিজ্ঞেস করলাম, আপনার দোকান কোথায়?
বলল, আমার দোকান তো কুষ্টিয়ায়।
প্রথমে আমি তার কান্নাকাটি শুনে বিশ্বাস করেছিলাম। পরক্ষণেই আমাদের ব্লগার বোন অর্বচীন পথিকের একটি পোষ্টের কথা মনে পড়ল। সেই পোষ্টে তার এক ছোট ভাই এইরকম প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ২৩৫০/- টাকা ধরা খেয়েছে।
ঘটনাটি মনে পড়তেই আমি পরীক্ষা করার জন্য বললাম, ভাই আপনি তাহলে এক কাজ করেন, এখনই টাকাটা পেয়ে যাবেন, আপনি একটু কুষ্টিয়া থানায় যান, সেখানে আমার ছোট ভাই দারোগা, তাকে আমি টেলিফোনে বলে দিচ্ছি আপনি গেলেই টাকাটা দিয়ে দিবে।
থানার কথা শুনেই লোকটি বলল, ভাই, আমার আত্মীয় অসুস্থ্য আমার টাকার খু্ব জরুরী দরকার, আর আপনি আমাকে থানায় পাঠাচ্ছেন।
আমার তখন মেজাজ বিগড়ে গেল, গাল দিয়ে বললাম, এই হারামজাদা, এই রকম প্রতারণার ব্যবসা কবে থেকে শুরু করছোস।
গাল দিয়ে কথা বলার সাথে সাথেই অপর প্রান্ত থেকে টেলিফোন কেটে দিল।
অফিসে এসে ঘটনাটা বলতেই আমার এক কলিগ বলল, প্রামানিক ভাই, আমারেও তো দুপুরে টেলিফোন দিয়েছিল এক ব্যক্তি, খুব কান্নাকাটি করল, তার নাকি একহাজার টাকা আমার মোবাইলে ভুলে এসেছে কিন্তু মোবাইল চেক করে নতুন কোন ব্যালেন্স পেলাম না সেই জন্য টাকা পাঠাই নাই।
খানিক পরেই শুনি আমাদের এক সিনিয়র কলিগ অলরেডি একহাজার টাকা পাঠিয়ে হায় হায় করতেছে।
প্রতারণার খপ্পর থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই ব্লগার অর্বাচীন পথিককে। সে যদি ০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৪০ মিনিটে "প্রতারণার তালিকায় আর একটা নাম নতুন সংযোজন হল "বিকাশ"" শিরোনামে পোষ্টটা না দিত তাহলে হয়তো আজকে আমিও প্রতারিত হতাম।
বিঃদ্রঃ কিছু প্রতারক এই প্রতারণায় নেমেছে। এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩১