somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাল্কা খোঁচামারা পোস্ট- হাতের লেখা কতটা খারাপ, এটাই কি ডাক্তারদের দক্ষতার বিচার? :)

১৩ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই সমস্যায় পড়েন নাই এমন একজনকেও পাওয়া যাবে বইলা মনে হয়না। ডাক্তার মহাশয়ের কাছে গেলেন আপনি রোগমুক্তির উপায়ের খোঁজে। তিনিও আপনার নাড়ি চাইপাচুইপা দেইখা শুইনা কিছু ওষুধ প্রেসক্রাইব করলেন। আপনি আশ্বস্ত হইলেন আর প্রেসক্রিপশন নিয়ে ফার্মেসীর দিকে রওয়ানা হইলেন। কিন্তু যখনই আপনি ফার্মেসীতে যাইবেন আপনার মনে হইবো আপনার চোখের কোন রোগ হইছে অথবা আপনি পড়তে ভুইলা গেছেন। হিজিবিজি দুর্বোধ্য কিছু অক্ষরে কোন ঔষধ আর কি কি যে উপদেশ লেখা আছে তা বোঝার চেয়ে হায়ারোগ্লিফিথের পাঠোদ্ধার করা মনে হয় অনেক আরামের।;) আপনি গলদঘর্ম হয়ে ফার্মাসিস্টকে দিলেন। সে ব্যাটাও লেজেগোবরে হইয়া তার সহকর্মীকে দেখাইবো। আপনাদের মাথার সম্মিলিত গুঁতাগুঁতিতে যদি কোন কিছু উদ্ধার করা যায় তো বাঁইচাই গেলেন, নইলে ডাক্তার বেটার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে করতে আবার চেম্বারে দৌড়ানো ছাড়া গতি নেই। উফফ।

আমার এক পরিচিত বন্ধুর খালুর কাহিনী হুনেন- উনি এক বড় বিশেষজ্ঞের কাছে গেলেন ব্যারামের নিরাময়ের জন্য। তো ডাক্তারমশাই দেখেটেখে প্রেসক্রিপশন দিয়া দিলেন। উনার আবার হাতের লেখা ছিল সেইরাম সুন্দর (!)। তো উনার ঔষধগুলার অন্যগুলার নাম অতিকষ্টে বের করা গেলেও একটার নাম কেউই বুঝতাছিলো না। দোকানদাররা বুঝতারে না খালি কয় যে এ ঔষধ নাই, কিন্তু বলে না যে নাম পড়তে পারতাছে না। ঐ খালু এলাকার সব ফার্মেসী চইষা ফালাইলেন শেষে এক সত্যবাদী ফার্মাসিস্ট কইলো যে, দেখেন আন্কেল, উনি যে কি লেখছে উনিই জানেন; আপনে বরং ওনার কাছ থেকে ক্লিয়ার হয়ে আসেন এটা আসলে কোন ঔষধ। উনি কি আর করবেন আবার চেম্বারে ডাক্তারের কাছে আসলেন। কোনরকমে ওনার রুমে ঢুইকা জিগাইলেন ভাই এই ঔষধটা কি লিখছেন কেউ বুঝতে পারতেছে না একটু আমাকে ক্লিয়ার করে বলেন তাহলে কিনতে পারবো। এরপর যা হইলো সেইটা ইতিহাস- বিশেষজ্ঞ ব্যাটা পাক্কা দুই মিনিট তাকাইয়া রইলো, মাথা খাউজাইলো, দাঁত দিয়া ঠোঁট কামড়াইলো মাগার সে নিজেও ঔষধটা যে কি সেইটা কইতে পারলোনা- এমনই অঘটনঘটনপটিয়সী হাতের লেখা তার। এরপর সে খালুরে কইলো, আসলে এই ঔষধটা দরকার নাই কোন, আপনি বরং এই ঔষধটা খান। বইলা আগেরটা কাইটা নতুন আরেকটা নাম খসখস কইরা লেইখা দিলো। খালু তো পুরা তাজ্জুব হইয়া কিছুক্ষণ চাইয়া রইলো। :-*

এইসব কারনে আমার সন্দেহ হইলো, এইটা সিউর ডাক্তারদের দক্ষতার একটা মাপকাঠি হইবো। কেননা আমি অভিজ্ঞতা থেইকা দেখছি যে বড় বড় ডাক্তারদের মধ্যে এই প্রবলেমটা কেন যেন একটু প্রকট। গুগল মামুরে জিগাইয়াও দেখলাম আমার ধারনা ঠিক। ব্রিটিশ রয়েল সোসাইটি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক জার্নালে দেখা যায়, ২০০৫ সাকের এক ব্রিটিশ হাসপাতালের বেশ কয়েকটি মেডিকেল নোট নিয়ে খুব ভালো (Excellent), ভালো (Good), মোটামুটি (Fair) এবং খারাপ (Poor) এই ভাগে ভাগ করা হইছিলো। সেখানে ৩৭% নোট পড়ছিলো খারাপ ক্যাটেগরিতে আর মাত্র ২৪% নোট পড়ছিলো খুব ভালো ক্যাটেগরিতে। :P আবার ১৯৯৮ সালে ন্যাশনাল আ্যাম্বুলেটরি মেডিকেয়ার এর এক সার্ভেতে দেখা যায় যে ডাক্তারদের মধ্যে যাগোর অভিজ্ঞতা বেশি হেগো হাতের লেখাও খারাপ হওয়ার প্রবণতা বেশি।

এইখানে আমার একটা হাইপোথিসিস আছে যে ডাক্তারদের অনেক লেখালেখি করতে হয় রেকর্ড রাখার খাতিরে এবং আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে। যত সিনিয়র ডাক্তার তত তার লেখালেখির যন্ত্রনাও বেশি। এ কারনেই হয়তো ক্লান্তিজনিত একটা অবহেলা চইলা আসে। এ ব্যাপারে সহব্লগারদের মধ্যে যারা ডাক্তার বা উঠতি ডাক্তার আছেন তারা ভালো কইতে পারবেন।

পরিশেষে কই হাল্কা খোঁচামারার উদ্দেশ্য নিয়া লেখাটা লেখছি। এ কারনে কারো কারো হাল্কা গোস্বা আসতে পারে বইলা অনুমান করতাছি। তবে কাউকে অহেতুক আঘাত করতে চাই নাই; এ কারনে কেউ আমার অজান্তে আঘাত পাইলে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপনের দুর্বলতার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইয়া নিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৯
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×