সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ব্যাপার আমাকে ভাবাচ্ছে। আর তার চেয়ে বেশী একটা ব্যাপার আমাকে বেশ পীড়া দিচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগের সাইটে বেশ কিছু কথোপকথোন নিয়ে আমি মানসিক ভাবে কিছুটা আহতও হয়েছি।
বাংলাদেশকে নিয়ে কিছু বলত গেলেই, অনেকেই দেশকে নিয়ে আমার দায়িত্ববোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা তাদের "দেশপ্রেম" থেকে কে কি করেছেন তাও বলতে ভুলছেন না। আর বাংলাদেশের প্রতি আমার দেশপ্রেম তথা দায়িত্ববোধ নিয়ে একটা প্রশ্ন তুলছেন ক্রমাগত, শুধুমাত্র আমি দেশে অবস্থান করছিনা এ জন্যেই। ব্যাপারটা ভীষণ দুঃখজনক, এবং আমার দৃষ্টিতে হীনমন্যতার পরিচায়ক।
বাংলাদেশে তথা পৃথিবীর যে কোন দেশের চলমান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য কি সে দেশের নাগরিক হওয়া অত্যাবশ্যক? একজন সচেতন মানুষ হিসেবে কি কোন দেশের কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা/ সমালোচনা করা যায় না? নাকি সেটা করার জন্য আইনগত কোন নিয়ম কানুন আছে? আর থাকলেও সেটা কি কেবল আমার জন্যই প্রযোজ্য?
অবশ্যই, তৃতীয় কোন ব্যক্তির কথায় বা মন্তব্যে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত নই এবং সেগুলো আমার উপর মানসিক কোন প্রভাব ফেলেনা। কারণ আমি মনে করি, সবারই মত প্রকাশের অধিকার আছে, সেটা আমার বক্তব্যের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যেটাই হোক। তবে ব্যাপারটা খানিকটা অস্বস্তিকর, যখন ব্যাপারগুলো ঘটে বন্ধু মহল থেকে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি "মুক্ত আলোচনার" ধারনাকে সমর্থন করি। একুশ শতকে, যে কোন বিষয় নিয়েই, আলোচনা/সমালোচনা করার মতো এবং করতে দেয়ার মতো মুক্ত চিন্তার মানুষ হওয়া খানিকটা জরুরী বৈকি। কারণ বর্তমান বিশ্বে, আঞ্চলিক ঘটনা বা ইস্যু অনেক ক্ষেত্রেই আর্ন্তজাতিক ঘটনার জন্ম দেয়, সুতরাং কোন দেশের রাজনৈতিক তথা সামাজিক বিষয়গুলোকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়গুলো নিয়ে আর্ন্তজাতিকভাবে আলোচনার অবকাশ থেকেই যায়।
বলছিলাম "দেশপ্রেম" এর কথা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি, বাংলা আমার ভাষা, আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। দেশপ্রেমিক হওয়ার জন্য কি শুধুমাত্র এতটুকু যোগ্যতাই অাবশ্যক না প্রয়োজন আরো বেশী কিছু?
আমার বন্ধু মহল তথা অনেকের বক্তব্যে নতুন করে দেশপ্রেমের সংজ্ঞাকে সংঙ্গায়িত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। পাশাপাশি, প্রবাসীদের দেশপ্রেম এর একটা পরিষ্কার রুপরেখা পেলে আরো ভারো হয়। সে জন্যই আপনাদের মূল্যবান মতামত প্রত্যাশা করছি। ধন্যবাদ।