somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুঝলাম, ইউনুস সাহেবও পয়গম্বর বা তাঁদের সমগোত্রীয়

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুনতে পাই, পাকিস্তান বা বিশ্বের কিছু মুসলিম দেশে ব্লাসফেমী আইন আছে যার মাধ্যমে নবী বা ধর্ম-কে উল্টা-পাল্টা কথা অথবা অবমাননার হাত থেকে রক্ষা করা হয়। এসব দেশে নবী বা ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বললেই আপনি গেছেন, ধরে নিতে পারেন আপনের ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে। কয়েকদিন আগে পাকিস্তানে ব্লাসফেমী আইনের মাধ্যমে আছিয়া নামের এক খ্রীস্টান মহিলার শাস্তির ঘটনার কথা এখানো আমাদের স্মৃতি থেকে মুছে যাবার কথা নয়। আছিয়ার পক্ষালম্বন করায় শেষ পর্যন্ততো পাঞ্জাবের গভর্ণর সাহেবকে নিজ দেহরক্ষীর হাতে প্রাণ দিতে হল। গভর্ণর সাহেব মরার পরেও জনগণের কাছ থেকে তেমন সহানুভুতি পান নাই। বরং যে তাঁকে হত্যা করেছে তার সমর্থনে রাজপথে বহু মিছিল, বিক্ষোভ হয়েছে। পাক সরকারের একটি পক্ষ তখন ব্লাসফেমীর সংস্কার আনার চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছেন। সার্বিক কর্মকান্ডে বুঝা যায়, ব্লাসফেমীর পক্ষে পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সমাজে জনসমর্থন প্রবল।

পাকিস্তান সরকার বা জনগণ কোন উদার সমাজব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তাদের এ আচরণ স্বাভাবিক। কিন্তু গণতান্ত্রিক সমাজ, সংষ্কৃতি বা ব্যবস্থার প্রধান ভিতই হচ্ছে সমালোচনার অধিকার। সমালোচনার উর্ধ্বে কেউ নন। সাধারণ জনগণ বা মহান বুদ্ধিজীবীও নন। সরকার প্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানও নন। আমি বিশ্বাস করি অন্তত মসুলিম দেশগুলোর সাথে তুলনা সাপেক্ষে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা অনেক গণতান্ত্রিক। এখানে মতপ্রকাশ করার যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে। গণমাধ্যম বা সভা, সেমিনারে হরহামেশাই সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সমালোচনা করা হয়। এ সমালোচনার জন্য কাউকে অপদস্থ হতে হচ্ছে এমনটা শুনা যায়না। যদিও ধর্মীয় ব্যাপারে এখনো কিছু সীমাবদ্ধতা আছে তারপরেও বলব অন্য মুসলিম দেশগুলোর চেয়ে আমরা এ ব্যাপারে অনেক কম সেনসেটিভ।

পূর্বেই বলা হয়েছে গণতান্ত্রিক সমাজ, সংষ্কৃতি বা ব্যবস্থার প্রধান ভিতই হচ্ছে সমালোচনার অধিকার। এ সমালোচনার আওতামুক্ত কেউই নন। তবে এটা যে সবাই বিশ্বাস করেন তা বোধ হয় ঠিক নয়। সাধারণ জনগণের কথা বাদ দিলেও দেশের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবীও হয়তো বিশ্বাস করেন কাউকে কাউকে সমালোচনার আওতা থেকে বাদ দেওয়া হোক। অন্তত আজকের প্রথম আলোতে প্রকাশিত কতিপয় বুদ্ধিজীবী বা বিশিষ্টজনের একটি বিবৃতি (Click This Link) দেখলে এ ধারণাটি আরো পোক্ত হয়। বিবৃতিটিতে তাঁরা নোবেল বিজয়ী ইউনুস সাহেবের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মার্জিত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে বিবৃতিদাতারা সবাই কম-বেশি এনজিও ব্যবসার সাথে জড়িত।

ইউনুস সাহেব সন্মানী লোক, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়ে দেশের জন্য সন্মান বয়ে এনেছেন..............এসব সবই সত্য কথা। কিন্তু সত্যিই যদি তিনি কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকেন তবে তা আলোচনা করা এবং তাঁকে দুর্নীতিবাজ বা সোজাকথায় চোর বলার অধিকার দেশের সকল মানুষের আছে। এখানে মার্জিত হওয়ার উপদেশ দেওয়ার কোন অধিকার কারো নেই। নোবেল পুরস্কার পেয়ে তিনি সব আওতার বাইরে চলে গেছেন এটা ভাববার কোন অবকাশই নেই। শ্রেণীস্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিবেচনায় তিনি পয়গম্বর হতে পারেন, পয়গম্বরের প্রটোকল পেতে পারেন কিন্তু দেশের সকল মানুষ বা গণমাধ্যমকেও এ প্রটোকল মেনে চলতে হবে এমন ধারণা বা আবদার করার কোন সুযোগ কারো আছে বলে আমি অন্তত মনে করিনা।

আশা করি, বিবৃতিজীবীরা বিবৃতি দেবার আগে এ বিষয়টা নিয়ে ভবিষ্যতে দু'একবার ভাববেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:৫০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×