পারলে ঢাকার রাস্তার এই জ্যাম ছোটান। রাস্তার প্রস্থ গাড়ীর তুলনায় অনেক কম হয়ে গেছে, তাই না ? আমাদের ট্রাফিক ভায়েরা আসলে এই দানবের কাজ প্রতিদিন করছে প্রখর রোদে ঝড়ে বৃষ্টিতে এবং গায়ে গতরে। তারা কতটুকু অমানুষিক পরিশ্রম করতে পারে তা এই ছবিটা দেখলে সামান্য অনুমান করা যায়।
আচ্ছা যদি এই রাস্তাটিকে একটা সুইচ টিপ দিয়ে ৫ গুন চওড়া করে দেয়া যায় তাহলে কি হবে ? ধরুন এই উপরের রাস্তাটা ৫ গুন বড় করে দেওয়া হলো !
একটু পাতলা হবে, তাই না ? জ্যামটা ছুটে গতীশিলও হবে, তাই তো ?
এবার সাদা কাগজে কয়টা লাইন টানে আঁকা এই ছবিটি দেখুনঃ
হ্যাঁ ! এই ছবিটি বাংলাদেশের বর্তমান ইন্টারনেটের সামর্থ (ক্যাপাসিটি) এবং দেশে এর প্রকৃত ব্যাবহারের চিত্র তুলে ধরে। এখানে দেখা যাচ্ছে মোট ৪৫ ইউনিটের প্রথম ১০ ইউনিটে কালো দাগ দেয়া আর নিচের ৩৫ ইউনিটে খালি, দাগ নেই, মানে অব্যাবহৃত।
এর মানে হচ্ছে " ২০০৭ সালে মে মাস থেকে বাংলাদেশ প্রথমবারের মত পৃথিবীর সর্বশেষ দেশ হিসাবে সাবমেরিন ক্যাবেলে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আজ প্রায় তিন বছর যাবৎ প্রতি মুহুর্তে সারাদেশে যতটুকু ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিচ্ছে তার চার গুন ইন্টারনেট মানে রাস্তা ব্যবহার না করে নষ্ট করছে। যেমন এই মুহুর্তে এই সংযোগে আমাদের ব্যান্ডউইথ এর পরিমান ৪৪.৬০ জিবিপিএস। আর এই ব্যান্ডউইথের মাত্র ১০ জিবিপিএস সারা দেশে ব্যাবহার করছি। বাকি ৩৪.৬০ জিবি ব্যবহার না হওয়ায় প্রতি সেকেন্ডে অব্যবহৃত থাকছে, না থাকছে না, নষ্ট হচ্ছে। এদিকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে এই সংযোগে তৃতীয় আপগ্রেডেশনের কথা ছিল, সে ক্ষেত্রে এর ব্যান্ডউইথ হতো ৮৫ জিবিপিএস, স্বাভাবিক ভাবেই অনেক অনেক কম মূল্যে যা আমরা রিজেক্ট করেছি যা আছে তাই ব্যবহার করতে পারছিনা এই অজু হাতে "
হ্যাঁ ঠিক তাই এই মুহুর্তে একটা সুইচ টিপে দিয়েই ঢাকার রাস্তা ৫ গুন চওড়া করতে না পারলেও ইন্টারনেটের গতি বর্তমানের ১০ কেবিপিএস থেকে ৫০ কেবিপিএস করে দিতে পারি একটা সুইচ দিয়েই (সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছারা)।
এই সুইচটা কোথায় আছে ? সোজা ঠিকানা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ে। সুইচটা আছে মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব রাজিউদ্দিন আহাম্মে রাজু এবং জনাব সুনিল কান্তি বোস, সচিব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয় এর হাতে।
আপনাদের কি মনে হয় না এক সুইচে দেশের নেটের গতি ১০ কেবিপিএস থেকে ৫০ কেবিপিএস হলে দেশের আইটি সেক্টরে কি পরিমান উন্নতির সুনামী হয়ে যেত পারে তা মন্ত্রী মহোদয় ও সচিব মহোদয় অনুমান করতে না পারলেও ঢাকার এই পরিশ্রমী ট্রাফিক ভাইয়েরা কিছু না বুঝ হলেও শুধু দেশের ভালো, মানুষের ভালো বিবেচনা করে দেশের টাকায় করা রাস্তা এমন বাঁশ ফেলে অবশ্যই বন্ধ না রেখে খুলে দিত ?
সুতরাং দেখা যায় ডিজিটাল বাংলাদেশ করার নূন্যতম স্বদ্ইচ্ছা থাকলেও প্রথমেই আমাদের ইন্টারনেট মানে রাস্তার ব্যবস্থা ও ব্যাস্থাপনা ঠিক করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের এমএলএসএস থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত সবাইকে বদলী করে (গত কাল ঢাকা স্টকমার্কেটের প্রাক্তন সভাপতি রকিবুল ইসলাম সরকারী কোম্পানীগুলি মার্কটে আসা নিয়ে টালবাহানা সম্পর্কে একজন দেশি মানুষের মত এই ফর্মূলাটি সঠিকই যথার্থ ও অবশ্যই করনীয় প্রস্তাব করেছেন। আসলেই হয়তো তারা সহজ বিষয়টিও বুঝছে না। সবাই সব কিছু বুঝবে তাও ঠিক না। তবে দেশের ভালো সবারই বোঝা উচিত এবং খুবই সহজ) দিয়ে সেখানে আমাদের পরিশ্রমী ট্রাফিক ভাইদের বসিয়ে দিলে তারা অন্তত রাস্তার ৪ ভাগ বাঁশ ফেলে বন্ধ রেখে ১ ভাগে জ্যাম লাগিয়ে রাখবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৫:২৭