আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মার্কিন রাষ্টদূত মরিয়াটির সাক্ষাৎ কালে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন বাংলাদেশে মিডিয়/তথ্য প্রবাহ পূর্ন স্বাধীনতা ভোগ করছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ভুল করছেন ইনি মার্কিন রাষ্টদূত, এ আমাদের অজ পাড়া গায়ের অশিক্ষিত গরীব চাষি না যে আমরা যা খুশি বলবো আর ও তাই সত্যি সত্যি মনে করবে। মরিয়াটি যদি এদেশে কোন খবরও রাখে তবুও কেবল আমাদের আকাশের দিকে তাকিয়েই মুখস্ত বলে দিতে পারবে এখানকার আকাশ কতটা নির্লজ্জের মত প্যারালাইজড করে রাখা হয়েছে। সেখানে মিডিয়ার কি অবস্থায় থাকতে পারে !
কি ভাবে ? বেশি কিছু না কেবল দুই তিনটা টাওয়ার, তার আকৃতি এবং এগুলির উপর মাউন্টং করা জিনিষ গুলির দিকে তাকিয়েই সামন্য জানাশুনা যে কেউ মুখস্ত বলে দেবে এখানে কি আছে আর কি কি কি নাই। মিডিয়া/তথ্য প্রবাহ বাংলাদেশ আর স্বাধীনতা শব্দগুলো শোনার সাথে সাথেই তার চোখের সামনে যে বিশাল তালিকা ভেসে উঠবে তার সবগুলোর কোনই প্রয়োজন নাই নিচে উল্লেখিত এই দশটা কারনই প্রমান করেও সার্প্লাস থাকবে যে এদেশের মিডিয়া/তথ্য প্রবাহ এখনও কোন তিমিরে আছে !
১. গতকাল একটা খবরের কাগজ, আমারদেশ, বন্ধ করা হয়েছে।
২. গত ২৯ তারিখ ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে যা এখনও বহাল আছে।
৩. এর কয়েক দিন আগে চ্যানেল ওয়ান নামক একটি স্যাটালাইট টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে।
৪. তারও কিছু দিন আগে এক সময়কার পরীক্ষিত ও অপরিহার্য ২৪ ঘন্টা খবরের চ্যানেল সিএসবি নিউজের নুতন রুপ যমুনা টিভি পরীক্ষা মূলক সম্প্রচারে থাকা অবস্থায়ই বন্ধ করা হয়েছে।
৫. দেশের মাত্র বিশ ভাগেরও কম জনগন ডিস/স্যাটালাইট টিভির দর্শক, ঐ দিকে বাকি ৮০ শতাংশ জনগনের সামর্থের মধ্যে একমাত্র মিডিয়া টেলিভিশন হলেও দেশের বার কোটি মানুষকে দেশের মূল ধারার মিডিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার উদ্দেশ্য এখানে টেরেস্টারিয়াল টেলিকাস্টের অধিকার কাউকে না দেয়ার সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর হয়েছে সরকার ক্ষমতায় আসার দ্বিতীয় সপ্তাহেই।
৬. ১৫ কোটি মানুষকে এক সাথে যেকোন ম্যাসেজ দেয়র মত শক্তিশালি ফুল রেডি একটা ভিএইচএফ যা একুশে টিভি ব্যাবহার করে ছিল তা ফেলে রাখা হয়েছে অনেক বছর যাবৎ যা আজকাল সংসদ টিভি প্রস্তাব করা হচ্ছে যেন দেশে এগুলি অসংখ্য আছে ?
৭. রেডিওর মত গরীব গনমানুষের মাধ্যমটি বাংলাদেশে তো প্রায় সম্পূর্ন নাই। রেডিও লাইসেন্সে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় এ দেশ।
৮. ইন্টারনেটের অবস্থা যে দেশ কোন পর্যায় রাখা হয়েছে তার ছবি আদ্যপান্ত পরিষ্কার ফুটে ওঠে যখন দেখা যায় দেশের একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল, তাও আবার মোট ব্যান্ডউইথ ৪৬ গিগা বাইট, তার থেকে সারাদেশের ইউজারকে মাত্র ১০ গিগা বাইট ব্যাবহার করতে দিয়ে বাকি ৩৬ গিগা বাইট সেখানে অব্যবহৃত শেষ করা হচ্ছে।
৯. ঢাকায় অল্প একটু এলাকায় ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক বাদ দিলে দেশে কোন ব্রডব্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচর, অপটিক ফাইবার নাই বা লাইসেন্সই দেওয়া হয়নি আজও যেমন থ্রিজি।
১০. সৃষ্টিকর্তা সব দেশের জন্য সমান রিসোর্স হিসাবে আকাশের ফ্রিকোয়েন্স গুলো দিলেও তার দশ ভাগ যে দেশ ব্যবহার করছে না সেখানে মিডিয়ার/তথ্য প্রবাহের স্বাধীনতার আসবে কোন মাধ্যমে ?
এগুলোর কোনটার পিছনে কি কারন তা মরিয়াটিকে এক অক্ষরও বলতে হবে না। তৃতীয় বিশ্বে আমরা এইগুলির কোনটা কেন করি তা এদের হাতের উল্টা পিঠের মত জান।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলার আগে বাস্তবতাটা মাথায় না রাখলে বিদেশিরা জাতি হিসাবে আমাদের খুব নীচু ভাবতে পারে তাই আপনার দেশের একজন সাধারন নাগরীক হিসাবে আপনাকে কাজে সহযোগিতা করতেই এই কথাগুলি বলা। কিছু মনে করবেন না দয়া করে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১০ সকাল ৮:১২