সিঙ্গাপুরের ফেসবুক প্রজন্মের রাজনীতি-ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে৷আসছে ২০১২ সালের নির্বাচনে সম্ভবত এই ফেসবুক প্রজন্মের ইচ্ছেরই প্রতিফলনই ঘটতে যাচ্ছে৷ ওয়ার্কার্স পার্টি কর্মী, ইতিহাসের ছাত্র বার্নাড চেন এই বিষয়টি অনেকটাই সহজ করে নিয়েছেন৷ বার্নার্ড দিব্যি তাঁর ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, মিটিং চালাচ্ছেন দলের ভেতরে, এমনকি নানারকমের কর্মযজ্ঞও তাঁর রুটিন কাজে দাঁড়িয়েছে৷
২৪ বছরের এই তরুণ আদতে সিঙ্গাপুরের ফেসবুক জেনারেশনের প্রতিনিধি৷ এই নতুন প্রজন্মের যারা, তারা এখন সিঙ্গাপুরের মসনদে দীর্ঘদিন যাবৎ জেঁকে বসে থাকা পিপলস অ্যাকশন পার্টি বা প্যাপ- এর বিরুদ্ধে লড়ার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ উল্লেখ্য, প্যাপ ৫১ বছর ধরে সিঙ্গাপুরে ক্ষমতায় রয়েছে৷ সংসদের ৮৪টি আসনের মধ্যে ৮২টার দখলই এখন প্যাপ-এর৷
তবে সাধারণ নির্বাচন ২০১২ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ সিঙ্গাপুরিই তাড়তাড়ি নির্বাচন আশা করছেন৷ সঙ্গত কারণেই সিঙ্গাপুরের রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যেই বেশ তোড়জোড় করে তাদের দলে নতুন মুখ, নতুন সদস্য বাড়াতে চাইছেন৷ আর এই নতুন সদস্যদের অধিকাংশই নতুন প্রজন্ম বা ফেসবুক জেনারেশনের৷
এদিকে আবার সম্প্রতি এদেশের সরকারও ভোটার-বান্ধব নিয়মকানুন বানাতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে৷ এসব কারণে অনেকেই নির্বাচন দ্রুত এগিয়ে আসার সম্ভাবনার বিষয়টিতে আশাবাদী হয়ে উঠছেন৷যেমন চেন এর কথাই বলা যায়, সংবাদমাধ্যমকে তরুণ প্রজন্মের ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মী চেন জানিয়েছেন যে, তাঁর দল এই নির্বাচনে অংশ নেবে এবং তাঁরা এবারে জনগণের সমর্থন পেতে চাইছেন৷
চেনের চাওয়াগুলোর একটি হচ্ছে- ভোটার বয়সসীমা কমানো, এখনকার ২১ বছরের বয়সসীমাকে কমিয়ে ১৮তে নিয়ে আসা৷ অর্থ দাঁড়াচ্ছে, রাজনীতিতে ফেসবুক এবং টুইটার জেনারেশনকে অর্ন্তভূক্ত করা৷ এটি আসলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা প্যাপ-এর কঠোর শাসন আর নানারকম নিয়মে অতীষ্ঠ নতুন প্রজন্মেরই প্রত্যাশা৷
মাঝেমধ্যে মিডিয়ার ওপর প্যাপ-এর নানান খবরদারি আর পুলিশি হাঙ্গামা সত্ত্বেও সিঙ্গাপুরের এই নতুন প্রজন্ম ব্লগে, ফেসবুকে, দ্য অনলাইনসিটিজেনডটকম এবং অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে প্যাপ-এর বিরুদ্ধে বেশ ঝেড়েই কাশছে৷
যদিও প্যাপ এর এই ৫১ বছরের শাসনামলে সিঙ্গাপুর অনেকখানি এগিয়েছে৷ সিঙ্গাপুর পৃথিবীর ধনী দেশগুলোর কাতারে দাঁড়াতে পেরেছে৷ কিন্তু এক অর্থে এই উর্ধ্বশ্বাস প্রগতি মানুষের গণতান্ত্রিক স্বস্তিবোধটুকুকে কেড়ে নিয়েছিলো৷
কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত চল্লিশ বছর ধরে প্রবীনদেরই জয়জয়কার এবং এদের এক একজনের অবস্থানই আমৃত্যু লাইসেন্স করা। অথচ চল্লিশ বছরে এরা দেশটাকে দোজখ ছারা আর কিছুই বানেতে পারেনি।
নতুন প্রজন্মের জেগে ওঠাই আজ এদেশের একমত্র মুক্তির পথ। জেগে উঠুক নতুন প্রজন্ম, ফেসবুক প্রজন্ম, সামু প্রজন্ম।