আপনি চাইলে মাঠের উন্নয়ন কাজে দানও করতে পারবেন। দেশের চারশ বছর, দুইশ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চলা মাঠগুলো প্রতিযোগিতায় নামবে। জামাত বড়, সোয়াব বেশি, সবচেয়ে সহজ এবং আরও অনেক অনেক ...
এবার স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। সকাল পৌনে নয়টার মধ্যে মাঠ কানায়-কানায় ভরে যায়। মাঠে জায়গা না থাকায় বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন সড়ক, আশপাশের জমিসহ ব্যাপক এলাকাজুড়ে মুসল্লিরা অবস্থান নেন। মাঠে জায়গা না পেয়ে কমপক্ষে ৫০ হাজার মুসল্লিকে দাঁড়িয়েই নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। এরপরও স্থান না থাকায় অনেকে ফিরে গেছেন।
সকাল ১০টায় জামাত শুরু হয়। জামাত শুরুর ১০, ৫ ও ৩ মিনিট আগে শর্টগানের ফাঁকা আওয়াজ করে সংকেত দেওয়া হয়। স্মরণকালের এ বৃহৎ জামাতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে জানিয়েছেন মাঠ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. সিদ্দিকুর রহমান। তবে ব্যাপক সংখ্যক মুসল্লি নামাজ পড়তে না পারায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
যশোর থেকে এসেছেন নিলু মিয়া (৮০) তিনি জানান, স্বাধীনতার পর থেকে ঈদুল ফিতরের জামাত আমি এখানেই পড়ছি। বড় জামাতে কার দোয়া আল্লাহ কবুল করার মাধ্যমে আখেরাতের কামিয়াব করবেন এ প্রত্যাশায় প্রতি বছর এখানে নামাজ পড়তে আসি। এ ছাড়া সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তান থেকেও এবার মুসুল্লিরা নামাজ পড়তে শোলাকিয়ায় সমবেত হন।
স্থানাভাবে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে না পারায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মাঠের পরিধি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। অনেক মুসল্লির নামাজ না পড়তে পারার কথা স্বীকার করে মাঠ পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মাহবুবুল হক বলেন, আগামী বছর মাঠের পরিধি বাড়ানো হবে।
যাহউক, এবার শোলাকিয়ায় তিন লাখ মুসুল্লী হয়েছে। দুই বছর আগে ছিল দেড় লাখ। তিন বছর পর হবে দশ লাখ, খুবই লজিকেল।
ভেবে দেখেছি কখনও দশ লাখ মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে একই স্থানে সমবেত হওয়ার জন্য মোভ করলে কি বিশাল পরিমান মোবিলাইজেশন হয় ? কি পরিমান শক্তি, ফুয়েল, অর্থ, ট্রাফিক ও ক্যাওজ হয় ? কত ব্যপক এর মাত্রা ? অন্যদিকে আমরা সবাই চাই এই জামাত আরও বড় হউক। এটা সবার প্রত্যাশাও। কিন্তু কি ভাবে একে একই সাথে আরও ব্যপক ও সে তুলনায় খুবই নগন্য মোবিলাইজেশন করে করা যায় ?
জামাতে নামাজের একটা গুরুত্বপূর্ন উপাদান হলো এক সাথে হওয়া। কাতার ও দূরত্বের বিষয়টা এরকম যেন মুসুল্লীগন ঈমাম সাহেবের কন্ঠ শুনতে পারেন ও ফলো করতে পারে। যেমন ধরুন কোন মসজিদে খুব ভীর, কেউ বারন্দায়, কেউ বাইরে, কেউ পাশের ঘরে দাড়িয়ে গেছেন। তাতে কোন সমস্যা হবে না সবাই ঈমাম সাহেবকে শুনতে পাচ্ছেন ও অন্য মুসুল্লিদের দেখতে পাচ্ছেন। এরকম প্রায় জুম্মাবারে অনেক মসজিদেই হয়। পাশের রুমে সাউন্ডবক্স থাকায় দেয়ালের অন্য পাশের কাউকে না দেখেও নামাজ আদায়ে কোন সমস্যা হয় না।
এবার ধরুন আপনি একা বা আরও কয়েজন মসজিদের ভেতর জায়গা না পেয়ে সাথে লাগানো রুমে ঢুকে কাতারে দাড়িয়ে গেলেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে রুমটা ফুল সাউন্ড প্রুফ। ঈমাম সাহেবকে ফলো করা দূরে থাক কোন শব্দ বা নির্দেশ সামান্যও রুমে প্রবেশ করে না। আবার ঘরটা দেয়াল দিয়ে এমন ভাবে আলাদা যে পাশের বা বাইরের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। এখন বলুন আপনার নামাজ হবে ? কিভাবে ফলো করবেন ?
এখন মনে করুন জামাতটি সরাসরি সম্প্রচার বা স্ট্রিমিং হচ্ছে। আর এই ঘরে একটি টেলিভিন বা স্ক্রীন খোলা যেখানে আপনি ঈমাম সাহেবকে দেখতে ও শুনতে পাচ্ছেন ও অন্য মুসুল্লিদের দেখতে পাচ্ছেন। নামাজ পড়লেন। আপনার নামাজ হবে ? জামাতের সোয়াব পাবেন ?
সারাদেশ আমরা এক সাথে, এক বিশাল এক জামাতে নামাজ পরতে চাই। সবচেয়ে বড় জমাতের সোয়াব, বাংলার সব মুসলমান এক কাতারে। টেলিভিশনে সরাসরি। কোথাও ঘরে, কোথাও বিশাল ঈদের মাঠে বড় মাল্টিমিডিয়া। আর এই জামাতগুলিতে স্থানীয় ইমাম আলেমগন সঞ্চালকের ভূমিকায় থাকবে।
এবার শোলাকিয়ায় আড়াই থেকে তিন লাখ মুসুল্লী হবে। দুই বছর আগে ছিল দেড় লাখ। পাঁচ বছর পর হবে দশ লাখ।
একবার ভাবে দেখেনতো দশ লাক্ষ মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে একই স্থানে সমবেত হতে কি বিশাল পরিমান মোবিলাইজেশন হয় ? কি পরিমান শক্তি, ফুয়েল, অর্থ, ট্রাফিক ব্যয় হয়। কত ব্যপক এর মাত্রা ? অন্যদিকে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবহার করে ১০০ কোটির জামাত হলেও কোন সমস্যা নাই। আল্লাহ তার প্রকৃতিতেই আমাদের জন্য কত সহজ সরল সমাধান রেখে দিয়েছেন। এই আকাশে বাতাসে ফ্রিকোয়েন্সিতে ।
আজ আমরা হয়তো বলবো, না এভাবে নামাজ হবে না। বলছিতো হবে না কিন্তু এক সময় আমরাই আবার বলবো হবে। অতীতে একম অনেক কিছু আছে যা বলা হতো হবে না, আজ হচ্ছে। মাঝখানে কোটি কোটি মানুষ, অনেক বছর, অনেক অপচয় ও অনেক সমস্যা।
আমরা যে মুসলমানরা এক সময় বলেছি টেলিভিশন দেখা হারাম পরে আমরাই ইসলামিক টেলিভিশনও বানিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:৩৫