somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিজিটাল বাংলাদেশের কার্যক্রম পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত ঘোষনা করা হচ্ছে।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আলোচনা শুরু করার জন্য গ্রামীনফোনের সিইও অডভারের সম্প্রতী একটি সাক্ষাৎ দিয়ে শুরু করছি যদিও তিনি ওখানে সামগ্রীক বিষয়ে ৫% ওবলেন নি। নিচের মন্তব্যে বিস্তারীত আলোচনা হচ্ছে, দ্রষ্টব্য।

এত টাকা লাইসেন্স ফি দিলে গ্রাহকসেবায় কিছু থাকবে না

যে টাকায় মোবাইল ফোন অপারেটরদের লাইসেন্স নবায়নের কথা বলা হচ্ছে, তাতে কল রেট বৃদ্ধি অথবা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বিনিয়োগ বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প কিছু করার থাকবে না বলে মনে করছে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। তারা বলেন, দেশের কোনো ব্যাংকও লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে না। তাছাড়া দ্বিতীয় প্রজন্মের (টু-জি) লাইসেন্স নবায়নে এত টাকা নেওয়া হলে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রি-জি) মোবাইল সেবা অন্তত পাঁচ বছর পিছিয়ে দেওয়া উচিত। তা না হলে থ্রি-জির বিনিয়োগের জন্য কোনো টাকাই থাকবে না।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওডভার হেশজেদাল বলেন, লাইসেন্স নবায়নের জন্য সরকারকে ৭ হাজার কোটি টাকা দিলে ২৫ থেকে ৭৫ শতাংশ হারে কল রেট বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু সেটি সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তাদের বিকল্প থাকে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বিনিয়োগ বন্ধ করা। তিনি বলেন, লাইসেন্স নবায়নে পুরনো চারটি অপারেটর এত টাকা দিয়ে দিলেও বাকি দুটি অপারেটর বিশেষ সুবিধা পাবে। ফলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হবে।
আগামী বছরের নভেম্বরে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং সিটিসেলের ১৫ বছরের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে। সম্প্রতি এ চার অপারেটরের লাইসেন্স নবায়নে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। লাইসেন্স নবায়নে প্রাথমিকভাবে গ্রামীণফোনকে ৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা দিতে হবে। তাছাড়া বাংলালিংক ৩ হাজার ৩০০ কোটি, রবি ৩ হাজার ১০০ কোটি এবং সিটিসেলকে ১ হাজার ২৪ কোটি টাকা দিতে হবে। অপারেটরদের আয় এবং ফ্রিকোয়েন্সির হিসাবে এটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

ওডভার বলেন, এ তথ্য সঠিক হলে দেশের টেলিযোগাযোগ শিল্প, গ্রাহক এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন পরিকল্পনার ব্যাপক ক্ষতি হবে। তিনি বলেন, এমনভাবে নীতিমালাটি করা হয়েছে যার অর্থ দাঁড়ায়, ভালো ব্যবসা করলে শাস্তি পেতে হবে। আর প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়লে পুরস্কার। লাইসেন্স নবায়নের অপেক্ষায় থাকা চারটি অপারেটরই প্রথম থেকে ব্যবসার ক্ষেত্রে সমান সম্পদ এবং সুযোগ পেয়েছে। বেশি বেশি বিনিয়োগ করে যারা সফল হয়েছে তাদের ওপর আরও বেশি হারে ফি চাপানো হচ্ছে। এটি সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

তিনি বলেন, খবরের কাগজে যেভাবে বলা হয়েছে, লাইসেন্স নবায়নে এ পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে কি-না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। সরকারি নিয়ম অনুসারে স্থানীয় ব্যাংকগুলো একটি শিল্পে এত টাকা ঋণ দিতে পারে না। তাছাড়া নবায়নের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে লাভ যেখানে দ্রুত কমে যাবে সেখানে কোনো বিদেশি ব্যাংকও ঋণ দেবে না। সেক্ষেত্রে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা কি এ অর্থ দিতে রাজি হবেন? তাহলে বাংলাদেশের ৯০ হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারীকে নতুন মূলধন হিসেবে ১০ কোটি ডলার দিতে হবে।

ওডভারের বিবেচনায়, একই ধরনের বাজারে প্রচলিত নিয়মকানুনের ভিত্তিতেই নবায়ন ফি নির্ধারিত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সর্বশেষ লাইসেন্স গ্রাহক যে ফি দিয়েছেন তার ভিত্তিতে নবায়ন ফি স্থির করা যেতে পারে। পাকিস্তান এবং নেপালেও একই নীতি নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে লাইসেন্স নবায়ন এবং ফ্রিকোয়েন্সির জন্য ৫ কোটি ডলার ফি নির্ধারিত হতে পারে। তিনি বলেন, লাইসেন্স নবায়ন বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বিটিআরসিকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা আলোচনার জন্য ডাকেনি।

গ্রামীণফোণ প্রধান বলেন, দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিটিআরসি লাইসেন্স নবায়ন নীতিমালা করতে পারত। একটি হলো_ দেশের সব মানুষের কাছে দ্রুত সেবা পেঁৗছাতে অবকাঠামো নির্মাণ। অন্যটি_ সবার জন্য সুলভ সেবা। সেটা না করে যে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে তাতে অপারেটরদের বিনিয়োগ হ্রাস এবং কল রেট বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে ওডভার বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতে অপারেটরদের ওপর উচ্চ হারে ফি ও চার্জ আরোপ করা হলে কী হয় তার প্রমাণ বাংলাদেশেই আছে। দুই বছর আগে উচ্চ লাইসেন্স ফি নিয়ে ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্স দেওয়া হয়। এখনও তারা সেভাবে সেবার বিস্তার ঘটাতে পারেনি। তিনি বলেন, ১৫ বছরের জন্য অগ্রিম ২ বিলিয়ন ডলার নেওয়া হলে শেষ পর্যন্ত সেটি ৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়।

ওডভার বলেন, দেশে এখন টেলিঘনত্ব ৪০ ভাগ। প্রকৃতপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোক ফোন ব্যবহার করে। আমরা দেশের শতভাগ লোককে নেটওয়ার্কের মধ্যে এনেছি। আগামী তিন বছরে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা ১০ কোটিতে নেওয়ার পরিকল্পনা করছি। এ বিপুল গ্রাহককে সেবা দিতে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত নীতিমালা অনেক ক্ষেত্রেই অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

থ্রি-জি বিষয়ে ওডভার বলেন, টু-জি লাইসেন্স নবায়ন এত খরচসাপেক্ষ হলে থ্রি-জি অবকাঠামো নির্মাণে আর কোনো অর্থ থাকবে না। তাতে থ্রি-জি মোবাইলের কার্যক্রম পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এমনিতেই দেশের টেলিযোগাযোগ শিল্পে শুল্কহার অনেক বেশি। ১০০ টাকা আয় করলে অর্ধেকেরও বেশি নানাভাবে সরকারকে দিতে হয়। এ রকম চ্যালেঞ্জিং ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতেও গ্রামীণফোন আয়ের ৮০ ভাগ নেটওয়ার্ক ও সেবা বিস্তারে আবার বিনিয়োগ করছে।

গ্রামীণফোনসহ অন্য তিন অপারেটরের নূ্ন্যতম ফিতে লাইসেন্স নেওয়া প্রসঙ্গে ওডভার বলেন, ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে অপারেটরদের এমন সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। তা না হলে এত অল্প সময়ে দেশে টেলিযোগাযোগ বিপ্লব হতো না। তিনি বলেন, যেসব দেশ আগাম অর্থ আয়ের চেয়ে দ্রুত কাভারেজ ও সেবা সম্প্রসারণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে তারাও একই কাজ করেছে। লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রেও একই উদারহণ অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্যঃ অতীতে প্রতিবার এবং বর্তমান সময়েও প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতিয় স্বার্থের বিপক্ষে কাজ করা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয় এরকম একটি নীতিমালা জনগনের সাথে ব্যপক আলোচনা না করে নেয়া আর ঠিক হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৭
২৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭



ছবি সৌজন্য-https://www.tbsnews.net/bangla




ছবি- মঞ্চে তখন গান চলছে, মধু হই হই আরে বিষ খাওয়াইলা.......... চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী গান।

প্রতি বছরের মত এবার অনুষ্ঠিত হল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা-২০২৪। গত ২৪/০৪/২৪... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

×