somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক পোষ্টে ডিজিটাল বাংলাদেশের সকল কিসসা কাহিনী।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পোষ্টটি শুধু শিরনামে সীমাবদ্ধ না থেকে মন্তব্য ও আলোচনায় সমগ্র ডিজিটাল বাংলাদেশের চিত্র ও আমাদের করনীয় উঠে এসেছে।

গত ৩রা জানুয়ারী, ২০১১ জাতীয় খবরের কাগজগুলোতে বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথের (BW) দাম তৃণমূল মানুষের নাগালের মধ্যে আনার এবং গত দুই বছর যাবৎ তরুন প্রজন্মের বহুল প্রতিক্ষিত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ দাম কমানোর বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর বক্তব্য সম্বলীত একটি নিউজ এসেছে। এখানে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত নিউজটির একটি প্যারা ওয়াইজ আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশে BW দাম ও বাংলাদেশে BW নীতিমালা কেমন হওয়া উচিত তার একটি রুপরেখা আলোচনা করা হলো।

নিউজঃ ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম আরো এক দফা কমতে যাচ্ছে। এই দফায় মূল্য এক-তৃতীয়াংশ কমবে। প্রধান-মন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মূল্য হ্রাসের ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানা গেছে। মূল্য হ্রাস পেলে মেগাবিট প্রতি (ভ্যাট ছাড়া) ব্যান্ডউইথের বর্তমান মূল্য ১৮ হাজার টাকা থেকে কমে দাঁড়াবে ১২ হাজার টাকায়। একই সাথে আগামী জুলাই থেকে প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইথের দাম ১০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনবে মন্ত্রণালয়। এদিকে ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর পাশাপাশি অব্যবহূত ব্যান্ডউউথ রফতানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দফায় দফায় ভারত, নেপাল ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানি যোগাযোগ করছে। সাবমেরিন কেবল কোম্পানিও (বিএসসিসিএল) দু'টি কোম্পানিকে চূড়ান্ত করেছে।

আলোচনাঃ বাংলাদেশে এই মহুর্তে অব্যহৃত ব্যানডউইথ (BW) থাকা সত্যিই অনাকাংখিত, যেখানে এখন বাংলাদেশে মোট ৫০ গিগাবিট BW আছে (44.6 gbps on seamewe-4 and 5 gbps on terrestrial link from India) যা কিনা বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ডেডিকেটেড ব্যান্ডউইথের চেয়েও কম। আবার এমুহুর্তে দেশে যে পরিমান BW ব্যবহার করতে দেয়া হচ্ছে সেই BW এর পরিমান আরও অনেক বেশি হতাশাজনক। সরকারী একটি প্রেসরিলিজে দেখা যায় সিমিউই-৪ এর বাংলাদেশ ল্যান্ডিং পয়েন্টে মাসিক সেলস ১০ gbps.
অথচ আমরা একটু খেয়াল করলেই দেখবো দেশে এই মুহুর্তে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর প্রায় ৯০ শতাংশই মোবাইল নেটওয়ার্কের দারা নেট ব্যবহার করছে এবং তাদের গড় BW/Speed হচ্ছে ৪ থেকে ৫ kBps বা ৪০ থেকে ৫০ kbps যাকে বর্তমান বিশ্বে আদৌ ইন্টারনেটের সংজ্ঞাতেই ফেলা যাবে না ; যদিও সাবমেরিন কেবলে আমাদের মোট ব্যবহৃত BW এর চারগুন গত তিন বছর ধরে অব্যহৃত পড়ে থাকছে, সেলুকাস !!! দেশের ৯০ শতাংশ ইউজার যে মোবাইল EDGE নেটওয়ার্কে BW ব্যবহার করছে তাতে ইউজারকে সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৩৫ kBps BW দেয়া যাব। তাহলে দেশের বর্তমান ৫০ মেগাবিট BW বর্তমান সংখ্যক ইউজাকে ব্যবহার করতে দিলেও ব্যবহার কারীর BW ৪ থেকে ৫ kBps থেকে বেড়ে মাত্র ২০ kBps হবে এবং কোন BW উদ্ধৃত থাকবে না। তাই সরকারে উচিত ব্যন্ডউইথের দাম এক-তৃতীয়াংশ না কমিয়ে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে মোবাইল আইএসপিদের আগের সমান খরচেই তিনগুন বেশি BW নিশ্চত করা যেন দেশের ৯০% ব্যবহারকারী বলতে পারে আমরা ব্রডব্যান্ডের কাছাকাছি কিছু একটা ব্যবহার করছি। আজকের পৃথিবীতে ৫১২ kbps এর নিচের BW কে আর ব্রডব্যান্ড বলা হয় না। উল্লেক্ষ্য ইউটিউবে জন্য লোয়েস্ট রোকোয়ার্মেন্ট ৩০০ kbps. তাই এই মুহুর্তে ব্যন্ডউইথ রপ্তানীর কোন প্রশ্নই আসেনা।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সংশিস্নষ্টদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত নভেম্বরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠকের পর ডিসেম্বরেও একাধিক বৈঠক হয়। সরকার বলছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যকর করতে ইন্টারনেটের ব্যবহার তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আলোচনা-২ তৃণমূলের মানুষের কাছে BW তথা ব্রডব্যন্ড পৌছানো ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রতারনায় রুপান্তরিত হবে, এটা সত্য। এ লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে BW এর দাম আমাদের সাধারন জনগণের অর্থনৈতিক ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ হতে হবে। যেমনঃ বর্তমান ইনফ্রাস্ট্রাকচারে যুক্তি সংগত গতিতে সারা মাস আনলিমিটেড ইন্টারনেটের দাম সর্বোচ্চ ৩০০/- টাকা হতে পারে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী কে অনুরোধ ব্যন্ডউইথের মূল্য ১/৩ না কমিয়ে ২/৩ কমানো হোক সেই সাথে তৃণমূলের জনগণের স্বার্থে ব্যন্ডউইথকে ভ্যাট মুক্ত রাখা হউক। এমপি সাহেবরা যদি তাদের চলাচলের জন্য ৫ কোটি টাকার ৮০০০ সিসি জিপ শুল্ক মুক্ত ব্যবহার করতে পারে তাহলে তৃণমূলের জনগণ অবশ্যই তাদের যোগাযোগের জন্য ৬০০০ টাকার ইন্টারনেট ভ্যাট মুক্ত ব্যবহার করার অধিকার রাখে। (এই দাবিটি অর্থমন্ত্রী সমীপে)

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, ব্যান্ডউইথের দাম মেগাবিটপ্রতি ৬ হাজার টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। মাস ছয়েক পরে আরো কয়েক হাজার টাকা কমানো হবে। সম্ভব হলে ১০ হাজার টাকার নিচে নামিয়ে আনা হবে। তিনি জানান, ঘোষণাটি যাতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেন সেজন্য তার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তবে সেটি সম্ভব না হলে সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিনিই এই বিষয়ক ঘোষণা দিতে পারেন। তবে ঘোষণা যে দিনই হোক মূল্য হ্রাস কার্যকর হবে পহেলা জানুয়ারি থেকে। তবে ব্যান্ডউইথের উৎস মূল্য উলেস্নখযোগ্য হারে কমলেও গ্রাহক পর্যায়ে সব সময় তার প্রভাব পড়ে না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এবার সেদিকেও নজর দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, এ জন্য ঢাকা বা চট্টগ্রামের বাইরে ব্যান্ডউইথের পরিবহনের বাড়তি যে খরচ সেটিও উলেস্নখযোগ্য হারে কমাতে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গ্রাহকরা বলছেন, চার বছরে চার দফায় মূল্য কমলেও গ্রাহক পর্যায়ে সেভাবে ব্যান্ডউইথের খরচের তেমন প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে আইএসপিরা বলছেন, ব্যান্ডউইথের খরচ কমলেও অন্যান্য খরচ না কমে বরং বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গ্রাহকদের লাভ হয়নি। তবে টাকার অংকে লাভ না হলেও আগের টাকাতেই তারা বেশি ব্যান্ডউইথ পেয়েছেন বলেও জানান তারা।


আলোচনা-৩ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের হেডকোয়ার্টার হিসাবে এই মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে অর্থাৎ আরও দুই বছর আগেই ক্ষমতায় আসার প্রথম দিনই উচিত ছিল BW এর দাম সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় নিয়ে আসা। এটা না করায় যে ডিজিটাল বাংলাদেশ যে কচ্ছপের চেয়ে ধীর গতিতে আগাচ্ছে তার দায়িত্ব এই মন্ত্রনালয়কেই নিতে হবে। দেশের তরুন প্রজন্ম তাকে গত দুই বছরের কর্মকান্ডের জন্যই কোন দিন ক্ষমা করবে না সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীকে স্বরণ করিয়ে দেবে আগামী নির্বাচনে এই তরুন প্রজন্মের ভোটারই হবে ৫৬ শতাংশ। সারা দেশ ১০ মেগাবিট বিট BW ব্যবহার করবে আর সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাবে, ভাবা যায় ? BW ব্যবহারের ও এর গ্রোথের উপরই বেসিক্যাললী নির্ভর করে দ্যা গ্রোথ অব ডিজিটালাইজেশন ইন এ্যা কান্ট্রি।

BW এর দাম ইউজার ল্যাভেলে কমানোর বেসিক উদ্দোগ্য হচ্ছে সরকারের পর্যারে BW এর দাম কমাতে হবে এবং আইএসপিগুলো যে বিজনেস প্লান জমা দিয়ে BW নিচ্ছে তা সরকারের রেগুলেটরি বোর্ডগুলো নিশ্চত করবে। যদি আনলিমিটেড ইন্টারনেটের দাম সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বা এরকম মূল্য নিশ্চিত করা যায় তাহলে তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবহারকারীর সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে যাবে এবং তখন ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা সহজেই তাদের মূল্য অনেক কমাতে পারবে।

মাননীয় মন্ত্রী ব্যান্ডউইথ পরিবহনের যে সমস্যার কথা বললেন তা নিয়ে বলতে গেলে দেশের বর্মতমান অবকাঠামো সম্পর্কে বিশদ আলোচনা দরকার এবং এই আলোচনায় গত দুই তিন বছরে সরকারের নানা ভুল পদক্ষেপ পাওয়া যাবে। যার মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনার পরও দুই বছরে আজও বাংলাদেশে থ্রীজির অনুমোদন না দেয়া সত্যিই খুব দূঃখজনক। কারন থ্রীজি-3G বাংলাদেশের জন্য শুধু "থার্ড জেনারেশন মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক" না এটা আমাদের ব্রডব্যান্ড পরিবহনের একমাত্র বাস্তব মাধ্যম। বাংলাদেশে আমরা ২০১০ সালেও যে ধরনের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছি একে অন্তত দশ বছর আগের ২.৫জি/(জিপিআরএস-GPRS) বা ২.৭৫জি/(এজ-EDGE) নেটওয়ার্ক দাবি করা হয়। একে থ্রীজিতে আপগ্রেড করতে মোবাইল অপারেটরগুলির সরকারের অনুমোদন লাগবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বললে প্রথমই যে প্রশ্নটা আসে তাহলো সর্বজনীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। গণব্রডব্যন্ড ছাড়া কেউ যদি ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায় তবে বুঝতে হবে সে মিথ্যা কথা বলছে। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পরে ব্রডব্যন্ড হবে জনগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার। এবং আমাদের বাস্তবতা হলো মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া অন্য কোন নেওয়ার্কে যেকোন লোকেশনে যেকোন ইউজারকে ব্রডব্যান্ড দেয়া আগামী প্রায় ১০০ বছরেও অবাস্তব।

২০০১ সালের মে মাসে জাপান সরকার প্রথম সেদেশে ২.৫/২.৭৫ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করে থ্রী-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপন করার অনুমতি দেয়া হয়।পরবর্তী দুই তিন বছরের মধ্যেই ধনী দেশগুলোর সরকারের কাছ থেকে সেসব দেশের মোবাইল অপারেটরেরা তাদের নেটওয়ার্ক আপগ্রেড করার অনুমতি লাভ করে।

শুধু যে ধনী দেশেগুলিতেই মোবাইল নেটওয়ার্কের এই আাপগ্রেডেশন হয়েছে তাই নয়। থ্রীজি তে আপগ্রেডেশনের এই অনুমোদন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো সহ তৃতীয় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশর সরকার ২০০৮ সালের মধ্যে দিয়ে দিয়েছে। যেমন ৯ জুলাই, ২০০৮ সালে বার্মায়, ৬ মে, ২০০৮ সালে ভুটান, মে, ২০০৭ নেপালে, জানুয়ারী, ২০০৮ পাকিস্তান, ফেব্রুয়ারী, ২০০৮ মালদ্বীপ, ৭ মার্চ, ২০০৮ উগান্ডা, জুন, ২০০৬ শ্রীলংকা, ২৮ এপ্রিল, ২০০৯ মঙ্গোলীয়া, অক্টবর, ২০০৯ ভারত উল্লেখযোগ্য।

ব্রডব্যন্ড নেটওয়ার্কের জন্য পৃথিবীতে সাধারনত তিন ধরনের অবকাঠামো ব্যবহার হচ্ছে, ১. অপটিক ফাইবার ক্যাবল, ২. ওয়াইম্যাক্স, ৩, থ্রীজি-3G মোবাইল নেটওয়ার্ক। এর মধ্যে যদিও থ্রীজি-3G নেটওয়ার্ক যা ভিডিও কল সহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। তবে মোবাইল ছাড়াও এই থ্রীজির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিবহনের ক্ষমতা বাংলাদেশের জন্য আশির্বাদ স্বরুপ কাজ করবে। কেননা, এদেশের সেই আদিকালের সারাদেশে সর্বোচ্চ ১০% অঞ্চলে কপার তাড়ের টেলিফোনি সিস্টেম সম্পর্কে ধারনা ও আস্থা আমাদের হাতের উল্টো পিঠের মত স্পষ্ট।এই রকম একটা সিসটেমকে সহসাই আমরা অপটিক ফাইবার ক্যাবল দিয়ে রিপ্লেইস করে ফেলবো এবং একদিন জেলা, উপজেলা হাওড়, বাওড় ও পাহাড়ে জালের মত অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেব, গণতান্ত্রীক কমিউনিকেশন দেব সেরকম স্বপ্ন দেখা ঘুমের মধ্যেও উচিত হবে না। আর এদিকে আমাদের টেলি মন্ত্রনালয় গত ২০০৯ সালে অপটিক হোম নামক একটি মাত্র কোম্পানীকে সারাদেশে অপটিক ফাইবার স্থাপনের লাইসেন্স দেয় যারা গত দুই বছরে শুধু ঢাকায় ৪৮ কিলোমিটার অপটিক কেবল স্থাপন করছে অথচ বাংলাদেশের আয়তন ৫৬ হাজার বর্গমাইল।

বাকি থাকছে আর একটি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিবহনের মাধ্যম । তাহলো ওয়াইম্যাক্স-Wimax। কিন্তু গত ২০০৮ সালে এই মন্ত্রনালয় ওয়াইম্যাক্স-Wimax লাইসেন্স দেয়ার নামে কৃষকে সোনার ডিম দেয়া হাঁসের মত একবারেই জবাই করে সবগুলো সোনার ডিম পাওয়ার লোভে পৃথিবীর সর্বোচ্চ মূল্যে লাইসেন্স বিক্রি করে ওয়াইম্যাক্স অবকাঠামো গড়ে ওঠা অংকুরেই ধ্বংস করে দিয়েছে যার ফলাফল স্বরুপ গত প্রায় তিন বছরেও এই ওয়াইম্যাক্স শুধু ঢাকার মানুষের কাছেই পৌছুতে পারছে না। যেমন এই মুহর্তে আমি জিপি এজমডেম ব্যবহার করছি। তাহলে এই ব্রডব্যেন্ড সুনামগঞ্জের শাল্লায় পৌছাতে পুরো একবিংশ শতাব্দী লেগে যাবে ! অবশ্য শাল্লার মত দরিদ্র এলাকায় এর না যাওয়াই ভালো, মোবাইলই তাদের জন্য যথেষ্ট।

তাই আবার বলছিঃ গণ ব্রডব্যন্ড ছাড়া কেউ যদি ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায় তবে বুঝতে হবে সে মিথ্যা কথা বলছে। সে শেখ হাসিনা বললেও মিথ্যা বলছে। যদি তাই হয় তবে তিনি গত দুই বছরেও কেন থ্রীজি দিলেন না, যে থ্রীজির বিষয়ে ২০০৮ সালেই কেয়ারটেকারসরকার সব কাজ শেষ করেগিয়েছিল ? কেন ? কোথায় তার সমস্যা ? কেন মননীয় মন্ত্রী গত দুই বছর যাবৎ বলছে ৬ মাসের মধ্যে থ্রীজি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে যেমন তিনি গত দুই বছর যাবৎ বলছে ৩ মাসের মধ্যে ভিওআইপি ওপেন করে দেয়া হবে, দুই বছর যাবৎ বলছে ৬ মাসের মধ্যে বাজারে টেশিসের বার হাজার টাকার ল্যাপটপ আসছে ?

ব্যান্ডউইথ রফতানি: বিএসসিসিএল'র কাছে থাকা অব্যহূত ব্যান্ডউইথ রফতানির ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। কয়েক দফা চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেনটিক এবং বাংলাদেশের দুটি কোম্পানি ব্যান্ডউইথ নেবে। মার্কিন কোম্পানিটি নেবে ১ লাখ মিউকিলোমিটার ব্যান্ডউইথ। যা থেকে বছরে বিএসসিসিএল-এর আয় হবে ২২ কোটি টাকা। আর দেশের মীর টেলিকম এবং বাংলাট্রাক যৌথভাবে নেবে আরো ১৯ কোটি টাকার ব্যান্ডউইথ। ইতিমধ্যে এদুটি রফতানি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসসিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন। তাছাড়া ভারত, নেপাল, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুর ছাড়াও বিভিন্ন দেশের কোম্পানি উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ কিনতে যোগাযোগ করছে। ইতিমধ্যে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্যে অন্তত ১০ গিগাবিট ব্যান্ডউইথ দেয়ার কথা চলছে। ফলে এ খাত থেকেও অনেক ডলার আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

আলোচনা-৪ মননীয় মন্ত্রী এই মাত্র ২২ কোটি টাকার জন্য আপনি এত অস্থির হয়ে গেলেন আপনার মত দেশ প্রেমিক সত্যিই বিরল। তাহলে গত দুই বছর যাবৎ আপনি যে ব্যন্ডউইথ অব্যবহৃত রেখে জনগণকেও ব্যবহার করতে না দিয়ে প্রতি মাসে জনগণের ২২ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন সে হিসাব কে দেবে ? আপনার মত দেশ প্রেমিক জাতির কলংক ছাড়া আর কিছু নয়। আর একটা কথা আমাদের সাবমেরিন কেবল কম্পানী একটি লুজিং কম্পানী না। মাত্র ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করতে দিয়েই এই কোম্পানী গত বছর দশ শতাংশ লাভে চলছে এবং গণতন্ত্রের সমার্থক ব্যান্ডউইথের কোম্পানীকে জাতী ১০০ কোটি টাকা সাবসিডি দিয়েও চালাতে প্রস্তুত আছে যেখানে শুধু ভিওআইপিতে প্রতি মাসে কয়েকশত কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে।

যাহউক এই মুহুর্তে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ রপ্তানীর প্রশ্নই ওঠে না বরং এধরনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ন দেশ, জনগণ ও গনতন্ত্র বিরোধী। তবে ব্যান্ডউইথ রপ্তানী করা বাংলাদেশের জন্য কখনওই সমস্যা না যতদিন দেশটার ভৌগলীক সীমায় বঙ্গপোসাগর থাকবে ততদিন নিজে পর্যাপ্ত ব্যবহার করেও আশেপাশের অঞ্চলে ও দেশে কয়েকগুন রপ্তানীও করতে পারবে। যেমন এই মুহূর্তে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মোট BW নূন্যতম ১৫০ gbps থাকার কথাছিল। গত ২০০৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সাবমেরিন কেবলে বাংলাদেশের তৃতীয় আপগ্রেডেশন ডিউ ছিল যা করা হলে এখন আরও অনেক কম খরচে ৯৬ gbps BW যোগ হতো কিন্তু মন্ত্রনালয় তখন তা রিজেক্ট করে-উল্লেখ্য বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানী বলছে বর্তমানে প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইথের উৎপাদন খরচ ৫০০০/- টাকা এবং এই আপগ্রেডেশনের পর তা দাড়াতো ২০০০/- টাকায় অথচ আমাদের সর্বকালের জনগণ বিরোধী এই মন্ত্রনালয় এবং এই তথাকথিত দেশ প্রেমিক মন্ত্রী জনগণের অসচেতনতার সুজোগ নিয়ে ঐ আপগ্রেডেশন বাতিল করেছিলেন। এখন আবার এক বছর পর শোনা যাচ্ছে উদ্দোগ্য নেয়া হচ্ছে যা আগামী বছর সম্পন্ন হবে। হ্যাঁ এক্ষেত্রে ১৫০ gbps থেকে দেশে ১৩০ gbps ব্যবহার করে বাকি ২০ gbps নেপাল ভূটান সহ প্রতিবেশি জনগণের কথা বিবেচনা করে রপ্তানী করতে পারি।


মননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যে গত দুই বছরে সুইস টিপে একের পর এক ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রজেক্ট ওপেন করছেন, সারাদেশে ৪৫০০ ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন, প্রায় ৩০,০০০ ফুলসেট (টেবিল চেয়ার ও ইউপিএস সহ) ডেস্কটপ সাপ্লাই দিয়েছেন, জেলা তথ্য বাতায়ন বানিয়েছ তার সবই অর্থহীন সব ইন্টারনেটের অভাবে শুকনা মৌশুমের পদ্মার চরের অবস্থায় পরে আছে। আপনার সমস্ত কমিটমেন্টকে এই মন্ত্রনালয় বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে দুই বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের যতটুকু অগ্রগতী সম্ভব ছিল তার ৫% অগ্রগতিও অর্জন করতে দেয়নি। আপনি এই মন্ত্রনালয় এর অংগ সংস্থা ও মন্ত্রী রাজি উদ্দিন রাজুকে ক্ষমা করলেও তরুন প্রজন্ম তাকে কোনদিন ক্ষমা করবে না। কারন এখানে যা বললাম তা তার কৃত কর্মের সামান্যই বলেছি, তিনি করেছেন আরও অনেকগুন বেশি এবং তার আর এক সঙ্গী বিটিআরসি চেয়ারম্যান জেনারেল জিয়া কে নিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন টেলিকমিউনিকেশন কে ধ্বংস করার মহাপরিকল্পনার ব্লুপ্রিন্ট করে রেখেছেন ও সত্বর বাস্তবায়নের পথে যাচ্ছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে অন্যতম/হেডকোয়ার্টার এই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হওয়ার নূন্যতম যোগ্যতাও তিনি রাখেন না। তাকে আমরা/তরুন প্রজন্ম আর একদিনও এই মন্ত্রনালয়ে দেখতে চাইনা। মনে রাখবেন আগামী নির্বাচনে এই তরুন প্রজন্মের ভোটারই হবে ৫৬ শতাংশ।


এবং সর্বনিম্ন ৫১২কিলোবিট গতিতে আনলিমিটেড ইন্টারনেটের দাম সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা করা হউক, এর পর আর সকল প্যাকেজ।


ইত্তেফাক সূত্র

এই ট্রাফিক জ্যাম আর আমাদের নেটের অবস্থায় কোন ইতর বিশেষ নেই

ছবিঃ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন রাজু

ব্যান্ডউইথ মোভমেন্ট ইন বাংলাদেশ জয়েন দ্যা গ্রুপ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৫৬
১৮৬টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×