ডিজিটাল বাংলাদেশের গল্প বললে এটিই প্রথম কাজ।এবং যে বিশেষ বৈশিষ্টের জন্য বাংলাদেশ তার জনগণকে বিশ্বের সর্বনিম্ন কলরেইটে মোবাইলফোন ব্যবহার করতে দেয়ার ক্ষমতা রাখে - মোবাইল অপারেটররা বাপে জমিদারি বেচে আমাদের কম পয়সায় কথা বলাচ্ছে এটা ভাববেন না, এখানে অবশ্যই দেশটির, এর জনসংখ্যার এবং আয়তনের কোন বিশেষ গুন আছে যা অন্য কোথাও নেই - সেই একই কারনে বাংলাদেশ তার জনগণকে বিশ্বের সর্বনম্ন দামে পানির মত ও দ্রুততম ব্যন্ডইউ ব্যবহার করতে দেয়ার ক্ষমতা রাখে, অতি অল্প সময়ে, দেশের যেকোন লোকেশনে যেকোন নাগরীককে। সরকার শুধু দেয় না।
দেখেন ! আমরা যে ব্রডব্যান্ডের কথা বলছি তা কত ? পাঁচ, দশ, বিশ এমবিপিএস অথবা দেশে এই মুহুর্তে যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয় একটি ইন্টারনেট গবেষনাগরও স্থাপন করে সেও ৫০এমবিপিএস কানেকশনের বেশি অন্তত আগামী পাঁচ বছরেও ব্যবহার বা প্রয়োজন কোনটাই অর্জন করার যোগ্যতা রাখে না। অথচ আজকাল মোবাইল নেটওয়ার্কই তাড়বিহীন ডাউন টু দ্যা ভিলেজ যেকোন লোকেশনে স্পীড মুডেও ৩০০ এমবিপিএস ডাউনলিংক দিতে পারে, সোজা আকাশ থেকে আর আকাশের পাওয়ার নিউইয়র্কের যা বাংলাদেশের তারচেয়ে অনেকগুন বেশি আর অস্ট্রেলিয়ার কথা ভাবলেতো মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা।
অস্ট্রেলিয়ার আয়তন কত ? ৭৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার আর জনগণ আড়াই কোটি। এখন যদি অস্ট্রিলিয়ার ১০০% লোকও কোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তাহলে এই পরিমান ইউজারের জন্য ঐ অপারেটরকে ৭৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার গ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক কভার করতে হয়।যেখানে বাংলাদেশে ৫০% ইউজার পেলেও মাত্র দেড় লক্ষ বর্গকিলোমিটার গ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক করে পাওয়া যায় সাড়ে সাত কোটি ইউজার। এইতো গেল দেশের অভ্যন্তরের নেটওয়ার্ক বা নেশনাল ব্রডব্যন্ড অবকাঠামোর সৌভাগ্য। এবার দেখুন ইন্টারনেশনাল ব্যন্ডউইথের অবস্থা। বাংলাদেশের সীমানায় যতদিন সঙ্গোপসাগর আছে ততদিন বাংলাদেশ শুধু নিজের জনগণকে না তার আশেপাশের পুরো এলাকাকে পানির দামে ব্যন্ডউইথ দিয়ে ভাসিয়ে দিতে পারবে। যেমন বর্তমানে বাংলাদেশের ইন্টারনেশনাল ব্যান্ডউইথ ৪৫জিবিপিএস -২০০৮ সাল থেকে - যদিও জনগণকে ব্যবহার করতে দেয়া হচ্ছে মাত্র ১৫জিবিপিএস, ২০০৮ থেকে ৩০জিবিপিএস অপচয়। আর এই ৪৫জিবিপিএস ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে আপগ্রেড করে অনেক কম মূল্যে ১৫০জিবিপিএস ও ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ৪র্থ আপগ্রেড করে ৩০০জিবিপিএস এর উপর চলে যাওয়ার কথা থাকলে ঐ আপগ্রেডেশনগুলো বাতিল করা হয়েছে গত দুই বছরে। তাহলে দেখুন দেশের ব্যন্ডউইথের সামর্থ!
দেখুন এই ভিডিওটিতে
সজিব ওয়াজেদ নিজেই বলছে বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড হবেঃ "এটলিস্ট এমবিপিএস গতিতে ডাউন টু দ্যা ভিলেইজ ওয়ার্লেসলি" মানে মোবাইল। দেশে যেকোন লোকেশনে জনগণকে নামমাত্র মূল্যে ব্রডব্যান্ড দেওয়ার পয়েন্ট থেকেই প্রকৃতপক্ষে শুরু হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্র। ঐ ভিডিওটিতে বলা হচ্ছে এ কাজটি বাংলাদেশে খুবই সহজ।
আসলেও তাই, সরকার ক্ষমতায় আসার সর্বোচ্চ ছয় মাসের মাথায় দেশের যেকোন লোকেশনে যেকোন নাগরীককে নামমাত্র মূল্যে ব্রডব্যন্ড দেয়া খুবই সম্ভব ছিল।একাজে বাংলাদেশকে নতুন কিছু করতে হতো না, শুধু আজ থেকে ১১ বছর আগে আবিষ্কৃত থ্রীজি মোবাইলনেটওয়ার্কের অনুমোদন দিতে হতো যা এই মুহুর্তে বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রতিটি দেশ দিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশের মত একটি দেশ যেখানে নেশনাল অপটিক ক্যবল বেকবোন বলে আজও কিছু নেই এবং যা হঠাৎ করে হওয়াও সম্ভব না। যেখানে সারাদেশে সর্বোচ্চ ৫% গ্রাউন্ডে তাড়বিহীন ও তাড়যুক্ত ব্রডব্যান্ডের কভারেজ নেই সেই দেশের একমাত্র, সহজতম ও অপরিহার্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড থ্রিজি গত প্রায় তিন বছরেও দেওয়া সম্ভব না হওয়ার পেছনে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে বিচার করা উচিত। তথ্যপ্রযুক্তিতে সবচেয়ে পশ্চাদপদ এই দেশটিকে এরা আরও তিন বছর পিছিয়ে দিয়েছে যেখানে গত তিন বছরে উন্নয়নশিল দেশগুলো আইটিতে ব্যপক এগিয়ে গেছে সেখানে আমরা আজও পেছনেই হাটছি।