দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা মহানগরীতে এবার বসছে চলন্ত সিঁড়ির (এস্কেলেটর) ফুট ওভারব্রিজ। আর হাঁটা নয়, কষ্ট করে জায়গামতো উঠে দাঁড়ালেই হলো। চলন্ত সিঁড়িই পথচারীকে নিয়ে যাবে রাস্তার ওপারে। নগরীর ব্যস্ততম রাজপথের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অব্যবহৃত অবস্থায় আর পড়ে থাকবে না ফুট ওভারব্রিজগুলো। বনানী থেকে এই উদ্যোগের সূচনা হচ্ছে।
বনানীর ১১ নম্বর সড়ক ও এয়ারপোর্ট রোডের ইন্টারসেকশনে স্থাপিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম চলন্ত সিঁড়ির ফুট ওভারব্রিজটি। এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী মে মাসের মধ্যে এটি উদ্বোধনের কথা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মামুন রেজা খান কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর ফুট ওভারব্রিজগুলো অনেক উঁচু। বৃদ্ধ, রোগী, নারী বা শিশুদের ব্যবহার করতে অনেক কষ্ট হয়। পথচলতি সক্ষম মানুষজনও পারতপক্ষে ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি ভাঙতে চায় না। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করলেও অনেক স্থানেই সেগুলো পড়ে থাকে অব্যবহৃত। এর পরিবর্তে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হয়। এসব দিক বিবেচনায় নিয়েই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. শিহাবউল্লাহ জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটা করা হচ্ছে। ভালো ফল পেলে পরবর্তী সময়ে সব ফুট ওভারব্রিজেই চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করা হবে। এ জন্য খুব বেশি ব্যয়ের ভাবনাও নেই। সাধারণ ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হয় দুই কোটি টাকা। আর ৫০ লাখ টাকা বেশি হলেই চলন্ত সিঁড়ির ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা যায়। একই সঙ্গে বিদ্যমান ফুট ওভারব্রিজগুলোতেও এস্কেলেটর সংযোজনের ব্যবস্থা করা হবে।
প্রকল্পপত্রে দেখা গেছে, ২০ মিটার দীর্ঘ ওভারব্রিজের প্রত্যেক পাশেই মানুষের ওঠার জন্য থাকবে ৮০০ মিলিমিটার চওড়া একটি করে এস্কেলেটর। নামার জন্য থাকবে ১২০০ মিলিমিটার চওড়া সাধারণ সিঁড়ি। ওঠার চলন্ত সিঁড়িটি ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সচল থাকবে। এই সময়সীমায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হলে জেনারেটরের মাধ্যমে সিঁড়িটি সচল রাখা হবে। এ জন্য জেনারেটরও স্থাপন করা হবে।
পথচারীদের সুবিধার্থে পুরো ফুট ওভারব্রিজের উপরে থাকবে মজবুত ছাউনি। সড়ক থেকে ওভারব্রিজটির উচ্চতা হবে বিদ্যমান ফুট ওভারব্রিজের চেয়ে এক মিটার কম- সাড়ে পাঁচ মিটার। জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি মালয়েশিয়া ও চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হবে এই ফুট ওভারব্রিজে। উদ্বোধনের পর এক বছর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানই এটি রক্ষণাবেক্ষণ করবে। পরে দায়িত্ব নেবে সিটি করপোরেশন।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প কর্মকর্তা সাঈদ মোহাম্মদ আবদুহু কালের কণ্ঠকে বলেন, 'থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীনসহ উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের চলন্ত সিঁড়ির ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে। আমরা ওই সব ফুট ওভারব্রিজের মান বজায় রেখেই এটি তৈরি করছি।'
রোববার সরেজমিন দেখা যায়, এয়ারপোর্ট রোডের বনানী চেয়ারম্যানবাড়ি থেকে বনানী রেলক্রসিংয়ের দিকে কিছুদূর এগিয়ে ডানে চলে গেলে বনানীর ১১ নম্বর সড়ক। ওই পয়েন্টেই তৈরি হচ্ছে চলন্ত সিঁড়ির ফুট ওভারব্রিজটি। সেবা সংস্থার সরবরাহ লাইনগুলো এরই মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই পাশে তৈরি করা হয়েছে ফুটপাতের সঙ্গে সংযুক্ত করার ভিত্তি। নির্মাণকর্মীরা জানান, ফ্যাব্রিকেশনের কাজ চলছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





