somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা - প্রফেসরদের ইমেইল করবেন কীভাবে?

০২ রা এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ফান্ডিং পাওয়া নিয়ে আগের পর্বে লিখেছিলাম। ফেলোশীপ বা টিচিং অ্যাসিস্টান্টশীপ ছাড়া ফান্ডের অন্য উৎস হলো প্রফেসরদের কাছ থেকে রিসার্চ অ্যাসিস্টান্টশীপ পাওয়া। প্রফেসরেরা সরকারী বেসরকারী নানা উৎস হতে গবেষণার জন্য অনুদান পেয়ে থাকেন, সেই প্রকল্পে কাজ করার জন্য ছাত্র দরকার তাদেরও। কাজেই অনেক সময় প্রফেসরদের হাত করা গেলে ফান্ড পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দেশে থেকে সেটা কীভাবে করবেন? এখানেই আসছে সুলিখিত ইমেইলের ভূমিকা।

কোনো প্রফেসরকে ইমেইল করতে হলে শুরুতেই তার ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে প্রকাশনার তালিকা, সব ঘেঁটে দেখুন। প্রফেসরের গবেষণা সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিন। তারপর ভেবে দেখুন, আপনার পছন্দের কোন বিষয়ের সাথে সেটা মিলছে। এসব পড়াশোনা করে তারপর ঠিক করুন কী বিষয়ে আলোচনা করতে লিখবেন।

প্রথমেই আসা যাক, ইমেইলের শিরোনাম ও ধাঁচ নিয়ে। অধিকাংশ ভর্তিচ্ছু ছাত্ররা একটা বড় ভুল করে ... ইমেইল করেই সরাসরি বলে, আপনার কাছ থেকে ফান্ড চাই, অথবা আপনার গ্রুপে ঢুকতে চাই। এরকম কয়েকশো ইমেইল প্রতিবছর একেকজন প্রফেসর পান। কাজেই টাকা দিন বললেই কাজ হবে, সেই আশা করাটা বাতুলতা মাত্র। সেজন্য সরাসরি শুরুতেই ফান্ডের কথা না বলে বরং রিসার্চ নিয়ে বলা ভালো। প্রফেসরের গবেষণার এলাকা বা তাঁর কোনো গবেষণাপত্র নিয়ে প্রশ্ন করে শুরু করতে পারেন। কয়েকবার ইমেইল চালাচালি করে তারপর তার গ্রুপে ছাত্র নেয়া হবে কি না, সেটা তখন বলতে পারেন। আপনার মূল লক্ষ্য হবে যাকে ইমেইল পাঠাচ্ছেন, তার আস্থা অর্জন করা আর আপনাকে ছাত্র হিসাবে নিলে ভালো হবে, এই ধারণা দেয়া।

ইমেইলে আরেকটা বড় ভুল ছাত্ররা করে, তা হলো ইমেইল পাঠাবার সময়ে ভাষা ও বানানের দিকে খেয়াল না করা। কেবল বাংলাদেশ না, বিদেশের নানা জায়গার ছাত্ররাও এই কাজ করে। আমি কোনো ছাত্রের ফান্ড না দিলেও কিছু ইমেইল পেয়েছি চীনা ছাত্রদের থেকে। এমন এক ছাত্র ইমেইল করলো, আমার সাথে কাজ করতে চায়, কিন্তু মেইলের ভিতরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম লেখা, মানে কপিপেস্ট করে একই মেইল শখানেক জায়গায় পাঠিয়েছে। এভাবে ইমেইল করলে তা ধরে ফেলাটা খুব সহজ।

সবশেষে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা ব্যাপার বলি, অফিশিয়াল কাজে ব্যবহার করার জন্য একটা আলাদা ইমেইল খুলুন। অনেকেই "কুল" হওয়ার জন্য বিদঘুটে সব ইমেইল খুলে, যেমন কুলগাই২১২@জিমেইল, কিংবা সুইটগার্ল৫৪৪ ইত্যাদি। এধরণের ইমেইল থেকে মেইল পাঠালে সেই ছাত্র/ছাত্রীকে যে কারো পাত্তা দেয়ার সম্ভাবনা কম। কাজেই আলাদা ইমেইল খুলুন নিজের নামে, সবচেয়ে ভালো হয় নিজের নামের প্রথমাংশ ডট শেষাংশ, এভাবে খুলতে পারলে। যেমন, আপনার নাম আবদুল করিম হলে আবদুল.করিম@জিমেইল, তা না পেলেও আবদুল.করিম৫@জিমেইল, এভাবে খুলতে পারেন। মেইল পাঠাবার আগে বানান খেয়াল করে নিন, ব্যকরণ ঠিক আছে নাকি দেখুন।

আপডেট

আরেকটা কথা যোগ করছি। প্রফেসরকে ঠিকভাবে সম্বোধন করুন ইমেইলের শুরুতে। ধরা যাক, প্রফেসরটির নাম হলো জন স্মিথ। আপনার সম্বোধন হওয়া উচিৎ প্রফেসর স্মিথ, বা ডক্টর স্মিথ। ভুলেও ডিয়ার জন বলে সম্বোধন করবেন না, কারণ ব্যক্তিগত পরিচিত ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে ফার্স্ট নেইম ধরে সম্বোধন করাটা আমেরিকাতে অশিষ্ট আচরণ ধরা হয়। আবার ডক্টর জন বা প্রফেসর জন বলেও সম্বোধন করার রীতি নেই। আর কেবল ডিয়ার স্মিথ বলে সম্বোধন করাটাও অনেকটা আপনার জুনিয়র কাউকে ইমেইল করছেন, সেরকম দেখায়। কাজেই সম্বোধন ঠিকভাবে করে তবেই ইমেইল শুরু করুন। (ব্যক্তিগতভাবে এই রকম ভুল সম্বোধনের অনেক ইমেইল পেয়েছি, এবং অনেক সময় সম্বোধন পড়েই ডিলিট ক্লিক করেছি, এমন ঘটনাও ঘটেছে)।

(আগের পর্ব )

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১২ রাত ১:৫৫
৪৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×