এম এ রহিম সিদ্দীকি
নদী তখন বন্ধ হয় যখন তার স্রোত হারায়,কোন একটা সমাজ নষ্ট তখনই হয় যখন তার নীতি করনীয় ভুলে যায়,একটি জাতি তখন ধ্বংশ হয় যখন তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে।একটি জাতি যার ভাষা , সংস্কতি, সবভোমত্বের ইতিহাস, রক্তের ইতিহাস; সেই জাতি আজ তার নিজসত্ব হারিয়ে ফেলেছে।
ভোর হলে একটি শিশু তার বাবার কাছে একুশের ইতিহাস না শুনে ১৪ ফেব্রুয়ারী পালন কিভাবে করবে তার জন্য জিজ্ঞাসা করে, তার বাবাও ভাল জানে না কারন সে ও ত ছোট বেলায় এটা শুনেও নাই। শিশুটি ভাল উত্তর না পেয়ে বন্ধু যারা আছে তাদের সাথে তথা যারা পশ্চিমা সংস্কতির ঘোলায় যাদের ব্রেন ওয়াস তাদের সন্তানদের আদশ ধরে ফুল কিনে। অত:পর তার বন্ধু প্রেমিকাকে ফুল গিফট দেয়। সে ভাবে আমার ভালবাসার প্রেমিকা কই কাকে দিব ফুলটা ! সে আর একটা অপসংস্কৃতির আশ্রয় খোজে প্রেম।সংকল্প করে আগামি বছর আমার একটা প্রেমিকা থাকা চাই।এর পরের বছর প্রেমিকাকে নিয়ে কোথায় যাওয়া যায়? বারে নিয়ে যেতে হবে, ঐ বন্ধুরা ত প্রেমকাকে বারে নিয়ে যায়, মদ খায়, গাজা খায়.. । এবার বারের খোজ ... এভাবে একটি যুব সমাজ বাঙ্গালী সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে কোথায় যাচ্ছে তা কি কোন আবিভাবক ভেবে দেখেছেন? যারা সুধি সমাজ তাদের ত ভাবা উচিত।
আসুন জেনে নিই ১৪ ফেব্রুয়ারীর ইতিহাস
২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন'স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন।
খৃষ্টানজগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। কিন্তু আমরা কেন তাদের সেই দিবস কে একটি সমাজের ঘুন ধরা পালনীয় দিবসে পরিণত করব?
হয়ত অনেকে বলবেন যে ভালবাসা ত শুধু যুবকের প্রেম নয় ; সেটা ঠিক তবে আপনি তাকিয়ে দেখেন তরুনরা এর ফলে বিপথে চলে যাচ্ছে? আমাদের সংস্কৃতির লোপ পাচ্ছে কিনা? আমাদের সমাজ এর মা্ধ্যমে কোন পথে যাচ্ছে?
দেশে আজ গুরুজনের অসস্মান বেড়েছে। সমাজে বাবা মায়ের আধিকার হরণ হচ্ছে সন্তানদের দ্বারা।বৃদ্ধারা সেবা পাচ্ছে না্। বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলতে হচ্ছে যা করও কাম্য নয়। বংগালিরা ছোট বেলায় বাবা মায়ের স্নেহ লালিত হবে এবং বৃদ্ধ হলে সন্তানের সেবা পাবে এটাই কামনা করে। লেক, পাকে অশ্লিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব কিছুর মুল কারণ আমাদের সাংস্কৃতির অগ্রাসান।
অসুন যাবতীয় অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে আমরা সেচ্চার হয় । আমাদের অনেক কিছু আছে।রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি উঠেছে। আমরা সেটাকে পালন করি। আমাদের ভাষা আছে অন্যের সংস্কৃতির অনুগামি না হয়ে আমরা একুশের মাসে বংলাকে শ্রদ্ধা জানাই। তরুনদের মেধাকে সাহিত্য অনুগামি করে বিশ্ব সাহিত্যের আমাদের সম্ভার গড়ে তুলি। নতুন করে শেক্সপিয়ার,নজরুল তৈরি করি। মেধা টাকে বিসজনে দিতে না দিই।
লেখক : কলামিস্ট
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৯