somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

পিঁপড়া

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পিঁপড়ারা খুব বেশি মারামারি না করলেও, একবার শুরু করলে শত্রুকে খুন না করা পর্যন্ত কিন্তু থামেনা!ভুলক্রমেও যদি পিঁপড়ার বাসায় পা দিয়েছ বা কোনোভাবে একে বিরক্ত করেছো, তো মরেছো। একটা আগুন পিঁপড়া যদি কাউকে কামড় দেয় তো তার পেছন পেছন লক্ষ লক্ষ আগুন পিঁপড়া কামড়াতে এগিয়ে আসে।দক্ষিণ আমেরিকায় কিছু উপজাতি আছে যারা নিজেদের শক্তি প্রমাণ করার জন্য ইচ্ছে করে এই পিঁপড়ার কামড় খেয়ে থাকে। যে যত বেশীক্ষণ ধরে চিৎকার না করে এই পিঁপড়ার কামড় সহ্য করতে পারবে, তাকেই সবচেয়ে শক্তিশালী বলে ঘোষণা করা হয়। এই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর অবশ্য কয়েকদিন তাদের বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাঁপতে হয়।

পিঁপড়া/পিপীলিকা ফর্মিসিডা (Formicidae) গোত্রের অন্তর্গত সামাজিক কীট বা পোকা।বর্তমানে প্রায় ১২০০ প্রজাতির পিঁপড়ার সন্ধান পাওয়া গেছে এবং ধারণা করা হয় পিঁপড়ার প্রজাতি সংখ্যা ১৪০০ পর্যন্ত হতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পিঁপড়ার দেখা মেলে, একমাত্র এন্টার্কটিকা ও এ ধরণের কিছু অবাসযোগ্য এলাকা ছাড়া।পিঁপড়ার কিছু প্রজাতি জৈব কীটনাশক হিশেবেও গুরত্বপূর্ণ। তবে পিঁপড়া মানুষের জন্যে মাঝে মাঝে ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়ায় বৈকি। পিঁপড়া ফসলের ক্ষতি করে এবং দালান-কোঠার ধ্বংস সাধন করে।পিঁপড়াদের জীবন চারটি স্তরে বিভক্ত। ডিম,লার্ভা,পুপা ও পুর্নাঙ্গ পিঁপড়া। ডিমগুলো থেকে উৎপন্ন হয় লার্ভা। লার্ভা পর্যায়ে তাদের কোন চোখ,কিংবা পা কোনটাই থাকেনা। কিন্তু তারা খাবার খেতে পারে। বড় পিঁপড়া এই খাবার খাওয়ায় এবং দেখাশোনা করে। লার্ভাগুলি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এবং অনেকটা মন্ডের আকার ধারন করে,উপরে একটি নতুন চামড়া তৈরি হয়।তখন দেখতে অনেকটা রেশমের গুটির মতো দেখায়।পিঁপড়া ডিম থেকে পুর্ণ বয়স্ক হতে তিনমাসের মতো সময় লাগে। পিঁপড়ার এই পরিবর্তন করে বিজ্ঞানের ভাষায় পিঁপড়ার রুপান্তর বলে।

এক পিঁপড়া একটি গমের দানা মুখে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে একটি উঁচু পাথরের কাছে আসতেই তার নাকে লাগলো মধুর ঘ্রাণ। চোখ তুলে তাকিয়ে বিরাট মৌচাক দেখে তার জিভে পানি চলে এলো। দেরি না করে তখনই সে মুখের দানা ফেলে দিয়ে মধু খাওয়ার জন্য পাথর বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা শুরু করল। কিন্তু যত চেষ্টাই করুক না কেন, কিছুতেই উঠতে পারছিল না। কিছুদূর উঠার পরই পরে যাচ্ছিল মাটিতে। কিন্তু মধুর লোভ তাকে পাগল করে তুললো। শেষ পর্যন্ত পিঁপড়া চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো :
পিঁপড়া : তোমরা কে, কোথায় আছো...দয়া করে আমাকে মৌচাকে উঠিয়ে দাও। আমি মধু খাবো, আমি মধু খাবো।
এ সময় পাশেই উড়ে যাচ্ছিল একটি ভোমরা। পিঁপড়ার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে সে বললো :
ভোমরা : এই পিঁপড়া! হয়েছে কী? এতো মধু মধু করছো কেন? তুমি কি জানো না, মৌচাকে গেলে বিপদ হতে পারে?
পিঁপড়া : আমি বিপদ-আপদ বুঝি না। আমি মধু খেতে চাই। বিপদ-আপদ আমিই ঠেকাবো। তুমি আমাকে সাহায্য কর।
ভোমরা : আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারবো না। কারণ মৌমাছির বিষ আছে ওখানে। তাছাড়া মধু খুবই আঠালো। ওতে তোমার হাত-পা লেগে তখন আর কিছুতেই বাঁচতে পারবে না।
পিঁপড়া : মৌমাছির বিষের থোড়াই কেয়ার করি আমি। যেভাবেই হোক আমি মধু খেতে চাই।

লাল পিঁপড়া বা বিষ পিঁপড়া (Fire Ant) নামে পরিচিত এক পিঁপড়াদের একটি প্রজাতিতে রয়েছে চরম একতা । এই ক্ষুদ্র প্রানীদের বুদ্ধিমত্তা দেখে অনেকেই অবাক।একটি পিঁপড়া সহজেই পানিতে ডুবে যেতে পারে। তবে তারা দলবদ্ধ হয়ে পানিতে অনায়াসে ভেসে থাকতে পারে।পিঁপড়া হচ্ছে এমন একটি প্রাণী, যে সব ধরনের প্রকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করেও লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে বেঁচে আছে।যে কোনো প্রজাতিতেই সাধারণত তিন ধরনের পিঁপড়া থাকে- রাণী পিঁপড়া, সৈনিক পিঁপড়া ও শ্রমিক পিঁপড়া।বাংলাদেশে পাওয়া পিঁপড়ার প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ২৫০। আমাদের দেশে পাওয়া প্রজাতির পিঁপড়ার মধ্যে অধিক পরিচিত জাতগুলোকে সাধারণভাবে লাল পিঁপড়া, কালো পিঁপড়া, ডেয়ো পিঁপড়া, বিষ পিঁপড়া, ক্ষুদে পিঁপড়া ইত্যাদি নামে চিহ্নিত করা হয়।

রাণী পিঁপড়ার একমাত্র কাজ হলো ডিম পাড়া। সারাজীবন ধরে রাণী পিঁপড়া শুধু খায়, ঘুমায় আর ডিম পাড়ে। তার সেবার জন্য রয়েছে শ্রমিক পিঁপড়া। এদের কাজ হলো ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করে আনা। এক একটা পিঁপড়া তার নিজের ওজনের চেয়ে ২০ গুণ বেশী ওজনের জিনিস বহন করতে পারে।পিঁপড়ারা কিন্তু কানে শোনে না। ফলে মাটির কম্পন অনুভব করেই তাদের কানে শোনার কাজ চালাতে হয়। এদের আবার ফুসফুসও নেই। তার বদলে রয়েছে সারা গায়ে অসংখ্য ছোট ছোট গর্ত।পিঁপড়া যেভাবে তাদের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করে, তা মানুষের তৈরি ট্রাফিক-ব্যবস্থার চেয়ে বেশি কার্যকর। সাধারণত মাটির নিচে বাসা বাঁধলেও পাথর বা শিলার তলায়, গাছের ফোকরে বা গুঁড়ির নিচেও বাসা তৈরি করে পিঁপড়া। মিষ্টিজাতীয় খাবার পিঁপড়ার পছন্দের তালিকায় থাকলেও আসলে পিঁপড়া সর্বভুক প্রাণী। ফুল ও ফলের রস, পচনশীল মৃত প্রাণী, উদ্ভিদভোজী কীটপতঙ্গের দেহ নিঃসৃত মিষ্টি রস ইত্যাদি পিঁপড়ার খাবারের তালিকায় রয়েছে।

একটা কৌতুক- হাতি আর পিপড়া প্রেম করে ধরা পড়েছে।
পিপড়ার মা : তোর এত বড় সাহস তুই আমার মেয়ে হয়ে হাতির সাথে প্রেম করোস? আজ থেকে হাতির সাথে তোর যোগাযোগ বন্ধ ।
পিঁপড়া: (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে) তা হয়না মা আমার পেটে হাতির বাচ্চা. . . তারপর--
হাতি আর পিপড়ার ভিতর অবশেষে বিয়ে হল । কিন্তু বিয়ের পড়ে সব সময় তাদের ভিতর ঝগড়া ছিল । একদিন হাতি মারা গেলো । এতে করে পিপড়ার খুশি হবার কথা । কিন্তু দেখা গেলো পিঁপড়া কাদছে । পিপড়াকে জিজ্ঞেস করা হল সে কাদছে কেন ? জবাবে পিঁপড়া বলল বিয়ের পর অর্ধেক জীবন গেছে ঝগড়া করতে আর বাকি জীবন যাবে হাতির কবর খুড়তে...

আর একটা কৌতুক- পিপড়ার ভিসা পাসপোর্ট সবই আছে, সে প্রতিদিন ইন্ডিয়া যায়। এটা দেখে হাতীর শখ হইল সেও ইন্ডিয়া যাবে, যদিও তার ভিসা পাসপোর্ট নাই। সে পিপড়াকে ধরল, দোস্ত- ইন্ডিয়া যাইতে মন চায়। পিপড়া বলল কোন সমস্যা নাই। চল ইন্ডিয়া যাই। হাতী আর পিপড়া বর্ডার ক্রস করতেছে। এমনসময়, বিএসএফ তাদের থামাইল । হাতীর ভিসা পাসপোর্ট দেখতে চাইল। হাতী বলল দাদা, আমার তো ওসব কিছু নাই। পিপড়ায় আমারে নিয়া যাইতাছে। ওর সাথে কথা বলেন। পিপড়া আইসা হাতীটাকে দেখিয়ে বলল, এইবার ইন্ডিয়া গিয়া লম্বা সময় থাকতে হইব, তাই সাথে করে খাবার নিয়ে যাচ্ছি। খাবারের আবার ভিসা পাসপোর্ট কি?
১৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×