somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

নবাব সিরাজউদ্দৌলা

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মীরজাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ ৩ জুলাই নবাবকে হত্যা করে। এরপর নবাবের মৃত দেহ হাতির পিঠে উঠিয়ে সারা মুর্শিদাবাদ শহর ঘুরিয়ে অমর্যাদাকর অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। রাতের আঁধারে নবাবদের বিশ্বাসী খাদেম হোসেন খাঁ খোশবাগে তাঁকে সমাহিত করেন।২৪ বছর বয়সে স্বদেশকে ভালবেসে, স্বদেশের মানুষকে ভালবেসে, স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই প্রাণবিসর্জন দিয়েছিলেন। সিরাজউদ্দৌলা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয় ও মৃত্যুর পরই ভারতবর্ষে ইংরেজ-শাসনের সূচনা হয়।

রবার্ট ক্লাইভ বা লর্ড ক্লাইভ। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি। ভারত উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকা পালন করেন এই ব্রিটিশ সেনাপতি। ১৭২৫ খ্রীষ্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বরে তার জন্ম।পলাশীর যুদ্ধে তার নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদল বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যদল কে পরাজিত করে। তার উপাধি ছিল পলাশীর প্রথম ব্যারন।

১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের পরাজয় এবং ২রা জুলাই ঘাতকের হাতে তার প্রাণ হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়ে যায় বহুকালের জন্য।নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব। তার জন্ম ১৭৩৩ সালে। নবাবের পুরো নাম মীর্জা মুহম্মদ সিরাজদ্দৌলা।নবাব আলিবর্দী খাঁ’র মৃত্যুর পর, তার ইচ্ছা অনুযায়ী ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার মসনদে আরোহন করেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।সিরাজের রাজত্বকালের প্রথম থেকেই ইংরেজরা নানাভাবে তার কর্তৃত্ব উপেক্ষা করতে থাকে। তারা সিরাজের অনুমতি ছাড়াই দুর্গ নির্মাণ করে। সিরাজ তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং দুর্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

গোলান্দাজ বাহিনীর প্রধান নিহত হওয়ার পর সিরাজদ্দৌলা মীরজাফর ও রায় দুর্লভকে তাঁদের অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে তীব্র বেগে অগ্রসর হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু উভয় সেনাপতি তাঁর নির্দেশ অমান্য করলেন।১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, উর্মিচাঁদ যেভাবে ও যে উদ্দ্যেশ্যে হাত মিলিয়েছিল ইংরেজদের সাথে, ঠিক একইভাবে ও একই উদ্দ্যেশ্যে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে কুচক্রী গোলাম আযম, আব্বাস আলী খান, ফকা চৌধুরী ও মোনায়েম খানরা হাত মিলিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাথে।

ঐতিহাসিক মেলেসন পলাশীর প্রান্তরে সংঘর্ষকে ‘যুদ্ধ’ বলতে নারাজ। তার মতে,“নবাবের পক্ষে ছিল ৫০ হাজার সৈন্য আর ইংরেজদের পক্ষে মাত্র ৩ হাজার সৈন্য। কিন্তু প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মীর জাফর, রায় দুর্লভ ও খাদেম হোসেনের অধীনে নবাব বাহিনীর একটি বিরাট অংশ পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কার্যত কোনো অংশগ্রহণ করেনি। এই কুচক্রীদের চক্রান্তে যুদ্ধের প্রহসন হয়েছিল।” বয়সে তরুন হলেও নবাবসিরাজউদ্দৌলার চিন্তা ছিল নিঁখুত ও নির্ভূল। সিরাজউদ্দৌলা বুঝতে পেরেছিলেন, বিদেশী ইংরেজরাই একদিন এদেশের স্বাধীনতা ও সম্পদ কেড়ে নিতে পারে। তিনি যাদেরকে বিশ্বাস করেছিলেন, তারাই ইংরেজদের সাথে চক্রান্তে লিপ্ত হয়ে তার বিপক্ষে চলে যায়। পরাজিত হয়ে নবাব শেষ মুহূর্তে ঘাতকের কাছে প্রাণভিক্ষা নয়; ওজু করে দু রাকাত সালাত আদায়ের সুযোগ দানের অনুরোধ করেছিলেন।

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘নারীগণ’ নাটকে লেখক দেখিয়েছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার পর নবাব মহলের অন্তপুরে বন্দি নারীদের নানা উপলব্ধি। নবাব সিরাজের বন্দি নানী, মা, পত্নীর জবানে উঠে আসে তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা। বন্দি নারীদের আত্মহত্যার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। অঙ্গুরির বিষ কেড়ে নেয়া হয়, কেড়ে নেয় হয় খঞ্জর। প্রহরীর রূঢ় হাত তাদের শরীর স্পর্শ করে। তাদের বন্দি করার মধ্য দিয়েই ঘটনার শেষ হয় না। ক্ষমতা পাকাপোক্ত এবং বিদ্রোহের পথ রুদ্ধ করতে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এসব নারীকে হত্যাও করা হয়। হত্যা করা হয় নারীদের আত্মপ্রকাশের সুযোগ। হত্যা করা হয় নারীর মর্যাদা আর অধিকার, হত্যা করা হয় নারীর স্বাধীনতা।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×