somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ পারমাণবিক বোম।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সময় ছিল হিমু সেজে দিন-রাত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম।হুমায়ূন স্যার আর দুইটা বছর বেঁচে থাকলেই সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পেতেন। স্যার আপনার জন্য আমার কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আপনার সমতুল্য আর কেউ নেই। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে- হুমায়ূন স্যার হুমায়ূন স্যার....' আজ আপনার জন্মদিন, যেখানেই থাকেন ভালো থাকবেন। শুভ জন্মদিন!! আপনার একজন ভক্ত, যার চোখে আপনি মহাপুরুষ।

"হূমায়ুন আহমেদ" যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন। শুভ জন্মদিন।
হূমায়ুন আহমেদের জন্মদিন। প্রতিটা টিভি চ্যানেল, প্রতিটা সংবাদ পত্র খুব যত্নসহকারে এই জিনিসটা মনে করিয়ে দিতে থাকবে। এতে ভাল লাগবে কিন্তু তারচেয়ে বেশি হবে বুকের ভিতর একধরনের হাহাকার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় লেখক হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়।হুমায়ূন আহমেদে মুগ্ধ হয়ে ছিলাম সারা জীবন। এখনও হুমায়ূনের ভক্ত আমি। শব্দের এই যাদুকরের কাছে অনেক অনেক ঋণ। এই যাদুকর যা লেখেন, তাতেই মুগ্ধ হয়ে যাই। এতো মায়া নিয়ে কেউ কখনো লিখছে বলে আমার জানা নেই।
অসামান্য জাদুকর। এমন সম্মোহনী শক্তি নিয়ে আর কেউ আসেননি। হুমায়ূন আহমেদের পক্ষেই সম্ভব হাসির একটা বইয়ের মধ্যে এমন কয়েকটা তথ্য দিয়ে দেয়া যেইটা জ্ঞানের মোটা মোটা বইয়ের মধ্যে লুকায়া থাকে। এই ক্ষমতাটা দুর্লভ। একবার ভাবুন, হুমায়ুন আহমেদ বলে কোনো লেখকের জন্ম হয়নি। তাহলে কেমন হত? বাংলা সাহিত্যে আর আমাদের চেতনায় তিনি সবসময় বেঁচে থাকবেন.... ।

‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের সেই বাকের ভাই মাস্তান হলেও তার মনে ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ, মনুষ্যত্ব। সে কঠোর ছিল তবে তা অন্যায়ের প্রতি।জীবনের চলার পথে অসংখ্য অন্যায়ের প্রতি মাথা নত করে চলে মানুষ। বাকের ভাই তার ক্ষমতা দিয়ে যতটা না অন্যায় করতেন, অসহাস মানুষের সহায় হতেন তার চেয়ে বেশি। সেই বাকের ভাইয়ের স্রষ্টা ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।

মন ছুঁয়ে যাওয়া তার আরেকটি নাটক ‘অয়োময়’। গ্রামের জমিদারের সেই কর্মচারী কানকাটা রমজান। নাটকের মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদ যেমন জমিদার ও তার কর্মচারীদের অন্যায় কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছিলেন তেমনি তিনি অন্যায়ের বিপরীতে সত্যের জয়কেও তুলে ধরেছেন। কানকাটা রমজানের কথা ভাবলেই মনে ভেসে ওঠে ফেরদৌসী মজুমদারের কপালে সেই পয়সা গরম করে ছ্যাঁকা দেয়ার ঘটনা। নাটকের প্রতিটা চরিত্র মানুষের মনে ছাপ ফেলার কারণ এই ছোট ছোট ঘটনা হুমায়ূন আহমেদ এমনভাবে তুলে ধরতেন যে বাস্তব জীবন থেকে তা কখনো ভিন্ন মনে হতো না। তার ‘বহুব্রীহি’ নাটকটিও দর্শকের মন কেড়েছিল।

লীলাবতী তাকিয়ে আছে। আতাহার লক্ষ্য করছে, মেয়েটির চোখে পানি জমতে শুরু করেছে। চোখ পানিতে ভরে উঠতে শুরু করছে। কি আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্য! সে অনেকবার ভেবেছে, এই পৃথিবীর অপূর্ব কিছু দৃশ্যের সে একটা তালিকা করবে। যেমন-

১। গরমের দুপুরে মেঝেতে শুধুমাত্র একটা বালিশ পেতে তরুণী শুয়ে ঘুমুচ্ছে। তার মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে। ফ্যানের হাওয়ায় মাথার কিছু চুল উড়ছে।

২। বাচ্চা একটা ছেলের হাত থেকে গ্যাস বেলুন ছুটে গেছে। বেলুনটা আকাশে উঠে যাচ্ছে। ছেলেটা হতভম্ব হয়ে বেলুনটার দিকে তাকিয়ে আছে। কান্না তার বুকের কাছে জমা হয়ে উঠেছে, এখনো গলার কাছে আসে নি।

৩। প্রেমিকপ্রেমিকা রিকশা করে যাচ্ছে। রিকশার হুড খোলা। ছেলেটা ক্রমাগত বকবক করছে, হাতপা নাড়ছে, মেয়েটা বসে আছে মাথা নিচু করে। তার ঠোঁটের কোণায় চাপা হাসি।

৪। বাচ্চা মেয়ে মায়ের হাই হিল পরে হাঁটার চেষ্টা করছে। এঁকেবেঁকে যাচ্ছে।

৫। একটা তরুণীর চোখ ধীরে ধীরে পানিতে ভরে উঠছে। শেষ পর্যন্ত সে অবশ্য কাঁদবে না। চোখের জল চোখেই শুকিয়ে ফেলবে।

৬। স্ত্রী রাতে স্বামীর জন্য এক কাপ চা নিয়ে এসেছেন। স্বামী বিস্মিত হয়ে বললেন, চা চাইনি তো! তারপর অতি আনন্দের সঙ্গে চায়ের কাপের জন্য হাত বাড়ালেন...
( গ্রন্থঃ কবি )

যে ছেলের এক ঠ্যাং নেই সেই ছেলের মা নিজের ছেলে সম্পর্কে ভাবে - “লাঠিতে ভর দিয়ে আমার ছেলের মত সুন্দর করে কেউ হাঁটতে পারে না ”
(হূমায়ূন আহমেদ)

তার ডাক নাম হিমু। ভালো নাম হিমালয়। বাবা আগ্রহ করে হিমালয় নাম রেখেছিলেন যেন বড় হয়ে সে হিমালয়ের মত হয় - বিশাল ও বিস্তৃত, কিন্তু ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নয়। হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। ইচ্ছে করলে তিনি ছেলের নাম সমুদ্র রাখতে পারতেন। সমুদ্র বিশাল এবং বিস্তৃত। সমুদ্রকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা যায়। তার চেয়েও বড় কথা, সমুদ্রে আকাশের ছায়া পড়ে। কিন্তু তিনি সমুদ্র নাম না রেখে রাখলেন হিমালয়। কঠিন মৌ পর্বতমালা, যার গায়ে আকাশের ছায়া পড়ে না ঠিকই কিন্তু সে নিজেই আকাশ স্পর্শ করতে চায়।
--- দরজার ওপাশে - হুমায়ূন আহমেদ
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×