somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বিকল্পহীন রবীন্দ্রনাথ

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এমন কোনো মানবিক অনুভূতি নেই যা রবীন্দ্রনাথের লেখায় পাওয়া যায় না। রবীন্দ্রনাথের সব সাহিত্যে এবং সংগীতের মূল যে একটি ভাবনা কাজ করত তা হলো মুক্তি। একেকজন একেকভাবে রবীন্দ্রনাথের লেখা পাঠ করেন। কারো কাছে 'শেষের কবিতা' ভালো মনে হবে, কাছো 'চতুরঙ্গ'। শেষের কবিতা পাঠে যিনি বিমগ্ন তিনি হয়ত চতুরঙ্গ উপন্যাস কিছু অংশ পড়ার পর আর পড়বেন না। কোনো জটিলতায় যেতে চাইবেন না। ঠাকুরবাড়ি থেকে ভারতী নামে একটা মাসিক কাগজ বের হতো। অনেক সময় রবীন্দ্রনাথ নিজের লেখার প্রুফ নিজেই দেখতেন। রবীন্দ্রনাথের দাম্পত্য জীবন মাত্র ১৭ বছরের। ২৯ বছরে মৃণালিনী মারা যান। মৃণালিনী বাংলাদেশের মেয়ে।

রবীন্দ্রনাথের হাবভাব আদবকায়দা জীবন ও চরিত্র বুঝতে ঠাকুরবাড়ির নেপথ্য গল্পটা জানা জরুরি। দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন দার্শনিক ও সাধক, তিনি জমিদারি চালাতেন কঠোর হাতে, তাঁর শাসনকালেই প্রজাপীড়নের খবর জানা গেছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, দ্বারকানাথের মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ ব্যবসার সব দলিলপত্র পুড়িয়ে ফেলেন। বেশির ভাগ জমিদার বাঈজী নাচাতেন কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কোনোদিন এ কাজটি করেননি। নোবেল প্রাইজের টাকা দিয়ে কৃষকের জন্য করেছিলেন ব্যাংক। রবীন্দ্রসাহিত্য বারবার পাঠ, উপভোগ ও উপলব্ধি ছাড়া বাংলা সাহিত্যের কারোর পক্ষে লেখক হওয়া সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথ সব সময় তরুন লেখদের পছন্দ করতেন।

রবীন্দ্রনাথের 'বিসর্জন' নাটকে একটি সংলাপ আছে যে, এইবার ফসল খুব বেশি হয়েছে। না জানি কৃষকের ভাগ্যে কি দুর্গতি আছে। আমার মনে হয়, ১০০ টি বাক্যে যা বলা যেত না, তিনি একটি মাত্র বাক্যে সংলাপে তা বলে দিয়েছেন। আমি মনে করি, যারা রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা করেন- তারা আসলে না জেনেই করেন। বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। শান্তিনিকেতনে এক নির্জন রাতে তাঁর বুক থেকে উৎসারিত হলো অন্য রকম গানের কলি- 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি'। বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ছিলেন রবীন্দ্র-ভাবনার একনিষ্ঠ অনুসারী।

রবীন্দ্রনাথকে যারা চিঠি লিখতেন, তিনি তাদের সবার চিঠির উত্তর দিতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় ৪০৯৭ টি বাংলায় লেখা চিঠি পাওয়া গেছে। রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথ বিয়ে করেন প্রতিমাকে ১৯০৮ সালে। তাদের কোনো সন্তান হয়নি বলে তারা একটি গুজরাতি শিশু কণ্যাকে দত্তক নেন। তাঁর নাম দেয়া হয় পুপে।

রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পাঁচ বছর গবেষনা করে আমি একটি বই লিখেছি 'বিকল্পহীন রবীন্দ্রনাথ'। বইটি পড়লে রবীন্দ্রনাথকে সম্পর্কে সব জানা যাবে। প্রতিটা পৃষ্ঠায় নানা রকম তথ্যে ভরপুর। আমার বিশ্বাস পাঠক বইটি পাঠ করতে গিয়ে অনেক আনন্দ পাবেন। বইটি প্রকাশ করেছে রোদেলা প্রকাশনী। একুশে বইমেলাতে পাওয়া যাবে প্রথম দিন থেকেই। যদি বইটি আপনারা বইমেলা থেকে সংগ্রহ করে পড়েন- তাহলে আমার পাঁচ বছরের পরিশ্রম সার্থক হবে।

আমার কাছে বইয়ের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না৷‌ আজ যে আমি সৎ হয়ে জীবনযাপন করছি এবং ধনী না হলেও বিপথগামী হইনি- সে তো বইয়েরই দান৷‌ ‌ আজ যে সভ্যতার মধ্যে আমারা সবাই বাস করছি, তা তো বই থেকেই সৃষ্টি হয়েছে৷‌ বই না থাকলে আমরা কি এই সভ্যতা পেতাম? বই আমাদের মানুষ করেছে, আমাদের সুসভ্য করেছে৷‌ তাই আজ যারা বই-বিমুখ, যারা শুধু কম্পিউটার, পানশালা আর টিভি সিরিয়ালে আনন্দ পায়, তাদের কি সভ্য বলা যাবে?



৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×