কিনে ফেললাম হুয়াওয়ে নোভা থ্রি আই মোবাইল। দাম ২৯,৯৯০ টাকা। এই মোবাইল কেনার আগের কোনো চিন্তা পরিকল্পনা ছিল না, একেবারে হুট করেই কিনে ফেললাম। বসুন্ধরা মার্কেটে গেলাম- প্রথম যে দোকানে ঢুকলাম সেই দোকান থেকেই কিনে ফেললাম। সব মিলিয়ে সময় লাগলো মাত্র চার মিনিট। আরও কম সময় লাগতো কিন্তু দোকানে বেশ ভিড় ছিল। নতুন মোবাইলটা কিনে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছি।
আমার জীবনের প্রথম মোবাইলও আমি নিজের টাকায় কিনেছি। সেটা ছিল সিটিসেল। মানূষের অনেক আত্মীয় স্বজন থাকে। ভাই বন্ধু, চাচা, মামা তারা গিফট করে। কিন্তু কারো কাছ থেকে গিফট পাওয়া আমার ভাগ্যে নেই। কাজেই নিজের মোবাইল নিজেই কিনেছি। বাসায় এসে 'নোভা থ্রি আই' এর ইউটিউবে রিভিউ গুলো দেখলাম আর মুগ্ধ হলাম। আমার ছোট ভাই (আবীর) আইটি এক্সপার্ট সেও বলল, মোবাইলটা ভালো।
মোবাইল কেনার সময় আমার সাথে ছিল শাহেদ। শাহেদকে বসুন্ধরার ফুডকোট থেকে বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর কোক খাওয়ালাম। একটা বার্গার দাম রাখলো তিন শ' ষাট টাকা! ভাবা যায়!! বাসায় ফিরে নতুন মোবাইল কেনা উপলক্ষ্যে সুরভিকে নিয়ে গেলাম চায়নিজ রেস্টুরেন্টে। আমরা দু'জন মিলে ফালতু খাবার খেয়ে বাসায় ফিরলাম রাত সাড়ে এগারোটায়। মেন্যু ছিল অনথন, স্যুপ, ফ্রাইড রাইস চিকেন ফ্রাই। শেষে আইসক্রীম। মাত্র কয়েক ঘন্টায় ৩৩ হাজার টাকা খরচ করে ফেললাম।
ঈদের পরদিন ঢাকার বাইরে যাচ্ছি আমি আর সুরভি। এবার যাবো পাহাড়ে। আগের বছর গিয়েছিলাম সমুদ্রে। মোবাইলটা কিনে ভালো করেছি, এসএলআর ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কাজেই এখন মোবাইল দিয়ে ইচ্ছা মতোন ছবি তুলবো। এই মোবাইলে ছবি বেশ ভালো আসে। বহন করতেও বেগ পেতে হবে না। ও আচ্ছা, ভালো কথা- ব্লগে আমাকে ৩/৪ দিন পাবেন না। কেউ টেনশন করবেন না। মন খারাপ করবেন না। ৩/৪ দিন পরেই ফিরে আসবো।
আগের 'সিম্ফনি পি-৬' মোবাইলটা পরিচিত একজনকে দিয়ে দিয়েছি। সে খুব খুশি হয়েছে। আসলে আমার মানুষের হাসি মুখ দেখতে ভালো লাগে। আমার প্রচুর টাকা থাকলে অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটাতাম। যাই হোক, আজ সকাল থেকে মনে হচ্ছে, এত দাম দিয়ে মোবাইল কিনে আমি বিলাসিতা করছি। কেমন একটা অপরাধ বোধ হচ্ছে। দরিদ্র দেশে এই রকম বিলাসিতা করা ঠিক না।
সবাই ভালো থাকেন। সুস্থ থাকেন। আমি ফিরে এসে, যেন না শুনি কেউ ঝগড়া করেছেন। আর কয়েকদিন পর ঈদ, ঈদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করেন। শিশুদের সামনে কোরবানী দিবেন না। কোরবানীর পর ভালো করে চারপাশ পরিস্কার করে দিবেন। মাংস ফ্রিজে না ঢুকিয়ে গরীব দুঃখীদের বিলিয়ে দিন। যদি জীবনে আসল-স্বচ্ছ আনন্দ পেতে চান, অন্যকে সুখী করতে চেষ্টা করুন। অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করুন। তাহলে দুই জগতেই ভালো থাকতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০৫