আমি বর্তমান প্রজন্মকে বুঝি না।
এরা নতুন প্যান্ট কিনে। তারপর টেইর্লাসে গিয়ে সেই প্যান্টকে চিপা বানায়। সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি দেখে মুখে দাড়ি রাখে। স্কুল কলেজে থাকতেই প্রেম ভালোবাসা করাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ বলে মনে করে। লেখাপড়ার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় গার্লফ্রেন্ড কে। একদল গাজা নেশা করছে প্রতিদিন। গাজার ব্যবসা খুব জমজমাট। অল্প টাকায় এত ভালো নেশা! কাওরানবাজার এলাকায় ওপেন গাজা বিক্রি করছে। ধনী লোকের ছেলেরাও গাজায় আসক্ত। এই প্রজন্মের পোলাপান কিভাবে যেন চুল কাটায় দেখতে বান্দরের মতো লাগে। এরা যতক্ষন জেগে থাকে স্মার্ট ফোন টেপাটেপির মধ্যেই থাকে। এই প্রজন্মের পোলাপান রাস্তার মোড়ে, চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে পছন্দ করে। এই প্রজন্মের কাছ থেকে জাতি কিচ্ছু পাবে না।
এই প্রজন্ম, বাবা মায়ের দুঃখ কষ্ট বুঝে না।
তারা বাবা মাকে অনেক রকম যন্ত্রনা দেয়। ছেলেমেয়ে বলে আমার দামী মোবাইল ফোন লাগবে। লাগবেই। নইলে ছেলেমেয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। শেষে বাবা মা বাধ্য হয়ে ধারধেনা করে আদরের ছেলেমেয়েকে দামী মোবাইল ফোন কিনে দেয়। আমাদের পাশের বাসার এক ছেলে। আশিক নাম। আশিক এক মেয়ের সাথে প্রেম করেছে। এযুগের প্রেম ভালোবাসা মানেই বিছানায় যাওয়া। একদিন আশিক মেয়েটার সাথে জিং জং করে ফেলে। মেয়েটা প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। শেষে তাদের বিয়ে করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলের লেখাপড়া শেষ হয় নাই। চাকরি বাকরি নাই। ফলাফল সংসারে অভাব। অভাব থেকে অশান্তি। এদিকে মেয়েটাকে গর্ভপাত করাতে গিয়ে মেয়েটা মৃত্যুর মুখে। তাদের বিয়ে টিকে নাই। সম্প্রতি তাদের তালাক হয়ে গেছে।
এই প্রজন্মের স্বপ্ন হচ্ছে সেলিব্রেটি হওয়ার।
এজন্য তারা টিকটক করছে। আসলে টিকটক নাম দিয়ে নোংরামী করছে। মেয়েরা টিকটকে নোংরামীতে বেশি এগিয়ে। বাঙ্গালী মেয়েরা নোংরামী করছে বিষয়টা মেনে নিতে আমার কষ্ট হয়। এই প্রজন্মের আচার-আচরন একদম প্রতিবন্ধীদের মতো। পোলাপানের দোষ দেওয়ার আগে, দোষ দিতে হবে তাদের বাবা মায়ের। বাবা মা শুধু জন্ম দিয়েছেই খালাস। এরপর ছেলেমেয়ে কি করছে, সেদিকে নজর দেয় নাই। ছেলেমেয়ে কোচিং যাওয়ার কথা বলে, ডেটিং করছে। বন্ধুর বাসায় যাওয়ার কথা বলে, প্রেমিক প্রেমিকা কোয়ালিটি টাইম পার করছে। আমি নিজেও একসময় ছোট ছিলাম। প্রেম ভালোবাসা শব্দটা পর্যন্ত মুখে উচ্চারণ করতাম না। কি সুন্দর জীবনযাপন ছিলো আমার। বিকেলে মাঠে ফুটবল খেলতাম। সন্ধ্যায় পড়তে বসতাম।
এই প্রজন্মের পোলাপান মদ খাওয়াটাকে আধুনিকতা মনে করে।
কারো বাসা খালি থাকলেই তারা পার্টি দেয়। মদ খায় আর নাচানাচি করে। অথচ যে ছেলে মদ খাচ্ছে- তার বাবা ধার্মিক মানুষ। কেউ কেউ মদ খায় এবং মেয়ে ভাড়া করে নিয়ে আসে। সারারাত ফুর্তি করে। মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করে। বর্তমান প্রজন্ম এসব করেই বেড়াচ্ছে। এই প্রজন্ম নিয়ে আমি হতাশ। প্রতিটা এলাকায় গ্যাং তৈরি হয়েছে। এক এলাকার পোলাপান আরেক এলাকার পোলাপানের সাথে মারামারি করে। তাদের অস্ত্র হচ্ছে চাপাতি। মাঝে মাঝে তারা ভয় দেখানোর জন্য বড় ভাইয়ের কাছ থেকে পিস্তল ধার নিয়ে আসে। এরা নৌকা ভাড়া করে মেয়ে নিয়ে অশ্লীল নাচ গান করে। সেগুলো আবার নিজেরাই ইউটিউবে ছেড়ে দেয়। লাখ লাখ মানুষ সেই ভিডিও দেখে। সত্য কথা বলতে এই প্রজন্মের গজব অবস্থা।
টাকা নাই, আয় ইনকাম নাই- কিন্তু পকেটে একটা স্মার্ট ফোন ঠিকই আছে।
বন্ধুর বাসায় বা রেস্টুরেন্টে গেলেই আগে বলে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দাও। নেট ছাড়া এই প্রজন্ম অসহায়। পঙ্গু। এদের প্রেম ভালোবাসা, দেশ প্রেম, জ্ঞান, মায়ামমতা ইত্যাদি ফেসবুক, টিকটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আজকাল এমন পোলাপান পাই, কলেজে পড়ে কিন্তু মহান বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম শুনেনি। 'পাই' এর মান কত জানে না। আসলেই এই প্রজন্ম প্রশ্নপত্র ফাস প্রজন্ম। আমাদের এলাকায় তিন ভাই আছে। স্কুল পাশ করতে পারে নাই। তিনটাই এখন বখাটে হয়েছে। এই তিন ছেলের মা গর্ব করে বলে, আমার ছেলেরা রাজনীতি করে। ছাত্রলীগ করে। তিন ভাই এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার জেলখানায় গিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪